বসন্ত এলো আজি… নব বসন্তের গান গীতি কবিতা-২ দ্বিতীয় পর্ব

বসন্ত এলো আজি…….. নব বসন্তের গান
গীতি কবিতা-২ দ্বিতীয় পর্ব।

তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ফুল ফুটক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত। প্রকৃতির অপরূপ বৈচিত্র্যের রাজা বসন্ত। ভোরে সূর্য উদয় এর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হলো বসন্তের আর বাংলার প্রকৃতিতে যোগ করলো আরেকটি কাল শীতের বিদায় আর ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ।পত্রপল্লবীর ফাঁকে লুকিয়ে থেকে বসন্তের দূত কুহু কুহু সুরে বলে দিচ্ছে,বসন্ত এসে গেল।

ফাগুনে জেগে ওঠে বৈচিত্র্যের সমাহার। জেগে ওঠে বাংলার যৌবনোদীপ্ত নবরূপ। শীতের পাতাঝরা থেকে বিদায় নিয়ে প্রকৃতির কোলে ফাগুন এনে দেয় একটি নব জন্মের আহ্বান। গাছে গাছে নতুন পত্রপল্লব।দিকে দিকে ফুলের সমাহার। কোনো রেনুকার বেনুকায় শোভা পায় পুষ্পমঞ্জরীর ঢালি।
কবিদের কণ্ঠে বাজে “আকাশে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিল নেশাকারা যে ডাকিল পিছে! বসন্তএসে গেছে” এরূপ আরো অনেক কাব্য, গান, ছড়া, উপন্যাস কবি- সাহিত্যিকদের মনে সাড়া দেয় এই বসন্ত।

বাংলার ঋতুদের মধ্যে সর্বশেষ এই ঋতুরাজ বসন্ত। ফাল্গুন আর চৈত্র নিয়েই এই বসন্ত। ফাল্গুন শব্দটি এসেছে ফাল্গুনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে আর চৈত্র শব্দটি এসেছে চিত্রা নক্ষত্রের নাম অনুসারে। শীতের খানিকটা রুক্ষতা পেরিয়ে আর্বিভাব হয় বসন্তের।

মায়াময় বসন্ত সবাইকে কেড়ে নেয় নিজের ভালবাসার মোহে। যেন প্রেমিকা তার প্রেমিককে মায়া বন্ধনী দিয়ে আবদ্ধ করে রাখে, তেমনি নব ফাগুন সবাইকে নিজের মায়ামন্ত্রে আচ্ছন্ন করে রাখে।

নব বসন্ত বাঙালির প্রাণে নতুনত্বে প্রাণ সঞ্চার করুক এটাই হোক বসন্ত বরণের অভিপ্রায়। আসুন, আমরা সবাই নব বসন্তের রঙে রাঙিয়ে তুলি নিজেদের। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

নব বসন্তের গান
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আজি নব বসন্তের, ঐ খোলা হাওয়ায়,
তরুশাখে পাখিরা সব মধুর সুরে গায়।
পূবেতে উঠিছে রবি সোনার বরণ,
খোলা হাওয়ায় কাঁপে পলাশের বন।
আয় চলে আয় আয় সজনী আয় রে আয়।
ফুলের বনে হায় অলি সব গুঞ্জরিয়া গায়।

আজি নব বসন্তের, ঐ খোলা হাওয়ায়,
তরুশাখে পাখিরা সব মধুর সুরে গায়।
আমবনে শুনি কোকিলের কুহুতান,
কোকিলের ঐ ডাকে ভরে মনপ্রাণ।
ডাক দিয়েছে বসন্ত ঐ আয়রে চলে আয়,
বসন্তে কোকিল ডাকে ভোরের হাওয়ায়।

আজি নব বসন্তের, ঐ খোলা হাওয়ায়,
তরুশাখে পাখিরা সব মধুর সুরে গায়।
শিমূল, পলাশফুল ফুটিছে বনে,
হৃদয়ে লাগে আগুন দেহে মনে।
ফুলে ফুলে তরুর শাখে পাতায় পাতায়,
বসন্তের রং লাগে গায়, দক্ষিণা হাওয়ায়।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

2 thoughts on “বসন্ত এলো আজি… নব বসন্তের গান গীতি কবিতা-২ দ্বিতীয় পর্ব

  1. পূবেতে উঠিছে রবি সোনার বরণ, খোলা হাওয়ায় কাঁপে পলাশের বন।
    আয় চলে আয় আয় সজনী আয় রে আয়, ফুলের বনে হায় অলি সব গুঞ্জরিয়া গায়। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।