মো: সাব্বির আহমদ এর সকল পোস্ট

ডাক্তার সাহেব

ডাঃ সঞ্জুমোহন দেব। উনি হাসলে আমার মনে হতো উনার ঠোঁটের উপরিভাগের গোঁফ গুলাও হাসছে। ডিপ ব্ল্যাক কালারের গোঁফগুলো চিকচিক করে হাসছে। হাসি আর গোঁফের নতুনত্বে উনার চল্লিশোর্ধ্ব বয়সটা কোথায় জানি লুকিয়ে যেতো।
.
উনার ঘনকালো গোঁফের গোপনীয়তা থাকলেও মুখের হাসিতে কোনো গোপনীয়তা ছিলো নাহ। একেবারে’ই সাদামাঠা হাসি। কথাবার্তাও ঠাণ্ডা প্রকৃতির। অন্যসব ডাক্তারদের মতো ততটা উগ্রমেজাজী নাহ। ব্যবহারেও কোনো প্রকার অহমিকা দেখিনি। আমি ইনসোমনিয়ায় ভুগতাম। উনার থেকে চিকিৎসা নেয়ার পর ঠিকঠাক ঘুম হতো। আমার জন্য ভিজিট ফি একেবারেই ফ্রি ছিলো।
.
দুই..
সেদিন উনার চেম্বার থেকে বিদায় নিয়ে কয়েক পা এগিয়ে আবার দম ফেলি। পেছনে তাকিয়ে দেখি সঞ্জুদা আমার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছেন। আগুপিছু না ভেবেই হুট করে বলে ফেললাম ‘দাদা আজ যদি ফি দিই আপনি কি রাগ করবেন’?
‘অবশ্যই করবো’ উনি সিরিয়াসলি বললেন।
.
আমি আর হাঁটতে হাঁটতে উনার চেম্বার থেকে বেড়িয়ে আসার সময় আরেকবার পেছনে তাকালাম। নেক্সট সিরিয়ালের রুগী চেম্বারে ঢুকছে। এবার আর উনাকে দেখতে পেলাম না। কিন্তু ঐ স্লিপিং পিলটা কাজ দিচ্ছিলো না।
.
আগের চেয়ে ইদানীং আরো বেশী রাত জাগি। রাত কাটে উচাটন করে। ভোররাতের দিকে ঘুমালে সকাল দশটার আগেই ঘুম ছেড়ে যায়। ১২ টা ১ টা পর্যন্ত আধঘুমন্ত অবস্থায় বিছানায় শুয়ে থাকি।
.
তিন..
১৬ অগাস্ট ভোর নয়টার দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেলে ঐ দিন ভোর দশটা পর্যন্ত বিছানায় শুয়ে হাসফাস করেও আধঘুমন্ত অবস্থাটা আমার মধ্যে আসলোনা। জেগে জেগে বিছানায় শুয়ে থাকতেও কেমন অস্বস্তি লাগে। উঠোনে রাখা তেপায়া টুলে বসে চোখ ডলতে ডলতে ভাবছিলাম বিকেলে একবার সঞ্জুদার চেম্বারে যাবো।
.
তখন আব্বার গলার আওয়াজ শোনে ভাবনায় ছেদ পড়লো। ‘আজ দেখছি খুব সকাল সকাল। তা কোথাও বের হবে নাকি’ ?
‘নাহ’ আমি উঠে দাঁড়ালাম।
‘নাস্তা করবে চলো’ আব্বা ঘরের দিকে যেতে যেতে বললেন। ‘ডাক্তার সাহেব ৮টার দিকে পরলোকগমন করেছে।’
.
‘ডাক্তাররাও পরলোকগমন করে ?’ চোখেমুখে পানি দিতে দিতে মাথার ভেতর প্রশ্নটা খেলে গেলো ।
‘ডাক্তার সঞ্জুমোহন’ আব্বা স্থির গলায় বললেন। ‘ওটা তোমার ডাক্তার’
আব্বার সব কথা’ই আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু ঐদিনের কথাটা বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাঝামাঝি পড়ে গেলে আমি আবারো জিজ্ঞাসু গলায় বলি ‘কে? কি নাম?’
.
চার….
