অশরীরীঃ না গল্প না প্রবন্ধ

ভয়ংকর রাতগুলো এভাবেই কাটে। একা! নিঃসঙ্গ! আমি যেখানে থাকি সেটা থানা সদর হলেও জেলা কিংবা রাজধানী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন একটা শহর। ঠিক শহর না বলে এটাকে একটা অজপাড়াগাঁ বলটাই বোধহয় শ্রেয়।

এই মধ্যরাতে আমার মনে হয় শুধু মাত্র এই অজপাড়াগাঁটা নয় যেনো সমগ্র পৃথিবী ঘুমিয়ে আছে। সুনসান নিরবতা। দূরের মাঠে কিছুক্ষণ পর পর শেয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক কানে আসলেও এখন এতোটাই ভীতু হয়ে গেছি যে, মধ্যরাতের শেয়ালের ডাকলেও মনে হয় হায়েনা ডাকতেছে। এই বুঝি এখনই হায়েনার দল হামলে পড়বে আমার ঘরের ওপর।

কোন যেনো মুভিতে দেখেছিলাম। নামটা ঠিক মনে নেই। এরকম অন্ধকার রাত তার ওপর আবার মেঘের গুড়িগুড়ি ডাক। পথ হারিয়ে এক লোক হাঁটছে বনের পাশ দিয়ে ক্ষেতের আইল ধরে। কিছুক্ষণ হাঁটার পর হায়েনারা তার পথ রোধ করে দাঁড়ায়। অতঃপর … সব শেষ।

আমি ভয়ে বিছানা থেকে নেমে দরজার দিকে এগিয়ে যাই। দরজার খিলটা ঠিক মতো লাগিয়েছি কিনা পরীক্ষা করি। পাশের বাড়িতে একটা বিড়াল অনেক্ষণ মিঁউ মিঁউ করেই যাচ্ছে। ছোটবেলার দাদী বলতেন, বিড়ালের কান্না ভালো নয়। যা তো মিঠু বিড়ালটাকে তাড়িয়ে দিয়ে আয়। আমি বীরদর্পে লাঠি নিয়ে বিড়ালটাকে দূরে তাড়িয়ে দিয়ে আসতাম।

বিড়ালের কান্নাটা আগের থেকে আরও তীব্র হচ্ছে। ওদিকে শেয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক তখনও শেষ হয়নি। পিপাসায় মনে হচ্ছে আমার বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে। ইচ্ছে করেই পানি পান করি না। গ্লাস ধরে রাখার মতো শক্তি বা সাহস এই মূহুর্তে আমার নেই। কোন এক অদৃশ্য শক্তি যেনো সব শুষে নিয়েছে।
হঠাৎ দরজায় দুমদাম আওয়াজে চমকে উঠি। আশেপাশে কেউ নেই।

.
(………চলবে………..)

3 thoughts on “অশরীরীঃ না গল্প না প্রবন্ধ

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।