হাসনাহেনা রানু এর সকল পোস্ট

দুঃস্বপ্ন

bad-drea

তুমি নীল আকাশ হয়ে এসেছিলে আমার জীবনে
আমি হয়ে গেছি ফ‍্যাকাশে বিবর্ণ, নিঃস্ব
সেই নীলের দহনে__
আজ ও হৃদয়ের ক্ষতে দক্ষিণা জানালায়,
এলোমেলো হাওয়া বহে
নীল নক্ষত্রের আলো ছায়ায়
স্বপ্নরা নিমগ্ন ;
গোলাপ কুঁড়িরা
ফোঁটেনি তখনো

অথচ চারিদিকে সৌরভে মাতোয়ারা
তোমার জন্য–
শুধু তোমার জন্য…
তবে কি আমিই তোমার
দুঃস্বপ্ন ?

গভীর রাত্রে ফুটেছে দুঃস্বপ্নের কুঁড়ি থেকে থোকা থোকা হাসনাহেনা,
তাই কি
বড় অভিমানে ভরেছে তোমার নিকানো আঙিনা
বুকের কষ্ট গুলো শিশির হয়ে ঝরছে
আমার ভালোবাসা এতোটুকু স্পর্শ করেনি তোমাকে …

তুমি দূরে সরে যেতে যেতে
দুঃস্বপ্নের অনলে কেবলই আমার ভালোবাসা মাড়িয়ে গেছ
দু’চোখ পায়ে !
স্বপ্নরা কেঁদেছে ব্যাকুল চিত্তে
সত‍্য কি ?
না, এখানে সবটুকুই কাল্পনিক!

জানে মন প্রিয়জন-১

Screey

হ্যালো, হ্যালো, আপনি কে বলছেন? প্লিজ আপনার নামটা বলুন।

অন্য প্রান্ত থেকে ভেসে আসে প্লিজ! কে বলছি সেটা বড় কথা নয়, কি বলছি সেটা একটু ধৈর্য সহকারে শুনুন। রাগে গিড় গিড় করতে থাকে কনা। তারপর দড়াম দিয়ে রিসিভারটা রেখে দেয়। মূহুর্তে আবার এক বুক অনুশোচনার আগুনে জ্বলতে থাকে। কেন লাইনটা সে কেটে দিল ? অপরিচিত একটা লোকের কথা শুনলে কি এমন ক্ষতি হত তার ? এত রাগও বা কিসের জন্য ? লোকটি নিজের নাম বলেনি সেটা ? তবে তার কথা শোনা উচিত ছিল, সেটা মনে মনে ভাবল কনা। ধ্যাৎ মস্ত বড় একটা ভুল হয়ে গেল, টেলিফোনে সেতো আর আমাকে দেখতে পেত না। পরক্ষণে আবার ক্রিং ক্রিং শব্দ করে বেজে উঠল টেলিফোনটা। দুরু দুরু বুকে কনা রিসিভারটা হাতে তুলে নিল।

হ্যালো হ্যালো বলতেই ও প্রান্ত থেকে একটা পুুরুষ কণ্ঠ ভেসে আসলো আর এত হ্যালো হ্যালো করতে হবে না। আমি ফোনে স্পষ্ট তোমার কন্ঠ শুনতে পাচ্ছি। তুমি কনা কথা বলছ। কনা এখন আমি কি বলছি সেটা একটু মনোযোগ সহকারে শোন। বল সুন্দরী স্বামী সংসার নিয়ে তুমি কতটা সুখে আছ ? নিশ্চয়ই পাহাড় সম সুখ তোমাকে ঘিরে আছে, কি ঠিক বললাম তো ? তোমার প্রাণ প্রিয় স্বামী এখন দুবাই বেশ ভালোই আছেন। কিন্তু কনা তুমি সুখে আছ তো ? স্বামী ছাড়া কেন যে তুমি একা একা দেশে পড়ে আছ ঠিক জানি না। তবে তোমার জন্য আমার ভীষণ কষ্ট হয়। তুমি কি সে কথা জান ? জান না। আর জান না, তোমার স্বামী এখন কতটা সুখে আছে।

তুমি হয়ত মনের কাছে প্রশ্ন করতে পার, কে আমি? আর এই আমি কেনই বা তোমার একান্ত ব্যক্তিগত অধিকারে কর্তৃত্ব ফলাচ্ছি। আসলে কি জান কনা, এই অধিকারটা এক সময় আমার বেশি ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন যে সে অধিকারটা কেড়ে নিল অন্য কেউ। যার ছিল বিশাল সমুদ্রের মত যশ, মান, খ্যাতি। সেখানে আমার মত অপদার্থের স্থান একেবারে নগন্য। তাইতো কনার জীবন থেকে আমি মাইনাস হয়ে গেছি। তবুও দেখ আমি ঠিকই তোমার মঙ্গল কামনা করছি। এবার আরও কিছু শোনার জন্য কনা প্রস্তুত হল। ঠিক সেই মুহুর্তে বিপরীত প্রান্ত থেকে লাইনটা কেটে দিল। কনা দড়াম দিয়ে বসে পড়ল সোফায়। কনা ভীষণ কাঁপছে। একটা দুঃচিন্তায় তার মাথাটা ঘুরপাক খেতে শুরু করল। সে ভাবতে থাকে কে এই অচেনা লোকটা। কায়সার নয় তো ? মূহুর্তে কনার মনে পড়ে গেল ভার্সিটি জীবনে অতীত প্রমিক কায়সারের কথা।

কিন্তু সেটা কেমন করে সম্ভব ? কায়সার তো দেশে নেই। দুই বছর সে জাপানে অবস্থান করছে। দেশে সে বিয়ে করে সস্ত্রীক জাপানে চলে গেছে। সেখানে সে সংসার করছে। দীর্ঘদিন পর সে কেন আমার কাছে ফোন করবে ? তাছাড়া ওই কণ্ঠস্বর তো একবারও বলছে না কায়সারের কণ্ঠস্বর। তাহলে ? কনা আবারও ভাবতে থাকল কে এই অচেনা লোকটি ? আর লোকটি তার ফোন নাম্বার জানলোই বা কিভাবে ? তবে কি কোন অশুভ সংকেত! লোকটির উদ্দেশ্যই বা কি ? একে একে হাজারও প্রশ্ন কনার মনে কাঁটার মতো খচ খচ করে বিঁধতে থাকে। আবার তার স্বামী ফয়সালও প্রায় এক বছর হয়ে গেল কোন যোগাযোগ করে না। কনার মন ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। এতবড় একটা বাড়িতে সে একা একা থাকে। কনার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সে এ বাড়িতে থাকছে। অবশ্য মাঝেমধ্যে তার ছোট দেবরটা এ বাড়িতে আসা যাওয়া করে। এই মাত্র দেওয়াল ঘড়িটা ঢং ঢং শব্দ বাজিয়ে রাত দশটা বাজার সময় সংকেত জানিয়ে দিল। কিন্তু ভয়টা ক্রমেই কনাকে আঁকড়ে ধরেছে। কনা দু’টো ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিল। কিন্তু ঘুম যে তার কিছুতেই আসছে না। এক বুক যন্ত্রণায় সে এপাশ-ওপাশ করতে থাকে। এমন সময় বাইরে দরজায় কলিংবেল বেজে উঠল।

