মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান (চতুর্থ পর্ব)

মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান (চতুর্থ পর্ব)
তথ্য-সংগ্রহ, সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

সোনালি খেতে রোদের আসা-যাওয়া। সোনার ধানে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। চারদিকে রব উঠেছে নতুনের। আগমনীর গান গেয়ে আর মনের মাঝে স্বপ্ন বুনে যাচ্ছে চাষি। হাজার বছরের ইতিহাস পেরিয়ে সেই একই স্থানে আজ আবারও নব উদ্যমে মাঠে নেমেছে সোনার বাংলার সোনার চাষিরা, সোনা রঙের ধান কাটতে।

মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে সোনালী ধানের শীষ। সোনামাখা ধানের শীষের সমারোহ বলে দিচ্ছে নবান্ন আসছে। এখন আমন মৌসুমের শেষ মুহুর্ত। এই সময়ে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে এসেছে মাঠের পর মাঠে সোনালীধানের শীষে শিশির বিন্দুর সমারোহ।

সকালে ধানগাছের ডগায় যে শিশির জমে থাকে তা হেমন্তের মায়াবী রূপের এক ঝলক সৌন্দর্যেরই পূর্বাভাস জানান দেয়। সকালের প্রথম রোদের বর্ণচ্ছটায় গাছের পাতাগুলো যেন হেসে ওঠে।

বেলা পড়ে আসে। দিন শেষ হয়। সূর্য ডোবে। নেমে আসে সাঁঝের আঁধার। একটু পরেই চাঁদ ওঠে। জোছনায় হেসে ওঠে সারা গ্রামখানি। রাঙাপথের দুধারে সোনা ধানের খেতে লক্ষ্মীপেঁচা ডেকে ওঠে। অবশেষে পূব আকাশ লাল হয়ে ওঠে। আসে ঝলমলে নতুন সকাল।

মাঠে মাঠে সোনা ধান….. হেমন্তের গান
গীতি কবিতা-৪ (চতুর্থ পর্ব)

কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মাঠেমাঠে সোনাধান,
শুনি হেমন্তের গান,
নদীধারে আছে বটগাছ।

রাঙাপথে দুই ধারে,
তালগাছ সারে সারে
দিঘিজলে থাকে রুইমাছ।

সোনারোদ পড়ে ঝরে
অজয় নদীর চরে,
শালিকেরা আসে হেথা উড়ে।

সবুজ ঘাসের পরে,
নিশির শিশির ঝরে,
বাজে বাঁশি রাখালিয়া সুরে।

সবুজ তরুর শাখে
প্রভাত পাখিরা ডাকে
অদূরে অজয় নদীতীর।

সূর্য ওঠে দিঘিপাড়ে,
ডাকে ঘুঘু নদীধারে,
ধানশীষে জমেছে শিশির।

চাষী মাঠে ধান কাটে,
সারা দিন কাটে মাঠে,
ঘরে ফেরে সাঁঝের বেলায়।

সাঁঝের আঁধার নামে,
আমাদের এই গ্রামে,
চাঁদ উঠে আকাশের গায়।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

14 thoughts on “মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান (চতুর্থ পর্ব)

  1. মাঠে মাঠে সোনা ধান….. আমাদের হেমন্তের গান। অভিনন্দন কবি মি. ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
      সাথে থাকবেন। আশা রাখি।
      জয়গুরু!

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম। সাথে থাকবেন। আশা রাখি।
      জয়গুরু!

  2. কতশতো রং আর বৈশিষ্ট আমাদের প্রকৃতির। সুন্দর বর্ণনায় অভিনন্দন কবি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif 

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অভিভূত হলাম।
      সাথে থাকবেন। আশা রাখি।
      জয়গুরু!

  3. সবুজ তরুর শাখে প্রভাত পাখিরা ডাকে অদূরে অজয় নদীতীর
    সূর্য ওঠে দিঘিপাড়ে, ডাকে ঘুঘু নদীধারে, ধানশীষে জমেছে শিশির। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম প্রিয়কবিবর।
      সাথে থাকবেন। আশা রাখি।
      জয়গুরু!

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকবেন। আশা রাখি।
      জয়গুরু!

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবিবোন। সাথে থাকবেন। আশা রাখি।
      জয়গুরু!

  4. অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো, শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।    

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকবেন। আশা রাখি।
      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।