দিয়েছি অনেক … নিয়েছো তার চেয়ে বেশী …

ব্লগনিক : মুরুব্বী। আছি আজাদ কাশ্মীর জামান নামের অন্তরালে। যারা আমাকে একটু বেশী জানেন বিয়টি তাঁদের অধিকাংশেরই জানা। আজকের এই পোস্টটি আহামরি তেমন কিছু মানের বা গুণের নয়। আর্শীতে নিজেকে খুঁটিয়ে দেখা এবং পাশাপাশি খানিকটা মূল্যায়ণের অপকৌশল মাত্র। আজ নিকট অতীতে ফিরে যাবো। কেননা এই পোস্ট দিয়েই আমার শব্দনীড় পোস্ট সংখ্যা দাঁড়াবে দুই শতাধিক। এই পর্যন্ত মোট ১৬৫ জনের প্রিয় লেখক তালিকার ব্লগ রোলে আমি রয়েছি। শব্দনীড় এ আমার যাত্রা শুরু : ১৩-১১-২০১০ ইং।

প্রকাশিত পোস্ট : ২০০টি। খসড়া পোস্ট : ২২টি। মন্তব্য কৃত পোস্ট : ১২১৫৫টি।

শব্দনীড় পরিসংখ্যান আনুযায়ী মন্তব্য করেছি : ১৯১৯৪টি। মন্তব্য পেয়েছি : ৩৮৫ জনের এবং মন্তব্য দিয়েছি : ৬৮০ জনকে। প্রকৃতি : ব্লগার নির্বিশেষে সামাজিক।

শব্দনীড় ব্লগ ঠিক যেদিন যে মুহূর্ত থেকে আত্মপ্রকাশ করেছে সেই দিন সেইক্ষণ থেকে আমি শব্দনীড় এ আছি। ব্লগ পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে আমার শব্দনীড় যাত্রা শুরু। মাঝে একটানা অর্পিত এই দায়িত্ব পালন ছাড়া আমি আমার সামর্থ্য আনুযায়ী ব্লগ এবং ব্লগারদের সংস্পর্শে থেকেছি। কখনো কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে রাত্রির দ্বিপ্রহর পর্যন্ত। প্রত্যেকের ঘরে উঁকি মেরেছি। স্মৃতি থেকে যদি বলি : কফি হাউসের সেই আড্ডা গানটির বাণীর কথা মনে পড়ে যায়। কত জন এলো গেলো কত জনই আসবে আমিই যেন শুধু রয়ে যাই। কতো কতো মহৎপ্রাণ লিখিয়ে এলেন। আলোড়ণ তুললেন আবার ধোঁয়ায় মিশে গেলেন। পুরোনো গেলো অস্তাচল নতুনরা সে জায়গা পূরণ করে নিচ্ছেন জগতের মহান সত্যের মতোন। সবার এবং সব বেলার ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য; তেমনটাই আরোপিত বা স্থিত হয়ে এই শব্দনীড়েও। কারু জন্য কিছু থেমে থাকে না। হয়তো থমকে পড়ে কিছুক্ষণের জন্য; সব গতি ফিরে পায় জাগতিক সব অমোঘ নিয়তির মতো।

আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম এটা বললে অত্যুক্তি হবে না। কেননা আজ থেকে এক বছর আগেও ব্লগারদের ছিলো সহ-ব্লগার প্রীতি। একেকটা পোস্ট মেতে উঠতো আনন্দ উচ্ছলে। যেন স্কুল জীবনের মতো বন্ধুদের কোলাহল। মন্তব্য আর প্রতি মন্তব্যে ভরে উঠতো যে কারু পোস্ট। ধীরে ধীরে ব্লগ যেন হয়ে উঠলো কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। কে কখন আসেন কখন বেড়িয়ে যান পুরোনোরাই টের পান না আর তো নবীন !! এটা ক্লেশের কথা নয়; হকিকত। পরীক্ষিত সত্য।

কথায় কথা বাড়ে। লিখতে গেলে আরো লিখতে হয়। আজ তেমনটা করতে চাই না। বলতেও আমি মানসিক ভাবে অন্তত প্রস্তুত নই। আজকের লিখার শিরোনাম : দিয়েছি অনেক নিয়েছো তার চেয়ে বেশী। আমার একটা পোস্ট ছিলো মেধাবী এক কিশোরীর প্লীহা অপারেশনে অর্থ সাহায্যে যারা হাত বাড়ালেন তাঁদের নাম আপডেট:: ঐচ্ছিক সাহায্য চাই। অনেকেরই মনে থাকবার কথা। অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন। ভুলে যাবারই কথা। পোস্টটি প্রদর্শিত হয়েছে ৪০০ বার।