কনা থর থর করে কেঁপে উঠে, প্রশ্ন করল কে ? বাইরে থেকে আওয়াজ আসলো আমি কাজল ভাবি, দরজা খোল। কনা বুঝতে পারল তার দেবর কাজল এসেছে। এগিয়ে যেয়ে সে দরজা খুলে দিল। কাজল বাসায় ফেরার পর থেকে কনার ভয় কিছুটা কমে গেল। তবু মাথাটা তার ঝিমঝিম করছে। সে দ্রুত বিছানায় শুয়ে পড়ল। কোন কিছু তার ভাল লাগছে না। তার চারপাশে একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। হঠাৎ আবার টেলিফোনটা বেজে উঠল। ভয়ে ভয়ে কনা ফোন সেটের কাছে আসে। আস্তে করে রিসিভারটা হাতে তুলে নেয়।

কিন্তু কনা তেমনি নিরুত্তর। কোন কথা যেন ওর মুখ থেকে বের হচ্ছে না। ও প্রান্ত থেকে ভেসে এল হ্যালো হ্যালোকে কনা ?
আচ্ছা কনা, তুমি কী কিছু ভাবছ ? এই ধরো আমাকে নিয়ে। মানে আমিটা কে ? কনা আমাকে তুমি জীবনেও চিনতে পারবে না। শুধু এটুকু বলব, তোমার প্রবাসী স্বামী আমার খুব কাছের বন্ধু। সেই অর্থে আমিও তোমার একজন ভাল বন্ধু হতে পারি। স্বামীর বন্ধু মানেই তো তোমার ও বন্ধু। কী হতে পারি না ? এছাড়া আপাতত তোমাকে দেবার মতো আমার আর কোন পরিচয় নেই। প্রয়োজন হলে আমি মাঝেমধ্যে তোমাকে ফোনে ডাকব কেমন? কনা এতক্ষণে নীরব থেকে অপরিচিত লোকটার কথা শুনছিল। এখন সে আর নীরব থাকতে পারল না। ধমকের সুরেই বলল, কেন পরিচয় দিলে কী এমন ক্ষতি হবে আপনার ?আর আপনিই বা কেন সেধে সেধে আমার সাথে ফোনে আলাপ করতে যাবেন ? আসলে আপনার উদ্দেশ্যটা কী বলুন তো? পরিচয়টা দিলে খুব খুশি হব।

চিৎকার করে উঠল কায়সার, ব্যাস ব্যাস থাক কনা। তুমি আমার পরিচয় পেয়ে মোটেও খুশি হবে না। তাই আপাতত আমার পরিচয় দিচ্ছি না। তোমার শরীর এখন কেমন আছে? আর মনটা, ভাল আছে তো ? এক বুক যন্ত্রণায় জ্বলে পুড়ে শেষ হচ্ছো না তো ? তবে আমার দুঃখের আকার বড় বেশি ভারী। সে দুঃখের কোন শেষ নেই। সত্যিই বলছি কনা সব তোমার জন্য।

সেই তখন থেকে কী সব আজে বাজে বক -বক করছেন। ধমকের সুরেই কথাটা বলল কনা। আজ আমার শরীর ভাল আছে। তবে মন ভাল নেই। আপনি যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছেন, তাতে কী আর মন ভাল থাকে? কিন্তু বুঝতে পারছি না আপনি কে? আর কেনই বা এমন করছেন ?

সবকিছু এত বেশি বোঝা ভাল নয় কনা। তবে আমার দ্বারা তোমার কোন ক্ষতি হবে না। একথা আমি হলফ করে বলতে পারি। তবে তো বললে তোমার শরীর ভাল আছে। বেশ তো, ভাবছি তোমাকে একটা দুঃসংবাদ দেব। ব্যাপারটা তুমি যে কী ভাবে গ্রহণ করবে, আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। শোন কনা, তোমার স্বামী তার এক আত্মীয়াকে আবার বিয়ে করেছে।

নব দম্পত্তি এখন দুবাই অবস্থান করছে। ছয় মাস হল ওরা বিয়ে করেছে। ওরা দু’জনই ঢাকা ভাসির্টিতে একই সাবজেক্টে পড়ত। তাছাড়া বিউটি সম্পর্কে ফয়সালের মামাত বোন। ছাত্র জীবনে ফয়সাল খুব মেধাবী ছিল। আর তোমাকে বিয়ে করাটা ফয়সালের জন্য একটা দুঃস্বপ্ন ছিল মাত্র। ভাগ্য ক্রমে হঠাৎ ও দুবাই যাওয়ার ভিসা পেয়ে যায়। তখন ওর তিন লক্ষ টাকার খুব প্রয়োজন হয়। যে টাকা ওকে দিতে বিউটির পরিবার অস্বীকার করেছে, সেই টাকা তোমার বাবা মেয়ের বিয়েতে যৌতুকের পনের টাকা হিসেবে দিতে রাজি হলেন। তোমার বাবা দেখলেন তার মেয়ের সুখ। তিন লক্ষ টাকা দিয়ে জামাতাকে বাইরের দেশে পাঠালে তার মেয়ের সুখ হবে। কিন্ত সে ক্ষেত্রে তোমার ভাগ্যে ঘটে গেল ঠিক তার উল্টোটা। কিন্ত কনা, তোমার দেবতা সমতুল্য স্বামী তোমার মতো সুন্দরী স্ত্রী ঘরে রেখে দ্বিতীয় বার বিয়ে করল কেমন করে? সে কথা ভাবছি। তুমি তো কম সুন্দরী নও। যথেষ্ট সুন্দরী তারপরও!

কনা তুমি বিশ্বাস কর আমি একরত্তি ও মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছি না। কনা এতক্ষণ অপরিচিত মুখে এসব কথা শুনে কষ্টে একেবারে বাক রুদ্ধ হয়ে গেল। সে ডুকরে কেঁদে উঠল। যখন তার কান্না থামল তখন সে রাগে- ক্ষোভে, অপমানে আবারও কেঁদে উঠে বলল, চুপ করুন আপনি। আমি আপনার কোন কথাই বিশ্বাস করি না। আপনি বলুন যা বলেছেন সবই মিথ্যা কথা। কনা ভীষণ কাঁদতে লাগল। ঠিক তখনই লাইনটা কেটে দিল কায়সার।

কায়সারের খুব কষ্ট হল কনার জন্য। ওর ধারণা ছিল কনাকে ফয়সালের বিয়ের সত্য কথাটা বলে সে শান্তি পাবে। কিন্ত এখন সে দেখল তার উলটোটা হয়ে গেল। কনা কাঁদছে শুনে কায়সার ভীষণ কষ্ট পেল। কাজল কনার পাশে এসে বসল। কিছুক্ষণ পর যখন কনার কান্না থামল তখন কাজল বলল, তোমার কি হয়েছে ভাবি? তুমি এভাবে কাঁদছ কেন? কনা নিজেকে সামলে নিয়ে বলল আমার কপাল পুড়েছে কাজল। তোমার ভাইয়া তার প্রেমিকা বিউটিকে বিয়ে করেছে। আর ওরা এখন একত্রে দুবাই অবস্থান করছে। কাজল ভাবির দু’টি হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল, তুমি কেঁদো না ভাবি। ভাইয়া যদি কোন অন্যায় করে থাকে তাহলে তার জন্য অবশ্যই সে শাস্তি পাবে। তুমি মন খারাপ কর না ভাবি। আমি কথা দিচ্ছি, সব রকম সাহায্য তোমাকে করব। তুমি ভেঙ্গে পড়না। ভাবি, তোমাকে শক্ত হতে হবে।

