দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
হাই হ্যালো!
ব্লগে লিখছেন আপনি? শব্দনীড় ব্লগটিতে আসলেই দেখি কবিতার পর কবিতা পোষ্ট আসে। খুব ভাল। আমি কবিতা পছন্দ করি। আমার প্রথম পোষ্টটি তাই কবিতা নিয়ে। আজ আমি আপনাদের বলব কি ভাবে আর কোন ভাষায় কবিতা লিখলে লোকে আপনার কবিতা পড়বে। আর কেউ যদি মনে করেন কেউ পড়লে পড়বে না পড়লে নাই, তাদের প্রতি আমারও কোন বক্তব্য নাই।
আপনি কবিতা লেখেন? আপনি কঠিন ভাষার কবি। আমার পছন্দের নয়।
আমার কি পছন্দ তাতে আপনার কি আসে যায়! হবে না কিছুই বিনিময়, না মন না অন্য কিছু তবু আপনাকে বলি কেন এত কঠিন শব্দের গাঁথুনিতে একটা ভাব ধরে থাকেন? যেন পাঠক বুঝে বাহাবা দিচ্ছে আপনাকে! আমি বলছি, না বুঝে বাহবা দেয়ার লোক আছে এই দুনিয়ায়। আপনি কঠিন ভাষায় লিখছেন উহূ তারা বলছে হু হু।
তার চেয়ে লিখুন না সহজ ভাষায় মন মাতানো কোন কবিতা। পাঠক বাস্তব জীবনের কঠিন থেকে একটু রেহাই পাক। এক একটা কবিতা পাঠ করে পাঠকের মন হয়ে উঠুক আনন্দময়।
লিখে ফেলুন না এমন কবিতা
দুইটি পাড়ায় বড়োই কাছাকাছি,
মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক—
তাদের বনের অনেক মধুমাছি
মোদের বনে বাঁধে মধুর চাক।
তাদের ঘাটে পূজার জবামালা
ভেসে আসে মোদের বাঁধা ঘাটে,
তাদের পাড়ার কুসুম — ফুলের ডালা
বেচতে আসে মোদের পাড়ার হাটে।
আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
আমাদের এই নদীর নাম অঞ্জনা
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে—
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।
মনে রাখবেন কবিতা একটা শিল্প মাধ্যম। কেবল কিছু শব্দই কবিতা নয়, কিছু ভাবই শুধু কবিতা নয়, কবিতার শব্দগুলি চলে কিছু মাত্রা গুনে গুনে, ছন্দে লিখেন বা ছন্দহীন শব্দগুলি সাজাতে হবে মাত্রায়।
এক কাজ করুন না কবিতা লেখার সাথে সাথে ছন্দ নিয়ে কিছু পড়ে নিন না। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা কবিতার ক্লাস বইটি জোগার করে নিন। একেবারে সহজ সরল বর্ণনা পাবেন তাতে।
যেদিন এমন কোন প্রেমময় কবিতা পাব আপনার কাছ থেকে সেদিনের জন্য অগ্রিম শুভেচ্ছা।
আমি আমার কথা বললাম আপনার বক্তব্যটি তুলে ধরুন। যারা মনে করেন আমি লিখব, ব্লগে কিংবা ফেসবুকে পোষ্ট করব, কিংবা জাতীয় কোন নামকরা সাহিত্য পত্রিকায় ছাপবো কেউ পড়ুক বা না পড়ুক কিছু এসে যায় না, তাদের ব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই।
সকলের শুভ হোক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিবারন চক্রবর্তী র কথা শুনেছি আজ আপনার লেখায় নিরঞ্জন চক্রবর্তীর নাম জানলাম । কবিতা গান ওসব আমার দ্বারা হয় না । কবিদের কাজে আসবে ।
পোষ্টে মন্তব্য করার জন্য প্রথমে লাল গোলাপ শুভেচ্ছ নিন।
হাই হ্যালো।
কবিতা আপনার বিষয় নয় তবে আপনি একজন ভালো মানের ব্লগ লেখক হতে পারেন। যদি সহজ সরল ভাবে জীবনের মধুরতম বিষয় সমূহ হোক তা সুখের কিংম্বা দুখের ফুটিয়ে তুলতে পারেন, শুধু আমার একটাই দাবী জীবনটাকে জটিল করে উপস্থাপন না করে একটু সহজ সরলভাবে উপস্থাপন করুন, তীব্র রসবোধর মাধুর্য্য ঢেলে দিন।
আমার কথা আমি বলছি, বলব শুনা বা না শুনা আপনার বিষয়।
আপনার ভালো হোক।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী”র “কবিতার ক্লাস। এতো উপদেশ দিচ্ছেন। কবির নামটাও তো ঠিক করে লিখতে পারলেন না। রবীন্দ্র যুগ শেষ হয়ে গেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব বলয় থেকে বের হতেই কয়েক দশক পার হয়ে গেছিলো। এরপর এলো ত্রিশের দশক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্বীকার করেই তারা আনলেন কবিতার জগতের একটা নতুন ধারা ।
একটা চেঞ্জ এরপরেও এসেছে। এখন চলছে শুন্য দশক। এখন আবার ভিন্ন ধারার সময়। কবিতা শিল্প মাধ্যম অবশ্যই। এখন মাত্রা গুনে গুনে লিখার সময় পা ফেলার ইচ্ছে কবির স্বাধীন ইচ্ছে। কবি ইচ্ছে করলে তাকে স্বীকার করতেও পারেন আবার নাও পারেন। কেউ চাচ্ছে ছন্দকে অস্বীকার করতে কেউ স্বীকার করেই পথ চলছে। কথার ভেতরে কথা, ভাবের গভীরে ভাব – সুক্ষ্ণ অন্তর্নিহিত ভাবের অধিষ্ঠান কবিতায় থাকবেই।
“যদিও সন্ধ্যা নামিছে মন্দ মন্থরে
সব সঙ্গীত গেছে ইংগিতে থামিয়া
ওরে বিহংগ বিহংগ মোর
এখুনি অন্ধ বন্ধ করো না পাখা ”
___ কঠিন ভাবের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ও লিখেছেন।
যাই হোক আপনার মূল্যবান লেখার জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা জানবেন।
আপনাকে আবারো লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
ভুলতো ভুলই, শুধরে নিয়েছি।
খুকুর জন্য
……
যার যেখানে জায়গা, যেন সেইখানে সে থাকে।
যা মনে রাখবার, যেন রাখে
নিতান্ত সেইটুকু।
খুকু,
ঘরে একটা জানলা চাই, বাইরে একটা মাঠ।
উঠোনে একটিইমাত্র কাঠ-
গোলাপের চারা
আস্তেসুস্থে বড় হোক, কিচ্ছু নেই তাড়া।
একদিন সকালে
নিশ্চয় দেখব যে, তার ডালে
ফুল ধরেছে। খুকু,
তার-কিছু তো চাইনি, আমি চেয়েছি এইটুকু।
আমি কবিতা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু কবিতা ভাল লাগে। হা এ কথা সত্যি যদি বাংলা ভাষার ভাল লাগা ১০০ টি কবিতা আমাকে নির্বাচিত করতে বলা হয় আমি হয়ত ৮০ টি নিব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের । আমি জানি আমার এ কথা বলার পর পর অনেকেই যারা এই সময়ে এসে কাব্য চর্চা করেন তারা বলে বসবেন ওর সাথে কথা বলে কি লাভ। আপনারা না হয় কাব্য চর্চা করেন তাই বলে কি আমি আমার ভালো লাগার কথাও বলতে পারব না! আমারতো কেবল গুরুর কবিতাই ভাল লাগে তা তো নয়, আরও অনেক ভাল লাগা কবিতা আছে আমার। আমি জীবনানন্দ বুঝি, অমিয় চক্রবর্তী বুঝি, সুনীল, শক্তি বুঝি, আহসান হাবীব বুঝি, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ বুঝি, আসাদ চৌধুরী বুঝি এ শতাব্দীর কবিতা কেন বুঝি না, ভাল লাগে না।
