সৈয়দ মাজারুল ইসলাম রুবেল এর সকল পোস্ট

বাবা

আমি যখন ছোট ছিলাম বাবা তখন জীবিকার তাগিদে ছুটেছেন।
এরপর বাবা যখন অসুস্থ হলেন আমি বড় হলাম
মুলত বাবার অসুস্থতা সময়ের আগেই আমাকে বড় করে দিয়েছে।
এরপর জীবিকার তাদিগে আমার ছোটা শুরু হলো
বাবাকে নিয়ে আমার সমুদ্র দেখা হয়নি।
আজ আমার চোখের সামনে সমুদ্র আর সমুদ্র জুড়ে সু-বিশাল আকাশ আর আকাশে আমি বাবাকে খুঁজি।

আমাদের এই মধ্যবিত্ত জীবনে বাবার হাত ধরে সমুদ্র দেখা হয় না।
হয় না এমন সময় যে বাবা কে বলতে পারি বাবা তোমাকে ভালোবাসি
তার আগেই বাবারা ঠাঁই নেয় আকাশে।

বাবাদের এই চলে যাবার সময়টা আসলে সব বয়সের সকল মানুষের কাছে বড্ড অসময়।
আর আমাদেরও বাবার হাত ধরে সমুদ্র দেখার ইচ্ছে টা থেকেই যায়
থেকে যায় বাবা তোমাকে ভালোবাসি শব্দটা বুকের ভেতরে এক টুকরো কষ্ট হয়ে।
অগ্যতা কখন বাবা ছেলের সমুদ্র ভ্রমণ দেখে চোখটা ভিজে যায় আকাশটা তখন বড্ড ঝাপসা দেখায়।
বাবার কোনো ছবি নেই আমার কাছে তবুও চোখ বন্ধ করলে প্রাণবন্ত এক হাসিমাখা মুখ ভেসে উঠে মনের ক্যানভাসে,
বাবারা বুঝি এমন করেই সন্তানের বুকে বেঁচে থাকে।
আর হ্যাঁ;
বাবাকে কিন্তু আমি বরাবর ‘আব্বা’ ডাকতাম
আব্বা তোমায় ভালোবাসি।

২৩.০৬.২০১৮
কুয়াকাটা।

মাদকের বিরুদ্ধে প্রয়োজন পারিবারিক শুদ্ধি অভিযান

অপরাধিরা সবচেয়ে বেশি প্রতারনা করে তার পরিবারের সাথে। এমন অনেক কে দেখা যায় ধুমপান সহ প্রায় সব ধরনের মাদকের সঙ্গে যুক্ত কিন্ত তাদের পরিবারের কেউ এই সত্য জানেই না। কেউ যদি বলে উল্টো তাদের কথা শুনতে হয়।

চারদিকে অসুস্থ প্রতিযোগীতা। পরিববারের কর্তা ব্যাক্তির আয়ের উৎস কি? সে যে ব্যয় করছে তা কি তার আয়ের সাথে সঙ্গতপূর্ণ? সে কি কোন মাদকের সাথে যুক্ত? এই প্রশ্নের চর্চা আমাদের দেশের পরিবারগুলোতে হয় কিনা জানি না। যদি এই প্রশ্নের চর্চা হতো কিছু পরিবর্তন হলেও হতে পারতো।

অপরাধিরা আপনার আমার চারপাশে আছে। আপনার আমার পারিবারে আছে একটু খোঁজ নিন। এই মাদক অভিযানে কোন পরিবারের অংশগ্রহণ দেখতে পেলাম না। কোন পরিবার তার পরিবারের কোন সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। তার মানে আমাদের পরিবার আমাদের সমাজ অপরাধিদের লালন করছে শুধুমাত্র স্বজন বলে?

তাহলে দেশে কোন কি মাদক চক্র নেই? তাহলে এই মাদক চক্রের কারো পরিবার নেই? কারণ দুটি এক- হতে পারে পরিবারের লোক জানেই না তার পরিবারের কেউ একজন মাদকের সাথে জড়িত। দুই- আথবা পরিবার জেনেশুনে তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। এই না জানা ও প্রশ্রয় যে কান্না কারণ হতে পারে এটা কেউ চিন্তাতেই আনে না।

মাদকের বিরুদ্ধে পারিবারিক শুদ্ধি অভিযান জরুরী। সব স্বজন হারা মানুষের কান্নার রং এক। অপরাধির পক্ষে পারিবারিক ও পুলিশি আশ্রয় প্রশ্রয় বন্ধ না হলে অপরাধ সংক্রামণ থামানো যাবে না। নাম মাত্র অভিযান আর কিছু স্বজনদের কান্না ছাড়া আদতে কোন পরিবর্তন বয়ে আনবে না। ক্রসফায়ারের নামে যে হত্যা চলছে এর দায় পরিবার ও রাষ্ট্রকে সমান ভাবে নিতে হবে।

কোটা সংস্কার এবং আমি

কোটা সংস্কার এবং আমি

আমার জন্ম স্বাধীন বাংলাদেশে। দেশের প্রতি আমার ভালোবাসা সব কিছুর উর্ধ্বে। এবং গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা লালন করি।

