গুড ফ্রাইডের কবিতা

গুড ফ্রাইডে’ বা “শুভ শুক্রবার” মূলত খ্রিষ্টানদের দ্বারা পালিত একটি ধর্মীয় ছুটির দিন। এই উৎসবের অপর নাম ‘হোলি ফ্রাইডে’ বা ‘পবিত্র শুক্রবার’, ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ বা ‘কালো শুক্রবার’ এবং ‘গ্রেট ফ্রাইডে’ বা ‘মহান শুক্রবার’ নামেও পরিচিত। যিশু খ্রিষ্টের ক্রুসবিদ্ধকরণ, মৃত্যু ও সমাধিমন্দির থেকে তাঁর পুনরুজ্জীবনের স্মরণে এই দিনটি পালিত হয়।

পবিত্র সপ্তাহে ইস্টার রবিবারের পূর্ববর্তী শুক্রবারে প্যাস্কাল ট্রিডামের অংশ হিসেবে এই উৎসব পালিত হয়। প্রায়শই গুড ফ্রাইডে ইহুদিদের উৎসব পাসওভারের সঙ্গে একই দিনে উৎযাপিত হয়ে থাকে। বিভিন্ন বছরে এই দিনটি বিভিন্ন দিন হলেও সাধারনত ২০ মার্চ থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে পড়তে দেখা যায়৷

খ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার দিনকে কেন ‘গুড ফ্রাইডে’ বা শুভ শুক্রবার বলা হবে তা নিয়ে কিছুটা প্রশ্নও ওঠে ৷ কারণ এমন যন্ত্রণাদায়ক অবসানের মধ্যে ‘শুভ’টা কোথায়? বিশেষত জার্মানি সহ বেশ কিছু স্থানে এই দিনটির নাম ‘বেদনাময় শুক্রবার’। তবে এমন নামকরণের একটা ব্যাখ্যা রয়েছে৷ মনে রাখতে হবে, খ্রিস্টধর্মের আদি পর্বের ইতিহাসে বিস্তর লোক কাহিনি ও উপকথা জড়িয়ে রয়েছে। ইংরেজি নামটির একটি ব্যাখ্যা হল, এটি ‘গড’স ফ্রাইডে’র পরিবর্তিত রূপ। আবার, পবিত্র (‘হোলি’ বা ‘পায়াস’) অর্থে প্রাচীন ইংরেজিতে ‘গুড’ শব্দটি ব্যবহৃত হত, নামটা সেখান থেকেও এসে থাকতে পারে।

এটিই ইস্টার পরবের প্রধান দিন। এই পর্বটি শেষ হয় ইস্টার সানডে’তে, যিশুর পুনরুত্থানে। ইস্টারের দিনক্ষণ নিয়ে এক কালে নানা মত ছিল, গোড়ায় ‘স্প্রিং ইকুইনক্স’ বা মহাবিষুব-এর সময় এই উৎসব পালন করা হত। সেই মতো প্রথমে ধরা হয়েছিল, যিশু ৩৩ খ্রিস্টাব্দে ক্রুশবিদ্ধ হন, তখন গুড ফ্রাইডে পালন করা হত ৩ এপ্রিল। এদিকে আবার আইজাক নিউটন গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি মেপে সময়টাকে ৩৪ খ্রিস্টাব্দে নিয়ে আসেন।

এখন পশ্চিম ইউরোপের চার্চগুলি এই দিন স্থির করে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মেনে, আর পূর্ব ইউরোপে অনুসরণ করা হয় জুলিয়ান ক্যালেন্ডার। দিনটা আলাদা হলেও এই পরবের বিশেষ প্রার্থনা এবং ‘মাস’ দুই ভূখণ্ডেই এক রকম। প্রকৃতপক্ষে, ইস্টার সানডের চল্লিশ দিন আগে শুরু হয় ‘লেন্ট’ পর্ব, অনেকে এই সময়টা উপবাস করেন।

