মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান (সপ্তম পর্ব)

মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান (সপ্তম পর্ব)
সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

হেমন্তের মাঠ থেকে কৃষকরা ঘরে তোলে নতুন ফসল। পায়রার দল উড়ে আসে পড়ে থাকা ধান খুটে খুটে খাওয়ার লোভে। রাখালেরা গরু-মহিষের পাল ছেড়ে দিয়ে বাঁশের বাঁশি বাজায় একটানা রাখালিয়া সুরে মেতে ওঠে মাঠ ঘাট খেত ও পুকুরের কচুরিপানা, কাঁকন তলার মাঠ। সমস্ত মাঠ ছাপিয়ে সোনার ধানের আভা শেষ বিকেলে পশ্চিম আকাশকে পর্যন্ত রাঙিয়ে দেয়।

চাষীদের মনে আনন্দ আর ধরে না। মাঠে মাঠে ধান কাটে সারাদিন। আনন্দে গেয়ে ওঠে মাটির গান। মাটির সুরে গান গাইতে গাইতে গাঁয়ের বাউলেরা একতারা হাতে নিয়ে রাঙাপথ ধরে অজয় নদীর ঘাটে এসে পৌঁছায়। দূরে কোথাও মাইকে গান বেজে ওঠে “ও নদী রে………………”

অবশেষে আঁধার আকাশে লক্ষ তারা ফুটে ওঠে। চাঁদ ওঠে দূরের বাঁশবনে। রাত কাটে। ভোরের আলোয় ঝলমল করা আলোক নিয়ে আসে নতুন সকাল….. এক নতুন সম্ভাবনাময় প্রত্যাশা।

মাঠে মাঠে সোনা ধান….. হেমন্তের গান
গীতি কবিতা-৭ (সপ্তম পর্ব)

কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মাঠে মাঠে ধান কাটে এ গাঁয়ের চাষী,
গরুর গাড়িতে ধান আনে রাশি রাশি।
রাঙাপথে সারি সারি তাল ও খেজুর,
রাখাল বাজায় বাঁশি শুনি মিঠে সুর।

দূরে অজয়ের ঘাটে সোনা রবি উঠে,
ফুলবাগে ফুল শাখে ফুল কলি ফুটে।
প্রভাত পাখিরা সব করে কোলাহল,
জল নিতে ঘাটে আসে বধূরা সকল।

দিন যায় সন্ধ্যা নামে আকাশ আঁধার,
আকাশের গায়ে তারা ফুটে চারিধার।
হেমন্তের শুভ্র চাঁদ উঠে বাঁশ বনে,
অজয় বেগেতে বয় আপনার মনে।

রাত কাটে ভোর হয়, নতুন সকাল
দিন যায় রাত আসে নিত্য চিরকাল।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

12 thoughts on “মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান (সপ্তম পর্ব)

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম।
      সাথে থাকুন। জয়গুরু!

  1. দিন যায় সন্ধ্যা নামে আকাশ আঁধার, আকাশের গায়ে তারা ফুটে চারিধার
    রাত কাটে ভোর হয়, নতুন সকাল … দিন যায় রাত আসে নিত্য চিরকাল।

    হেমন্তকালের সুন্দর উপস্থাপনা মি. ভাণ্ডারী। অভিনন্দন কবি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।
      সাথে থাকবেন আশা রাখি।
      জয়গুরু!

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম প্রিয়কবি।
      সাথে থাকবেন আশা রাখি।
      জয়গুরু!

  2. মাটির সুরে গান গাইতে গাইতে গাঁয়ের বাউলেরা একতারা হাতে নিয়ে রাঙাপথ ধরে অজয় নদীর ঘাটে এসে পৌঁছায়। দূরে কোথাও মাইকে গান বেজে ওঠে “ও নদী রে ..” https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম কবিবোন।
      সাথে থাকবেন আশা রাখি।
      জয়গুরু!

  3. দূরে অজয়ের ঘাটে সোনা রবি উঠে, ফুলবাগে ফুল শাখে ফুল কলি ফুটে। ভালোবাসা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম কবিপ্রতীম।
      সাথে থাকবেন আশা রাখি। শুভেচ্ছা রইলো।
      জয়গুরু!

  4. দূরে অজয়ের ঘাটে সোনা রবি উঠে,
    ফুলবাগে ফুল শাখে ফুল কলি ফুটে।
    প্রভাত পাখিরা সব করে কোলাহল,
    জল নিতে ঘাটে আসে বধূরা সকল।

    চমৎকার হেমন্ত নিয়ে উপস্থাপনা। কবিকে অজস্র ধন্যবাদ। সাথে হেমন্ত দিনের শুভেচ্ছা।      

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম কবিবর।
      সাথে থাকবেন আশা রাখি। শুভেচ্ছা রইলো।
      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।