গোলাম কিবরিয়া সৌখিন এর সকল পোস্ট

গোলাম কিবরিয়া সৌখিন সম্পর্কে

গোলাম কিবরিয়া সৌখিন। চট্টগ্রামে ২০০৩ সালের ১০-ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, কসবা উপজেলায় সপরিবারে নিজ গ্রামে অবস্থান করছেন এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। উনি শৈশব থেকেই ভাবুক ও দার্শনিক চিন্তা করতে পছন্দ করেন।আর সেই ভাবনার প্রতিফলন হিসেবে কবিতার হাতেখড়ি শুরু। কবি শুধু লিখে যেতেই চান না, তিনি চান সবার সাথে উনার ভাবনা গুলোকে ছড়িয়ে দিতে এবং সেই ভিত্তিতে কবি বাংলাদেশে এবং ভারতের বিভিন্ন কবিতার অনলাইন মিডিয়ায় কবিতা লিখে চলেছেন। এবং অন্যান ভাবনা গুলি একত্র করে সমসাময়ীক লিখা লিখে থাকেন। সকলের ভালোবাসা এবং উৎসাহ নিয়ে প্রতিনিয়ত লিখে যাচ্ছেন। কবি ভবিষ্যতে কর্ম জীবনে উনার কবিতার কিছু বই প্রকাশ করার ইচ্ছে পোষণ করেন। সকলের কাছে দোয়ার দরখাস্ত নিয়ে আবেদন এই ভাবনার কবি গোলাম কিবরিয়া সৌখিনের।

অপূর্ণ ভালোবাসা

আমি শুধু ভাবি সেই দিনটির কথা
যেই দিনে তোমার গায়ে লেগে যাবে লাল শাড়ির ছোঁয়া।
প্রিয় সেই, গ্রামটিতে জ্বলে উঠবে লক্ষ -হাজার আলোকসজ্জা।
তোমার বাড়ির আঙিনা মুখরিত হবে কত মন ভাঙা, হাসিখুশি মানুষের পায়ের ধুলাই।
হ্যা, সেই দিনটির কথা বলছি যেই দিন তুমি হবে অন্য কোনো স্বপ্নের ঠিকানা।

তোমার বাবার সঞ্চয়ের অর্থে জমে উঠবে বিয়ে বাড়ি।
তোমার মায়ের কত-শত আপনজনেরা আসবে, খাবে স্বপ্ন ভাঙার স্বাক্ষী হয়ে চলেও যাবে।

আমি বলছি সেই রাতের কথা, যে রাতে…
তোমার কোমল, কোমরে হাত রাখবে অজানা এক নতুন পুরুষ।
সেই হাতের ছোঁয়ায় তোমার শরীরে শিহরণ খেলে যাবে! ঠিক যেমন যেতো আমার ছোঁয়ায়। তুমি মজে যাবে, ডুবে যাবে সেই অজানা পুরুষের ছোঁয়ায়।

তোমার সেইদিন মনেই থাকবে না, আমি বলে কেউ ছিলো, মন বলবে কি হবে এতো ভেবে আর; সুপুরুষ তো পেয়েছি আমি, কি লাগে আর…..

তোমার গ্রাম টা ভালোবাসি, তোমার পায়ের ছোঁয়া লাগা সেই সরু রাস্তা গুলি ও ছুঁয়ে দেখি, তোমার বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িয়ে থাকা গাছ গুলাকে বুঝিয়ে বলি! কত ভালোবাসতাম আমি তোমায়, কিন্তু কেউ আর ছুঁতে দিলো না তোমায়। দিলো না থাকতে, একসঙ্গে।

গল্প টা তো আমারই শুধু! তোমার এখন অন্য গল্প, অন্যের স্বপ্ন, শুধু ঠকিয়ে গেলে আমাকে।
বুঝিয়ে দিলে ভালোবাসা দিয়ে কিছুই জয় করা যায় না। শুধু যায় কষ্ট কেনা।

