আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো। যেমন আজ দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।
আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৫ম পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি –রিয়া রিয়া এর “অপেক্ষা … ২৩ (চিঠি) ”
লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।
চিঠি (রিয়া রিয়া এর লেখা)
প্রিয়মন,
অপেক্ষায় থাকি আমি রোজ, এ যেনো অনন্তকালের অপেক্ষা আমার তোর জন্য। অপেক্ষার রং কমলারসা, যেনো তোর ঠোঁটের স্বাদ। অপেক্ষার সন্ধ্যে নীল, তোর চোখের ছায়া। তুই ও কি অপেক্ষা করিস? বলনা করিস অপেক্ষা ? একেবারেই করিস না? জানতে ইচ্ছে করে ভীষণ, তোর অপেক্ষা আমার জন্য। এতো শুধু সময় পেন্ডুলাম। অপেক্ষা এখনও বাকি। অপেক্ষার দুপুর কাজলছাপ, তোর রুক্ষ চুলের মতো। অপেক্ষার মন ধোয়া রঙ, তোর নিঃশ্বাসে ডুব চান।
সময় নদী কুলকুল করে বয়ে আমার কাছে আকুল হয়ে দাঁড়ায়। আমার তখন তোকে ছুঁতে চাওয়ার ইচ্ছেরা প্রবল হয়। ইচ্ছেরা সব জাগে। নিবিড় ভাবে জড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে তখন তোকেই। কুশের আসন ভিজিয়ে নিয়ে বসেছি তোর আরাধনায়, একটু ঘাস ভেজানো ঘ্রাণ। বুকের ভিতর উথাল পাথাল ঢেউ। আবার জন্মে আবার যদি ফিরি। তবে পাতার জন্ম নেবো, শুধু তোকে ছুঁয়ে থাকবো মন। হয়তো বাতাস হব।
আজ মন তোর কাছে গচ্ছিত। ভালবাসা দাঁড়িয়ে তোর চৌকাঠে।মনের বাঁধন খুলে গেছে সন্ন্যাস আবিরে। অপেক্ষার ঘোর লেগেছে আমার মনে, মাথার ভেতর অসংখ্য অলিগলিতে শুধু তোর আনাগোনা। সন্ধ্যে বেলায় ধূপের ধোঁয়ায় দেখি, অপেক্ষার নামতা। অসহ্য এ অপেক্ষা, অসহ্য এ শরীর, একবার তুই ছুঁয়ে দেখ। ইতিহাসের পাতায় সব দুঃখ হেলায় ফেলে সুখের শিখরে উঠবো। এইত, শুধু এইটকুই আমার রোজ নামচার পথ। স্বপ্ন বেয়ে আসতে পারি তোর কাছে যখন তখন। সন্ধ্যে কিংবা রাত। মন খারাপের রাতগুলোও তুইই থাকিস ঘিরে।
আজ না হয় ঘুমিয়ে পড়ুক তোর আর আমার রাত …
… ইতি,
আমার হারানো মন…
______________
আমার উত্তরঃ
ঘুমিয়ে পড়া রাতের আঁধার চোখের তারার সুখে
খুব সকালে জেগে উঠি স্বপ্ন মায়া বুকে।
তোর কারনে একলা লাগে বুকের গভীরে
মন খারাপের রাতগুলোও তুইই থাকিস আমায় ঘিরে।
গচ্ছিত যে ভালোবাসা দাঁড়িয়ে চৌকাঠে
কানাগলির গোলক ধাঁধায় হাঁটে পথে পথে।
জীবন কি আর ইচ্ছে মত সুখ শিখরে ওঠে
রোজ নামচার পথ গুলোতেই ফাল্গুনি ফুল ফোটে।
প্রিয়,
তোর চিঠি পেলাম পড়তে গিয়ে নিজেকে হারিয়েছি জীবনের ব্ল্যাকহোলে। হঠাৎ করে তোর এই আকুলতা আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। ভালো আছিস তুই?
বেলা অবেলার মাঝখানে দাঁড়িয়ে নিষ্পলক চেয়ে দেখেছি, গাঢ় গভীর রাতের আসমানী রঙ; ছুয়ে দেখতে পারিনি কোনদিন সবুজের চাদরে জড়িয়ে থাকা শিশির বিন্দু, যতবার ভেবেছি ছুঁয়ে দেখবো ততবার সকালের রোদ তাকে টেনে নিয়েছে উষ্ণ উত্তাপে।
আমি জাতিশ্বর হয়ে জন্মানো বিষয়টি কোন দিনই চাই না, যা এ জীবনে হবে না পরবর্তী জীবনে আশা করে হয়তো মানসিক সুখ মেলে কিন্তু নিজের কাছে নিজের বিচার করলে অংকের ফলাফল তো শূন্যের কোঠায় দাঁড়াবে, আর সেই শূন্য থেকেই তোকে হারানোর শূন্যতা অনুভব…. কি দরকার মিছে শান্তনার….।
অপেক্ষায় আমিও থাকি প্রান্তিক উৎসবে; কখন আসবে তুমি খোপায় গুজে বেলী ফুলের মালা, চোখে কাজলের টান, পায়ে আলতা, হাতে কাঁকন আর কপালে সিঁদুর রঙের টিপ…. তোমাকে আকুল করে দাঁড়ানো কুলকুল নদী আমাকে পথ আটকে দাড়ায়, চাইলেই পারাপারের খেয়া খুঁজে পাই না। বুকের ভিতর উথালপাথাল ঢেউ ঝড়ো হাওয়া হয়ে উড়িয়ে নিয়ে যায় দেশ থেকে দেশান্তরে……।
তারপরও স্বপ্ন আবেশে ছুঁয়ে যাওয়া মন দিগন্তের দিকে চোখ মেলে ধরে, খুঁজে ফেরে হারানো সে দিন। আচ্ছা বলতো যে দিন গেছে চলে তা কি একেবারেই গেছে ? সময়ের ভাঁজে ভাঁজে যে গন্ধ ছিলো তোর, শরীর জুড়ে তার থেকে বাইরে এসে দেখেছি চোখের চশমার কাঁচ শুধুই মোটা হয়েছে বারংবার।
পোড়া ধূপের ধোয়ার সুভাস এক সময় বিলীন হয়ে যাবে বাতাসে ভেসে ভেসে
পোড়া চোখের স্বপ্নগুলো এক সময় বাস্তবতার কাছে হার মেনে ফ্যাকাশে হবে
পোড়া মনের ক্ষতও এক দিন হালকা হয়ে যাবে জীবনের স্বাভাবিক নিয়মে……
আর আমিও হেঁটে যাবো দূর থেকে দূরে, আরো দূরে; যেখানে অভিশপ্ত কোন জীবনের জন্য কোন রংধনূ উঠবে না। ভালো থাকিস নিজের মত করে এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।
আমি
খেয়ালী….