উপরে যে কবিতাটি উল্লেখ করেছি কি সহজ আর সাবলীল। আমিই কবিতাকে সাধারণ পাঠকের কাছে দেখতে চাই।
উঠোনে একটিইমাত্র কাঠ-
গোলাপের চারা
আস্তেসুস্থে বড় হোক, কিচ্ছু নেই তাড়া।
একদিন সকালে
নিশ্চয় দেখব যে, তার ডালে
ফুল ধরেছে। খুকু,
তার-কিছু তো চাইনি, আমি চেয়েছি এইটুকু।
https://www.shobdonir.com/nazmun-nahar/103148
পড়বেন আশা করি ।
লিংক ধরে ঘুরে এলাম আপনার পোষ্টে।
কিন্তু কি আজিব ব্যাপার দেখেন, গিয়ে দেখি মন্তব্য করতে পারছি না।
পোষ্টটি আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়েছি।
আপনার শুভ হোক।
কবিতা বিষয়ে দীলখুশ মিঞার জবানবন্দী পড়লাম। আসলে হয়েছে কি … মানুষ তার মনের আবেগ আর বিবেক তার নিজস্ব ঢঙ্গে তৈরী করেন। তাতে তাঁর ভাষ্যে, না থাকে শব্দের বাতুলতা অথবা না থাকে অতি শব্দের দশকথন। এখন পাঠক কিভাবে গ্রহণ করবেন তা পাঠকের গ্রহণশক্তির উপর নির্ভর করবে।
তবে হ্যাঁ, কোন লিখাই তৈরী করে পাঠকের হাতে তুলে দেবার আগে কবিকূলের মাথায় রাখা উচিত সেটা কতটা পাঠযোগ্য হচ্ছে। লিখক উচ্চারণে নিয়ন্ত্রণ রাখা ঠিক হবে না।
দীলখুশ মিঞার ব্লগ বাড়িতে আপনাকে স্বাগতম আর লাল গোলাপের শুভেচ্ছা
হাই হ্যালো।
পোষ্টটি পড়েছেন আবার মন্তব্য করেছেন।
আপনি একটা ভাল বিষয়ের অবতারণ করেছেন। পাঠকের গ্রহণশক্তি।
কিভাবে তৈরি হয় পাঠকের গ্রহণশক্তি? কোন একটি বা এক ধরনের কবিতা পাঠ করে করে পাঠকের এক ধরনের অভ্যাস তৈরি হয়, তার কানে এক ধরনের স্থস্তির জায়গা তৈরি করে। কিন্তু সৃষ্টিশীলতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য এই যে, সে একটি জায়গায় এসে স্থির থাকে না। সব সময় সে চলে নানাবিধ পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে। এ পরীক্ষা নীরিক্ষার সময়টাতে পাঠক এসে হুচট খায়, হঠাৎ অনভ্যস্থ উচ্চারণে তার কাছ মনে হয় এ তো ঠিক আগের মতো নয়। তবে যদি লেখাটি আগে থেকে ভাল লাগা কোন একটি গঠনশৈলীর উপর ভিত্তি করে আর সামনের দিকে এগুয়, তবে তা পাঠকের কাছে নতুন লাগলেও যদি তেমন অভিনবত্ব থাকে, সৃষ্টিশীলতার চমক থাকে তবে তা পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
কিন্তু আমি দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, একেবারে নতুন ভাবনা, নতুন উপস্থাপনা যা আগের কোন গঠনশৈলীর উপর ভিত্তি করে লিখিত হয় নাই, তা যখন পাঠকের কাছে আসে তখন তা পাঠক কর্তৃক প্রত্যাখাত হয়। তখন লেখন সান্তনা খুজে এই বলে যে, আমি কোন পাঠকের জন্য লিখি না, নিজের জন্য লিখি কিংম্বা বলে বেড়ায় যে, কবিতা সাধারণের জন্য নয়।
আর এভাবে কবি হয়ে পরেন একে বারে একা ও নিঃস্ব।
মূলত এই ভাবনাটি কবিতার পাঠকশূন্যতার অন্যতম কারণ।
এটা আমার ভাবনা, অন্য কেউ অন্যভাবে ভাবতে পারেন।
আপনার কল্যাণ হোক।
কিভাবে সৃষ্টি হয় কবিতা? কি থাকে কবিতায়?