জীবনের গতি কখনো থামবার নয়

(১)
জীবনের গতি কখনো থামবার নয়,
সে ছুটে, কাউকে রাঙিয়ে, কাউকে ভাঙিয়ে।
কে ক্ষুদার্ত তা সে দেখবার নই।
কে দুঃখী, তা সে খুঁজবার নই।
সময়ে মাপকাঠি কার কখন দেহ কাঁঠি তা সে বুঝবার নই।
(২)
বেকারত্বের তকমা গায়ে মাখানো প্রেমিক টি প্রেম করে চলেছে ভঙ্গুর ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে। মায়াবতী প্রেমিকা হাতছাড়া হচ্ছে ;নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে সে দেখছে! তাতে কিছুই করবার নেই।
জীবনের গতি তাতেও থামে না, সে ছুটন্ত, ছুটছেই…

একটি সিজদাহ্ হতে পারে জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রশান্তি

আমরা কেনো এতো হতাশ? কেনো জীবনে এতো গতি চাই? আমাদের মন সর্বক্ষণ অকল্পনীয় গতিতে ছুটতে চায়।
যখনই গতিতে একটু ভাঁটা পরে তখনই আমরা হয়ে যায় হতাশ!

আমরা, আমাদেরই প্রভু, আমাদের সৃষ্টি কর্তা, যিনি আমাদের রিজিক দেন আমরা খাই, বাঁচি এবং মরি। যখন আমাদের জীবনে হতাশা,দুঃখ, ক্লেশ আছড়ে পরে তখন উনাকে দোষারোপ করি, প্রলাপ বকি! সে কথা ভুলে যায় বেমালুম, যখন তিনি আমাদের আনন্দিত করেন, সুখে রাখেন।ভালো খাদ্য দ্বারা আমাদের পেট ভরপুর করে দেন, যেই খাদ্য মাটি হতে, চতুষ্পদ জন্তু হতে আমাদের জন্য উৎপন্ন করেন। তখন ক’জন আছি আমরা যে উনার কথা সরণে দিনে কতকবার আলহামদুলিল্লাহ বলে শুকরিয়া গুজরাত করি?

আমরা এই পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে এতোই নিমজ্জিত যে, সপ্তাহে ছ’দিন ডুবে থাকি এতে, কোনও খেয়ালই করি না যে, যিনি এইসবের মালিক, যিনি সকল কিছুরই সৃষ্টি করেছেন এবং ধ্বংসের সক্ষমতা ও তাঁর কাছেই। তিনি চাইলে ‘আছে’ থেকে ‘নাই’ হয়ে যাবে সব। বড় বড় অট্টালিকা সব কম্পনে কেঁপে মাটিতে গড়িয়ে ধূলিসাৎ হয়ে যেতে পারে এবং যাবে নিশ্চয়ই। তাঁর আহবানে ক’জন আছি আমরা যে সাড়া দেয়?ক’জন আছি, যাঁরা দিনে পাঁচবার ডাকের জবাব দেয়;
আমরা দিনরাত্রি মিলে কতবার-ই উনার সাথে চ্যাট করি, কতবার ধন্যবাদ জানায় উনাকে আমাদের চারিপাশ এতো নিয়ামতে ভরপুর করে দেয়ার জন্য। কতবার বলি হে, আমার রব, জানা, অজানা, প্রকাশে, গোপনে তোমার সকল নিয়ামতের শুকরিয়া।

সর্বদা জানি আজান হবে, প্রভু ডাক দিচ্ছে এই কথা কী ভাবি কখনো?
কখনো কী চিন্তা করেছি, যে আজান নয়, আমার মালিক আমাকে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার আহ্বান করছেন,আমি কি করে দুনিয়া নিয়ে, দুনিয়ার চাকচিক্যের আলোর নিচে বসে আছি, সর্বময়ের আহ্বানের পরে-ও!