শব্দনীড় এ সেই পোস্টটি ১৯শে জুন ২০১৩ইং থেকে ২৫শে জুন মধ্য রাত্রি পর্যন্ত সঞ্চালক নির্বাচিত অবস্থায় ছিলো। আমার বিশেষ এক বন্ধু ঠাট্টাচ্ছলে বলতেন ভিক্ষার পোস্ট আর কতদিন ঝুলবে !! আমি উত্তর খুঁজে পাইনি। পোস্টে ১৭ জন মন্তব্যকারী উপস্থিত হয়েছিলেন। নামে বেনামে দেখেছেন অনেকেই। পোস্টের মন্তব্য ঘরে মূল্যবান শব্দকথায় নিজের উপস্থিতি যারা দিয়েছেন শ্রদ্ধাভরে আমি তাঁদের স্মরণ করি। বৈশাখী ঝড়, মাতরিয়শকা, সুমন আহমেদ, তোফায়েল আহমদ, ডা. দাউদ, আরাফ করিম, উলুখাগড়া, চারুমান্নান, মহাকালের প্রতিচ্ছবি, আল আমিন ডলার পাঠান, মোঃ আমিনুল ইসলাম, ফেরদৌসা, আজিম হোসেন আকাশ, দামাল ছেলে, মাঈনউদ্দিন মইনুল এবং কে এম রাকিব। সবাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আমার অন্তস্থল থেকে তাঁদেরকে অনেক অনেক ভালোবাসা।

মি. মাতরিয়শকা আমাকে সেই দিনই ফোন করেছেন সুদূর রাশিয়া থেকে। এলিজা আকবর এগিয়ে এসেছেন ফেসবুকে। বৈশাখী ঝড় সরাসরি ফোন দিয়েছেন। ভিন্ন একটা ব্লগ বন্ধুব্লগ, শ্রদ্ধেয় ফেরদৌসা এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন তাদের নিজ নিজ সামর্থ আনুযায়ী এগিয়ে এসেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই একটি পোস্টে আমার পুরোনো সেই বন্ধুরা কোথায় !! কেননা একই পোস্ট ফেসবুকে সমানভাবে প্রচারিত হয়েছে। আমি ফেসবুককে গণনায় আনতে চাই না। আমি পর্যবেক্ষণ করেছি আমাদের শব্দনীড়কে। দেখেছি দুটি চোখে বন্ধুদের এসে ফিরে যাওয়া।

সম্প্রতি আমি একটি প্লাগইন্স এর মাধ্যমে দেখতে পাই শব্দনীড় এ বর্তমান এবং সেই সময় নিবন্ধিত ব্লগার অফলাইনে কতজন এবং কারা কারা ছিলেন। বলার অর্থ হচ্ছে যাদের পাশাপাশি আজ আমার ব্লগিং জীবন প্রায় পাঁচ বছর, সেই পুরাতন বন্ধুদের আমি এই শব্দনীড়েই দেখেছি অথচ সাহায্য চাই পোস্ট বলেই কি তাঁরা ব্যস্ততা বা অনীহায় পোস্টটিকে এড়িয়ে গেছেন !! আমি কষ্ট পেয়েছি। ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। বন্ধুর প্রয়োজনেই বন্ধু সাহায্য চায়। আর এই প্রয়োজনেই পাশে এসে দাঁড়ায়। আফসোসের পাশাপাশি আমি আনন্দিত আমার পাশে পুরোনো বলতে ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে যারা যারা চেনেন তাঁরা কেউ এসে দাঁড়ান নি।

ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে চাই : সবাই বন্ধু হয় না। কেউ কেউ হয়।
মনে রেখো … দিয়েছি অনেক … নিয়েছো তার চেয়ে বেশী।
নিজের ভেতর নিজেকে আড়াল করে রেখে দিলাম বন্ধু।

মুরুব্বী সম্পর্কে

আমি আজাদ কাশ্মীর জামান। আছি মুরুব্বী নামের অন্তরালে। কবিতা পড়ি, কবিতা লিখার চেষ্টা করি। ভেতরে আছে বাউল মন। খুঁজে ফিরি তাকে। জানা হয়নি এখনো। ঘুরতে ঘুরতে আজ পৃথিবীর স্বর্গে। এখানেই পরিচয় হয়েছিলো, কবিতা পাগল এক মানুষের সংগে। নাম জিয়া রায়হান। যার কিছু শব্দকথা, এ্যাতোদিন ভরেছে আমার পাতা। উথাল পাথাল হাওয়া, হৃদয়ে জাগালো দোলা পেলাম কিছু সমমনা মানুষের দ্যাখা। দিনভর আর রাতভর শুধু কবিতায় গেলো বেলা। সব ছেড়েছি- সব পেয়েছি- ভুলতে পারিনি শুধু কবিতার অশ্রুসজল চোখ। ভালো লাগা থেকেই দু’ একটা শব্দ সাজাবার চেষ্টা করি। মাতাল বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মাটির কলসে, তবলার ধ্বণী তুলে গাইতে পারি বেসুরো গান- সুর নামের অন্তরালে। ভালোলাগে পোষা কবুতরের পালক ললাটে ছোঁয়াতে। ফুল থেকে রং নিয়ে, খেলি হোলিখেলা, হৃদয়ের উঠোনে। আজ তারি ধমকে এলাম স্বরূপে- স্বকথায় ভরাবো পাতা।   hits counter