বিউটিকে আমাদের পরিবারে কেউ কোন দিন বউ হিসেবে গ্রহণ করবে না। তুমি আমাদের পরিবারের বড় বউ। তোমার স্থান সবার ঊর্ধ্বে।
কনা অন্যমনস্ক ভাবে বলল, আমি সুইসাইড করব। তোমার ভাইয়াকে মুক্তি দিয়ে যাব। কাজল রেগে গিয়ে বলল, এসব তুমি কী বলছ ভাবি ? তুমি কেন সুইসাইড করবে ? এটা মস্তবড় অন্যায়, সম্পূর্ণ বিধর্মীয় কাজ। এমন পাপ কাজ তুমি কর না ভাবি। বিষয় টা আমি দেখছি। কনা কিছুক্ষণ কাজলের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, আমার জন্য তুমি বা তোমার বাবা-মা আর কী করতে পারবে বল ?তোমরা কী কখনো তোমার ভাইয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারবে ? পারবে না। কারণ সে তোমার বড় ভাই। তোমার বাবা- মায়ের বড় সন্তান। সে হাজার অন্যায় করলেও তোমরা সেটা মেনে নেবে। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কাজল কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলল, ভাবি কথাটা আমি আরও আগে শুনেছি। কিন্তু তোমাকে বলার সাহস আমার হয়নি। ব্যাপারটা তোমার আরও আগে বোঝা উচিত ছিল।

দীর্ঘ একটা বছর ভাইয়া কেন তোমার সাথে যোগাযোগ করে না? কেন সে টাকা পাঠায় না ? তোমার সহজ সরল মন তাই তুমি এত গভীর ভাবে কিছুই বুঝতে পারনি। কনা বলল, আমি কী করে বুঝবো বল ? তোমার ভাইয়া আমাকে বলেছিল, কনা আমি এক দেড় বছরের জন্য দুবাই থেকে পার্শ্ববর্তী দেশে ব্যবসার কাজে যাব। সে জন্য আমি ভীষণ ব্যস্ত থাকব। আর এর জন্য আমার দশ লাখ টাকার প্রয়োজন। আমি এ টাকা চাকরি করে ম্যানেজ করে নিচ্ছি। প্লিজ লক্ষীটি! তুমি এই কয়দিন একটু কষ্ট করে চালিয়ে নিও। আমি ব্যবসায় সফল হলে তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসব। কী খুশি হয়েছ ? অবসর পেলেই আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করব। তুমি আমাকে নিয়ে ভেব না। আমি ঠিক থাকব। আর তুমি কিন্তু নিজের দিকে বেশি করে মনোযোগ দেবে। কোন কিছুতেই অনিয়ম করা চলবে না। আল্লাহ পাক চায়লে আমাদের সুখের দিন খুব শীঘ্রই ফিরে আসবে। এখন তুমি বল কাজল, তোমার সেই ভাইয়া কিভাবে আমার সঙ্গে এমন প্রতারণা করতে পারে? আমার বিশ্বাস হয় না কাজল। আমার মনে হয় কোথাও ভুল হচ্ছে। তুমি একবার ভাল করে খোঁজ খবর নিয়ে দেখ না ভাই। ঘটনাটা কী সত্যিই নাকি মিথ্যা ?

কাজল প্রতিবাদ করে উঠল। তুমি যখন ব্যাপারটা জেনেছ ভাবি, তখন ঘটনা সত্যিই। বিষয়টি আমাদের পরিবারে সবাই জেনে গেছে। তবে বিউটি আপার সাথে ভাইয়ার মেলা – মেশা ও প্রেমের ব্যাপারটা আমাদের পরিবারের কেউ ভাল চোখে দেখেনি। সেই বিউটি আপাকে ভাইয়া বিয়ের পর আবারও বিয়ে করল ? এটা সে কী কাজ করেছে ? ভাইয়ার এ বিয়ে কেউই মেনে নেবে না। বিউটি কে আমরা কেউ ভাবি হিসেবে মেনে নেব না। গত এক বছর হল ভাইয়া তোমার সঙ্গে তার সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। কেন দিয়েছে ? সেই কারণটা কী এখন স্পষ্ট নয় ভাবি ? ভাইয়া বড় ধরণের ভুল করেছে। তবে আমার কী মনে হয় জান ভাবি ? বিউটি খুব উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের। এই বিউটি কে ভাইয়া বেশি দিন ধরে রাখতে পারবে না। আসলে সে আমার কাজিন তো, তাকে খুব ভাল করেই জানি। ভাবি কেউ কেউ নিজের ক্যারিয়ারের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ভাইয়ার কিন্তু এটা ভীষণ পাগলামী হয়ে গেল। দেশে এমন সুন্দরী বউ রেখে কেউ এমন পাগলামী করে নাকি ? ভাবি, আমি শুনেছি ভাইয়া দুবাই বিউটির অনুরোধে একটা ক্যাডিলাক গাড়ি কিনেছে। বিউটি নিজেই সে গাড়ি ব্যবহার করে। সে মদ, পার্টি আর বন্ধুদের আড্ডায় মেতে থাকে সারাক্ষণ। তার পোশাক এখন জিন্সের প্যান্ট, ফতুয়া, শর্ট হাতার গেঞ্জি। ভাইয়া নিজের হাতে তাকে ড্রাইভ করা শিখিয়েছে। এক বছর আগের বিউটি, আর এক বছর পরের বিউটির মাঝে এখন অনেক ব্যবধান। কনা দেখল কাজলের আলোচনা যখন তপ্ত থেকে খুব স্বাভাবিক ভাবে আস্তে আস্তে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঠিক তখন মাঝ পথে সে বাঁধা সৃষ্টি করল। আরে দাঁড়াও কাজল, তুমি বিউটির এত সব খবর কিভাবে জোগাড় করলে ? আমি কেন এতদিন জানলাম না ? তুমিও ভীষণ গ্রীডি ধরণের। তোমরা তো দেখছি সকলে একই রকম।

কাজল ভাবির কথায় চমকে উঠে বলল, ধ্যাৎ ভাবি আসলে আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি। আমার বন্ধু রিপন দুবাই আছে। সে ভাইয়ার খুব কাছেই থাকে। সে তিন মাস আগে ভাইয়া -বিউটির বিয়ের ব্যাপারটা আমাকে জানিয়েছে। ভাইয়া রিপনকে মুখ খুলতে বারণ করেছিল। কিন্তু রিপন আমার ক্লোজ বন্ধু। সে কী ব্যাপারটা আমাকে না জানিয়ে পারে ? এত বড় একটা ঘটনা! কনা আহত বিস্ময়ে কিছুক্ষণ তার দেবরের মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে। তারপর অস্ফুটে বলল, এ সব তুমি কী বলছ কাজল ? আমার বাবা – মা, ভাই – বোন কেউ নেই। সেই ছোট্ট বেলায় রোড অ্যাক্সিডেন্টে মা, ভাই – বোন সবাই হারিয়ে গেছে। বাবা বেঁচে ছিলেন। তিনি ও কিছুদিন আগে আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন। তোমার ভাইয়া ছাড়া আমার তো আর কেউ নেই। সব কিছু হারিয়ে আমি তোমাদের সংসারে এসে আবার সব ফিরে পেয়েছিলাম। এখন তোমার ভাইয়াও আমাকে পর করে দিল। এখন আমি কোথায় যাব ?কার কাছে যাব, বলতে পার ?