যখনই শুক্রবার টা আসে তখনই মনে আওড়াই আরে, আমার তো আজকে নামাজ আছে মসজিদে যেতে হবে। অনেকে তো শুক্রবার বিশ্রাম আর ঘুমিয়ে পার করে দিয়।
এই-যে সিস্টেম আমরা অন্য জাতির কাছ থেকে হাওলাত করে আনলাম, যেই জাতি নিশ্চিত বিপথগামী, তাদের সিস্টেমে জীবনের মূল লক্ষ্য, পৃথিবীতে আসার প্রধান উদ্দেশ্য সহসাই ভুলে বসে আছি। সনাতনীদের থেকে হাওলাত করলাম আমরা সপ্তাহে একদিন প্রার্থনার রীতি, আরো অন্য কত যে কী দিয়ে জীবন সাজাতে চাচ্ছি, যখনই সেই চাওয়া-পাওয়ার সীমানা বড় থেকে আরো বড় হতে থাকে এবং এক প্রর্যায়ে আমরা এমন কিছু পেতে চাই যা আমাদের আওতাধীন নয়। আর সেই চাওয়া পূর্ণ না হলেই আমরা হতাশ হয়ে পরি, প্রচণ্ড রকম অপূর্ণতা বোধ করি। আমাদের যা অর্জন আছে সব তখন তুচ্ছ মনে হয়, আরো মনে হয় ওই অপূর্ণ চাওয়া পূর্ণ না হলে আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই, নেই কোনো শান্তি।

আসলে, শান্তি এবং সুখ দুনিয়ার মানুষের কাছে যা মূল্যহীন এমন বস্তুর মধ্যে ও বিদ্যমান হতে পারে, আল্লাহ সেইখানে ও আমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত রাখতে পারে যা আমরা জানি না। কিন্তু তিনি তা জানেন। হতে পারে পরবর্তী আজান শুনে আপনি মসজিদে গিয়ে ‘আল্লাহুুআকবার’ বলে সিজদাহ্ করে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখ এবং শান্তি, অথবা সেরা প্রাপ্তিটা পেয়ে গেলেন সেই সিজদাহ্’র মাধ্যমে। যা আপনি এতোদিন দুনিয়ার চাকচিক্যের কাছে তুচ্ছ মনে করতেন কিন্তু এতে কেমন করে প্রশান্তির পরশ থাকতে পারে তা কেবলই প্রভু জানেন। তাইতো তিনি বলেছেন -(‘তোমরা যাতে কল্যাণ দেখো, সেখানে তোমাদের জন্য কল্যাণ না ও থাকতে পারে।আর তোমরা যাতে অকল্যাণ মনে করো তাতে কল্যাণ থাকতে পারে। বস্তুত তোমরা তোমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে জানো না।’… )

জীবনের গতি

(১)
জীবনের গতি কখনো থামবার নয়,
সে ছুটে, কাউকে রাঙিয়ে, কাউকে ভাঙিয়ে।
কে ক্ষুধার্ত তা সে দেখবার নয়।
কে দুঃখী, তা সে খোঁজবার নয়।
সময়ে মাপকাঠি কার কখন দেহ কাঁঠি তা সে বুঝবার নয়।
(২)
বেকারত্বের তকমা গায়ে মাখানো প্রেমিক টি প্রেম করে চলেছে ভঙ্গুর ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে। মায়াবতী প্রেমিকা হাতছাড়া হচ্ছে ;নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে সে দেখছে! তাতে কিছুই করবার নেয়।
জীবনের গতি তাতেও থামে না, সে ছুটন্ত, ছুটছেই…

সমাজ গড়ার কারিগর

সমাজ গড়ার কারিগর হে প্রিয় শিক্ষক।
তোমাদের ঘরে নাই বাজার-সদাই!তা দেখে করবার নাই কোনো নিরীক্ষক।
যা মাইনে পাইতা অতীতে,
তাঁহাতে চলতো সংসার কোনো মতে।
তবে, আজিকা সেই মাইনে পাওয়ার রাস্তায় নেমে এসেছে কুয়াশা।
তাই তো মনে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা!