কবিতায় কি থাকে, তা খুঁজে বের করা অসম্ভব নয়, মানবিক-অমানবিক সব কিছুইতো থাকে কবিতায়, থাকে ভাষার ইন্দ্রজাল, অপরিসীম কল্পনা; কিন্তু কিভাবে সৃষ্টি হয় কবিতা, তা নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারিনা। … কবিতার কাঠামো, তার ছন্দ ও মিল বা অমিল সম্পর্কে কিছুটা শিক্ষা দেয়া সম্ভব কিন্তু প্রতিটি প্রকৃত কবিতাই অভূতপূর্ব, রচিত হওয়ার আগে তার রচয়িতাও সেটি সম্পর্কে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারে না। কবিতা লেখা হয়ে যাওয়ার পরই শুধু উপলব্ধি বা অনুভব বা বিচার করে দেখা সম্ভব সেটা কবিতা হয়েছে কিনা, বা হয়েছে কতটা অসাধারণ।….
মানুষ তার আপন মনের ভাবনাকে প্রথমত শারিরীক অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে অন্যজনকে প্রকাশ করে, অত:পর নানাবিধ ধ্বনির সাহায্যে। যেহেতু ধ্বনি একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রতিস্থাপিত হয় ইথারের স্পন্দনের মাধ্যমে তাই সেই ধ্বনিকে একটি নির্দিষ্ট গাথুনিতে বেধে দিয়ে তৈরি করা যায় একটা রিদম। ভাষার উৎপত্তির শুরু থেকে মানুষের সৃষ্টিশীল ভাবনা এই ধ্বনিগুচ্ছ নানাবিধ গাথুনিতে গেথে অন্যজনে পৌছে দিত। পৃথিবীর প্রতিটি ভাষায়ই তাই প্রথম উদ্ভব হতে দেখা যায় পদ্য বা গান। মানুষের মস্তিষ্ক অন্তঃস্থিত যে মেমোরি সেল রয়ে গেছে সেখানে শ্রুতি বা দৃশ্য দর্শনের মাধ্যমে যেসব তথ্য পাঠানো হয় তাকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে স্মরণযোগ্য করে রাখার জন্য এবং প্রয়োজনীয় সময়ে প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজন হয় একটি সুনির্দিষ্ট গাথুনি বা ঘটনার পরস্পরা। একটি ছন্দময় গাথুনি দিয়ে বেধে ধ্বনিপুঞ্জকে যদি মস্তিষ্কে প্রেরণ করা যায় তবে তা সহজেই স্মরণে রাখতে পারে।
ধ্বনিগুলোকে ক্রমাগত সাজিয়ে মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে, কথা বলে। কিন্তু কথ্য ভাষার সকল শব্দই একটি নির্দিষ্ট রিদমে ফেলা যায় না। যে সমস্ত ধ্বনি সমষ্টি একটি নির্দিষ্ট রিদমে গেথে মনের ভাবকে প্রকাশ করা যায় সেই সকল ধ্বনি সমষ্টিকে ক্রমাগত সাজিয়ে পদ্য রচিত হয় যা দ্বারা মনের আবেগকে অন্যের মাঝে সঞ্চারিত করা যায়। কিছু কিছু ভাব বিন্যাস শব্দের গাথুনিতে এতোটাই মাধুর্যমন্ডিত হয়ে উঠে যে, মস্তিষ্কে তা গেথে যায় এবং বারবার উচ্চারিত হয়ে আনন্দিত হয়।
আমিষ নিরামিষে আমাদের জিহ্বায় যেমন স্বাদ আস্বাদের পার্থক্য বিভেদ করে দেয়, ঠিক তেমনি বিবিধ কারিগরের বিবিধ শব্দ-সমাহার পাঠক মনে স্বয়ংক্রিয় মিথস্ক্রিয়া তৈরী করে। পড়ুয়া মেধা কণ্ঠ কর্ণ বেগ আবেগ তোড়ে স্বয়ং বুঝে নেন।
আমার জানামতে কোন লেখা যেমন গল্প, কবিতা বা উপন্যাস লেখা শেখার জন্য কোন স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সাবজেক্ট নেই। তবে হ্যা এসব মানুষ দেখে দেখেই মনের আকুলতা মিশিয়ে প্রকৃতির কাছ থেকেই শিখে নেয়।
সুন্দর আলাপ করছেন দিলখুশ ভাই।
বাইছাব বালা আছুইননি?
দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে নিন লাল গোলাপের শুভেচ্ছা
হাই হ্যালো।
আপনি ঠিকই বলেছেন যে, গল্প, কবিতা বা উপন্যাস লেখা শেখার জন্য কোন স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সাবজেক্ট নেই। বিশেষ করে কবিতা
….
কবিতার কাঠামো, তার ছন্দ ও মিল বা অমিল সম্পর্কে কিছুটা শিক্ষা দেয়া সম্ভব কিন্তু প্রতিটি প্রকৃত কবিতাই অভূতপূর্ব, রচিত হওয়ার আগে তার রচয়িতাও সেটি সম্পর্কে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারে না। কবিতা লেখা হয়ে যাওয়ার পরই শুধু উপলব্ধি বা অনুভব বা বিচার করে দেখা সম্ভব সেটা কবিতা হয়েছে কিনা, বা হয়েছে কতটা অসাধারণ।….
কবিতার ক্লাশ নামের যে বইটি আমি উল্লেখ করেছি তাতে ছন্দের কিছু নিয়ম কানুন শিক্ষা দেয়া হয়েছে মাত্র।
আপনার কল্যান হোক।
যতই জ্ঞান বিতরণ করেন তাল মাত্রা ছন্দে গাথা কবিতা লিখতে না পেরে রবীন্দ্র ধারার বাইরে বের হতে চাইছে আজকের প্রজন্ম আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে কবিতাকে। কথা, বিন্যাস এবং তান এর সমন্বয় করে মনের আকুলি বিকুলি গুলি সুন্দর সাজিয়ে পরিপাটি করে প্রকাশ হলেই কবিতা হয়ে গেল। কিন্তু কোথায় বিন্যাস আর কোথায়ইবা তান?
দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে নিন লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
হাই হ্যালো।
আপনার প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রথমেই বলে নেই আমি কোন জ্ঞান দিতে আসিনি
এসেছি দুঃখ শেয়ার করতে। বড় কষ্ট পাই যখন দেখি কবি বা কবিতা হারিয়ে যাচ্ছে। কবিতা লেখক পাবেন অনেক, কবি বা কবিতা পাবেন না।
আপনি হয়ত ঠিক বলেছেন,
মাত্রা ছন্দে গাথা কবিতা লিখতে না পেরে রবীন্দ্র ধারার বাইরে বের হতে চাইছে আজকের প্রজন্ম আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে কবিতাকে।
আপনার কল্যাণ হোক।
কবিতা ভেতরের ব্যপার। ইচ্ছে করলেই যা কিছু লিখে কবি হওয়া যায়না। রবীন্দ্রনাথ এবং নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী দুজনেই আমার প্রিয় কবি। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, রাবীন্দ্রিক কবিতা এখন অচল। তার চেয়ে ভাস্কর চক্রবর্তী, ফাল্গুনী রায়, বিনয় মজুমদার, এদের কবিতা পড়ে আধুনিক কবিতার ধরন জানা যায়। তাহলে কি রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর কেউ কবি নন? এটা ভাবতে হবে। এগিয়ে চলতে হবে
আপনাকে দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
আমার পোষ্টটি একটু লক্ষ্য করুন আমি বলেছি— মনে রাখবেন কবিতা একটা শিল্প মাধ্যম। কেবল কিছু শব্দই কবিতা নয়, কিছু ভাবই শুধু কবিতা নয়, কবিতার শব্দগুলি চলে কিছু মাত্রা গুনে গুনে, ছন্দে লিখেন বা ছন্দহীন শব্দগুলি সাজাতে হবে মাত্রায়।
আমি রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা উল্লেখ করেছি আর মন্তব্যে বলেছি রবীন্দ্রনাথের কবিতা আমার ভালো লাগে। কাউকে একথা বলেনি যে, রবীন্দ্রনাথের মতো করে কবিতা লিখ বা রাবীন্দ্রিক কবিতা লিখ। আমি সহজ সরল উপস্থাপনার কথা বলেছি। রবীন্দ্রনাথের কবিতা আমার ভাল লাগে কিন্তু একমাত্র বা অন্য কেউ নন তা আমি বলিনি।
বিনয় মজুমদারের দুটি কবিতা পড়ে দেখি, তার শব্দের ব্যবহারটা খেয়াল করি, তার লেখনির সারল্যকে উপলব্দি করি।
ভালোবাসা দিতে পারি
ভালোবাসা দিতে পারি, তোমরা কি গ্রহণে সক্ষম?
