কবিতাঃ প্রাচীর

মঙ্গল থেকে নিযুত কোটি পাহাড় ধার করে এনে
একটানা বাইশ আলোকবর্ষ সময় কুড়ি হাজার নক্ষত্রের শ্রম ব্যায় করে
দিগন্ত বরাবর একটা দুঃখ-প্রাচীর বানালাম।
ঈশ্বর বললেন, “এটা ভালো; কিন্তু পাহাড়ে পাহাড়ে যে ঢালু আছে
দুঃখগুলো ওসব দিয়ে অনায়াসেই ভিতরে প্রবেশ করবে।
মেঘ নামিয়ে মেরামত করতে পারো বটে;
তবে তা খুবই সাময়িক
এবং অযথাই ব্যায়বহুল হবে”।

তাই মেঘ নয়; দিগন্ত বরাবর সমুদ্রের পর সমুদ্র বসিয়ে
আরো কুড়ি হাজার নক্ষত্রের শ্রম যোগ করে
আমি দ্বিতীয় স্তরের প্রাচীরের কথা ভাবলাম।
ঈশ্বর বললেন, “এটা মাচ বেটার
সমুদ্রের সাথে নদিও যোগ করতে পারো;
এতে খুব বেশি যে খরচ হবে তাও নয়।
তবে সাথে যদি ঝর্ণা মিশাতে চাও; তাতে যদিও সুরক্ষার নিশ্চয়তা নেই,
তোমার হৃৎপিণ্ডের অর্ধেকটা দেবতাকে ভোগ দিতে হবে”।

অতঃপর ঝর্ণার কথা বাদ দিয়ে ঈশ্বরের চোখের জল ঢেলে
আমি তৃতীয় স্তরের প্রাচীরের কথা ভাবলাম।
এবার ঈশ্বর মৃদু হাসলেন এবং একটু থেমে বললেন,
“ওতে খুব ভালো কাজ হবে বটে; তবে তোমার আকাশ,
সব গ্রহ-নক্ষত্র একযোগে জলশূন্য হবে
এবং এক সময় আমার চোখ দুটো দেবতাদের দখলে যাবে !
খরচাটা তাই প্রকৃতই বিস্তর; কিন্তু কখনোই তা
তোমার মনলতার দুঃখের চেয়ে বড় কিছু নয়”!

26 thoughts on “কবিতাঃ প্রাচীর

  1. আপনার মতো মন্তব্য করার শব্দশৈলী আমার ভাণ্ডারে নেই।

    আমার একটিই শব্দ :: অসাধারণ প্রিয় মিড দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    1. অসাধারণ মন্তব্যে ভীষণ খুশি হয়েছি দিদি।

      অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে! 

    1. হাহাহাহা; আপনি ভীষণ মজার মানুষ ভাইজান।

      প্রতিমন্তব্য লিখছি আর হাসছি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif 

       

  2. কবিতার কৌশলে আমরা কতো শত কল্পনার জাল বুনে ফেলি। মেধা প্রসূত শব্দের নন্দিত প্রয়োগকেও আমরা এক ধরণের শিল্প বলতে পারি। যিনি এই শিল্পকে আলোকিত করছেন এবং পাঠকের দ্বারে পৌঁছে দিচ্ছেন তাকেও কম পরিশ্রমী বলা যাবে না। এই পরিশ্রম তখনই সার্থক গ্রহীতা যদি সাদরে বরণ করেন।

    আমি সানন্দে গ্রহণ করলাম মি মিড ডে ডেজারট।
    (আপনার নাম উচ্চারণ করলে আমার ক্ষিদে পায়) https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Confused.gif.gif

    1. ভিন্ন ধরনের মন্তব্য; এর গভীরতায় মুগ্ধ মিঃ মুরুব্বী। অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে!

      (নাম উচ্চারণের আগে যদি দোয়া পড়ে নেন; "ক্ষিদে"টা সম্ভবত কৃচ্ছতার খাতায় জমা হয়ে যাবে :)

    2. لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

      লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন। (একমাত্র তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিশ্চয় আমি সীমা লঙ্ঘনকারী)। – জামে তিরমিজি, হাদিস: ৩৫০০

  3. মঙ্গল থেকে নিযুত কোটি পাহাড় ধার করে এনে
    একটানা বাইশ আলোকবর্ষ সময় কুড়ি হাজার নক্ষত্রের শ্রম ব্যায়।
    মাই গড !! https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Shock.gif.gif

    দারুণ হয়েছে কবিভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

  4. “এটা ভালো; কিন্তু পাহাড়ে পাহাড়ে যে ঢালু আছে
    দুঃখগুলো ওসব দিয়ে অনায়াসেই ভিতরে প্রবেশ করবে।

     

    * বিষয়, বক্তব্য, উপস্থাপনা শৈলী সবই আমার কাছে অপূর্ব লেগেছে। শুভ কামনা নিরন্তর… https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    1. আপনার মন্তব্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। 

      ভীষণ খুশি হয়েছি এমন কমপ্লিমেন্ট পেয়ে। 

      আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ !

  5.  

     

    কবিতাটা পড়লাম-  মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যও।

    আপনার কবিতায় একটা নতুন থিম পাওয়া গেল।  ঈশ্বরের চোখে জল, কিন্তু ঈশ্বরের চোখে কেন জল?
    পরে অবশ্য আবার লিখেছেন,  মনলতার দুঃখের কাছে ঈশ্বরের চোখের জল কিছুই না। 

    ব্যয়বহুল বানানে মনে হয় একটু টাইপিং মিসটেক আছে।

    শুভেচ্ছান্তে কবি। 

    1. আগে পরীক্ষার খাতায় ভুলে দুই একটা বানান ভুল হতো। এখন ভুলে গেছি তাই ভুল হয়।

      কবিতার মন্তব্য মন ছুঁয়ে গেলো। 

      অশেষ ধন্যবাদ জাহিদ অনিক!

  6.  এক অপুর্ব সৃষ্টি এবং চমৎকার নির্মাণশৈলী আছে এই কবিতায়।

    মুগ্ধতা রেখে গেলাম প্রিয় কবি! https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. ভীষণ আনন্দিত হয়েছি আপনার মন্তব্য/কমপ্লিমেন্টে।

      অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে !

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।