ত্রানের লেশমাত্র অবলোকন করো নাই চক্ষে,
তোমার মনে ভয়, এই বুঝি মান যাচ্ছে।
ঘরের ঘরণী চিক্কুর দিচ্ছে!
হাটের বেলা ফুরচ্ছে।

তোমার অনটন দেখবার নাই কোনো জন-টন!
মাথা বারবার করে উঠে টনটন
কার থেকে পাওয়া যায় ঋণ-টিন;

পকেট তাঁর শূন্য
তবু শিক্ষা দানে করনা কখনো কার্পণ্য
তাই তো তোমার সম্মানের ঝুলি পরিপূর্ণ।
সর্বদা চাইছ সংকটের বেলা তাইতো
খেয়ে না খেয়ে ধরে রাখতে সম্মান সম্পূর্ণ।
আমি ও চাই; হে প্রিয় শিক্ষক তোমার মর্যাদা বাঁচুক সর্বক্ষণ,
তোমার শিক্ষায় গড়ে উঠুক জ্ঞানী গুণী আর ত্রান চুর, মান চুর, সব চুর,সব চুর।

সময়ের র্কম সময়ে

পিপীলিকা হতে, যদি নাও শিক্ষা এক রত্তি,
তুমি আমি দেখাতাম না, দুর্বলের উপর শক্তি।
মানবতাকে করতাম সবে মিলে সত্যি, সত্যি ভক্তি।
ক্ষুদ্র পিপীলিকা হতে শুনেছিল বাদশাহ সুলেমান নানা রঙের যুক্তি,
কোরআনে আছে পিপীলিকার নামে কত গুণ কীর্তি।

বুঝে না-ও, দেখে না-ও, তাদের থেকে শিখে না-ও কী করে মিলবে মোদের মুক্তি
একতাবদ্ধতা, সততা আর নিষ্ঠা, অবলোকন করে যাও তাহাদের বুদ্ধিমত্তা।

বিশ্ব সংসারে তাদের হিসেবের চিত্রে
অবাক হয়েছে কত নামি-দামি বিজ্ঞে
দুর্দিনের জন্য তাদের কত যে সঞ্চয়
তাই তো বিপদে নাই কোনো সংশয়

জমিয়েছে গরমে চুল-ছেঁড়া হিসেবে,
বসে খেয়েছে গৃহে বিপদের সময়ে।
তাকেই বলে বুঝি সময়ে কর্ম সময়ে,
ফাঁকিবাজি করেনি তাই ভেসে গেছে সুখের জোয়ারে।

সংকটময় সময়

ঘরে নাই অন্ন,
ক্ষুধা নিবারনে জীবন প্রায় বিপন্ন!
কার কাছে চাহিব ভাত?
আমার যে করে লাজ।

নাই চাকরি, নাই তো বাকরি।
টাকা নাই, পয়সা কই পাই?
চাল নাই, ডাল নাই, নাই মশলা পাতি।
খাদ্যের অভাবে মরবে এই জাতি।

নাই, নাই, নাই।
আমার চাহিদার অন্ত নাই।
পূর্ণ করবার রাস্তা-বন্ধ।
খুলবার নাই, নাম-গন্ধ।

আমার খাবার কে দিবি?
আই ছুটে আই।
করে যা ক্ষুধা নিবারন,
দিয়ে যা প্রশান্তির মহা জাগরণ।

তবে, আজি এই সংকটে ধনীরাই আছে বেশ।
রাস্তার উলঙ্গ, পাগলেরা ও আজি পাচ্ছেনা খাদ্যের লেশ।

তবে আমার জীবন কেনো বিপন্ন?
জুটছে না দুমুঠো অন্ন।
চলছে জীবন ছুটন্ত।
বিশ্ব মানবতা কেনো ডুবন্ত?

