সত্যিই কি আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম? তা তো নয়। সেই তো এগিয়ে এসেছি নিজস্বতায়। কত বোকা বোকা প্রশ্ন করত সবাই। এমন কি স্যারেরা। রচনা বইতেও দেখি – বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও? Aim in Life।
আরে বাবা আমি জীবনকে কতটুকু চিনি সেই বয়সে। শখ তৈরি করতেও তো বোধ লাগে। সেই বোধের জন্ম দিতে হলে চাপ তো নিতেই হয়। অথচ আজ ফিয়াট থেকে শহরটাকে অন্য রকম লাগছে।
শুধু পড়ার জন্য বাবা নিজেকে বদলী করে এই শহরতলিতে আস্তানা গেড়েছিল। সকাল সন্ধ্যে শুধু পড়া আর পড়া। বাবার সেই পড়া খেলায় আমি নির্মাণ হতে চাইছিলাম না। ঘুম চোখে উঠে স্কুল। তার পর দৌড় দৌড়। বাস ধরে টিউশন ক্লাস, ফিরে এসে পড়া আর একটু আধটু টিভি গেম শো আর নেট। এভাবে জোর করে তুলে দিয়েছিল মেডিক্যাল কলেজের ছাদে।
অথচ আমি এটা হতে চেয়েছিলাম ওটা হতে চেয়েছিলাম। নিজের মনে নিজে হতে চেয়েছিলাম। আজ মনে হয় সে সব বোকামি অথবা হয়তো বা সঠিক। তবু আজ তো তৃপ্ত। ছেয়ে আছে রাস্তা জুড়ে। আজই তো একজন বলল – বাবু, আমার মেয়েটা আবার হাঁটাচলা করছে। আগের মত স্বাভাবিক।
অথচ এই তো দিন দুই আগে আমার প্রিয় বন্ধু যে নিজস্ব পছন্দে এগিয়ে, সেই নবনীত ফোন করেছিল – না রে, কোন মতেই নির্মাণের আকাশ ছোঁয়া ছুঁতে পারছি না। যা করছি দু চার দিন পরে আরো বেশি আরো ভিন্ন কিছু চাইছে। এভাবে কি সম্ভব? চাহিদার তৃপ্তি যেন দেশছাড়া। আমিও দেশছাড়া।
ঘরে ঢুকে মাকে বললাম – ঠিক মত ওষুধ খেয়েছো? বাবা তৃপ্ত হাসিতে উত্তর দিল – খেয়েছি বাবা।
আমি উর্নিশ। আমি চললাম আমার ঘরে। হোম থিয়েটার অপেক্ষা করছে।
3 thoughts on “নির্মিত নির্মাণ”
মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।
এটা নিশ্চয়ই সত্য যে, শখ তৈরি করতেও বোধ লাগে। সেই বোধের জন্ম দিতে হলে চাপ তো নিতেই হয়। ___ আমাদের অনেকের বয়ঃসন্ধি সময়ের কথা বলেছেন কবি।
ঠিক তাই। আমরা অনেকেই বাবা মার কথা শুনি না। ভাবি, আমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। তা কিন্তু নয় তারা মেধা অনুযায়ী ছেলে বা মেয়ের অবস্থান গড়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাকেই আমাদের ভারি মনে হয়। ছাত্রানাং অধ্যয়নং তপ – ভুলে গিয়ে মুখ ঘুরিয়ে বড়দের মত হওয়ার চেষ্টা যতকিছু গোপন খেলা করি। ফলে নিজস্ব মেধার অপচয় ঘটে। যত পড়া ও পড়া সংক্রান্ত ঘষা মাজা করবে মেধার শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। বড়দেরও সে ব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত। ভাল থাকবেন।
কথা সঠিক। আপনি সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ।