শহীদ রুমী স্কোয়াড :: আমরা আপনাদের পাশে

নিষ্প্রাণ এই সর্বংসহা রাজ্যে
অন্তর্ঘাতী আমাদের এই গান।
শহীদ রুমী স্কোয়াড এর জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবীতে আমরণ অনশনের ৬৯ ঘন্টা জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবীতে ২৬ মার্চ রাত ১০ টা ৩০ মিনিটে জাতীয় জাদুঘরের সামনে শহীদ রুমী স্কোয়াডের ডাকে শুরু হওয়া আমরণ অনশন কর্মসূচি পার করলো এর ৬৯ তম ঘন্টা। গণজাগরণ মঞ্চের ২১ ফেব্রুয়ারির মহাসমাবেশ থেকে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামাত-শিবিরের নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ২৬ মার্চ পর্যন্ত যে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিলো। সরকার সেটি না মানায় এবং এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায়, শহীদ রুমী স্কোয়াডের সাত তরুণ এই অনশন কর্মসূচীর সূচনা করেন। ২৭ মার্চ সকাল থেকে এখন পর্যন্ত স্বতপ্রণোদিত হয়ে এই অনশনে যোগ দিয়েছেন আরো ১২ জন; অনড় এই দাবীতে অনশনে যোগদানকারীর সংখ্যা এখন মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে আলিফ প্রধান এবং মানিক সূত্রধরের শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলে ডাক্তাররা তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। দুঃখের বিষয় মানিক সূত্রধরের অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়; তিনি এখন সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

রাত আটটায় অনশনকারীদের সঙ্গে সপরিবারে সংহতি প্রকাশ করতে আসেন জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক এবং দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। অনশনকারীদের সঙ্গে বেশ কিছু সময় কাটান তিনি; আজ শহীদ শাফী ইমাম রুমীর ৬২ তম জন্মদিন উপলক্ষে স্কোয়াডের আয়োজনে ৬২ টি মোমবাতি প্রজ্বলন এবং তার স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘আজ দুপুরে সিলেট থেকে না খেয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি আমি। ঢাকা কলেজে পড়ার সময় শহীদ রুমী আমার সহপাঠী ছিলো; তার স্মরণে আজকের তরুণরা তাদের দেশকে ভালোবেসে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এদের প্রাণের মূল্য অনেক বেশী; দেশ থেকে জামাত শিবির নামের আবর্জনা দূর করতে হবে; সেই পরিষ্কার দেশের মাটিতে দেশপ্রেমের ফুলগাছ লাগাবে এরাই। আর তাই এদেরকে যেকোন মূল্যে বাঁচাতে হবে।’
এর আগে সন্ধ্যা সাতটায় অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে আসেন গণজাগরণ মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোট এর নেতৃবৃন্দ। তারা প্রজন্ম ৭১ এবং মৃত্যুঞ্জয় স্কোয়াডের পক্ষ থেকে অনশনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

এসময় তিনি অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যেকোন ধরণের বিভ্রান্তি এবং ভুল বোঝাবুঝি দূর করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, যেহেতু সবাই একই উদ্দেশ্যে কাজ করছে, তাই কোনরকম ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে তিনি শহীদ রুমী স্কোয়াডের কাছে ‘ওপেন সরি’।

শহীদ রুমি স্কোয়াডের পক্ষ থেকে সংহতি সমাবেশের আহবানে পাওয়া গেছে বিপুল সাড়া, সাংগঠনিক পর্যায় থেকে সারা দেশ থেকে ১১৬ টি সংগঠন তাদের সংহতির কথা প্রকাশ করেছেন আমাদের সাথে। যার মধ্যে ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে আছে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে দেশ বিদেশের অসংখ্য মানুষ সংহতি প্রকাশ করেছেন আমাদের সঙ্গে, যার একটি বড় অংশ যার যার অবস্থান থেকে এই কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

২৮ মার্চ বিকেল পাঁচটায় স্কোয়াডের ডাকা সর্বাত্মক সংহতি সমাবেশে অনশনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং বিক্ষুব্ধ নারী সমাজ-এর বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। ঐ রাতে অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন ভাষাসৈনিক আব্দুল মতীন এবং জাতীয় পতাকার নকশা কারী শিবনারায়ণ দাস। তারা অনশনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা ব্যাক্ত করেন।

২৯ মার্চ সকালে সংহতি প্রকাশ করতে আসেন মঞ্জুরুল আহসান খান। দুপুরে সংহতি জানাতে আসেন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা বিচ্ছু জালাল, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শহীদুল হক মামা এবং আক্কু চৌধুরী।

২৬ মার্চ রাতে এই কর্মসূচির সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে সংহতি প্রকাশ করেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্কোয়াড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার মঞ্চ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন বোধন, পরবর্তীতে আরও সংহতি প্রকাশ করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ডক্টরস ফর হেল্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, সামহোয়্যার ইন ব্লগ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস পাঠচক্র, জাগরুক গণ পাঠাগার, বঙ্গবন্ধু চেতনা পরিষদ, বিপ্লবীদের কথা, সেক্টর ১৩, ফাঁসির মঞ্চ, তারুণ্য তের, রাস্তা, জেনারেশন এফ, দেশ মৃত্তিকা, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গন, গণসংহতি আন্দোলন, রাগমা, আমরা, মাতৃভূমি সামাজিক সংগঠন, হৃদয়ে সীতাকুণ্ডু, বটতলা নাট্যদল, ব্ল্যাক স্কোয়াড, প্রজন্মে দায়ভার, শব্দনীড়, ব্লগারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা ব্লগার ব্রিগেড। এছাড়াও এসএমএসের মাধ্যমে সিলেট গণজাগরন মঞ্চ থেকে জানানো হয়েছে সংহতির কথা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে সংহতির কথা।

কর্মসূচী:
শহীদ রুমি স্কোয়াডের আমরণ অনশনের কর্মসূচী চলবেই এছাড়াও শহীদ রুমি স্কোয়াড আজ ২৯ মার্চ, ২০১৩ থেকে সারাদেশ ব্যাপী এই দাবীর স্বপক্ষে গণ অনশন শুরু করার আহবান জানিয়েছে। এই গণ অনশনে দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সকল ছাত্র ছাত্রী এবং সকল মানুষকে – যারা মনে করেন যুদ্ধপরাধীদের সংগঠন জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন, প্রতিরোধ করা প্রয়োজন তাদের যোগ দেবার আহবান করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ মার্চ, শনিবার দেশের সকল স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এই কর্মসূচির সাথে একাত্মতা জানিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করে এক ঘন্টার জন্য প্রতীকী অনশনের আহ্বান জানানো হচ্ছে। যারা এই প্রতীকী অনশনে অংশ নেবেন তাদের সবাইকে অনশনের ছবি শহীদ রুমী স্কোয়াডের এর ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

গণজাগরণ মঞ্চ থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি – ৩১ মার্চ ২০১৩ এ- সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি এবং জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবীতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে সংগৃহীত গণস্বাক্ষর জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকারের কাছে পেশের উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ মিছিল-এ সকল স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের যোগ দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে শহীদ রুমী স্কোয়াড।
স্কোয়াডের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হচ্ছে, গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং সমর্থন দলটির আছে। আর তাই, আমরণ অনশনের যে কর্মসূচি দলটির পক্ষ থেকে পালন করা হচ্ছে, সেটি যে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচিগুলোর সম্পূরক, সেটিও জানানো হচ্ছে স্পষ্টভাবে। কোনভাবেই তাই এই কর্মসূচি বা এই সংগঠনটিকে গণজাগরণ মঞ্চের থেকে আলাদা কোন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে না দেখার জন্য স্পষ্টভাবে জানানো হচ্ছে।

যুদ্ধাপরাধী সংগঠন এবং তাদের সহযোগী হিসেবে জামাত-শিবিরের রাজনীতি স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আমরা জানি, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সেটি যে কোন মুহূর্তে, যে কোন উপায়েই সম্ভব। আর তাই আমাদের এই প্রাণের দাবীর পক্ষে আমাদের অবস্থান অনড়, এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে অহিংস উপায়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কঠোর প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছি আমরণ অনশনকেই। আমাদের আশা এতে সবার সমর্থন আমরা পাবোই।

আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে তাই আমরা আজ বলতে চাই, বিজয়, নাহলে মৃত্যু- একমাত্র এই এই পথেই চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আর তাই অহিংস উপায়েই দাবী আদায়ের সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নিয়ে আজ আমরা রাজপথে; আশা আছে বিজয়ের, তবে মৃত্যুর ভয়ে এখন আর ভীত নই আমরা কেউ।




সর্বশেষ তথ্য জানতে : ফেসবুক পেজ – শহীদ রুমী স্কোয়াড।

মুরুব্বী সম্পর্কে

আমি আজাদ কাশ্মীর জামান। আছি মুরুব্বী নামের অন্তরালে। কবিতা পড়ি, কবিতা লিখার চেষ্টা করি। ভেতরে আছে বাউল মন। খুঁজে ফিরি তাকে। জানা হয়নি এখনো। ঘুরতে ঘুরতে আজ পৃথিবীর স্বর্গে। এখানেই পরিচয় হয়েছিলো, কবিতা পাগল এক মানুষের সংগে। নাম জিয়া রায়হান। যার কিছু শব্দকথা, এ্যাতোদিন ভরেছে আমার পাতা। উথাল পাথাল হাওয়া, হৃদয়ে জাগালো দোলা পেলাম কিছু সমমনা মানুষের দ্যাখা। দিনভর আর রাতভর শুধু কবিতায় গেলো বেলা। সব ছেড়েছি- সব পেয়েছি- ভুলতে পারিনি শুধু কবিতার অশ্রুসজল চোখ। ভালো লাগা থেকেই দু’ একটা শব্দ সাজাবার চেষ্টা করি। মাতাল বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মাটির কলসে, তবলার ধ্বণী তুলে গাইতে পারি বেসুরো গান- সুর নামের অন্তরালে। ভালোলাগে পোষা কবুতরের পালক ললাটে ছোঁয়াতে। ফুল থেকে রং নিয়ে, খেলি হোলিখেলা, হৃদয়ের উঠোনে। আজ তারি ধমকে এলাম স্বরূপে- স্বকথায় ভরাবো পাতা।   hits counter