এদিকে ইস্টার এগের মাধ্যমে যিশু খ্রিস্টের পুনরুত্থানকে প্রতীকী করা হয়ে থাকে। খ্রিস্ট ধর্মালম্বীরা মনে করেন, পাখি যেমন ডিমের খোলস ছেড়ে পৃথিবীর আলোয় আসে, তেমনিভাবেই যিশুও পুনুরুত্থিত হয়েছিলেন। পুনরুত্থানের সেই দিনটিকে বলা হয় ইস্টার সানডে। আর ইস্টার সানডের অন্যতম অংশ ইস্টার এগ। ডিম হল পুনর্জন্মের প্রতীক।

ইস্টারের জন্য ডিমের রং যে লাল করা হয়, সেটা খ্রিস্টের রক্তের রূপক হিসেবে। রাশিয়াতে সমাধির উপর রাখা হত রক্তবর্ণ ‘ইস্টার এগ’ যা আসলে পুনরুত্থানের প্রতীক। আজকাল সচরাচর ডিমের আকারে চকলেট, কিংবা জেলি-বিন বা অন্য কোনও মিষ্টি ভিতরে রাখা প্লাস্টিকের ডিম ব্যবহার করা হয়৷ আবার কেউ কেউ এই সময় মুরগির ডিম কড়া সেদ্ধ করে রং করে থাকেন।

বাংলা কবিতা আসরের সকল কবিগণকে জানাই পবিত্রতম দিবস
গুড ফ্রাইডের আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

গুড ফ্রাইডের কবিতা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

গুড ফ্রাইডে আজিকে পবিত্র দিবস,
সকলেই গাহ আজি প্রভু নাম যশ।
ক্রুশ কাঁধে চলে সবে যতেক খ্রিষ্টান,
সকলেই হাঁটে পথে গাহে স্তব গান।

গুড ফ্রাইডে সকালে যীশুর প্রার্থনা,
প্রভুর নিকটে সবে করয়ে বন্দনা।
পরিত্রাতা প্রভু যীশু, এসো পুনর্বার,
পুনরুত্থানের লাগি প্রতীক্ষা আবার।

শিখালে মানবে তুমি করিবারে ক্ষমা,
করিও না ক্ষমা যারা করে প্রবঞ্চনা।
সবাকার তরে তুমি ত্যজিলে জীবন,
পাপীজনে করিয়াছ প্রেম আলিঙ্গণ।

যীশুর পুনরুত্থান- পুনঃ বসুধায়,
লিখিল লক্ষ্মণকবি তাঁর কবিতায়।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

6 thoughts on “গুড ফ্রাইডের কবিতা

  1. গুড ফ্রাইডের বা ইস্টার সানডের আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  2. গুড ফ্রাইডে’ বা “শুভ শুক্রবার” এর ব্যাখ্যাটি খুব বেশী পরিচিত ছিলো না। জানা হলো। 

  3. কবিতার পাশাপাশি বিস্তারিতটুকু জানলাম ভাই।  

  4. সবাকার তরে তুমি ত্যজিলে জীবন,
    পাপীজনে করিয়াছ প্রেম আলিঙ্গণ।

    যীশুর পুনরুত্থান- পুনঃ বসুধায়,
    লিখিল লক্ষ্মণকবি তাঁর কবিতায়। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

  5. যিশু খ্রিষ্টের ক্রুসবিদ্ধকরণ, মৃত্যু ও সমাধিমন্দির থেকে তাঁর পুনরুজ্জীবনের স্মরণে এই দিনটি পালিত হয়। গুড ফ্রাইডের আন্তরিক প্রীতি আপনার জন্যও প্রিয় কবি দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

  6. সুমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সবাইকে। ইস্টার স্যাটারডের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
    আসুন আমরা আরও জেনে নিই। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

    পরিত্রাতা যীশু বললেন-

    "আমিই পথ, সত্য এবং জীবন; আমার ছাড়া কেউই পিতার কাছে আসতে পারে না।" 23 "আমিই জগতের আলো। যে আমায় অনুসরণ করবে তাদের কেউ অন্ধকারের মধ্যে হাঁটবে না, কিন্তু জীবনের আলো পাবে। "24 এবং যে কেউ আমাকে বিশ্বাস করে," আমি তাদের অনন্ত জীবন দিই "…