নির্ভুল, স্পষ্ট, অসংকোচনীয় ভাবে আব্বা আবারো বললেন ‘ডাক্তার সঞ্জু মোহন’। আয়নার দিকে তাকাতেই সব কিছু ঘোলাটে দেখাচ্ছিল। তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ‘আমি বের হবো’ বলে চলে আসলাম।
.
ডাক্তারেদের থাকতে হয় বিরাট অবদান। তাদের ধর্ম মানে ধনী গরীব সবাইকে সেবাদান। অধিকন্তু ডাক্তার সেবাদানে করে ব্যবধান।
.
সঞ্জুদা নয় নং ইউনিয়নে সরকারী ক্লিনিকের চিকিৎসক ছিলেন। ক্লিনিকের ডিউটি শেষে বিকেলে চেম্বারে বসতেন। প্রাইভেট চিকিৎসা নিলে ফি বাবত বড়জোর পঞ্চাশ টাকা দিলে হতো। অতি অল্পটাকার ডাক্তার তাইনা ? কিন্তু পুরো ইউনিয়নের সাধারণ অসাধারণ মানুষ এক নামে তাকে চিনতো। তার চিকিৎসায় সবাই ফল পেতো।
.
পাঁচ.
সঞ্জুদার বাড়িতে সমুদ্র গভীর মানুষের ভীর। ঘরটা উঁচু ভিটেতে থাকায় বাহিরে থেকে ঘরের বারান্দাটা আগে চোখে পড়ে। একজন ত্রিশ কি পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী মহিলা বেহুঁশ অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েকজন মিলে পাষাণের মতো নৈঃশব্দে তার সিঁথির সিধুর মুছে দিচ্ছে। দুই হাতের শাখা খুললো।
.
উঠোনের এককোণে লোকে লোকারণ্য। ডেড বডিটা ঐ কোণটাতে রাখা। সবাই জটলা বেঁধে দেখছিলো। বাড়ির প্রাপ্তবয়স্করা গুনগুন করে কি জানি পড়ছে। এদের চোখে বিলকুল জল নেই। আছে শুধো হাহাকার। এরা ডাক্তার সাহেবের উপর বিরক্ত নাকি অনুরক্ত? দেখে বুঝার উপায় নাই।
.
ছেলেপুলেরাও পাহাড়ের ন্যায় শক্ত হয়ে বসেছে। ওদের চোখের কিনারায় জলপ্রপাত সশব্দে ঝরছে।’এরা পাহাড় হলে দৃশ্যটাকে বলতে হতো ঝর্ণা। মানুষ বলেই দৃশ্যের নাম দেয়া হয়েছে কান্না”।
.
ছয়….
সঞ্জুদার ডেডবডির পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই মনে হলো একবার বলি। ‘দাদা কি ঔষধ দিলেন ? কাজ হয়না। ইনসোমনিয়া তো বেড়েছে বললাম না কারণ সঞ্জুদা তখন ঘুমাচ্ছেন। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন উনি ঘুমের মধ্য’ই হাসলেন।
.
আমার মনে হলো উনার ঠোঁটের উপরিভাগে থাকা গোঁফ গুলো হাসছে। ডিপ ব্ল্যাক কালারের গোঁফ চিকচিক করে হাসছে। হাসি আর গোঁফের নতুনত্বে উনার চল্লিশার্ধ্ব বয়সটা কোথায় জানি লুকিয়ে যাচ্ছে।
.
মো: সাব্বির আহমদ।

ফেরা

দূর্ঘটনার ঊর্ধ্বে আমরা কেউ’ই নই। প্রশাসনের কাছ থেকে কতটুকু নিরাপত্তা আশা করা যায়? তাও ঘুষ প্রথাটা যদি অপ্রচলিত থাকতো। কিছুটা আশ্বস্ত হতাম। ট্রাফিক চেকপোস্ট! ট্রাফিক ক্যাম্প!! জেব্রা ক্রসিং! গতিরোধক! ইত্যাদি। ইত্যাদি। অর্ধেক মাইল দূরত্ব বজায় রেখে এসব আইন পালন করা হলেও দূর্ঘটনা (এক্সিডেন্ট) হাত থেকে রেহাই ততটা সহজ নয়। আশংকিত/অনাশাংকিত যায়গা এ্যানি প্লেস এক্সিডেন্ট চোখের পলক উঠানামা সময়টুকুর ভেতরে হয়ে যেতে পারে।
.
