একটি সিজদাহ্ হতে পারে জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রশান্তি

আমরা কেনো এতো হতাশ? কেনো জীবনে এতো গতি চাই? আমাদের মন সর্বক্ষণ অকল্পনীয় গতিতে ছুটতে চায়।
যখনই গতিতে একটু ভাঁটা পরে তখনই আমরা হয়ে যায় হতাশ!

আমরা, আমাদেরই প্রভু, আমাদের সৃষ্টি কর্তা, যিনি আমাদের রিজিক দেন আমরা খাই, বাঁচি এবং মরি। যখন আমাদের জীবনে হতাশা,দুঃখ, ক্লেশ আছড়ে পরে তখন উনাকে দোষারোপ করি, প্রলাপ বকি! সে কথা ভুলে যায় বেমালুম, যখন তিনি আমাদের আনন্দিত করেন, সুখে রাখেন।ভালো খাদ্য দ্বারা আমাদের পেট ভরপুর করে দেন, যেই খাদ্য মাটি হতে, চতুষ্পদ জন্তু হতে আমাদের জন্য উৎপন্ন করেন। তখন ক’জন আছি আমরা যে উনার কথা সরণে দিনে কতকবার আলহামদুলিল্লাহ বলে শুকরিয়া গুজরাত করি?

আমরা এই পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে এতোই নিমজ্জিত যে, সপ্তাহে ছ’দিন ডুবে থাকি এতে, কোনও খেয়ালই করি না যে, যিনি এইসবের মালিক, যিনি সকল কিছুরই সৃষ্টি করেছেন এবং ধ্বংসের সক্ষমতা ও তাঁর কাছেই। তিনি চাইলে ‘আছে’ থেকে ‘নাই’ হয়ে যাবে সব। বড় বড় অট্টালিকা সব কম্পনে কেঁপে মাটিতে গড়িয়ে ধূলিসাৎ হয়ে যেতে পারে এবং যাবে নিশ্চয়ই। তাঁর আহবানে ক’জন আছি আমরা যে সাড়া দেয়?ক’জন আছি, যাঁরা দিনে পাঁচবার ডাকের জবাব দেয়;
আমরা দিনরাত্রি মিলে কতবার-ই উনার সাথে চ্যাট করি, কতবার ধন্যবাদ জানায় উনাকে আমাদের চারিপাশ এতো নিয়ামতে ভরপুর করে দেয়ার জন্য। কতবার বলি হে, আমার রব, জানা, অজানা, প্রকাশে, গোপনে তোমার সকল নিয়ামতের শুকরিয়া।

সর্বদা জানি আজান হবে, প্রভু ডাক দিচ্ছে এই কথা কী ভাবি কখনো?
কখনো কী চিন্তা করেছি, যে আজান নয়, আমার মালিক আমাকে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার আহ্বান করছেন,আমি কি করে দুনিয়া নিয়ে, দুনিয়ার চাকচিক্যের আলোর নিচে বসে আছি, সর্বময়ের আহ্বানের পরে-ও!

যখনই শুক্রবার টা আসে তখনই মনে আওড়াই আরে, আমার তো আজকে নামাজ আছে মসজিদে যেতে হবে। অনেকে তো শুক্রবার বিশ্রাম আর ঘুমিয়ে পার করে দিয়।
এই-যে সিস্টেম আমরা অন্য জাতির কাছ থেকে হাওলাত করে আনলাম, যেই জাতি নিশ্চিত বিপথগামী, তাদের সিস্টেমে জীবনের মূল লক্ষ্য, পৃথিবীতে আসার প্রধান উদ্দেশ্য সহসাই ভুলে বসে আছি। সনাতনীদের থেকে হাওলাত করলাম আমরা সপ্তাহে একদিন প্রার্থনার রীতি, আরো অন্য কত যে কী দিয়ে জীবন সাজাতে চাচ্ছি, যখনই সেই চাওয়া-পাওয়ার সীমানা বড় থেকে আরো বড় হতে থাকে এবং এক প্রর্যায়ে আমরা এমন কিছু পেতে চাই যা আমাদের আওতাধীন নয়। আর সেই চাওয়া পূর্ণ না হলেই আমরা হতাশ হয়ে পরি, প্রচণ্ড রকম অপূর্ণতা বোধ করি। আমাদের যা অর্জন আছে সব তখন তুচ্ছ মনে হয়, আরো মনে হয় ওই অপূর্ণ চাওয়া পূর্ণ না হলে আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই, নেই কোনো শান্তি।

