নেতাজী স্মরণে কবিতা

আজ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৩ তম জন্মদিন। দেশ স্বাধীনের অদম্য ইচ্ছাকে বুকে নিয়ে তাঁর যুদ্ধযাত্রার অধ্যায় আজও ভারতীয় ইতিহাস গর্বের সঙ্গে স্মরণ করে। এমন এক দেশ নায়কের জন্মদিনে উদ্বোধন হতে চলেছে নেতাজিকে কেন্দ্র করে এক মিউজিয়াম। সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক কিংবদন্তি নেতা। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ১৮৯৭ সালের ২৩শে জানুয়ারী উড়িয্যার কটক শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জানকীনাথ বসু ও মাতার নাম প্রভাবতী দেবী।

সুভাষ চন্দ্র বসুর সবচেয়ে বিখ্যাত উক্তি হল,
Give me blood, I will give you freedom. (ইংরাজীতে, গিভ মি ব্লাড, আই উইল গিভ ইউ ফ্রিডম।) বাংলায় “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব” হিন্দিতে, तुम मुझे खून दो, मैं तुम्हें आजादी दूंगा (হিন্দিতে, তুম মুঝে খুন দো, ম্যায় তুমহে আজাদি দুঙ্গা)।পাঞ্জাবীতে, ਮੈਨੂੰ ਖੂਨ ਦੇਵੋ, ਮੈਂ ਤੁਹਾਨੂੰ ਆਜ਼ਾਦੀ ਦਿੰਦਾ ਹਾਂ (পাঞ্জাবীতে, ম্যায়নুঁ খুন দেহো, ম্যায় তুহানুঁ আজাদী দিন্দা হাঁ ) মারাঠীতে, मला रक्त द्या मी तुला स्वातंत्र्य देईन (মারাঠীতে, মলা রক্ত ধ্যা, মী তুলা স্বাতন্ত্র্য দেঈন) গুজরাটীতে, મને લોહી આપો હું તમને મુક્તિ આપીશ (গুজরাটীতে, মনে লোহী আপো হুঁ, তমনে মুক্তি আপীশ) উড়িয়াতে, ତୁମର ମୋକେ ରକ୍ତ ଦିଅନ୍ତୁ, ମୁଁ ତୁମକ ସ୍ବାଧୀନତା ଦିବ (উড়িয়াতে, তুমর মোকে রক্ত দিয়ন্তু, মুঁ তুমক স্বাধীনতা দিব) অসমীয়াতে, আপুনি মোকে খুন দিয়ক, মই আপোন সকলোক স্বাধীনতা দিব।

৪ জুলাই ১৯৪৪ সালে বার্মাতে এক র্যা লিতে তিনি এই উক্তি করেন। তাঁর আর একটি বিখ্যাত উক্তি হল “ভারতের জয় (“জয় হিন্দ”), যা কিনা পরবর্তীতে ভারত সরকার গ্রহণ করে নেয়।

সুভাষচন্দ্র পরপর দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত এবং কংগ্রেসের বৈদেশিক ও আভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করার জন্য তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়। সুভাষচন্দ্র মনে করতেন গান্ধীজির অহিংসার নীতি ভারতের স্বাধীনতা আনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। এই কারণে তিনি সশস্ত্র বিদ্রোহের পক্ষপাতী ছিলেন। সুভাষচন্দ্র ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের পূর্ণ ও সত্বর স্বাধীনতার দাবি জানাতে থাকেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে এগারো বার কারারুদ্ধ করেছিল। তাঁর বিখ্যাত উক্তি “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।”

উল্লেখ্য, কংগ্রেস কমিটি যেখানে ভারতের অধিরাজ্য মর্যাদা বা ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের পক্ষে মত প্রদান করে, সেখানে সুভাষচন্দ্রই প্রথম ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে মত দেন। জওহরলাল নেহরু সহ অন্যান্য যুবনেতারা তাঁকে সমর্থন করেন। শেষপর্যন্ত জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক লাহোর অধিবেশনে কংগ্রস পূর্ণ স্বরাজ মতবাদ গ্রহণে বাধ্য হয়। ভগৎ সিংহের ফাঁসি ও তাঁর জীবন রক্ষায় কংগ্রেস নেতাদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ সুভাষচন্দ্র গান্ধী-আরউইন চুক্তি বিরোধী একটি আন্দোলন শুরু করেন। তাঁকে কারারুদ্ধ করে ভারত থেকে নির্বাসিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তিনি ভারতে ফিরে এলে আবার তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়।
মনে করা হয় ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট তাইওয়ানে একটি বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে তাঁর এই তথাকথিত দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর বিরুদ্ধ প্রমাণও বিদ্যমান।

নেতাজী স্মরণে কবিতা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ভারত মায়ের দামাল ছেলে নেতাজী সুভাষ তুমি,
দুই চোখে তব স্বপ্ন ছিল গড়িতে স্বদেশ জন্মভূমি।
“রক্ত দাও স্বাধীনতা দেব” বলেছিলে তুমি মুখে,
আজাদ বাহিনী করেছিলে গঠন সাহস নিয়ে বুকে।

ভারত মাতা ছিল পরাধীন ধরিয়া দুই শত বর্ষ,
ইচ্ছা ছিল করিতে স্বাধীন তব স্বদেশ ভারতবর্ষ।
স্বদেশ তব হইল স্বাধীন, দেখিলে না বীর তুমি,
ত্রিবর্ণ পতাকা উড়িছে আজি স্বাধীন ভারতভূমি।

তোমার আসন শূন্য আজিকে, পূর্ণ কবিবে কেবা?
ফিরে এসো, এসো ফিরে, করিবারে দেশের সেবা।
কত শত প্রাণ দিল বলিদান, মুক্তির সোপান তলে,
তোমার তরে দেশবাসী আজি ভাসিছে অশ্রু-জলে।

স্বদেশের লাগি স্বাধীনতা তরে করিলে তুমি সংগ্রাম,
হে বীর সাধক! কর্মী মহান, তোমারে জানাই প্রণাম।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

2 thoughts on “নেতাজী স্মরণে কবিতা

  1. নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন তিনি।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।