আমার কবিতা গুচ্ছ : প্রথম পর্ব।
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর নির্বাচিত কবিতা। প্রথম প্রকাশ-১২ ই জুন, ২০১৯
_______________________
ভূমিকা :
সকলের সহযোগিতা ও আন্তরিক সহমর্মিতায় লেখা হলো আমার কবিতাগুচ্ছ প্রথম পর্ব। কবিতাগুলি বাংলা কবিতার আসরে প্রকাশিত হলে পাঠক ও কবিগণের সহৃদয় মন্তব্য আমাকে মুগ্ধ করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এর প্রাথমিকভাবে প্রকাশ দেওয়া হলো। প্রকৃতি ও পরিবেশময় এই কবিতাগুলি সকলের ভালো লাগলে আমার শ্রম সার্থক হবে।
এই পুস্তক সংক্রান্ত সদুপদেশ বা সুপরামর্শ থাকলে তা মন্তব্যে লিখে সহযোগিতা করুন এটা প্রত্যাশা করি। সকল কবি, লেখক ও লেখিকাগণকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন । জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!
বিনীত কবি
নারায়না বিহার, নতুন দিল্লি-১১ ০০ ২৮
তারিখ: ১২ই জুন- ২০১৯
________________
সুচীপত্র :
০১. বিবর্ণ সকাল
০২. বিরহী কবির ব্যথা
০৩. আমাদের গ্রামখানি
০৪. বিশ্ব কবিতা দিবস
০৫. ভোর হয় নদী কিনারায়
________________
বিবর্ণ সকাল
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
শীতের কুয়াশা ভরা বিবর্ণ সকাল,
ঘন কুয়াশায় আজি ঢাকিল আকাশ।
নদী ঘাট দিঘি জল আর বিল খাল
হতে উঠে বাষ্পসম শীতল বাতাস।
শীতের সকালে রবি নাহি দেখা যায়,
তরুশাখে পাখিসব কাঁপিছে সমীরে।
কাকগুলি পাঁচিলেতে ডানা ঝাপটায়,
উত্তরে হাওয়া বয় অজয়ের তীরে।
দিঘিজলে হাঁসগুলি কাটিছে সাঁতার,
ওপাড়ের গাছগুলি শোভে ছায়াময়।
মাঠ ঘাট জন শূন্য হেরি চারিধার,
অজয়ের নদীঘাট ছবি মনে হয়।
শাল পিয়ালের বনে মুরগীরা ডাকে,
কুয়াশার চাদরেতে রবি মুখ ঢাকে।
________________
বিরহী কবির ব্যথা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
লেখনী আমার স্তব্ধ আজিকে
কবিতায় কথা বলে,
কবির হৃদয় সিক্ত আজিকে
বেদনার অশ্রুজলে।
জোছনাহারা আঁধার যামিনী
জোনাকীর কান্নায়,
দেখি না চাঁদ রাতের আকাশে
মিটিমিটি তারা চায়।
তন্দ্রা জড়ানো বিনিদ্র রজনী
অসহ্য ব্যথায় জাগে,
বিরহী কবির বিদীর্ণ হৃদয়ে
দারুণ আঘাত লাগে।
নির্জন রাত্রি বিরহী কবির
ঘুম নাহি আসে চোখে,
রাত্রি আঁধার পথের বাঁকে
কুকুরের দল ভোকে।
নদীর বাঁকে শৃগালের দল
মেতে ওঠে চিত্কারে,
বাদুড়ের দল বাঁশ বাগানে
পাখা মেলে অন্ধকারে।
রাত্রি নিঝুম ঘন তমসায়
কবি হেথা একা জাগে,
পূর্বাকাশে হেরি অরুণ রবি
মেঘে মেঘে রং লাগে।
________________
আমাদের গ্রামখানি
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
আমাদের গ্রামখানি অজয়ের পারে,
সবুজ গাছের সারি পথের দুধারে।
আমগাছ, তালগাছ, খেজুর, সুপারি,
রাঙাপথ গেছে চলে নদীঘাট ছাড়ি।
অজয়ের নদীঘাটে রবি রোজ উঠে,
উড়িয়ে পথের ধূলো গরুগাড়ি ছুটে।
গরুগাড়ি নদীঘাটে থামে অবশেষে,
ভাটিয়ালি গায় মাঝি আসে সুর ভেসে।
গাঁয়ে আছে পদ্মদিঘি কালো জল তার,
জলে তার হাঁসগুলি কাটিছে সাঁতার।
কলসী কাঁখে বধূরা জল নিয়ে যায়,
তরুতলে বসি কেহ বাঁশরী বাজায়।
বেলাশেষে ডুবে রবি অন্ধকার নামে,
চাঁদ উঠে তারা ফুটে আমাদের গ্রামে।
________________
বিশ্ব কবিতা দিবস
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
বিশ্ব কবিতা দিবসে আজিকে কবিতারা ঝড় তুলে,
কান্না ঘাম আর রক্তে ভেজা নীরব অভিমান ভুলে।
কবিতার ব্যথা বোঝে নাকো কেহ চক্ষে অশ্রুজল,
পোড়া রুটি আর পান্তা ভাত খায় গাছতলা সম্বল।
অনাহারী যত ক্ষুধিতের দল কবিতার পাতায় এসে,
কবিতার ঝুলি কাঁধে নিয়ে দিন কাটায় কায়ক্লেশে।
কবিতার পাতায় বন্দী যারা কবে পাবে ওরা ছুটি?
