২৮।
একটু পরেই দেখলো তারা যে গেট দিয়ে লন্ডন যাবার প্লেনে উঠবে সেখানে এক বিশাল ৭৪৭ বোইং এসে দাঁড়ালো। দেখ, দেখ মনি আমরা এই প্লেনে লন্ডন যাব। ঘণ্টা খানিক পর লন্ডনের যাত্রীদের প্লেনে ওঠার জন্য C গেটে যাবার ঘোষণা শুনে তারা এগিয়ে গেলো। ওদের বাংলাদেশী সবুজ পাসপোর্ট দেখে যথারীতি অন্যান্য এয়ারপোর্টের মত এখানেও বিব্রতকর পরিস্থিতি। তবুও রক্ষা যে ওদের বেশ মোটা এবং পুরাতন পাসপোর্ট এবং রাশেদ সাহেবের পাসপোর্টে ইতিপূর্বে ব্রিটেন ভ্রমণের ভিসা দেখে তেমন কোন ঝামেলা করেনি। এক সময় সব ঝামেলা শেষ করে প্লেনে উঠে সিট খুঁজে বসে পরলেন। এবারেও মনি জানালার পাশে।
অল্পক্ষণের মধ্যেই প্লেন ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে, সামনের জিপিএস এর স্ক্রিনে দেখছে। জানালা দিয়ে নিচে নীল সাগরের ঢেউয়ের চূড়ায় সাদা ফেনা আরও বেশি সুন্দর ছবির মত দেখাচ্ছে, মাঝে মাঝে টুকরো মেঘ গুলির উপর দিয়ে যাচ্ছিল। সাগর পাড়ি দেয়ার পর যে শহরের উপর দিয়ে যাচ্ছে রাশেদ সাহেব বলে যাচ্ছেন কবে এই শহরে এসেছিলেন, দেখ দেখ মনি আমি এই এই শহরে এসেছিলাম দেখ উপর থেকে দেখ কেমন দেখাচ্ছে! ওইসব শহরের নানা গল্প বলছিলেন। তার কোনটা মনিরার কানে যাচ্ছে কোনটা যাচ্ছে না। সে শুধু অবাক হয়ে রাশেদ সাহেবের মুখের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে দেখছে। মনে হচ্ছে যেন তাকে এই প্রথম দেখছে।
কুয়ালালামপুর থেকে লন্ডন দীর্ঘ চৌদ্দ ঘণ্টার পথ। কম না। মাঝে দুই বার খাবার দিয়েছে, দুই বার হালকা নাশতা আর চা কফি বা পানীয় তো আছেই। যে যখন যা চাইছে। রাশেদ সাহেব মনিরা কে জোর করে বার বার পানীয় দিচ্ছে যাতে ডি-হাইড্রেশন হয়ে এয়ার সিকনেস না ধরে। মাঝে মাঝে উঠে এলি ওয়েতে হাঁটা হাটি করতে বলছে নিজেও করছে। রাশেদ সাহেবকে যেন আজ মনিরার কাছে নতুন লাগছে। এর আগেও তো কত বার প্লেন জার্নি করেছে তখন তো এতো এমন করেনি, এ যেন অন্য কোন নতুন রাশেদ সাহেব।
মনিরার ভাবনা শুধু একটাই, যে জন্য আসা তার কতটা কি হবে, কোন কাজকর্ম পাবে কি না, কি করবে, মনি যখন চলে যাবে তখন এই আত্মভোলা মানুষটা কি ভাবে থাকবে, কি করবে এই সব সাত পাঁচ ভেবে নানা আশঙ্কায় মনিরার মন বিষণ্ণ হয়ে রয়েছে। না কি আবার দেশে ফিরে যেতে হবে। এমন যদি হয় তাহলে কি উপায় হবে, নানা কিছু। আবার এটাও ভাবছে দেশ ছেড়ে যখন বের হয়ে এসেছে নিশ্চয়ই একটা গতি হবে। এতো বড় এই ইংরেজদের রাজ্যে কি ওর জন্য একটা কাজও জোগাড় হবে না? নানা কিছু ভাবতে ভাবতে আশা নিরাশার অনিশ্চয়তা আর গতরাতের অনিদ্রায় ক্লান্ত হয়ে মনিরা ঘুমিয়ে পড়েছে।
নক্ষত্রের গোধূলি'র ষোলতম পর্বে শুভেচ্ছা জানাই বন্ধু।
ধন্যবাদ জনাব। আপনাকে ৩২ তম শুভেচ্ছা।
পর্বের আকার মনে হচ্ছে ছোট হয়ে গেছে। নাকি আমি ভুল দেখছি খালিদ ভাই?
মোটেই ভুল দেখছেন না। আপনাদের অনুরোধেইতো ছোট পর্ব করে দিলাম।
সালাম জানবেন ভাই।
সালাম!
ভাল আছেন?
ধন্যবাদ জনাব বন্ধু।