লীলাময়ী করপুটে তোমাদের সবই ঝ’রে যায় –
হাসি, জ্যোৎস্না, ব্যথা, স্মৃতি, অবশিষ্ট কিছুই থাকে না।
এ আমার অভিজ্ঞতা। পারাবতগুলি জ্যোৎস্নায়
কখনো ওড়ে না; তবু ভালোবাসা দিতে পারি।
শাশ্বত, সহজতম এই দান — শুধু অঙ্কুরের
উদগমে বাধা না দেওয়া, নিষ্পেষিত অনালোকে রেখে
ফ্যাকাশে হলুদবর্ণ না ক’রে শ্যামল হতে দেওয়া।
এতই সহজ, তবু বেদনায় নিজ হাতে রাখি
মৃত্যুর প্রস্তর, যাতে কাউকে না ভালোবেসে ফেলে ফেলি।
গ্রহণে সক্ষম নও। পারাবত, বৃক্ষচুড়া থেকে
পতন হলেও তুমি আঘাত পাও না, উড়ে যাবে।
প্রাচীন চিত্রের মতো চিরস্থায়ী হাসি নিয়ে তুমি
চ’লে যাবে; ক্ষত নিয়ে যন্ত্রণায় স্তব্ধ হব আমি।
________________________________________
আমার আশ্চর্য ফুল
আমার আশ্চর্য ফুল, যেন চকোলেট, নিমিষেই
গলাধঃকরণ তাকে না ক’রে ক্রমশ রস নিয়ে
তৃপ্ত হই, দীর্ঘ তৃষ্ণা ভুলে থাকি আবিষ্কারে, প্রেমে।
অনেক ভেবেছি আমি, অনেক ছোবল নিয়ে প্রাণে
জেনেছি বিদীর্ণ হওয়া কাকে বলে, কাকে বলে নীল-
আকাশের হৃদয়ের; কাকে বলে নির্বিকার পাখি।
অথবা ফড়িঙ তার স্বচ্ছ ডানা মেলে উড়ে যায়।
উড়ে যায় শ্বাস ফেলে যুবকের প্রানের উপরে।
আমি রোগে মুগ্ধ হয়ে দৃশ্য দেখি, দেখি জানালায়
আকাশের লালা ঝরে বাতাসের আশ্রয়ে আশ্রয়ে।
আমি মুগ্ধ; উড়ে গেছ; ফিরে এসো, ফিরে এসো , চাকা,
রথ হয়ে, জয় হয়ে, চিরন্তন কাব্য হয়ে এসো।
আমরা বিশুদ্ধ দেশে গান হবো, প্রেম হবো, অবয়বহীন
সুর হয়ে লিপ্ত হবো পৃথীবীর সব আকাশে।
আপনার ভালো হোক।
___________________________________
আপনি ইন্টারনেট ছাড়াই কবিতা পড়ুন .. আপনাকে আমি এইবার দুটি কবিতা পড়াই.. ইন্টারনেট এ পাবেন না। এই কবি ভীষণ আড়ালে রাখেন নিজেকে নাম পরে বলছি
“শাঁখা সিঁদুরের সঙ্গে হলুদের রং মেখে
তুমি হেঁসেলে ঢুকে গেলে ;
নতুন হাতের ছোঁয়ায়
বেজে উঠল হাঁড়ি
চোখের জল আঁচলে রেখে
সাদা ভাতে বিছিয়ে দিলে নুন
জ্বলতে লাগলো অন্ধকার রাত
কথা বলতে শুরু করল ঘরবাড়ি। ”
আরও একটা পড়ুন…
“ঈশ্বর, পোকাদের মতো কোরো আমার সন্তানদের
তারা যেদিন জন্মাবে, সেই দিনই যৌবন পাবে
মরেও যাবে সেইদিন
দর কষাকষি বাজারে আমরা কুঁকড়ে
থাকলেও, তারা পারবেনা
তাদের জন্ম মৃত্যু একইদিনে কোরো।”
বলুন তবে এগুলো কি কবিতা নয়? কবির নাম জয়নাল আবেদিন।