    ইংরাজী ভাষায় কবি কর্তৃক অনুবাদ করা হয়েছে।

    "I am the way and the truth and the life; No one can come to the Father without me. "23" I am the light of the world. Whoever follows me will not walk in the darkness, but will have the light of life. "24 And whoever believes in me," I give eternal life to them "…

    অসমীয়া ভাষায় কবি কৰ্তৃক অনুবাদ করা হয়েছে।

    মই পথ, সত্য আৰু জীৱন; মই অবিহনে কোন জন পিতাৰ সমীপে আহে না। 23 মই কেৱল সাৰা বিশ্বৰ আলোক। যিজনা মোক অনুসৰণ কৰিব সকলোৱে তাৰা অন্ধকাৰত হাঁটিব না কিন্তু জীৱনৰ আলোক প্ৰাপ্ত হ’ব। 24 আৰু যি মনুষ্য মোক বিশ্বাস কৰক, মই সকলোৱে অনন্ত জীৱনদান কৰি ….ମମ

    হিন্দি ভাষায় কবি কৰ্তৃক অনুবাদ করা হয়েছে।

     “मार्ग और सच्चाई और जीवन मैं ही हूँ; बिना मेरे द्वारा कोई पिता के पास नहीं पहुंच सकता।23 जगत की ज्योति मैं हूं; जो मेरे पीछे हो लेगा, वह अन्धकार में न चलेगा, परन्तु जीवन की ज्योति पाएगा।24 और जो मुझ पर विश्वास करेगामैं उन्हें अनन्त जीवन देता हूँ…”

     

    পাঞ্জাবী ভাষায় কবি কৰ্তৃক অনুবাদ করা হয়েছে।

    "ਮੈਂ ਰਸਤਾ ਅਤੇ ਸੱਚ ਅਤੇ ਜੀਵਣ ਹਾਂ, ਕੋਈ ਵੀ ਮੇਰੇ ਤੋਂ ਬਿਨਾਂ ਪਿਤਾ ਕੋਲ ਨਹੀਂ ਆ ਸਕਦਾ." 23 "ਮੈਂ ਦੁਨੀਆਂ ਦਾ ਚਾਨਣ ਹਾਂ." ਜੋ ਕੋਈ ਮੇਰੇ ਪਿੱਛੇ ਚੱਲਦਾ ਹੈ ਉਹ ਹਨੇਰੇ ਵਿਚ ਨਹੀਂ ਚੱਲੇਗਾ, ਪਰ ਜ਼ਿੰਦਗੀ ਦਾ ਚਾਨਣ ਹੋਵੇਗਾ . "24 ਅਤੇ ਜੋ ਕੋਈ ਮੇਰੇ ਵਿੱਚ ਵਿਸ਼ਵਾਸ ਕਰਦਾ ਹੈ," ਮੈਂ ਉਹਨਾਂ ਨੂੰ ਸਦੀਵੀ ਜੀਵਨ ਦਿੰਦਾ ਹਾਂ "…

     

    মারাঠী ভাষায় কবি কৰ্তৃক অনুবাদ করা হয়েছে।

    "मी मार्ग, सत्य आणि जीवन आहे: माझ्याशिवाय इतर कोणीही पित्याकडे येत नाही." 23 "मी जगाचा प्रकाश आहे, आणि जो माझे अनुयायी आहे तो अंधारात चालणार नाही, तर जीवनाचा प्रकाश असेल." 24 आणि जो कोणी माझ्यावर विश्वास ठेवतो तो मी "सार्वकालिक जीवन देतो" …

     

    গুজরাটী ভাষায় কবি কৰ্তৃক অনুবাদ করা হয়েছে।

    "હું માર્ગ, સત્ય અને જીવન છું: મારા સિવાય કોઈ પણ પિતા પાસે આવતું નથી." 23 "હું જગતનો પ્રકાશ છું, અને મારા અનુયાયીઓ અંધકારમાં ચાલશે નહિ, પરંતુ જીવનનો પ્રકાશ રહેશે." 24 અને જે કોઈ મારામાં વિશ્વાસ કરે છે તે "હું તેઓને અનંતજીવન આપીશ" …

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।