তাই রাস্তাঘাটে বের হওয়ার আগে আমি। আমার আম্মা আব্বার দোয়া পুঁজি করে নেই। আর যানবাহনে চলার দোয়া। কেবল এইটুকুই নিরাপদ রাস্তা দেখায়। অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দেয়। প্রাণ কেড়ে নেয়া তো দূরে থাক। অশুভ শক্তি পাশ ঘেঁষতে’ই পারেনা।
.
তবু মনে হয় অশুভ শক্তি গুলো ট্রাপ পেতে রাখে। উদ্দেশ্য হাসিল হতেই হবে। পাশ থেকে না হলেও দূর থেকে কোনোনা কোনো মাধ্যমে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। মাধ্যমটা হতে পারে
.
একটা অটোরিকশা (সি,এন,জি) ষাটোর্ধ ড্রাইভার বেপরোয়া ভাবে চালনা করছে। হঠাত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমার বাইকটার পেছনে কষে ধাক্কা দিলো। বাইকটা বিকট আওয়াজ করে কংক্রিটের রাস্তায় আছড়ে পড়ে। ক্ষণিক দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মোটামুটি ধরণের হয়েছে।
.
আমি নির্দোষ স্পটে জড়ো হওয়া কিছু লোক অটোরিকশা (সি,এন,জি) ড্রাইভারকে উত্তমমধ্যম দিতে যাচ্ছিলো। ড্রাইভার ষাটোর্ধ হওয়ায় উত্তমমধ্যম নিম্নমানের বিকল্প রাস্তা ধরলো। তবে সেফাত উল্লার মতো গালি না পাড়লেও জনতা তাদের সাধ্যি মতো গালাগাল দিয়ে ড্রাইভারকে একেবারে ধুয়ে দিলো।
.
অন্যদিকে কিছু লোক কুণ্ডলী পাকিয়ে আমায় দেখছিলো আর দূর থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা পিঁপড়ার দলের মতো আসতে আসতে বলছিলো, ছেলেটা…ছেলেটা কি বেঁচে আছে? আমার যতটুকু মনে পড়ে কাঁপা কাঁপা স্বরে বলছিলাম ‘আছি আমি’।
.
কয়েক মিনিট পর নিশ্চিত হলাম যে আসলেই আমি বেঁচে আছি। তারপর হাঁফ ছেড়ে বাঁচা অন্তত ‘বেঁচে আছি’ বলে আম্মা আব্বাকে বুঝ দেয়া যাবে। তারওপর পুলিশি বিপাক। কর্তব্য ঠিক করলাম বাড়ির দিকেই ফিরে যাবো।
.
দূর্ঘটনাটা আজ দুপুর দুইটার দিকে ঘটেছে। এর আগে। রাতে তানিয়া আপুর সাথে ম্যাসেঞ্জারে মৃত্যুর ব্যাপারে কথা হয়েছে। উনাকে আমি যাই বলিনা কেনো। তখনো আমি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। তারপর খবর পেয়ে সকাল নয়টার দিকে একজন হিন্দু সম্প্রদায় ব্যক্তির মরদেহ দেখতে গেলাম।
.
বাসায় এসে গল্পের মতো করে ৩০০/৩৫০ শব্দের একটা স্ট্যাটাস লিখে সময় সুযোগ করে পোষ্ট দিবো বলে অনলি মি করে রেখে দিয়েছিলাম। ইভেন এখনো আছে।
.
অথচ দুপুর দুইটার এক্সিডেন্টের ভাষা ছিলো ”টাইম এন্ড টাইড ওয়েট ফর নান” আসলেই তো। সময়তো বহমান। আমি পোষ্ট করতে পারোনি তো কি হয়েছে ? অন্য কেউ করবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের যায়গায় লিখা হবে। মুসলিম সম্প্রদায়। সামনে থাকবে (মো: ………….আহমদ) পেছনে। সব’ই ঠিকঠাক হতো।
.
আবেগের বশে কিছুদিন অনুসরণ অনুকরণের মাধ্যমে অনেকে জানতে চেয়ে টুরিস্ট ভিসা ছাড়া’ই আমার টাইমলাইন ভিজিট দিতো। রিমেম্বারিং লিখাটা দেখে কেউ অনুশোচনা কেউবা অনুতপ্ত হতো। তারপর পাঁচ হাজার ফ্রেন্ড হয়ে গেলে নতুনদের আহবান জানিয়ে পুরাতন অকেজো এই আমার আইডিটা আনফ্রেন্ড করে দেয়া হতো। আশ্চর্য ব্যাপার নাহ ? আসলেই।
.