আপনাকে আবারও লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
ইন্টারনেটে পড়লে কি কবিতার স্বাদ উপলব্দি করা যায় না! যায় তো। আমিতো এক আলমারির সমান রবীন্দ্ররচনাবলী হাতে নিয়ে ঘুরি, এমনকি পাবলিক বাসে বসেও আমি রবীন্দ্রনাথ পড়ি। শুধু রবীন্দ্রনাথ নয়, আরও অনেকের লেখা পড়ি। ইন্টারনেটে পড়ি বলে আপনার মতো ভালো একজন লেখিকার সাথে আমার মতো সাধারণ একজন মতবিনিময় করতে পারি।
কোনটি কবিতা আর কোনটা নয়, তা বিশ্লেষন করার ক্ষমতা আমার নাই। আমি কেবল আমার ভালো লাগাটা বলে দিতে পারি। আমার ভাল লাগেনি আপনার দেয়া কবিতা। আমার ভাল লাগা একান্ত আমার।
আপনার কল্যাণ হোক।
নিশ্চয়ই আপনার ভাবনা আপনার নিজের। তবে রবীন্দ্রনাথ থেকে বেড়িয়ে আসুন। পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেছে। রবীন্দ্রনাথের যুগের থেকে অনেক এগিয়ে। আর আমি যার কবিতা দিলাম তিনি বর্তমানে একজন বলিষ্ঠ কবি। আপনার ভালো নাই লাগতে পারে। ইন্টারনেট এর বাইরেও অনেক কবিতা আছে সেটাই বলার চেষ্টা করেছি। ফাল্গুনী রায়,ভাস্কর চক্রবর্তী পড়েছেন? না পড়া থাকলে পড়ুন। নতুন করে কবিতাকে ভালোবেসে ফেলবেন।
যাইহোক ভালো থাকুন …শুভরাত্রি
অবশ্য এখন ঠিক কবিতা পড়ার মত মানসিক অবস্থায় নেই।
আপনাকে বলে রাখি গুরুর বাইরেও আমার কিছু পড়াশোনা আছে, পৃথিবী এগিয়ে গেলেও রবীন্দ্রনাথে মগ্ন থেকেও তাল মেলানো যায়। আমি তাল মিলিয়ে চলছিতো। সে যোগ্যতা আমার আছে।
ধন্যবাদ। শুভ রাত্রি।
লাল গোলাপ আমি কবিতার মতই অপছন্দ করি কবিদের না
বোঝা কিংবা না বোঝার জন্য কি কোন লেখক দায়ী হয় কিনা আমার জানা নাই, অনেক সহজ কবিতায়ও বোঝার ভুল লাগতে পারে আপনার লেখা দিয়েই শুরু যদি করি…
আমার তো মাথার উপ্রেদিয়া চইলা গেল…
”দুইটি পাড়ায় বড়োই কাছাকাছি,
মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক—”….. কিসের মাঠ ফুটবলের না তেপান্তরের নাকি ধান ক্ষেতের সেই বিষয় যেহেতু ইঙ্গিত নাই তাই দুইটা পড়া কাছাকাছি বিষয়টি আপেক্ষিক। আর যত দূর জানি শহর ছাড়া গ্রামে পাড়া বিষয়টি কম…
.
”তাদের বনের অনেক মধুমাছি
মোদের বনে বাঁধে মধুর চাক।”…. বিষয় হইলো মধুমাছি যেখানে চাক বাঁধে ধরে নেয়া হয় সেইখানেই তাদের বাস…সো ?
