কী আশ্চর্য রাত! তোমার রূপ গড়িয়ে পড়ছে ভূমিতে
বুকের সুবাতাস ঢেলে দাও আমার চোরাগলি পথে
পাথর রাতে অচেতন ঘুম এনে হাজির করো শহুরে দরজায়।
নয়তো আজ আমি অশান্ত হবো,
কম্পমান হাতে ধরে ফেলব তোমার শাড়ির আঁচল
বৃত্তের বাইরে যে সুখ আছে গা ভাসিয়ে দেব সেথায়।
কী ভয়ংকর কথা! মাতাল রাতে মৃত্যুরা অবিরাম হাঁটছে
খুঁজছে গোপন প্রিয়ার উষ্ণ শ্বাস, আলোড়িত জলরাশি
সুডৌল স্তন চুষে অমরত্বের আশায় ঘুরছে দ্বারে দ্বারে।
নিশ্চল সময়ে ভোরের কুয়াশা ঠাঁই খোঁজে পাতার ভাঁজে
জীবনের সব অর্জন অনায়াসে ফেলে দিয়েছি অন্ধকার গুহায়
চোখের নোনতা জলধারায় ভেসে যাচ্ছে সভ্যতার অহম।
কী দুঃখজনক সময়! যে পথে ছিল আমাদের নিত্য গতায়াত
সে পথ এখন খানাখন্দে ভরা, বিষাক্ত পোকার আবাস
সহসাই অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে দিনযাপনের গ্লানির ভেতর।
ঝুলন্ত রাত, বিক্ষিপ্ত সময়. দুঃখ নদী, খরস্রোতা দুপুর-
তামাটে প্রেম, স্নিগ্ধ ভোর, গণিকার মতো উদার প্রকৃতি
সবকিছুতেই তোমায় দেখি, সবকিছুই তোমার মত মনে হয়।
কী অবাক করা ভালোবাসা! বৃদ্ধাশ্রমে আছে গর্ভধারিণী মাতা
পণ্যবাদী দিনে নারী ভুলে গেছে নীতিবোধ, স্বীয় স্বত্বা
মরীচিকার পিছে ছুটে ছুটে উন্মাদ হয়েছে তৃষ্ণার্ত প্রেমিক।
আত্মকেন্দ্রিক সময়ে কারো মাঝে প্রেম নেই, শুদ্ধতা নেই
শূন্য পাকস্থলী নিয়ে উল্লাসে ছিঁড়ে খাচ্ছে চেতনার বীজ
আঁধারের গুহায় মুখ থুবড়ে পড়ে আছে পরাজিত ভালোবাসা।
কী দুঃসহ যাতনা! সুখগুলো আর্তনাদে মেতে উঠছে প্রণয়ের আশায়
কষ্টের ক্রমোন্নতিতে খুলে খুলে পড়ছে নীলাভ বুকের ভাঁজ
আঘাতের গ্লানি মুছে দিতে পারে না নিদ্রাহীন স্বাপ্নিক রাত।
চুপসে যাওয়া সময়ে উত্তাল যমুনায় মাথাখুঁটে মরছে আলোর মিছিল
বোধশূন্য দিনে অশুদ্ধ অভিলাষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে মনের ভেতর
আর আমি বারবার হেরে যাচ্ছি নষ্টালজিয়া আঁধারের খেলায়।
কী উন্মাদ সুখ! সভ্যতার গ্লানি খসে খসে পড়ছে ঝরে যাওয়া তারার মত
নারীর পূজারী হয়ে কেহ কেহ ভুলে যায় দ্রোহকালে শপথের কথা
কোন কোন বিবেক ঈশ্বরের বুকে তন্ন তন্ন করে খোঁজে সভ্য অস্তিত্ব।
আত্মার অভিধান খুলে খুঁজে ফেরে পণ্যবাদী সমাজ ব্যবস্থার অর্থ
শুদ্ধলিপির অভাবে কেউ কেউ গেয়ে ওঠে পাজর ভাঙ্গার গান
ভুলে যায় জাগতিক বোধ, নীতিকথা, মান-সম্মান।
আহ্ কী সুন্দর অন্ধকার! শোকাতুর অনুভূতিগুলো ঠাঁই করে নিচ্ছে বুকের ভেতর
স্মৃতিফলক দিন দিন আত্মঘাতী হয়ে উঠছে তোমার মতো করে
প্রিয় নিরবতা এখন অবাধ্য প্রলাপ হয়ে ঘুরছে মানুষের মুখে মুখে।
খুলে গেলে অন্ধকার রাত্রির ভাঁজ অনুভূতির অমোঘ ভেষজ গন্ধ লাগে না নাকে
মাঝেমধ্যে চোখের দৃষ্টিও হাজার রঙের কথা বলে আঁধারে ডুব দেয় স্নেহার্ত পাপ
এসো আলিঙ্গন করি কিছু অন্ধকার বাঁচতে শিখুক মানুষের মতো করে।
“যে পথে ছিল আমাদের নিত্য গতায়াত
সে পথ এখন খানাখন্দে ভরা, বিষাক্ত পোকার আবাস
সহসাই অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে দিনযাপনের গ্লানির ভেতর।”
___ অনেক বড় সাইজ এবং বোধনের লিখা পড়লাম প্রিয় কবি। গুড।
বেশ অন্যরকম লাগল কবি দা
দারুণ লিখেছেন।।।