”ধ্যাত এই নাম্বারটা শুধো শুধুই যায়গা দখল করে আছে” বলে আত্নীয় স্বজন বন্ধুনান্ধবরাও কন্ট্রাক্ট লিস্ট থেকে আমার নাম্বারটা ডিলিট দিয়ে দিতো। অনেকে মন থেকে আমি নামক নামটা ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলতো। যাদের খুব জ্বালিয়েছি যাদের কাছে আমি অপরাধী ছিলাম, তারা তখন আমার দোষগুণ বিচার করতো না, বাটখারা ছাড়াই মাফ করে দিতো।
.
কোনো জার্নালে না আসলেও আমিময় রাজ্যটা খুউব অল্পদিনেই বুঝে নিবে যে তাদের লিডার জীবন থেকে পালিয়ে বেঁচেছে। পুরো রাজ্য সহে নিবে। মানিয়ে নিবে। কেন নয়! এটাই তো নিয়ম। কর্মস্থলে আমার আসনে পুনঃনিয়োগ দেয়া হবে। আমার আসনে আরেকটা নতুন আমি আসবে।
.
মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়। তাহলে নামটা কেন বেহুদাই মানুষের মনে বেঁচে থাকবে? ”যেহেতু দেহের জন্মের পর নতুন একটা নামেরও জন্ম হয়। সেহেতু দেহের মৃত্যু হলে নামের মৃত্যু কেন নয় ”? আহা জীবন।
.
ব্যাপারটা অন্যদিকে মোড় নিয়ে লাভ নেই। যাই হোক, মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখে আসছি। মৃত্যুর দরজায় কড়া নেড়ে করিডোরে পা রাখার আগেই পড়লো পিছুটান। আশ্চর্য। স্রষ্টার এ কেমন বিধান! বুঝা বড় দায়। আলৌকিক ভাবে’ই বেঁচে গেলাম। এ এক পুনঃজন্ম। শুকরিয়া। শুকরিয়া। অশেষ শুকরিয়া সেই সত্ত্বার নিকট।
.
আবারো বলছি … ঘটন অঘটনের মধ্যেই জীবনযাপন, মনে রাখবেন ‘একটা দূর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না’। যানবাহনে আরোহণে কালে ‘সময়ের মূল্য’ রচনার কথা মনে করবেন নাহ। নাহ মোটেও নাহ।স্থান কাল পাত্রভেদে ‘সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য কিন্তু অনেক বেশী’। রাস্তাঘাটে খুব সাবধানতার সাথে চলাফেরা করবেন।
.
Sabbir

ভার্চুয়াল ভণ্ডামি

কি, হিংসে হয়? আমার মতো হতে চাও ?
মদ খাও মানুষ হও।
.
বর্তমান সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে যাওয়া ডায়লগ/ট্রলের জন্মদাতা সেফাত উল্লাহ (সেফুদা) এর সব অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ বিশ্রী ভাষা আর মদ খাওয়া চিত্র গুলোকে কেনো আমরা ধারণ করছি ? আক্রান্ত হচ্ছি কেন ?
.
তার সম্পর্কে কতটুকু জানি আমরা ? নাকি আদতে কিছুই নাহ! হয়তো জেনে শোনে’ই তাকে অনুসরণ করছি!
.
ইউটিউবে ঝড় তুলা একটা ভিডিওতে সেফাত উল্লাহর স্পিক শোনলাম ‘পৃথিবীর কোনো ধর্মেই সে বিশ্বাসি নাহ’। এমনকি ইসলাম ধর্মতেও নাহ’।
.
মহা গ্রন্থ পবিত্র আল কুরআন, বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (সঃ)কেও বিশ্রী ভাষায় যাচ্ছে তাই গালাগাল করছে। যে স্রষ্টার সৃষ্টি (ধর্ম) বিশ্বাস করেনা, নামধারী মুসলমান হয়েও ইসলামধর্ম মানেনা, সে নাস্তিক নয় কী ?
.
