মাঠে মাঠে সোনা ধান… হেমন্তের গান গীতি কবিতা-১ (প্রথম পর্ব)

মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান
গীতি কবিতা-১ (প্রথম পর্ব)

তথ্য-সংগ্রহ, সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শরতের পর আসে হেমন্ত ঋতু। হেমন্ত এসেই গেল! হেমন্তের সকাল মানেই প্রকৃতিতে এখন ঘন ঘোর কুয়াশা। সেই কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে সকালের সোনারোদ। শেষ হেমন্তের মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা সোনালী ধান। লেজঝোলা ফিঙে আর শালিক ঝগড়া করে, তারপর উড়ে যায়। এসব কিছুই দেখার সময় নেই যেন চাষীদের! মাঠের পাকা ধান কেটে তুলতে হবে গোলায়। সে কাজেই ব্যস্ত বাংলার চাষীরা।

সোনাবরণ মাঠ

মাঠের পর মাঠ এখন সোনালী রঙের। কারণ আমন ধান পেকে সোনা রঙ ধারণ করেছে। তাই যতদূর চোখ যায় একটা হলুদ মাঠ ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ে না। এই মাঠ এখন রিক্ত হতে শুরু করেছে। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধানকাটা উৎসব।

বাতাসে পাকা ধানের গন্ধ

হেমন্তের বাতাসে ভেসে বেড়ায় পাকা ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ। দিনভর কয়লা খাটুনি খেটে ধান কাটার পর মাড়াই শেষে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছেন কৃষাণী বধূরাও। আর এভাবেই দেখতে দেখতে গোলা ভরে উঠছে কৃষকের।

গ্রামে গ্রামে চলছে নবান্ন উৎসব

ঋতুচক্রের নিয়মেই হেমন্তের হাত ধরে আসে নবান্ন। গ্রামবাংলার মাঠে-খেতে চলছে আমন ধান কাটার মহোৎসব নবান্ন (অর্থ: নতুন অন্ন)। যা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব। নবান্ন হল নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে পাওয়া চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে কোনো কোনো অঞ্চলে ফসল তোলার পরদিনই নতুন ধানের নতুন চালে ফিরনি-পায়েশ অথবা ক্ষীর তৈরি করে আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর ঘরে ঘরে বিতরণ করা হয়।

নবান্নে জামাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়, মেয়েকেও বাপের বাড়িতে আনা হয়। নবান্নে নানা ধরনের দেশীয় নৃত্য, গান, বাজনাসহ আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালিত হয়। লাঠিখেলা, বাউলগান, নাগরদোলা, বাঁশি, শখের চুড়ি, খৈ, মোয়ার পসরা বসে গাঁয়ের মেলায়।

মাঠে মাঠে সোনা ধান….. হেমন্তের গান
গীতি কবিতা-১ (প্রথম পর্ব)

কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ভোরের আলো ছড়িয়ে দিলো
নতুন ভালোবাসা,
আঁকলো রবি সোনার ছবি
নতুন যত আশা।

ঘাসের পরে শিশির ঝরে
পাখিরা গীত গায়,
ফুলের কলি ফুটে সকলি
ফুলের বাগিচায়।

পথের পরে সোনা রোদ্দুরে
গরুর গাড়ি চলে,
সকাল হতে হাঁটছে পথে
চাষীরা দলে দলে।

ধানের খেতে উঠলো মেতে
প্রভাত সমীরণ,
সোনা রোদ্দুরে বাঁশির সুরে
হৃদয়ে শিহরণ।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

4 thoughts on “মাঠে মাঠে সোনা ধান… হেমন্তের গান গীতি কবিতা-১ (প্রথম পর্ব)

  1. আপনার লেখা হেমন্ত বন্দনা দারুণ হয়েছে, শ্রদ্ধের কবি দাদা। আপনাকে হেমন্তের শুভেচ্ছা।      

  2. ধানের খেতে উঠলো মেতে
    প্রভাত সমীরণ,
    সোনা রোদ্দুরে বাঁশির সুরে
    হৃদয়ে শিহরণ।

    প্রকৃতির কবিতায় মন উদ্বেলিত হয় মি. ভাণ্ডারী। শুভ সকাল। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

  3. সুন্দর গীতিকবিতা। অভিনন্দন আর শুভেচ্ছা নেবেন কবি। :)

  4. ধানের খেতে উঠলো মেতে
    প্রভাত সমীরণ,
    সোনা রোদ্দুরে বাঁশির সুরে
    হৃদয়ে শিহরণ।
     

    * https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।