ভাসমান মেঘমালা

দেখেছ নিশ্চয়ই, সুনীল আসমান
তাঁর মাঝে আর-ও দেখেছ ভাসমান মেঘেদের মেলা।
যাঁরা ছুটে চলে নিরলস, ভেসে বেড়ায় দেশ হতে দেশান্তর।
কত-শত নগর,শহর পেরিয়ে চলে ক্ষণেক্ষণে সময়ের আবডালে ।

যেখানেই ঝরবার নির্দেশ পায় তাঁরা,
বৃষ্টি হয়ে আছড়ে পরে, দেশ হতে দেশান্তরে, শত-শত নগর শহরে।

তথাপি, বর্ষন শেষে কোমল হৃদয়ের মতো প্রিয় ভূমি ও হয়ে উঠে শস্য ফলাবার পরিপক্ব,
অতঃপর, ফসল ফলে, আমরা তাহা হতে কিছু মাত্র অংশ ভক্ষণ করি।

শুধু কি তাই?
চতুষ্পদের জন্য ফলে মোলায়েম সবুজ ঘাস, বিচরণ করে মাঠঘাট।
তাহাদের মধ্য হতে কিছু করে বংশবৃদ্ধি অতঃপর স্তন্যপায়ীদের স্তনের দুগ্ধ নামক পানীয় আমাদের উদরে হয় আটঘাট।

তাঁহাতেই দূর্বলতা হতে শক্তি ফিরে পায়,এবং আবারও দূর্বল হয়ে মাটিতে মিশে যায়। পূনরায় উত্থান হবে একদিন কম্পনে জেগে উঠবো সেদিন।

ভালোবাসায় ভেজানো রাত

কোনো এক নিশ্চুপ রাতে, নির্মল বাতাসে।
ধান ক্ষেতের মাঝেই দাঁড়িয়ে ছিলাম।
মাস টা ছিলো বৈশাখ।
সময় টা বৈশাখের দিন পনেরোর এক রবিবার রাতের কথা।

মনে ছিলো বেশ প্রেমের ঝটকা।
হুটহাট মনে হয়ে যেতো প্রিয় তোমার কথা।
সেই রাতে ও, তুমি এসে আটকে গেলে মনে। তবে,তুমি সেই রাতে এলে গাঢ় অন্ধকার হয়ে।

যখনই, তোমার চিন্তায় আমি মগ্ন।
কি করে মিলবে তোমার সঙ্গ।
ঠিক তখনই,
মেঘ হাঁক দিলো, আকাশ গর্জে উঠলো তাঁর নিজস্ব নিয়মে ।

ফোঁটা কতেক আছড়ে পরলো আমার অঙ্গে।
সে কি! ঠাণ্ডা হাওয়ায়, মনের কোমলতা ফিরে আসছে বার বার।
আমার চোখের লবণজল ও আর, থাকতে পারলো না তাঁর জায়গায়!
সে ও পরছে, বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে।
আর মিশে যাচ্ছে, ধান গাছের আড়ালে।

সেই রাতের অপূর্ণ ভালোবাসায়,
ঝরানো অশ্রুর কথা।
কেউ জানবে না,এই ক্ষুদ্র জীবনে।
তবে সেই, বিশাল মাঠের সবকটা ধান গাছ জেনে গেছে।
তাঁরা জেনে গেছে, আমার ভালোবাসা সীমাহীন।

তাঁরা বুঝে গেছে ভালোবাসার তীব্রতা,
জেনে গেছে চোখের জলের ওজন কতটা।

তাদের বলবার ভাষা নেই।
পারলে, তুমি জেনে নিও তাদের থেকে।
ওজন করে নিও কতটা ভালোবাসার জল ঝরিয়েছি সেই রাতে।

ভালোবাসার জলে ভিজিয়ে দেয় আমি আজও বহু দিবস রজনী।
বুঝলে না শুধু তোমার মতো পাষাণী, ভালোবাসা আসলে কী।

