আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৪

আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৪
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের আদর্শ ও উপদেশ::
কৃষ্ণ নাম:

—————
১/ কৃষ্ণ নামে বিপদ থাকে না। বিপদ আপদ আসতে পারে না। ( পূণ্যপুথি, ১২/৫৯)
২/ কেবল দিবি, বলবি কৃষ্ণ নাম করতে, সব দূর হবে। ( পূণ্যপুথি, ১২/৬১)
৩/ যে জায়গায় নামকীর্তন হয় না,সে জায়গা শ্মশান বলে জানবি।হরেকৃষ্ণ নামে আধিব্যাধি সব দূর,ভব রোগ দূর,মুক্তি তার করতলে।( পূণ্যপুথি, ১৭/২)
৪/ সেই বিবেকের আকুল আহ্বান শুনে হরেকৃষ্ণ হরেকৃষ্ণ বলে ডাকায় তার সব দুঃখ ঘুচে যায়। ( পূণ্যপুথি, ১৮/৩)
৫/মন ওখান থেকেই ঠিক হবে।ও তোর আধার ঘরে জ্বলবে আলো,হরেকৃষ্ণ বল।( আলোচনা প্রসঙ্গে, ২১, পৃ.২২৮)

কীর্তন
—————-
১/ কীর্তনটা প্রত্যেক দিন করতে হয়।যদি লোক না থাকে তবে একলা করবি।( পূণ্যপুথি, ২৩/২৭)
২/ সংকীর্তন কর,সংকীর্তন প্রচার কর।( পূণ্যপুথি, ১/২৬)
৩/ কীর্তনে ঢুকতে হলে ঘৃণা,লজ্জা,মান,অপমান সব ছেড়ে দিতে হবে।গান গাবি সব ভাববি ইষ্টদেব।যাহা দেখবি – ” যাহা যাহা দৃষ্টি পড়ে,তাহা তাহা কৃষ্ণ স্ফুরে।” ভাব অবস্থা আর কিছুই নারে ইচ্ছা। ( পূণ্যপুথি – ১০/২৯)
৪/ কীর্তন আগুনে যজ্ঞ ছেয়ে ফেল।কীর্তনময় হলেই নামময় হল।আবার শ্যামের বাঁশি বেজে উঠবে। ( পূণ্যপুথি, ১০/৭৪)
৫/ কেবল কীর্তন! ভাবা চিন্তার সময় নাইরে।কীর্তন করবি আর সব করবি।(পূণ্যপুথি, ২৩/২৮)

প্রচার
—————
১/ প্রাণে প্রাণে জাগিয়ে দিবি।শব্দে, ভাবে, ছলে,বলে,কলে, কৌশলে যেমন করেই হোক জাগিয়ে দিবি।ঐ সংকীর্তন একবার যদি জাগিয়ে দিতে পারিস,তখন বুঝবে যে এরাই আমার বন্ধু। ( পূণ্যপুথি, ৯/৩৮)
২/ বিষয়ীদের কাছে কি ভগবানের নাম ভাল লাগে? তারা টাকা টাকা করতে ভালবাসে।তাদের কাছে টাকা টাকা করতে করতে ভগবানের নাম উঠাতে হয়।( পূণ্যপুথি, ১৮/১২)
৩/ দ্যাখ এ বাজারে ভিক্ষা চাইবি কি জানিস? একবার প্রাণ ভরে, মনভরে হরিবোল হরিবোল গোবিন্দ গোবিন্দ বল।ভাই আমি সারাদিন খাইনি,আজ কেউ হরি বলেনি।তুমি একবার হরিবোল, হরিবোল বল।তবেই আমার পেট পুরে যাবে, এই ভিক্ষা চাই। ( পূণ্যপুথি, ২৫/১০)

সদগুরু
—————-
## গুরুর মাধ্যমে ভগবানকে লাভ করতে হয়।গুরু ভগবানের প্রতিনিধি। ভগবান কি বলেছেন,শাস্ত্রে কোথায় কি আছে, তা হাতে ধরে শিষ্যকে শিখিয়ে দেওয়াই গুরুর কাজ।
ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র একজন সমাজ সংস্কারও, সমাজের বিভিন্ন কুসংস্কার দূর করার জন্যও তিনি বিভিন্ন বাণী দিয়েছেন।বর্তমানে বিভিন্ন গুরু বা তাদের শিষ্যের প্ররোচনায় নিজেকে কৃষ্ণ দাবি করেন,অথবা শিষ্যরাই তাদের গুরুকে ভগবান বানিয়ে দেন।সেই গুরুকে ভগবান বানিয়ে তার নাম প্রচার করেন, তার নামে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।তাই এই কুসংস্কার দূর হওয়ার জন্য ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র বলেছেন,
” গুরু ছেড়ে গোবিন্দ ভজে,সে পাপী নরকে মজে।গুরু কৃষ্ণ অভেদ হয় শাস্ত্রের প্রমাণে।এই বাণীর দোহাই নিয়ে অনেক ব্যাভিচার, নিজ স্বার্থ উদ্ধার করছে। ( ইসলাম প্রসঙ্গে, পৃষ্ঠা -১৯৩)

ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রও একজন সদগুরু। সদগুরুরা সব সময় ভগবানের কথাই বলেন।কারন ভগবানকে না পেলে কোন দিন মুক্তি লাভ হয় না।সদগুরুরা ভগবানের পরম ভক্ত হয়, তাই তারা শিষ্যকে সব সময় ভগবানের পথে নিয়ে যান। আর ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র এতই উদার, তিনি কখনোই বলেননি যে শুধু আমার কাছ থেকেই দীক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেছেন, যেখান থেকেই নেও সদগুরুর কাছ থেকে নিও।

১ / ভগবানকে পেতে গেলে সদগুরুর শরণাপন্ন হতে হয়। ( আলোচনা প্রসঙ্গে – ২১)
২ / প্রশ্ন: আমি কোথায় দীক্ষা নেব?
শ্রী শ্রী ঠাকুর : যেখান থেকে নেও, সদগুরুর কাছে থেকে নিও। ( আলোচনা প্রসঙ্গে -২২, পৃ.৩২০)
৩/ যা! তোর ভয় কিসের? তুই নাম নিয়েছিস তোর গুরু আছে,ভগবান আছেন,তুই সেই পথে চলবি।ভগবানকে ভালবাসবি,ভগবান কাউকে ছাড়েন না।তোরাও তেমনি কাউকে ফেলবি না,কাউকে ছাড়বি না।সকলকেই ভালবাসবি,তাদের সেবা করবি।খুব করে নাম করবি,স্ফূর্তিতে কাম করবি। ( আলোচনা প্রসঙ্গে, ৬)

।আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৪
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

প্রাণের ঠাকুর তুমি হৃদয়ের দেবতা
শ্রী ঠাকুর অনুকূল,
ভক্তি পুষ্প দিয়ে পুজিব তোমায়
এনেছি পূজার ফুল।

এসো গো গুরু পতিতপাবন
তুমি জগতের সার,
তোমায় পেয়ে ধন্য হলো ওগো
প্রভু জীবন আমার।

যেদিকে তাকাই দেখিবারে পাই
আছো তুমি বিশ্বে ছেয়ে,
তাইতো ঠাকুর ভালো বেসেছি
তোমায় সবার চেয়ে।

তোমার নামে তোমার ধ্যানে
জীবন সার্থক হলো,
আঁধার ভরা জীবনে আমার
দিয়েছো জ্ঞানের আলো।

মানব বন্দনা ধ্বনিত হয়েছে্
তোমারি শ্রী শ্রী মুখে,
মানবের তরে জীবন কেঁদেছে
তাদেরই দুঃখে সুখে।

মানুষ আপন টাকা হল পর
শেখালে মানবে তুমি,
তোমারই সৃষ্টি সত্সঙ্গ আশ্রম
পূণ্য দেওঘর ভূমি।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

6 thoughts on “আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৪

  1. মানব বন্দনার গীতিকাব্য। ভালো শেয়ারিং মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. আপনার আন্তরিকতায় ধন্য হলাম।
      আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন করে ভালো লেখার
      অনুপ্রেরণা পেলাম।সতত সাথে থাকবেন

      প্রত্যাশা রাখি জয়গুরু!

    1. আপনার আন্তরিকতায় ধন্য হলাম। মন্তব্যে হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
      আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন করে ভালো লেখার
      অনুপ্রেরণা পেলাম।সতত সাথে থাকবেন

      প্রত্যাশা রাখি জয়গুরু!

    1. আসুন, আমরা সকলেই শ্রী শ্রী ঠাকুরের নির্দেশিত চলার পথে এগিয়ে যাই
      আর আমাদের এই তুচ্ছ জীবনকে ধন্য করে তুলি।

       

      সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকবেন।
      অনুপ্রেরণা দিয়ে উত্সাহিত করবেন।
      আশা রাখি। জয়গুরু।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।