কাজল বলল, তুমি আবার কোথায় যাবে ? আমাদের সংসারেই থাকবে। তোমাকে আমরা কোথাও যেতে দেব না। আমার মা – বাবা তোমাকে মেয়ের মতো দেখে। ডুকরে কেঁদে উঠে কনা বলল, সে আমি জানি। আমি নতুন করে বাবা – মা ফিরে পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার কপালে সুখ যে সইলো না কাজল! তোমার ভাইয়া আমার প্রতি এত নিষ্ঠুর হতে পারল ?

গর্জে উঠল কাজল। হয় হোক না ভাবি ? তুমিও শক্ত হও। দেখবে ভাইয়া কে আবার তোমার কাছে ফিরে আসতে হবে। তোমাকে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে ভাবি।

হোয়াট ধৈর্য ? কী বলছ তুমি? ধৈর্য ধরবো আমি? সেটা অনেক পরের কথা। এখন আমি কী করব তাই বল ? তোমার ভাইয়া কে আমার ডির্ভোস দিতে বল। কাল তাকে ফোন করে জানিয়ে দাও। এবং যত দ্রুত সম্ভব হয়, ততোই আমার জন্য মঙ্গল হবে।

কনার মুখ জুড়ে একটা বিষাদের কালো ছাপ। কনা হাসি খুশি একটা উচ্ছ্বল তরুণী। কিন্তু একি হয়ে গেল তার। এই ক’ দিনে সে বড় নীরব হয়ে গেছে। চমকে উঠল কাজল, কী ডিভোর্স ? তুমি ডিভোর্স চাইছ ভাবি ? খুব চিন্তিত কণ্ঠে সে বলল, তুমি আর যাই কর ভাবি এই কাজটি তুমি কর না। তুমি দেখ ভাইয়ার একদিন ভুল ভাঙ্গবে। আমি তোমার ছোট ভাইয়ের মতো। তুমি আমাদের পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন কর না ভাবি। কাজলের কথা শুনে কনা একটু অবাক হল। তারপর সে ভাবল, অচেনা লোকটার সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে। কনা শিওর হল, ফয়সালকে সে তার জীবনে আর ঝুলিয়ে রাখবে না। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে অনেকক্ষণ কাঁদল কনা। এক সময় সে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ল।

গোলাপ প্রেমে বাঁধা

flower-31

নির্জন গভীর রাতের নীড়ে শিশিরের শব্দে কান পেতেছি বারবার
এক মগ ধোঁয়া ওঠা কফির ঘ্রাণে
মিশে গেছি বহুবার,
সদ্য লেখা কবিতার মত রাত্রি আজি মেলেছে দুর্বোধ্য ডানা
নক্ষত্র’রা ঝরছে টুপটাপ শব্দ ছাড়া,
কবিতায় ফোটাতে পারে প্রেমের ঘ্রাণ ঢেলে গোলাপ ফুল:
স্বপ্ন কুসুম —
ভোরের ঠোঁট গলে
টিনের চালে
টুপটাপ শিশির ঝরে পড়ার শব্দ ভাসে বাতাসে ;
দূর্বা ঘাসে শিশির শব্দ মিছিল তোলপাড় করছে
কি বিস্ময়কর দৃশ্য!
গোলাপ প্রেমে বাঁধা পড়ে গেল স্বপ্নময় রঙিন পৃথিবী।

মেঘ অরণ্যে বিন্দু বিন্দু ভালবাসা

Screety

জানি তোমার কাছে এ নিছক প্রেম নয় অরণ‍্য
তবু তোমার সঙ্গে কষ্টের বাঁধনে বাঁধা পড়া,
তুমি চুপে চুপে এসেছিলে
ঘাস ফড়িং ছায়া নীড়ে__
আমি কিছুটা সময় ছিলাম তোমার মন অরণ্যে-

এ ঘাস ফড়িং নীড়ে
শুধু কষ্টের চাষ হয় –
সাদা- কালো মেঘ কষ্ট হয়ে ঝরে
দূ’চোখের ভেজা পাতায়!

প্রেম যখন কবিতায় আশ্রয় নেয়
শব্দের পরে শব্দরা হামাগুড়ি দেয়,
সীমাহীন শূন্যতা শব্দের সমুদ্র হাতড়ে বেড়াই
নির্জন প্রকৃতি গহীনের নৈঃশব্দ্য খসাবে
তবেই না স্বার্থক প্রেমের কবিতা হয়ে উঠবে।
তুমিই তো চেয়েছ কাঁটা ভরা পুষ্পের সীমাহীন
স্বপ্নাহত এক জীবন,
যে জীবন নীড় ভাঙা পাখিদের হয়…
আমি না হয় সেই নীড় ভাঙা আহত সেই পাখি
আর সুখ পাখিটা তুমি।

প্রেম যখন দরজার ওপাশে আড়ালে চলে যেতে চায়__
অর্তকিত ভালোবাসার পেয়ালায় মধু- বিষে গোপনে
মিশে যেতে চায়,
মহামেঘে মৃত্যু এসে তখন দুয়ারে দাঁড়ায়__
আমি চোরাবালি চোরা কাঁটার ফাঁদে
জীবন বাজি রেখেছি বিষাদে!

প্রেম যখন নীল আকাশ হয়ে শ্রাবণ মেঘের ডানায় হারায়
মরণ সমুদ্র তখন সামনে এসে দাঁড়ায়–
কেঁপে কেঁপে ওঠে বুক
বাতাসে শূন্যতা উড়াই,
সমুদ্র জলে ঢেউ এর মাঝে তবু ছায়াটুকু
স্থির থাকে — মেঘ অরণ্যের জলছবি হয়ে
শুধু স্মৃতিটুকুই সম্বল থাকে ….