যখনই দেশে কোনো সংকট তৈরি হয় নিজের মতো করে একটা সমাধান খুঁজি। প্রচলিত সরকারী চাকুরিতে কোটা থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সম্পূর্ণ ভাবে বাদ দিয়ে বাকি কোটা বহাল রেখে কোটা সংস্কার করা সম্ভব।

মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান এবং প্রেষণা দেবার জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালায়ের মাধ্যমে সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের একটা ডাটাবেজ তৈরি করে। প্রয়োজন অনুসারে তাদের সন্তান এবং নাতি পরিবার ভিত্তিক একজনকে চাকুরি দেয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এবং ভাতা সহ আর যাবতীয় সুবিধা তো থাকছেই।

যেহেতু মেধার কোন বিকল্প নেই তাই জন প্রশাসন মন্ত্রনালয় বিসিএস এর জন্য আলাদা দুটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে:

১। মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বিসিএস ( ১০০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা )
* ১৯৭১ থেকে সময় হিসেব করে একটা যুক্তিসঙ্গত সময় পর্যন্ত। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতে আগামী পাঁচ অথবা দশ বছর। সকল কে উদার ভাবে এই বিশেষ বিসিএস মেনে নিতে হবে।
এরপর এই পরীক্ষা বিলুপ্ত হবে।

২। নিয়মিত বিসিএস ( নারী, উপজাতি, প্রতিবন্ধী কোটা )

মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বিসিএস পরীক্ষায় শুধু মাত্র তারাই অংশগ্রহণ করতে পারবে যারা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় হতে সঠিক মুক্তিযোদ্ধা বলে সনদ প্রাপ্ত তাদের সন্তান বা নাতি। মেধার ভিত্তিতে যে যেখানে যোগ্য সেখানে তাকে নিয়োগ দিতে হবে।

আর নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সহ সকলে অংশগ্রহণ করবে। এখানে সীমিত ভাবে নারী, উপজাতি ও প্রতিবন্ধী কোটা বহাল থাকবে। এখানে সমতা এবং মেধার প্রতিযোগিতা হবে। মেধা ভিত্তিক নিয়োগ হবে।

করিম ও রহিম কে এক টেবিলে খাবার দিয়ে করিমের প্লেটে ইলিশ আর রহিমের প্লেটে পাঙ্গাস দিলে সেটা চরম বৈষম্য। যতোই যুক্তি দেয়া হোক রহিমের জন্য এটা মেনে নেয়া সহজ না।

যেখানে সুবিধা দিতে চান দিন। যেখানে সমতার প্রশ্ন সেখানে ব্যক্তিবিশেষে সুবিধা দেয়া বন্ধ করুন। সমতা থাকলে সংঘাত থাকবে না।

সময় অসময়

যখন আমি নারী ভালোবাসলাম তখন তার মানুষ হবার প্রাণানন্ত চেষ্টা।
যখন আমি মানুষ ভালোবাসতে চাইলাম সে চিরায়ত নারী।
সময়ের আবর্তে শরীরের গন্ধ বিলীন হয়,
সবুজ রং ধুসর হয়
পুরাতন চালের মতো ভালোবাসায় গায়ে সফেদ আবরণ পড়ে।
হায়্ সময়! সুখস্মৃতি বিস্মৃত হবার আপ্রাণ চেষ্টায় ক্লান্ত।
তবে কি ভালোবাসা সময়ের দাস?
আনুগত্য কি শুধু রঙ্গীন আর সবুজ বেলায়?
তবু আজ প্রার্থণায় বলি ভালোবাসা ভালো থাক
প্রাচীন পৃথিবীতে আমিও বিস্মৃতি হবো শুধুই সময়ের অপেক্ষা
একটি নিঃপ্রাণ সময়ের অপেক্ষা।

তোর জন্য কাব্য

মেঘবালিকা-
শোন;
তোকে বলা হয়নি ইদানিং আমি ভালোবাসা শব্দের
নতুন মানে খুঁজে পেয়েছি
এই যেমন ভালোবাসা হচ্ছে ভরনপোষণ
আবার হাসি ঠোটে না খুঁজে চোখে খুঁজি
আর আঙ্গুলে স্পর্শে হৃদয় খুঁজি
কুয়াশার রাতে চাঁদকে মনে হয় স্মৃতির তিলক
হাসছিস? হেসে যা তোর গতানুগতিক জীবনে একটু
হাসির যে বড্ড প্রয়োজন
গোধূলির আকাশে এই কথাটি প্রায়শই লেখা থাকে।
মেঘবালিকা-
ঝুম বৃষ্টির রাত অব্দি বাঁচবো কিনা জানি না
মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত কিন্তু আকস্মিক
তাই মাঝ রাতে কখনও ঘুম ভেঙ্গে গেলে বাকি রাতটুকু
পাপ পূণ্যের হিসেব করতে করতেই মুয়াজ্জিনের ডাক
” ঘুম থেকে নামাজ উত্তম”
তুই জেনে খুশি হবি লেপের উষ্ণতা আমাকে ধরে রাখতে
পারে না
আমার অহমের সবটুকু লুটিয়ে দিয়ে অবনত হই সেজাদায়।
মেঘবালিকা –
আমাদের বেঁচে থাকা পূণ্যের থলি সমৃদ্ধ করার অবকাশ
আমাদের বেঁচে থাকা উৎসব,
উৎসব বিগত জীবনের ভুলগুলো শুধরে নেবার।