অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (সপ্তম পর্ব)

অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (সপ্তম পর্ব)
তথ্যসংগ্রহ, সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

নদীকে জড়িয়ে গড়ে উঠেছে সভ্যতা৷ দেশ -বিদেশ , এই সূত্র মেনেছে৷ সজল নদীকে মাতৃজ্ঞানে দেখেছে মানুষ৷ কৃষি -শিল্প , সে যে কোনও উত্পাদন হোক , সঙ্কট মোচনে নদী হয়েছে পরিত্রাতা৷ তাকে আশ্রয় করে গড়ে উঠেছে জীবন৷ আবার বর্ষার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সেই নদীর ভয়ঙ্করী রূপ দেখেছে মানুষ৷ জনপদ -শস্যক্ষেত্র ধ্বংস করে সে চলে তার আপন খেয়ালে৷

নদীর খামখেয়ালিপনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু জনপদ৷ ১৭৬২ খ্রিস্টাব্দে যে প্রলয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়েছিল তার প্রভাবে বহু নদনদীই তাদের প্রাচীন খাত ত্যাগ করে নতুন পথে বইতে শুরু করে৷ নদীর গতিপথে বারবার পরিবর্তনের ফলে ধ্বংস হয়েছে বহু মনীষীর ভিটে, স্মৃতিবিজড়িত স্থান৷
অজয় নদীকে কেন্দ্র করে একসময় গান বাঁধা হয়েছে, আজ সেখানে সময়ের দীর্ঘশ্বাস৷

কত দুঃখ -সুখের গল্পের সাক্ষী৷ নদীর সঙ্গে নিবিড় বন্ধুতা৷ নদীর কাছে প্রাণ মন উজাড় করা৷
নদীকে কেন্দ্র করে কবি কবি, কত সাহিত্যিক, কত লেখক লেখিকা, কত গীতিকার
লিখে গেছেন, হৃদয়ের কথা, অজয়ের কবিতা আর গান।

অজেয় অজয়। অজয় হৃদয়ের কথা বলে। অজয় মনের কথা বলে।
তাই কুলু কুলু রবে সদাই অবিরত বয়ে চলে।

অজয় নদীর জলধারা…….বয়ে চলে বারো মাস
অজয় নদীর কবিতা-৭ (সপ্তম পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

অজয় নদীর চরে,
সোনারোদ পড়ে ঝরে
লাল রবি ছড়ায় কিরণ।

নদীঘাটে তরুশাখে,
প্রভাত পাখিরা ডাকে,
বিহগের মধুর মিলন।

নদীর ঘাটের কাছে,
তরীখানি বাঁধা আছে,
কুলু কুলু নদী বয়ে যায়।

নদীধারে মাঠে মাঠে,
চাষী সব ধান কাটে,
ফেরে ঘরে সাঁঝের বেলায়।

সারাদিন নদীবাঁকে,
শালিকেরা ঝাঁকে ঝাঁকে
আসে উড়ে অজয়ের চরে।

সাঁঝের আঁধার নামে
জ্বলে দীপ দূর গ্রামে
রাত্তিরে জোছনা পড়ে ঝরে।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

5 thoughts on “অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (সপ্তম পর্ব)

  1. ভালো লিখেছেন কবি ভাণ্ডারী দা। ধন্যবাদ আপনাকে। আমার শরীর ভালো নেই।

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
      আপনাকে পাশে পেয়ে আমরা সবাই গর্বিত ও আনন্দিত।
      আপনার বিশ্রামের প্রয়োজন। আমার একান্ত অনুরোধ চিকিত্সকের পরামর্শমত
      চিকিত্সা সম্পূর্ণ করিয়ে নিন। আমাদের স্থির বিশ্বাস আপনি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবেন।
      ঈশ্বরের কাছে আমাদের প্রার্থনা আপনি পুনরায় সুস্থ হয়ে দীর্ঘজীবন লাভ করুন।
      সাথে আছি আমরা সকলেই। একদম চিন্তা করবেন না। ঈশ্বর মঙ্গলময়।
      সুস্থ থাকুন। সবাইকে দুশ্চিন্তামুক্ত করুন। এটাই প্রত্যাশা করি। জয়গুরু।

  2. নদীঘাটে তরুশাখে,
    প্রভাত পাখিরা ডাকে,
    বিহগের মধুর মিলন।

    এমন মধুর মিলনের মাঝেই বয়ে চলুক, অজয় নদীর জলধারা। 

    কবির জন্য শুভকামনা থাকলো। জয়গুরু জয়গুরু।      

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
      সাথে থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু।

  3. অজেয় অজয়। অজয় হৃদয়ের কথা বলে। অজয় মনের কথা বলে।
    তাই কুলু কুলু রবে সদাই অবিরত বয়ে চলে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।