আহত ব‍্যথাভরা বুকে–
কিযে রাখি , কিযে ফেলি
কিযে করি
বুঝিনা কিছু – ই …

অরাত্রি’র প্রেম

1-SM764929

অভিমানী মেয়ে অরিত্রি নীলা,
নীল বেদনা নীড়ে অভিমানের আঁচল সরিয়ে
ভালবাসার তিলক চিহ্ন এঁকে দাও এ চাঁদ মুখে,
হৃদয়ের অলক্ষ্যে ভাললাগা অনুভূতিতে প্রেমের প্রদীপ শিখা জ্বালিয়ে দাও- আলতো হাতে;
তুমি নীল আকাশ শাড়ি পরে সন্ধ্যার নরম পালকে নিঃশব্দে ঘুমাও কেমন,
পূর্ণিমা রাতের জ‍্যোৎস্না তোমার খোলা বুকে আছড়ে পড়ছে –
টুপটাপ শিশির ঝরছে।
শাড়ির নীল আকাশ আঁচল খসে গেছে কবে;
আমি মোমের আলোয় দেখেছি তোমাকে।

তুমি কোন মেয়ে নও
অপ্রকাশিত এক কবিতার অরাত্রি প্রেম,
নক্ষত্রের নীল ফুলে ফুটেছ তুমি এক প্রহরে
রাতের আকাশ জুড়ে কখনো তুমি এই মেঘ
এই বৃষ্টি:
তুমি নীল নক্ষত্র মেয়ে দিরাত্রি —
কবিতা তোমার কথা বলে,
তোমার আদ‍্যপান্ত ঠাসা কবিতার অক্ষরে ।
তোমার ঠোঁটের আভায়
চোখের পাতায়,
চুলের খোঁপায়
মুখের কমনীয় গাঢ় সবুজ আভা তুলতুলে নরম ত্বকে দূর্বা ঘাসে রৌদ্র শিশিরের আলো ছায়ায় কবিতার শব্দরা কেমন কানামাছি লুকোচুরি খেলে,
এক জীবনের সবুজ অরণ্যে তুমি গুচ্ছ গুচ্ছ শত রং গোলাপ হয়ে ফুটবে।

কবিতার গল্প টা বিরহের ছিল

BZ

তোমাকে দেখবো বলে কত কত প্রতীক্ষা
তুমি নতুন পৃথিবীর প্রথম কবিতা
হয়তো লিখেছেন অন‍্য কোন কবি,
বাইরে ঝুম বৃষ্টি
কষ্ট আর আমি
নিবিড় সকাল বুকে ভোর হয়ে জেগে উঠেছি:
গভীর রাতে কখন যে এ পথে হেঁটে গেছ তুমি
আমি কেবলই চোখ রাখি
সবুজ শ‍্যামল প্রকৃতির দারুচিনি দ্বীপ এ;
একটাই রাস্তা তোমার আমার যাওয়া- আসার
অথচ তুমি ভুল করে চলে গেলে অন্য পথে
পৃথিবীর প্রথম আকাশ এখানে এসে থেমেছে
এখানে প্রকৃতি ও কত কাছের
কত যোজন যোজন মাইল দূরত্ব আমাদের মাঝে!
তুমি নেই
কোন কিছুই আর ভাললাগে না
তোমার জন্য আমার দীর্ঘশ্বাস
হারানো রোদের কাছে ফিরে গেছে;
হারানো মেঘ বিরহের গল্প হয়ে এই বুকে বৃষ্টি হয়েই ঝরছে!
তুমি তো আর বুঝবে না
দেখবে না কখনো
কতটা রক্তক্ষরণ এই বুকে;
কতটা দহনে কষ্ট বৃষ্টি হয়ে ঝরছে
সমুদ্রের বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে আজো বলছি
তোমাকে দেখার এক অদম‍্য ইচ্ছে লেগে আছে এখনো এই চোখের কোণায়
তুমি জানলে না হায়!

আমার গল্পের সেই তুমিটা আজ শুভ্র ভোরের বেদনার নীল আকাশের মত হয়ে গেছে।

দীর্ঘ কবিতা : মেঘ পোড়ামন

index

আমি দেখেছি স্রোতে ভাসা শ্যাওলা
কচুরিপানার যাযাবর জীবন,
বালুকাবেলায় একলা দাঁড়িয়ে_
দেখেছি জীবন সমুদ্র;
আমি বসে আছি সেই
পুরোনো কফিশপের কর্ণারের টেবিলে,
তুমি আমার উল্টো দিকে
ভীষণ অস্থিরতায় ভূগছো ,
হয়তো কার ও অপেক্ষায়_
আমি একা_
সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই,
এক নিঃশব্দ আঁধারের বুকে আমি
ডুবে আছি,
সমুদ্র উন্মাতাল আমারই দৃষ্টি ছুঁয়ে
জলের গভীরে,
উন্মত্ত হাওয়া বইছে
রাত বাড়তে থাকে,
আমি বেঁচে আছি এক রকম
বলতেই হবে ;
কিছুক্ষণ আর তোমার দিকে আমার মন নেই,
সমুদ্র নিয়ে ভাবছি
হঠাৎ অজানা সুন্দরীর কটাক্ষ কিংবা
লাস্যময়ীর কফিশপ কাঁপানো
অট্টহাসিতে আমি চমকে উঠলাম,
যেন রাতের চাঁদটা তোমার পাশে
নেমে এসেছে_
চাঁদ আর ঐ লাস্যময়ী মুখটা একাকার
সে এক নরম সুন্দরী,
যার নরম তুলতুলে রক্তাত্ত শরীর,
টিপ দিলে রক্ত ছুটবে,
অহঙ্কারে মেয়েটি সোজা হয়ে দাঁড়াতে
পারছে না,
আর আমি
ক্রমাগত এক সমুদ্র বিষন্নতায়
ডুবে যাচ্ছি,
জানতাম আমার এভাবেই মৃত্যু হবে,
বড় কঠিন সে মৃত্যু যন্ত্রণা
বেঁচে থেকেও মরে যাওয়া
এর নাম মৃত্যু !
আমি ভীরু হরিণীর মতো নিজেকে
গুটিয়ে নিয়েছি শামুকের মোড়কে !
পৃথিবীর সমস্ত আকাশ আজ থমথমে
নীল;
গাঢ় স্তব্দতার কঠিন অন্ধকারে ঢেকে গেছে
রাত্রিবেলা,
আমি রাত্রির গভীরতায় তলিয়ে যাচ্ছি
ক্রমশই;
আমি যাচ্ছি,
আমি যাব
চিরকাল
মৃত্যুর কাছে যে আমার ফেরার অপেক্ষা রয়েছে,
মেয়েটির মার্বেল মার্কা দু’টি চোখ,
স্বপ্নের মতোই দেখতে লাগছে,
আর দু’ ঠোঁটের ভাঁজে হাসিতে
সুচিহ্নিত গোপন শিশির মুক্তা ধরে
আছে,
মেয়েটির উগ্রতা আর প্রসাধনের মধ্যে তুমি
কেবলই ডুবে যাচ্ছিলে,
নারীর যৌবনের খাপ ছাড়া গন্ধের মতোই ;
রাত্রিবেলা কফিশপে নীল,নিয়ন বাতি
জ্বলছে
সাথে চমৎকার সুরের মূর্ছানা_
আমি বিশুদ্ধ বিশ্বাস পান করছি বসে বসে,
তুমি মেয়েটির হাত ধরে আমার টেবিলে
আমি তখন প্রচন্ড সূর্যের দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছি,
অথচ তখন রাত্রিবেলা;
দিনের ক্লান্তি শেষে
রাত্রির নিবিড়তায় আমিও বড় বেশি ক্লান্ত,
হঠাৎ যেভাবে একদিন এসেছিলে,
আবার আমার আকাশ গাঢ় নীলিমায় ঢেকে চলে গেলে,
মানুষের মন তো !
খেয়ালী হয় এমন,
আজ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
পথ গেছে দু’ দিকে বেঁকে,
কতটা অভিমানে ভিঁজছি আমি…
জানি আর কাছে এসে এ চোখের
বেদনার_ মেঘ জল মুছে দিয়ে
বলবে না কখনোই_
দূর! অযথাই সমুদ্রে বৃষ্টি পাত হচ্ছে,
এতো নরম তুলতুলে গালে
গোলাপ বাগান
সারা রাত্রি জেগে জেগে শিশির ঝরছে,
এ রাত্রির আহবান কান্নার মতোই লাগছে,
কেন কাঁদছ?
আমি তো আছি,
যাইনি কোথাও_
এ সত্যিই !
আমায় ছুঁয়ে দেখো_
এসো আমরা অবরুদ্ধ সমুদ্রের বুকে
বরফ কুচি ভাঙ্গি_
মানুষের মন তো বিচিত্র কিছুই নয়,
রাত্রি ও স্তব্দতা এক নয়
নিঃসঙ্গতা ও একাকীর মতো ও নয়,
ও আমার বান্ধবী,
ভালবাসার দাবিদার তো নয়
আমাদের ভালবাসা সাদা বিছানায়
ঘন নীল ঘুমে,
কখনই না,
অরণ্যের কিছু পাখি উড়ে এসেছে
রাত্রির ডানায়,
রাত্রি ডুবে যাচ্ছে গভীর সমুদ্রের বুকে,
আমি তখন লুকায়িত সমুদ্রের কান্না দেখি_
কিছুক্ষণ পরেই দেখি দৃশ্য বদলে যাচ্ছে
এক এক করে,
তোমার নরম মাখনের মতো প্রিয় বান্ধবীটি
এক ঝাঁক যুবকের সাথে নৃত্য করছে
কফি বারে_
আমার দৃষ্টি প্রসারিত হয়ে উঠল,
মেয়েটি সাদা গাউন পরে নৃত্য করছে
মেয়েটি খুব কৌশলী ও জটিল,
অনেকটা দূর্বোধ্য কবিতার মতোই_
তুমি আঙুর লতা বাগানের উপচে পড়া
শিশির স্নানে ভিঁজতে ভিঁজতে বললে,
ও পর্দার ওপাশে আড়ালের মেয়ে
অরুন্ধতী সেন;
আজ আরও গাঢ় হওয়ার কথা
শব্দ আর পাতাদের…
মনে আছে তুমি ‘ এক গুচ্ছ পাতা বাহার
স্বপ্ন সাজিয়ে নিয়ে,
মনের গভীরে_
এসেছিলে বেলা শেষে শেষ বিকেলে?
বিশ্বাস করো,
এখন ও প্রত্যেকটা দিন নতুন
ভাবে শুরু হয়_
প্রত্যেকটা দিনের গল্প
আলাদা –
তুমি আমার ভোরের আলো,
প্রতিটি সোনালি ভোরের ডানায় ভর করে
আমি তোমার সাথে,
শুদ্ধ আগামীর বুকে হেঁটে যাব ,
আবার এমন রাত্রি কবে আসবে?

