প্রিয় প্রিয়তমেষু পাখির বিয়ে

সিগারেটের আগুনে ঠোঁটের নীলাভ উষ্ণ আবরণে ছোঁয়াচে সুপ্ত মাংসপেশিগুলো কালচে বর্ণ ধারণ করছে। যার কালি দিয়েও হতো প্রিয়তমেষু পাখির কয়েকটি ছবির স্কেচ তৈরি করা যাবে নিমিষেই। নতুবা মাথার চারপাশের সাদা চুলগুলোয় কালো কালির প্রলেপ দেওয়া যাবে হরহামেশাই। হয়তো তখন পৃথিবীর অগুনিত পর্বতের মানুষেরা বলবে – হিমু পাগল হয়ে গেছে। আসলেই তো হিমু পাগল হয়ে গেছে।

গত কয়েকমাসে হিমুকে হন্যে হয়ে চাকরি খোঁজার লোভ লালসায় ক্ষুধার্ত ছিন্নমূল মানুষের মতো লেগেছে। মনে হচ্ছিল – সামনে যা পাবে কোনরূপ সাড়াশব্দ না করে সোজাসুজি ঝাপিয়ে পড়বে। কিন্তু, তবুও কি কোন নিস্তার আছে। ছিন্নমূল এ জীবন সস্তার ভিড়ে আরও অনেক পথভ্রষ্ট কিংবা পথিকের সাড়াশব্দ দেখে পায়ের তালু থেকে কলিজা অবধি শুকিয়ে যায়। যেখানে চাকরি পাওয়াটা আর কঠিন।

শেষমেশ হিমুকে শুধু শুনতে হলো বকুনিঝকুনি। ওর লেখার বিষয়বস্তুকে নিয়েও কটাক্ষ করে ডাস্টবিনের স্তুপে সুস্পষ্টভাবে সংস্পর্শে ফেলে দেওয়া হলো।
প্রিয় প্রিয়তমেষু পাখির আঘাতটা চাবুক হয়ে দেহের কাহিনিতে তখনই লেগেছিল হিমুর। সহ্যশক্তির অপার সৌন্দর্যে রক্তবমি হলেও, চোখের ভীড়ে ভীড়ে অশ্রুসজল গড়াগড়ি করলেও কোনকিছু বলার সাহস জোটেনি।

বাসস্ট্যান্ডে ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন আলোর বাতির ছায়াতলে রোজ সন্ধ্যায় সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে ধস্তাধস্তি জাবরদস্তি হয় হিমুর। আবার কখনো সন্ধ্যে বুড়োর সাথে সন্ধ্যে তারার হিসেব কষতে কষতে রাত অবধি জেগে থাকার বাহানা খুঁজে পাওয়া অবচেতন হিমুকে প্রায়শই অজ্ঞান রূপে ছাঁদের উঠানে পরে থাকতে দেখা যায়।
হিমু হাসপাতাল থেকে ফিরেছে দিন তিনেক হলো। ডাক্তার বলেছিল সিগারেট ছাড়তে কিন্তু সিগারেটের তীব্র নিন্দার নেশার ছোবলে পরে পরে আরও বেশি ঋণাত্মক সূচকে নেমে এসেছে।
মাস তিনেক পরে রপার সাথে হিমুর কথা হলো –
– হ্যালো, হ্যালো।
– হিমু চুপ করে শুনছে (কোন সাড়াশব্দ নেই)।
– হ্যালো, কি হলো কথা বলবে না?
– হুমম, বলো।
– কেমন আছো?
– জ্বি, ভালো আছি।
– আমি কিন্তু তোমার খবরাখবর রাখি।
– ও আচ্ছা। খুশি হলাম। আর কিছু…।
– জ্বি, আরও অনেক কিছু। আচ্ছা, একটা কথা জিজ্ঞেস করি।
– হুম, অবশ্যই।
– আচ্ছা, এখনো কি সিগারেট…?
– না।
– খুশি হলাম জেনে। অবশেষে আমার একটি কথা রাখলে।
– না, তোমার ধারণা ভুল।
– মানে?
– তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে প্রতিদিন গাঁজা খাই।

ছবিঃ সংগৃহীত

মুহাম্মাদ মাসুদ সম্পর্কে

মুহাম্মাদ মাসুদ (মোঃ মাসুদ রানা)। ১৯৯৫ সালের ১৪ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুর থানার চৌবাড়ীয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোঃ লাল মিয়া, মাতা মোছাঃ জাহানারা খাতুন। শিক্ষা জীবনঃ চৌবাড়ীয়া টোকের পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাশ করে স্থল পাকড়াশী ইন্সটিটিউশনে ভর্তি হন। পরবর্তীতে বাড়ির পাশে নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে ৮ম শ্রেণীতে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হয় খামারগ্রাম মহাবিদ্যালয়ে। ২০১২ সালে ব্যাবসায় শিক্ষা শাখা থেকে পাশ এইচএসসি করেন এবং ২০১৬ সালে মানবিক শাখায় বেলকুচি সরকারি কলেজ থেকে বিএ (ডিগ্রী পাশ কোর্সে) করেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ যৌথভাবে মুক্তচিন্তা (২০১৮) ও নীলপদ্ম (২০১৯ বইমেলা) দন্ত্য 'স' প্রকাশনী থেকে প্রকাশ পায়। গল্পগ্রন্থঃ হুমায়ূন হিমু (বইমেলা - ২০২০)।

19 thoughts on “প্রিয় প্রিয়তমেষু পাখির বিয়ে

    1. ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার বন্ধু। পাশে রাখুন সঙ্গে থাকু।।         

  1. অণুগল্পটি এখানেই শেষ !! নাকি আরও পর্ব রয়েছে? আপনার লিখাটি পড়ে বুঝতে পারছি, লিখালিখিতে আপনি বেশ অভিজ্ঞ। শব্দনীড়ের পাশে থাকুন, নিয়মিত লিখুন।

    স্বাগতম মি. নৃ মাসুদ রানা। শুভ সকাল এবং ধন্যবাদ। :)

    1. ধন্যবাদ আপনাকেও এভাবে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। 

       

      আর অণুগল্পটি এখানেই শে।। আসলে আমি কথার জাদুকর স্যার হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে তাঁর প্রিয় চরিত্র হিমু নিয়ে একটি ছোটগল্পের সিরিজ লিখছি, এবং আশা করছি আগামী বইমেলায় – ২০২০ বইটি সবাই হাতে পাবে।                                

  2. আমার কাছে ভালো লেগেছে লেখাটি। আপনাকে জানাই সুস্বাগতম ভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  3. সুন্দর অণুগল্প। অভিনন্দন ভাই। চলুক আপনার পদচারণা।আমরা আছি। :)

    1. সত্যি! আপনাদের সাথে পেয়ে খুবই আনন্দিত আমি।        

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।