নিষিদ্ধ কর্ম

যুবক তোমাকেই বলছি, শুনো।
জগতের সকল পাপ করতে তোমার মন চাইবে, যৌবনের উষ্ণতায় তুমি শক্ত পাথর হয়ে রবে।

যুবতী মেয়েদের বুকে তুমি চোখ রাখবে,
হাতে হাত ধরতে মন ছুটবে।
কিন্তু না, এ-তো ধর্মে নিষিদ্ধ!
চোখ নামাও, হাত ছাড়ো।

মন তোমার উড়ুক্কু হবে, নষ্ট প্রায় হয়ে যাবে।
ধর্ষন কিংবা জেনা করতে যৌবন তাড়না দিবে।
কিন্তু এ-তো ধর্মে নিষিদ্ধ!
তুমি সালাতে ফিরে আসো।
তোমার প্রভুর দর্শন লাভ করো।

নিশিতে তোমার মন বলবে,
বিশ্বগ্রামের সকল নিষিদ্ধ পাপের জগতে ডুবদিতে।
নীলছবিতে রাতের যৌবন হস্ত-মৈথুন করে কাটিয়ে দিতে।

কিন্তু না, তোমার ধর্মে তা নিষিদ্ধ!
সার্চ করো কোরআনের তরজমা,
পড়ো তফসির,
মনে আওড়াও হাদিসের বিনা।

যৌবন তোমায় বলবে করিতে নিষিদ্ধ প্রেম, বলিবে রাতের আঁধারে চাপিতে তরুণীর বুক!
মন চাইবে উত্তাপে ভরিয়ে দিতে রমণীর লোমকূপ।

কিন্তু না, এ হয় না।
তুমি হালাল ব্যবসা করো, রুটি-রুজির রাস্তা খুঁজ, অতঃপর শরিয়তের নিয়মে বিয়ে করো।

এতো চমৎকার ধর্ম ত্যাগে তুমি কিছুই পাবে না যুবক, তবে জাহান্নামের লেলিহান লালসার মুখে তুমি পরে যাবে।
তখন আফসোস করে বলবে…
আর একটা দীর্ঘ সিজদাহ্ যদি করতে পারতাম প্রভু তোমার তলে;
বড়ই শান্তি পেতাম, আমার এই মন বলে।

ভাবিলেই মন বলিবে শুকরিয়া তাঁহার

বর্ষার বৃষ্টি, অনন্য এ সৃষ্টি।
মাঠেঘাটে ফসলাদি, চিরসবুজের দৃষ্টি।
মধু মাসে মধু ফল, সবই তাহার সৃষ্টি, যিনি দিয়েছেন আমাদের দেখবার দৃষ্টি।

অসম্ভব গরমে, পূবালী হাওয়া, দক্ষিণের দেওয়ানা বাতাস ছুটিয়ে, কে দেয় আমাদের প্রশান্তির ছুঁয়া?

কনকনে ঠাণ্ডার সকালে, পূবের আকাশে রক্তিম সূর্য উদয় হয়ে কেনো ছড়ায় উত্তাপ মোদের?
কার আদেশে ই বা, সে ছুটে চলে নিরন্তন?

আমাদের সারাবেলা, নিরবিচ্ছিন্ন কাজের খেলা শেষে, কে নামিয়ে দেয় রাত? বিশরাম আর ঘুমের জন্য কে ডুবাইলো উত্তপ্ত সূর্য?
নিশিযাপনে কে উঠাইলো পূর্ণিমা চাঁদ?