এতসব পেছনে ফেলে রাজনৈতিক/সেলিব্রেটিদের গালির সাগরে ডুবিয়ে দিচ্ছে দেখে যারা তাকে বাহ বাহ দিচ্ছি তারাই বা কোন ধর্মের ? কেমন মানুষ? নাকি তারাও বোতলমারা পাবলিক!
.
যে মহা গ্রন্থ আল কোরআন মানেনা সে নিজেকে মহা পণ্ডিত দাবী করে। সুন্নি বলে দাবী করে। পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের কবি সাহিত্যিকরা যেখানে কোরআনের ভাষার মাধুর্যতার কাছে হার মেনেছে অতঃপর তারা কবি, সাহিত্যিক। অন্যদিকে সেফাত উল্লাহর সেসব কথা আমরা মহৌষধ মনে করে গলাধঃকরণ করছি।
.
ব্যাপারটা আরেকবার বলি:- যে বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ( সঃ) কে গালি দেয় সেই আবার হাদীসের কথা শোনায়,অন্য ভিডিওতে দেখলাম সেফাত উল্লা হজ্জে যাচ্ছে/গিয়েছে! কি লাভ তাতে, সে তো কোনো ধর্ম মানেনা।
.
অনেকে বলবে ‘পাগলে কি না বলে আর ছাগলে কিনা খায়’। তবে পাগলের পাগলামোরও একটা লিমিট থাকা চাই। যদি আনলিমিটেড হয় তাহলে তার স্থান পাগলাগারদে হওয়া উচিৎ। নাহ অস্ট্রিয়ায় হয়তো পাগলাগারদ নাই।
.
আরেক ভিডিওতে দেখলাম যারা(সেফাত) এর মাকে তুলে গালি দিয়েছিলো সে কোনোরূপ প্রতিবাদ ছাড়াই তাদের শান্তশিষ্ট ভাবে (মাকে তুলে গালি দিওয়োনা, তোমারো তো ঘরে মা বোন আছে) ইত্যাদি অসাধারণ লজিক দ্বারা বুঝাচ্ছে। ঐ লজিক’টা জাস্টিফাই করলে দেখবেন, লজিকটা বরাবর ঠিক।
.
কিন্তু সমস্যা হলো লজিক ছাড়া আমারা কোনো কিছুই আমলে নিইনা। কোনটা বুলি, কোনটা গালি!কোনটা হালাল কোনটা হারাম! কে মানুষ। আর কে মানুষরূপী অমানুষ। সেফাতের বেলায় ও নাহ।
.
ব্যাপারটা বুঝুন সেফাত উল্লাজ নিজেই অন্যর মাকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়। আবার লজিক দেখায়। ব্যাপারটা ভূতের মুখে রাম নাম শোনার মতো হয়ে গেলো না?
.
তাকে গালিবাজ বললে চলবেনা, লিডার অব বেড নেমার, কিংবা নির্ভুল একটা গালির ডিকশনারি। অভদ্র ইতর প্রকৃতির মানুষরূপী অমানুষ।

কুরআনে মহান আল্লাহ মুমিনদের ভদ্রতা শিক্ষা দিয়ে বলেছেন-

“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কোনো দল যেন অপর কোনো দলকে উপহাস না করে। কেননা, যাদের উপহাস করা হল তারা উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অপর নারীদের উপহাস না করে। কেননা, যাদের উপহাস করা হল তারা উপহাসকারীনী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরকে দোষারোপ করো না এবং মন্দ নামে ডেকো না। ঈমানের পর ফুসূক অতি মন্দ। যারা তওবা করে না তারাই যালেম।” (সূরা হুজুরাত : আয়াত-১১)।
.
মুমিনের পরিচয় দিতে গিয়ে এক হাদীসে মহানবী সা.বলেন, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না। (জামে তিরমিযী হাদীস : ২০৪৩)।
.
অতঃপর মানুষের বাচ্চা হয়েও আর কারা সেফাত উল্লাকে নিয়ে প্রাউড ফিল করবেন! আইকন অব জেনারেশন বলবেন! তার ভণ্ডামি গুলোকে লিজেন্ডারি ভাববেন! তার মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করে বোতল মেরে মেরে বলবেন…
.
”কি হিংসে হয়? আমার মতো হতে চাও ?’
মদ খাও মানুষ হও।