”তাদের ঘাটে পূজার জবামালা
ভেসে আসে মোদের বাঁধা ঘাটে, ” জোয়ার ভাটায় পূজার মালা কেন মরা লাশও এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ভেসে যেতে পারে..এর মধ্যে কবিতার কিছু নাই যদি লিখতো
”তাদের ঘাটের খুন কারা এক লাশ
সত্যি সাক্ষ্য দিতে আসে মোদের ঘাটে “ তাইলেও কোন সমস্যা ছিলো না।
” তাদের পাড়ার কুসুম — ফুলের ডালা
বেচতে আসে মোদের পাড়ার হাটে। “ এখানে দুরত্ব কম সেই বিষটি না বুঝে আমি যদি বলি কুসুম নামের মেয়েটিকে কবি লজ্জিত করেছেন তাও কিন্তু আপনাকে মেনে নিতে হবে।
আসলে কবিতার কোন ছক নাই, বোঝার জন্য কোন পথ নাই , কোন ক্লাস নিয়ে কবি বানানো সম্ভব কিনা আমার জানা নেই।
“ধ্বনিগুলোকে ক্রমাগত সাজিয়ে মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে, কথা বলে। কিন্তু কথ্য ভাষার সকল শব্দই একটি নির্দিষ্ট রিদমে ফেলা যায় না। যে সমস্ত ধ্বনি সমষ্টি একটি নির্দিষ্ট রিদমে গেথে মনের ভাবকে প্রকাশ করা যায় সেই সকল ধ্বনি সমষ্টিকে ক্রমাগত সাজিয়ে পদ্য রচিত হয় ”—- এর মানে কবিতায় রিদম থাকতেই হবে। কিন্তু রিদম বিহীনও অনেক ভালে কবিতা কিন্তু আছে।
”কোনটি কবিতা আর কোনটা নয়, তা বিশ্লেষন করার ক্ষমতা আমার নাই। আমি কেবল আমার ভালো লাগাটা বলে দিতে পারি। আমার ভাল লাগেনি আপনার দেয়া কবিতা। আমার ভাল লাগা একান্ত আমার।” অনেক সত্যি কথা বলার জন্য ধন্যবাদ। সব মানুষের পছন্দ ভালো লাগা খারাপ লাগা এক রকম নয় বলেই আমার মানুষ আপনার লাল গোলাপ পছন্দ আমার নয় , আপনার রবি পছন্দ আমার সোম, আপনার ছন্দ পছন্দ তো আমর স্বাছন্দ, আপনার সুর পছন্দ তো আমার র্দূগার অসুর।
যাক ভাই ভালে থাকবেন।
সত্যিই আমি কবিতা বুঝি না….
শুভকামনা।
এক গাঁয়ে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
………………
আমরা দুজন একটি গাঁয়ে থাকি
সেই আমাদের একটিমাত্র সুখ ,
তাদের গাছে গায় যে দোয়েল পাখি
তাহার গানে আমার নাচে বুক ।
তাহার দুটি পালন – করা ভেড়া
চরে বেড়ায় মোদের বটমূলে ,
যদি ভাঙে আমার খেতের বেড়া
কোলের ‘ পরে নিই তাহারে তুলে ।
আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা ,
আমাদের এই নদীর নাম অঞ্জনা ,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে—
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা ।
দুইটি পাড়ায় বড়োই কাছাকাছি ,
মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক—
তাদের বনের অনেক মধুমাছি
মোদের বনে বাঁধে মধুর চাক ।
তাদের ঘাটে পূজার জবামালা
ভেসে আসে মোদের বাঁধা ঘাটে ,
তাদের পাড়ার কুসুম – ফুলের ডালা
বেচতে আসে মোদের পাড়ার হাটে ।
আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা ,
আমাদের এই নদীর নাম অঞ্জনা ,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে—
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা ।
আমাদের এই গ্রামের গলি -‘ পরে
আমের বোলে ভরে আমের বন ,
তাদের খেতে যখন তিসি ধরে
মোদের খেতে তখন ফোটে শণ ।
তাদের ছাদে যখন ওঠে তারা
আমার ছাদে দখিন হাওয়া ছোটে ।
তাদের বনে ঝরে শ্রাবণধারা ,
আমার বনে কদম ফুটে ওঠে ।
আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা ,
আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা ,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে—
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা ।
আপনি নিশ্চয়ই কবিতাটা আগে পড়েছেন, বাংলা ভাষায় রচিত কবিতার মধ্যে এটি একটি অন্যতম কবিতা বলে আমি জানি।
যে যাই বলুক না কেন কবিতা আর কথ্য ভাষা এক নয়। একটি ভাষার সমস্ত শব্দই কবিতাতে ব্যবহৃত হয় না। কবিতা ছন্দে হোক বা মুক্ত ছন্দ হোক কিংবা গদ্য কবিতাই হোক তাতে যদি একটা তাল না থাকে তা হলে তা কবিতা হয় কিভাবে আমি বুঝতে পারি না
ধন্যবাদ আপনাকে।