আসলে, শান্তি এবং সুখ দুনিয়ার মানুষের কাছে যা মূল্যহীন এমন বস্তুর মধ্যে ও বিদ্যমান হতে পারে, আল্লাহ সেইখানে ও আমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত রাখতে পারে যা আমরা জানি না। কিন্তু তিনি তা জানেন। হতে পারে পরবর্তী আজান শুনে আপনি মসজিদে গিয়ে ‘আল্লাহুুআকবার’ বলে সিজদাহ্ করে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখ এবং শান্তি, অথবা সেরা প্রাপ্তিটা পেয়ে গেলেন সেই সিজদাহ্’র মাধ্যমে। যা আপনি এতোদিন দুনিয়ার চাকচিক্যের কাছে তুচ্ছ মনে করতেন কিন্তু এতে কেমন করে প্রশান্তির পরশ থাকতে পারে তা কেবলই প্রভু জানেন। তাইতো তিনি বলেছেন -(‘তোমরা যাতে কল্যাণ দেখো, সেখানে তোমাদের জন্য কল্যাণ না ও থাকতে পারে।আর তোমরা যাতে অকল্যাণ মনে করো তাতে কল্যাণ থাকতে পারে। বস্তুত তোমরা তোমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে জানো না।’… )

গোলাম কিবরিয়া সৌখিন সম্পর্কে

গোলাম কিবরিয়া সৌখিন। চট্টগ্রামে ২০০৩ সালের ১০-ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, কসবা উপজেলায় সপরিবারে নিজ গ্রামে অবস্থান করছেন এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। উনি শৈশব থেকেই ভাবুক ও দার্শনিক চিন্তা করতে পছন্দ করেন।আর সেই ভাবনার প্রতিফলন হিসেবে কবিতার হাতেখড়ি শুরু। কবি শুধু লিখে যেতেই চান না, তিনি চান সবার সাথে উনার ভাবনা গুলোকে ছড়িয়ে দিতে এবং সেই ভিত্তিতে কবি বাংলাদেশে এবং ভারতের বিভিন্ন কবিতার অনলাইন মিডিয়ায় কবিতা লিখে চলেছেন। এবং অন্যান ভাবনা গুলি একত্র করে সমসাময়ীক লিখা লিখে থাকেন। সকলের ভালোবাসা এবং উৎসাহ নিয়ে প্রতিনিয়ত লিখে যাচ্ছেন। কবি ভবিষ্যতে কর্ম জীবনে উনার কবিতার কিছু বই প্রকাশ করার ইচ্ছে পোষণ করেন। সকলের কাছে দোয়ার দরখাস্ত নিয়ে আবেদন এই ভাবনার কবি গোলাম কিবরিয়া সৌখিনের।

4 thoughts on “একটি সিজদাহ্ হতে পারে জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রশান্তি

  1. মহী কে জানায় অনেক অনেক ভালোবাসা।     

  2. করোনাকালের এই দূর্যোগে আপনার নিবন্ধটি পড়ে মনটি শান্ত হলো। ভালো থাকবেন।

  3. অশান্ত মন কে শান্ত করার প্রয়াসে লিখে থাকি ।আপনার ভালো লাগার কথা শুনে আমার ও নিশ্চয়ই ভালো লাগছে। ধন্যবাদ ।       

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।