একটু সময় কি হবে মানুষ, ভেবে দেখার? ভাবিলেই মন বলিবে, শুকরিয়া তাঁহার…

কবরস্থানে একদিন (অভিজ্ঞতা, ভাবনা)

আজকে বিকেলের কথা, মন টা কেমন অস্থির লাগছে, কতদিন কলেজ যায় না, যায়না কোথাও ঘুরতে। সবুজের উপর দু-চোখ ডেবডেব করে ফেলিনি তা-ও তো অনেক দিন হলো। এইসব ভাবছি, তখনই

আসরে আজান হলো, সৃষ্টিকর্তা ডাকছে, কল্যানের দিকে। ডাকছে,নামাজের দিকে।
উনার সৃষ্ট এই মায়াবী পৃথিবীতে আছি অথচ দয়াময় প্রভুর ডাকে সাড়া না দিয়ে ঘরে বসে থাকতে পারলাম না।

পাড়ার মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত ফরজ নামাজ টা আদায় করে। সবুজ দেখতে দেখতে চলে আসলাম চিরন্তন থাকার বাড়ি কবরস্থানে। সবসময়ই কবরস্থান টা আমাকে খুবই কাছে ডাকে, আমি সেথায় গেলেই অদ্ভুত এক ভালোলাগা চলে আসে মনের গহীনে।

এই ভালো লাগার এবং কাছে টানার পিছনের কারণ হিসেবে যদি বলি, তাহলে বলতে হয়।
আমার মমতাময়ী ‘মা’ এই কবরস্থানেরই এক কোনে শুয়ে আছেন।
হয়তোবা এই জন্যেই আপনের চেয়েও আপন মনে হয় কবরস্থানের বালুকণা, দূর্লব লতাপাতা সহ সব কিছুই।

আমার মা যখন প্রিয় সংসার ছেড়ে, মায়াবী পৃথিবী থেকে ইহলোকে রওয়ানা হলেন, তখন আমার বয়স আট কি নয়। পড়াশোনায় বলতে হয় তৃতীয় শ্রেণির অবুঝ এক বালক আমি।

মায়ের ভালোবাসা, মমতাময়ীর আদর, স্নেহময় বৃক্ষছায়া, এইসব বুঝে উঠার আগেই আমার জন্মদাত্রী ‘মা’ চলে গেলেন প্রভুর নিকট।

আজ-অব্দি মায়ের ভালোবাসা বলতে যা বুঝাই তা কেনো যেনো বুঝে উঠতে পারি না আমি।
কত শুনি মায়ের ভালোবাসা এমন তেমন, কিন্তু আমি তা কখনো অনুভব করতে পারিনি।

যাইহোক, কবরস্থানে এসে চলে গেলাম মা যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত সেখানে।
বরাবরের মতো মায়ের কবরে হাতবুলিয়ে দিলাম। মমতাময়ী কে আদর করে, সেই ধূলিমাখা হাতে আল্লাহর কাছে মায়ের পক্ষ হতে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করলাম। দয়াময়ের কাছে মন খুলে বলতে লাগলাম, “রাব্বির হামহুুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সাগিরাহ্”

পরক্ষণেই কান্নায় ভেজা চোখে, এসে বসলাম কবরস্থানের এক দেয়ালে যেখানে প্রায়ই আমি বসি আর ভাবি নানান কিছু।
আজকে আর ভাবতে কিছু মন সায় দিচ্ছে না। তাই মোবাইল টা হাতে নিয়ে আল্লাহর প্রেরিত কালামুল্লাহ শরীফের ফযিলতময় সূরা ইয়াসিন চালিয়ে দিলাম। শ্রেষ্ঠ দের মধ্যে অন্যতম তেলাওয়াতে কোরআনের ক্বারি আহমদ সুদাইসির মধুর কণ্ঠে চলছে সূরাহ ইয়াসিন আর আমি চিন্তা করতে চেষ্টা করছি, দয়াময় প্রভু আমাদের কতো নিয়ামতের দ্বারা পরিচালিত করেন প্রত্যেক টা দিনরাত্রি।

তাইতো, প্রভু সূরা আর- রহমানে বারবার উল্লেখ্য করেছেন –
(ফাবি অ্যাইয়ি আলা’ই রাব্বিকুমা তুক্কাজিবান।)
অর্থ-তোমরা উভয়ই তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন নিয়ামত কে অস্বীকার করবে?