কবরস্থানে একদিন (অভিজ্ঞতা, ভাবনা)

আজকে বিকেলের কথা, মন টা কেমন অস্থির লাগছে, কতদিন কলেজ যায় না, যায়না কোথাও ঘুরতে। সবুজের উপর দু-চোখ ডেবডেব করে ফেলিনি তা-ও তো অনেক দিন হলো। এইসব ভাবছি, তখনই

আসরে আজান হলো, সৃষ্টিকর্তা ডাকছে, কল্যানের দিকে। ডাকছে,নামাজের দিকে।
উনার সৃষ্ট এই মায়াবী পৃথিবীতে আছি অথচ দয়াময় প্রভুর ডাকে সাড়া না দিয়ে ঘরে বসে থাকতে পারলাম না।

পাড়ার মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত ফরজ নামাজ টা আদায় করে। সবুজ দেখতে দেখতে চলে আসলাম চিরন্তন থাকার বাড়ি কবরস্থানে। সবসময়ই কবরস্থান টা আমাকে খুবই কাছে ডাকে, আমি সেথায় গেলেই অদ্ভুত এক ভালোলাগা চলে আসে মনের গহীনে।

এই ভালো লাগার এবং কাছে টানার পিছনের কারণ হিসেবে যদি বলি, তাহলে বলতে হয়।
আমার মমতাময়ী ‘মা’ এই কবরস্থানেরই এক কোনে শুয়ে আছেন।
হয়তোবা এই জন্যেই আপনের চেয়েও আপন মনে হয় কবরস্থানের বালুকণা, দূর্লব লতাপাতা সহ সব কিছুই।

আমার মা যখন প্রিয় সংসার ছেড়ে, মায়াবী পৃথিবী থেকে ইহলোকে রওয়ানা হলেন, তখন আমার বয়স আট কি নয়। পড়াশোনায় বলতে হয় তৃতীয় শ্রেণির অবুঝ এক বালক আমি।

মায়ের ভালোবাসা, মমতাময়ীর আদর, স্নেহময় বৃক্ষছায়া, এইসব বুঝে উঠার আগেই আমার জন্মদাত্রী ‘মা’ চলে গেলেন প্রভুর নিকট।

আজ-অব্দি মায়ের ভালোবাসা বলতে যা বুঝাই তা কেনো যেনো বুঝে উঠতে পারি না আমি।
কত শুনি মায়ের ভালোবাসা এমন তেমন, কিন্তু আমি তা কখনো অনুভব করতে পারিনি।

যাইহোক, কবরস্থানে এসে চলে গেলাম মা যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত সেখানে।
বরাবরের মতো মায়ের কবরে হাতবুলিয়ে দিলাম। মমতাময়ী কে আদর করে, সেই ধূলিমাখা হাতে আল্লাহর কাছে মায়ের পক্ষ হতে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করলাম। দয়াময়ের কাছে মন খুলে বলতে লাগলাম, “রাব্বির হামহুুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সাগিরাহ্”

পরক্ষণেই কান্নায় ভেজা চোখে, এসে বসলাম কবরস্থানের এক দেয়ালে যেখানে প্রায়ই আমি বসি আর ভাবি নানান কিছু।
আজকে আর ভাবতে কিছু মন সায় দিচ্ছে না। তাই মোবাইল টা হাতে নিয়ে আল্লাহর প্রেরিত কালামুল্লাহ শরীফের ফযিলতময় সূরা ইয়াসিন চালিয়ে দিলাম। শ্রেষ্ঠ দের মধ্যে অন্যতম তেলাওয়াতে কোরআনের ক্বারি আহমদ সুদাইসির মধুর কণ্ঠে চলছে সূরাহ ইয়াসিন আর আমি চিন্তা করতে চেষ্টা করছি, দয়াময় প্রভু আমাদের কতো নিয়ামতের দ্বারা পরিচালিত করেন প্রত্যেক টা দিনরাত্রি।

তাইতো, প্রভু সূরা আর- রহমানে বারবার উল্লেখ্য করেছেন –
(ফাবি অ্যাইয়ি আলা’ই রাব্বিকুমা তুক্কাজিবান।)
অর্থ-তোমরা উভয়ই তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন নিয়ামত কে অস্বীকার করবে?

গোলাম কিবরিয়া সৌখিন সম্পর্কে

গোলাম কিবরিয়া সৌখিন। চট্টগ্রামে ২০০৩ সালের ১০-ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, কসবা উপজেলায় সপরিবারে নিজ গ্রামে অবস্থান করছেন এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। উনি শৈশব থেকেই ভাবুক ও দার্শনিক চিন্তা করতে পছন্দ করেন।আর সেই ভাবনার প্রতিফলন হিসেবে কবিতার হাতেখড়ি শুরু। কবি শুধু লিখে যেতেই চান না, তিনি চান সবার সাথে উনার ভাবনা গুলোকে ছড়িয়ে দিতে এবং সেই ভিত্তিতে কবি বাংলাদেশে এবং ভারতের বিভিন্ন কবিতার অনলাইন মিডিয়ায় কবিতা লিখে চলেছেন। এবং অন্যান ভাবনা গুলি একত্র করে সমসাময়ীক লিখা লিখে থাকেন। সকলের ভালোবাসা এবং উৎসাহ নিয়ে প্রতিনিয়ত লিখে যাচ্ছেন। কবি ভবিষ্যতে কর্ম জীবনে উনার কবিতার কিছু বই প্রকাশ করার ইচ্ছে পোষণ করেন। সকলের কাছে দোয়ার দরখাস্ত নিয়ে আবেদন এই ভাবনার কবি গোলাম কিবরিয়া সৌখিনের।

5 thoughts on “কবরস্থানে একদিন (অভিজ্ঞতা, ভাবনা)

  1. রাব্বির হামহুুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সাগিরাহ্। ___ শব্দনীড়ে আপনাকে স্বাগতম। http://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. ভালোবাসা অবিরাম আপনার প্রতি। দোয়া রাখবেন লিখে যেতে চাই সবার পাশে থেকেই।    

    1. অনেক অনেক ভালোবাসা প্রিয়।         

  2. দুজনকেই আন্তরিক ধন্যবাদ। প্রথম লিখাই মন্তব্যের জন্য।     

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।