ঘাস ফুল বিকেলের কাছে

maxresdefault

আমি মেঘ ছুঁয়ে ছুঁয়ে তারার ধূলোয়
কাজল মেখেছি চোখে
আমার মেঘাচ্ছন্ন মন
বাঁধি কেমন করে,
হলুদ দুপুরের গভীরে হারায়
অকারণে,
কত কাল আমি ঘাস ফড়িং আর
নীল প্রজাপতি উড়া দেখিনি,
প্রকৃতির আঁচলে জ্যোৎস্না বিছানো
সবুজ ঘাস বিকেলের পথ ধরে
হাঁটিনি।
কখনই আমি এ হাতে সুন্দরের ফুল
ফোঁটায়নি;
অথচ কানামাছি খেলার ধাঁধাঁয় হেরেছি
শান্তির দূত পায়রা বন্ধের কাছে,
আমি যা পারিনি
সে পেরেছে
কষ্ট মেখেছি এ হাতে লবণ তেঁতুলের,
তারার বৃষ্টির সাথে –
এক মুঠো কষ্ট পুড়ে পুড়ে খাঁটি সুখ
হতে চেয়েছে,
আমার হাতে কষ্টের শব্দাবলী সাজানো
আছে থরে থরে
আমি শব্দগুলো বিষাদের কবিতায় তুলে
এনেছি,
আমি কবিতার দেহ সাজায় ভেঙ্গে পড়া
পুরানো পৃথিবীর জোনাকি আলোয়
একটু হলেও কবিতার মন
ভাল হয়!
চাপাফুলের ঘ্রাণ পায় ঘাস ফুল বিকেলের
ঠোঁটে
বুকের চড়াই – উতরাই ভাঙ্গতে
কবিতা এসে দাঁড়ায় পাশে।

তুমি যে আমার কবিতা

received_63

কবিতা,
তুমি অহর্নিশি …
তুমি অনূ্র্বা মৃত্তিকার কুসুমিত কুমকুম,
তুমি কষ্টের দহনে সহন শান্তির অমরতা
তুমি রঙ মহলে নর্তকীর নাচ
তুমি চির সবুজ যৌবনের অভিলাষ,
তুমি শুভ্র জ‍্যোৎস্নায় তমস‍্য হরিণী ছন্দ
তুমি তমাসিকা-
তুমি নীলাকাশ, তুমি নীল নক্ষত্র
তুমি নীল জ‍্যোৎস্না-!

কবিতা,
তুমি শুভ্র কাশফুল, তুমি শ্বেত কপোত
তুমি দূর্বাঘাসের বুকে ঘুমন্ত শিশির …
তুমি ঝরে পড়া শিউলির কান্না,
তুমি গোলাপ, হাসনাহেনার সুগন্ধা —–
তুমি তাঁতে বোনা খট খট আওয়াজে মিহি মসলিন বেনারসী –
তুমি হাতে বোনা নকশি কাঁথা,
তুমি জামদানী পল্লীর নব শিল্প কলা ;

কবিতা,
তুমি নববর্ষের প্রথম সকালের রৌদ্দুর
তুমি আম্রকাননে কাল বৈশাখী ঝড়,
তুমি অন্ধকার ভ্রুণ ভেঙ্গে জন্ম নিয়েছ
১৪ – ফ্রেব্রুয়ারি ( বিশ্ব ভালবাসা দিবস) সদ‍্যজাত ভোর …
তুমি রাতের আঁধারে অনন্ত কাল জেগে থাকা ক্লান্ত চাঁদ —-
তুমি কনকনে শীতে গরম কাপড়ের উষ্ণতা।

কবিতা,
তুমি সব কিছুর উর্ধ্বে
সেই তুমি চিরচেনা কবিতা ———— ।

তাং 28.12.2020

আকাশ কেন এত নীল হয় বল না

xW

আকাশ কেন এত নীল হয় বল না
আমি যদি আকাশ হতে পারতাম
কেমন হতো বল না
তোমাকে নীল করে
রাখতাম বুকে ধরে
তুমি জান না, জান না।।

আকাশ তোমার জন্য নীল হয়
ঐ নীলাকাশ ছুঁয়ে ছুঁয়ে, ক্ষণে ক্ষণে
নির্মল নীলিমার সাগর হয়ে যাও তুমি অভিমানী মেয়ে
আকাশের মত বিষন্ন মুখটি তোমার
ভারী কালো মেঘ হয়ে কেন থাকে
তুমি বল না, বল না।।

পাহাড় কেন এত সুন্দর হয় বল না
আমি যদি পাহাড় ছুঁতে পারতাম
কেমন হত বল না
সবুজ পল্লব মায়াবী ছোঁয়ায়
মন তোমার হারিয়ে যেত
গুল্ম শাখা পাপড়িগুচ্ছ লতায়পাতায়
কেমন হত বল না, বল না
আকাশ কেন এত নীল হয় বল না, বল না।।

সাগর কেন এত গভীর হয় বল না
ঐ মেঘেরা তোমার বুকে থাকে কেন ভেসে
তুমি জল হলে
আমি স্রোতের শ্যাওলায় ঢেউয়ে ভেসে যেতাম দূর অজানায়
অনন্ত ভালবাসার গল্প করতাম দু’জনাই
দক্ষিণা হাওয়ায় অনন্ত প্রেমের স্বর্গীয়
সে সুর ভেসে আসে কোথা থেকে
বল না বল না
আকাশ কেন এত নীল হয় বল না বল না।।

ডানাহীন লাল ঠোঁটে স্বর্ণালী ভালবাসা

index

কখনো কি দু’ হাতে তুলে নেবে না দুঃখ নামের আকাশটাকে
প্রতীক্ষায় রেখেছ তুমি আমাকে,
কখনোই কি একান্ত নিভৃতে কাছে আসবে না,
ঘাস ফুল কষ্ট নীড়ের নীল ঠোঁটে
আমার কষ্টগুলো আছড়ে পড়ে,
তুমি দেখো না:
তুমি, আমি
একই আকাশের নীচে
কত কথা জমে আছে তোমার ওই ডানাহীন লাল ঠোঁটে
তুমি বলবে,
আমি শুনবো
পলক পড়বে না ও চোখে,
সীমাহীন নীল আকাশ ছুঁয়ে
জ্যোৎস্নারা স্নান করবে দু’টি হৃদয় ঘিরে;

নদীর জলে সোনার থালায় চাঁদ উঠেছে
মিষ্টি হেসে,
মেঘ পরীদের ডানায় ভেসে
ভাবনার অথৈই জলে সাঁতার কেটে
তুমি, আমি যাব ভেসে,
শ্রাবণ মেঘের দেশে!

মন বাড়িয়ে আকাশ খুঁজি
দু’ ফোঁটা দুঃখ আমি কোথায় রাখি
তোমার ভালবাসার সাত কাহন আমায় সিক্ত করেছে,
কখনো ভাবিনি তুমি অন্য কারও –
অন্য কারও আপন জন হতে পার
ভেবেছি তুমিই আপন,
তুমিই প্রিয়!
তোমায় একটি কবিতা শোনাব,
অমনি বললে তুমি,
আমি কোন কবিতা শুনতে চাই না
আমি
আমিই তোমার লেখা কবিতা হতে চাই
পারবে তুমি?
আমায় নিয়ে লিখতে;
বিশ্বাসের একটা ব্যাপার আছে
আমি, আমিই কষ্ট দিয়েছি তোমায় অকারণে হয়ত,
কেন পারবো না
আমি শ্রাবণ মেঘের আকাশ হয়েছি তোমার জন্য,
একান্ত আশ্রয় ভেবে ঝাঁপ দিয়েছি
তোমার ও উত্তাল বুকে,
সবুজ শ্যামল এক কাজল নদীর বাঁকে
রাতের পালকে,
মাথা রেখে আমার বুকে
এক কবিতা মেয়ের ঘুম ভাঙ্গবে,
তোমার নরম ঠোঁটের স্পর্শ সুখে
এতো আমার স্বপ্ন!
আমার সাজানো কাশবনে
হঠাৎ দমকা হাওয়ার আগমন
ভাবনার বেড়াজালে আমি কিছুটা সময় আটকে থাকি
পর মুহুর্তে দেখি,
ভালবাসা মাখা দু’ হাত বাড়িয়ে
আমায় বুকে তুলে নিলে
তুমি আমার চোখের জল মুছে দিয়ে বললে,
আর মন খারাপের দিন নয়,
চলো আমরা দারুচিনি দ্বীপের দেশে হারায়,
তুমি যে আমার কে
কি করে বোঝায়,
ও কবিতা মেয়ে;
এক মুহুর্তে বুকের কালো মেঘ সরে গেছে,
বিষন্ন আকাশ নীলাভায় সেজেছে
সাত রংধনু স্বপ্ন আঁকছে,
স্বপ্ন ভাঙ্গা কাঁচের আওয়াজ থমকে গেছে
নীল বেদনা মেয়ে,
শিশির ভাললাগায় অপলক চোখে
শুয়ে আছে সবুজ ঘাস বুকে,
একমুঠো হাসনাহেনা স্বপ্ন!
দক্ষিণা বাতাসে একটি পুরনো জনপ্রিয় গানের সুর ভেসে এলো
আআআ আ আ
কে জানে, কত দূরে
সুখেরই ঠিকানা
প্রতিদিন দেখা হয়
তোমার, আমার
তবুও মোরা রয়েছি অচেনা
কে জানে, কত দূরে
সুখেরই ঠিকানা!
বুধবার, ০৬ মার্চ ২০১৯

স্বাগতম হে ২০২১ সাল

hhpp

আজ ছিল সর্বনাশা ২০২০ সালের শেষ দিগন্তের সূর্যাস্ত
দিন শেষে বেলাশেষের শেষ সূর্যাস্তের সাথে বিদায় নিল কোভিড ১৯ আক্রান্ত ২০২০ সাল,
বছরের শেষ রাত
শহরের সমস্ত রাতগুলো থেকে এই রাতটা কি একটু ব‍্যতিক্রম হবে ?
পুরো একটা শাল পৃথিবী শুদ্ধ কোভিড আক্রান্ত হল।

২০২০ সালের শেষ ডিসেম্বর এর রাত কি খুব বেশি দীর্ঘ রাত হবে ?
সেই কবে আমি মাঝসিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ২০২১ কে স্পর্শ করছি
সাথে সাথে খুন হয়েছিল কোভিড ১৯
জীবন্ত ছিল কোভিড ২০:
সমগ্র পৃথিবীটাকে গিলে খেয়েছে
জানিনা কোভিড ২০ কতটা ক্ষুধার্ত ছিল
এভাবেই কষ্টের নীলাম্বরীতে ডুবেছে না জানি কত দিন রাত সপ্তাহ মাস বছরের পর বছর;
করোনা’র দাবানলে জ্বলেছে পৃথিবী।
মনে হয়েছে কত কাল আক্রান্ত হয়েছে পৃথিবী.
কোভিড নিয়ে অনেক যুদ্ধ হয়েছে
আজ মানুষ বড় বেশি ক্লান্ত!
করোনার ভয়ঙ্কর দিন রাত্রি গুলো
আজ রাতেই শেষ হোক
এটাই প্রত্যাশা আমার।