ক্ষুধার অন্ন পায় নাকো তারা পায় না একটি রুটি।
কবিতারা আজ মাঠে মাঠে, রোদে জলে করে চাষ,
কলকারখানায় হাতুড়ি চালায় খেটে খায় বারোমাস।
কবিতার পাতায় বিদ্রোহ আজ বিদ্রোহ দিকে দিকে,
পূর্ব গগনে হাসিছে অরুণ লাল আগুনের রং মেখে।
সারা বিশ্বের যারা কবি আজ সবারে করি আহ্বান,
মানুষেরে ভালবাসো আজি, গাও মানুষের জয়গান।
________________
ভোর হয় নদী কিনারায়
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
পূরব দিশায় যবে উঠে দিবাকর,
সোনালী কিরণে হাসে অজয়ের চর।
মাঝিভাই আসে রোজ নদী খেয়াঘাটে,
সারাদিন তরী বায়, ঘাটে দিন কাটে।
কাননে কুসুম ফোটে ছড়ায় সৌরভ,
গাছে গাছে হেরি নব সবুজ বিপ্লব।
সবুজ চাদরে ঢাকা ছোট গ্রামখানি,
আছে সেথা স্বর্গসুখ সুনিশ্চিত জানি।
পথিকের দল আসে দূর গ্রাম হতে,
সারিসারি গরুগাড়ি চলে রাঙাপথে।
অজয়ের নদীঘাটে লোকজন মেলা,
কলরব কোলাহলে কাটে সারাবেলা।
দিন যায় সন্ধ্যা আসে আঁধার ঘনায়,
রাত কাটে ভোর হয় নদী কিনারায়।
(চলবে)
________________
বাংলা কবিতার আসরের জয় হোক, বাঙালির জয় হোক, বাংলার জয় হোক। বাংলার কবিগণের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। কবিতা পাঠ করুন, কবিতা লিখুন। কবিতা লিখে প্রকাশ করুন শব্দনীড়ের পাতায়।
সুসমৃদ্ধ হয়ে হয়ে উঠুক শব্দনীড় ব্লগ আপনাদের লেখনীর স্পর্শে। খুব শীঘ্রই এর দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ দেব আমার এক গুচ্ছ কবিতা। আশা রাখি। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!
গুচ্ছ কবিতা পড়লাম কবি মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। আপনার এমন ধারার আয়োজন শব্দনীড়ের পাতা এবং সংরক্ষণাগার সমৃদ্ধ করবে নিশ্চিত। অসংখ্য ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন আপনার জন্য।
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অভিভূত হলাম। সেই সাথে নতুন করে আরো ভালো করে লেখার অনুপ্রেরণা পেলাম।আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাকে। আপনাকে পাশে পেয়ে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। নমস্কার গ্রহণ করুন।আপনার শুভাশীর্বাদ মাথায় রেখে এগিয়ে চলেছি চলার পথে। সকল প্রকার ত্রুটি ও ভ্রান্তি মার্জনা করবেন এই প্রত্যাশা করি। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!
প্রত্যেকটি কবিতা সুন্দর। অভিনন্দন জানবেন কবি।
ধন্যবাদ অশেষ। মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকবেন, পাশে রাখবেন।
কবির শুভেচ্ছা নেবেন কবিবর। আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
জয়গুরু। জয়গুরু। জয়গুরু।
বাংলার কবিগণের জয় হোক। এভাবেই আমাদের সাথে থাকুন কবি। মুগ্ধ হলাম।
সুন্দর মন্তব্য হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সাথে থাকবেন।
প্রেরণা দেবেন। জয়গুরু।
প্রীতিমুগ্ধ কবি
প্রকৃতি ও পরিবেশময় এই কবিতাগুলি ভীষণ ভাল লাগলো কবি দা।
প্রিয় কবিবোনকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন জানাই।
সেই সাথে সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদও জানাই। সাথে থাকবেন। প্রত্যাশা রাখি।
আগামী পর্বে কিছু কবিতা ও কবিগণের লেখা মন্তব্য প্রকাশিত হবে।
জয়গুরু!
ব্লগিয় কবিতা উৎসবের সাফল্য কামনা করছি কবি ভাণ্ডারী দা। অভিনন্দন। :yes:
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অভিভূত হলাম। সাথেই থাকবেন প্রিয় কবিবর।
কবি প্রতীমকে জানাই আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ সহ।
জয়গুরু!
সবশেষে কবির মন্তব্য
আমার কবিতা পাঠে ভরে উঠুক সবার হৃদয়।
সাথেই থাকবেন এটা প্রত্যাশা করি।
জয়গুরু!