অপেক্ষা চিঠির উত্তর পেতে সত্যই দেরি করতে হলো না।
দ্রুত উত্তর পড়তে পেরে ভালো লাগলো প্রিয় খেয়ালী মন।
ধন্যবাদ ভাই
শুভকামনা থাকলো।
চিঠি এবং উত্তর উভয়ই অসাধারন সব বাক্য বিন্যাসে সহ্যিত। এমন ভাবনা ভাবতেও ভাল লাগে মনতা কেমন করে।
অনেক ধন্যবাদ ভাই
আপনারা সাথে আছেন বলেই লিখতে সাহস পাই
বেশ ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। দারুণ লেগেছে! যেহেতু চিঠিপত্র হারাতেই বসেছে।
লেখার চেষ্টা করতে পারি… উত্তর দেবেন তো!
মামুন ভাই আমি আপনাদের ভালোবাসার জন্য লিখি
আপনি কোন কিছু না ভেবেই লিখে ফেলুন আমি অবশ্যই উত্তর দেবার চেষ্টা করবো।
শুভ কামনা।
চিঠির অধ্যায় যখন হারানোর পথে তখন আপনার আপ্রাণ এ প্রচেষ্টা সফলতা লাভ করছে অতীতকে মনে করিয়ে দিয়ে। ভাইয়া খুব ভালো লাগলো।
অনেক শুভ কামনা শফি ভাই
আপনিও আমার পছন্দের একজন মানুষ।
আপনার কাছ থেকেও চিঠির আশা করি।
ভালো থাকবেন।
বাহ, অসাধারণ উত্তর পর্ব- অপেক্ষা

অনেক ধন্যবাদ চারু ভাই
আশাকরি আপনিও যোগ দেবেন আমার এই পথ চলায়
উত্তরে জোর করে কষ্ট নিয়ে আসছেন।
ঠিক বলেছেন আবাবিল ভাই কিছুটা আনার চেষ্টা করেছি ইচ্ছে করেই, তা না হলে একদম সাধামাটা মনে হতো, মাঝে মাঝে নিজেকে বোঝাতে চিঠিতে এটুকুতো করাই যেতে পারে …
আপনার সুন্দর মন্তব্যকে সেলাম।
শুভকামনা থাকলো সাথে পাবো আশাকরি।
অপেক্ষায় থাকি আমি রোজ, এ যেনো অনন্তকালের অপেক্ষা আমার তোর জন্য। অপেক্ষার রং কমলারসা, যেনো তোর ঠোঁটের স্বাদ। অপেক্ষার সন্ধ্যে নীল, তোর চোখের ছায়া। তুই ও কি অপেক্ষা করিস? বলনা করিস অপেক্ষা ? একেবারেই করিস না? জানতে ইচ্ছে করে ভীষণ, তোর অপেক্ষা আমার জন্য। এতো শুধু সময় পেন্ডুলাম। অপেক্ষা এখনও বাকি। অপেক্ষার দুপুর কাজলছাপ, তোর রুক্ষ চুলের মতো। অপেক্ষার মন ধোয়া রঙ, তোর নিঃশ্বাসে ডুব চান।
আহ! কি দারুন নিবেদন… বিমুগ্ধ!!
শুভ সন্ধ্যা প্রিয় ,(y) <3
প্রীতিময় শুভেচ্ছা ও ভালবাসা –
দাউদুল ভাই আমি কিন্তু আপনার লেখার খুব ভক্ত এবং পাঠক।
আমি মন থেকে চাই আপনি আমার এই চিঠির সাথে একবার হলেও যুক্ত হবেন।
শুভকামনা থাকলো।
ভীষণ সুন্দর এবং সাবলীল লেখা হয়েছে চিঠির উত্তর..চলুক আমাদের ব্লগে চিঠিবাজি
অনেক ধন্যবাদ রিয়া রিয়া, আমার লেখার থেকে আপনার লেখার গভীরতা অনেক বেশী ছিলো, আমি সেই অনুযায়ী উত্তর দিতে পারিনি যা আমার ব্যার্থতা…
ভালো থাকবেন আর
শব্দনীড়ের সাথে থাকবেন আশাকরি।