হে সুমহান সৃষ্টিকর্তা
তোমার রহমতের বারী ধারায় সিক্ত করে তোল পৃথিবীর মাটি
আগামীকাল ২০২১ সালের সূচনা সূর্যোদয়ে সব গ্লানি ধুয়ে মুছে যাক:
সম্পূর্ণ নতুন রুপে হেসে উঠুক পৃথিবী!
আর যেন কোভিড ১৯ -২০ ছুঁতে না পারে ২০২১ সালকে।

নতুন সূর্যোদয়ের প্রথম সোনালী ভোরের দরজায় এই প্রত‍্যাশা রাখি
শুভ হোক নতুন ভোরের নতুন বছর ২০২১ সাল
সবার জন্য;
শুভ হোক ইংরেজী শুভ নববর্ষ।
___________________
.
শুক্রবার, ০১ জানুয়ারী ২০২১
রচনা কাল: ৩১.১২.২০২০

শরতের মায়াবতী মেঘ মেয়ে

I9ZmBD

এই কে তুমি ? ও শরৎ কন‍্যা
কাশফুল মেয়ে,
নাকি কেশোবতী অনন‍্যা!
অপরূপ তুমি, রূপকথার রাজকন্যা
মায়াবতী মেঘ, তুমি বলেছিলে, এই শরতের শেষ বিকেলে
পোড়াদহ রেলজংশনের কাশবনে বেড়াতে যাবে

আমিও যাব তোমার সাথে,
চকিত তোমার আহ্বান!
তোমার সরল নিমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারিনি আমি।

কি করে ফেরাই বলো মন:
কাশফুল আমার অসম্ভব প্রিয়!
ভাললাগা, ভালবাসার বলতে পার
যমুনার পাড়ে,
ব‍্যাকুল কাশবনে তোমার সাথে হারাবো না হয় কিছুটা সময়
মায়াবীনি মেঘ, তুমি দু’পায়ে আলতা পরেছ
লাল পাড় সাদা কাশফুল শাড়ি পরেছ:

কাজল টানা দু’চোখ তোমার
কত কথা বলছে,
দু’হাতে নীল চুড়ি
স্বপ্নের ছবি আঁকছে;
গুচ্ছ গুচ্ছ কাশ ছড়ায় তোমার নিঃশ্বাসের শব্দ চারিদিকে বাতাসে ভাসছে।

মেঘ বালিকা, তোমার ভেজা ঠোঁট ছুঁয়ে শিশির বিন্দু ভালবাসার কবিতা লিখছে:
সবুজ ঘাসের দু’চোখ অভিমানে ভরেছে
মেঘ, মেঘ মেয়ে তুমি বলো না
তুমি ডেকেছিলে আমায় এই কাশবনের ভীড়ে
আমি না এসে পারিনি থাকতে!

শতকৃষ্ণচূড়া রং শান্ত বিকেল
আমি মাড়িয়ে এসেছি দু’পায়
এক পৃথিবী ভালবাসা উপচে গেছে স্বর্গীয় কাশবন ভাবনায়!

হতেম যদি গুচ্ছ গুচ্ছ কাশের ছড়া
শিশির ভেজা সোনালী ভোরের নরম আলোয় অকপটে নিজেকে বিলিয়ে দিতাম!
শুনেছি স্বপ্ন বেড়াতে যায়
উন্মুক্ত আকাশে ডানা মেলে
তারাদের দেশে:
একমুঠো দুঃখ জয় করে
আজ এই প্রথম কোন
স্বপ্ন সত্যি হলো
হাজারো দুঃস্বপ্নের ভীড়ে এই শরতে তুমি পাশে আছ জেনে।

অরাত্রি’র প্রেম

1-SM764929

অভিমানী মেয়ে অরিত্রি নীলা, নীল বেদনা নীড়ে অভিমানের আঁচল সরিয়ে
ভালবাসার তিলক চিহ্ন এঁকে দাও এ চাঁদ মুখে,
হৃদয়ের অলক্ষ্যে ভাললাগা অনুভূতিতে প্রেমের প্রদীপ শিখা জ্বালিয়ে দাও — আলতো হাতে;
তুমি নীল আকাশ শাড়ি পরে সন্ধ্যার নরম পালকে নিঃশব্দে ঘুমাও কেমন,
পূর্ণিমা রাতের জ‍্যোৎস্না তোমার খোলা বুকে আছড়ে পড়ছে —
টুপটাপ শিশির ঝরছে।
শাড়ির নীল আকাশ আঁচল খসে গেছে কবে;
আমি মোমের আলোয় দেখেছি তোমাকে।

তুমি কোন মেয়ে নও
অপ্রকাশিত এক কবিতার অরাত্রি প্রেম,
নক্ষত্রের নীল ফুলে ফুটেছ তুমি এক প্রহরে
রাতের আকাশ জুড়ে কখনো তুমি এই মেঘ
এই বৃষ্টি :
তুমি নীল নক্ষত্র মেয়ে দিরাত্রি —
কবিতা তোমার কথা বলে,
তোমার আদ্যপান্ত ঠাসা কবিতার অক্ষরে।
তোমার ঠোঁটের আভায়
চোখের পাতায়,
চুলের খোঁপায়
মুখের কমনীয় গাঢ় সবুজ আভা তুলতুলে নরম ত্বকে দূর্বা ঘাসে
রৌদ্র শিশিরের আলো ছায়ায় কবিতার শব্দরা কেমন কানামাছি লুকোচুরি খেলে,
এক জীবনের সবুজ অরণ্যে তুমি গুচ্ছ গুচ্ছ শত রং গোলাপ হয়ে ফুটবে।

বিজয় এসেছে অন্যরকম স্বাদে

43814

বিজয় এসেছে..
বিজয় এসেছে আবার বছর ঘুরে
বিজয় এসেছে স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকা নিয়ে —
বিজয় এসেছে বাংলার অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে,
বিজয় এসেছে ——–
কোথায় বিজয় —–
বিজয় কোথায়?
বিজয় তুমি দেখতে কেমন ?
বিজয় মানে কি লক্ষ্য লক্ষ্য নারী পুরুষের লাশের স্তুপ –?
বিজয় মানে কি এক সাগর রক্তের বন্যা –?
এই এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাঙালি ফিরে পেয়েছে স্বাধীনতা —
বিজয়ের অপার নাম কি বাংলার স্বাধীন মানচিত্র —
বাঙালির লাশ হয়ে মাটিতে ঝরে পড়ার নামই কি বিজয় —
বিজয় মানে কি বাঙালির চেতনায় গেঁথে থাকার নাম মুক্তিযোদ্ধা —
হে বিজয় , তুমি অন্য রকম কষ্ট নিয়ে এসেছ চির চেনা বাঙালির ঘরে ঘরে –
হে বাংলাদেশ ..! এবার ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠো
দেখো বিজয় এসেছে —–
উচ্ছ্বাসিত আনন্দের বন্যায় ভেসে,
স্বাগতম হে বাংলার দামাল সন্তানেরা ! তোমরা রক্তক্ষয়ী মরণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য ফিরিয়ে এনেছ…
বিজয় এসেছে, তোমরা ছিনিয়ে এনেছ প্রতিশোধের অনলে জ্বলে পুড়ে সবুজ বাংলার স্বাধিকার !