এক ঘোরবর্ষায় আমি নীলপদ্ম হতে চেয়েছিলাম
মুক্তগদ্য।
এক শ্রাবণে –
তখনো ভোর তার সবগুলো দরোজা খুলেনি ; সূর্য কেবল মিটি মিটি হাসিমুখ দাঁড়িয়ে আছে, আকাশের এক কোণে; চুপচাপ ; অপেক্ষায় আছে কখন মেঘ, আলগা করবে তার নীল আঁচলের ঘোমটা। জলার ধারে এক পায়ে দাঁড়ানো ঘুমন্ত বক। মাত্রই ডানার আড়মোড়া ভাঙ্গছে গাঙ্গশালিক, মাছরাঙ্গা, ফিঙ্গে, পানকৌড়ি। প্রবল হাতছানিতে খুব ডাকছিল জলাশয়ের মাঝখানে ফুটে থাকা লালনীলসাদা পদ্মগুলো।
পাখায় তীব্ররঙের ঘোরলাগা প্রজাপতিটিকে দেখে আমার যে কী ভীষণ ইচ্ছা হলো-প্রজাপতি হয়ে যাই’।
বৃষ্টি যখন পদ্মপাতায় বাজাবে জলতরঙ্গের সিম্ফনি ; কত্থকের বোলে বোলে আমার দু’পায়ের ঘুঙুর বেজে যাবে— ঝমঝমাঝম। পাপড়ির ভাঁজে ভাঁজে শুষে নেবো বিজলীচমকের সবটুকু আলোকরশ্নি।
এই নীলমত্ততার ভেতরে বুনেছি নীলকমলের বীজ।
কত কিছু যে হতে চেয়েছি এক জীবনে ! পাখী, ফড়িং, প্রজাপতি, মেঘের ভেলায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো লালঘুড়ি, পাতার বাঁশী, মেলার কাঠের ঘোড়া।
সাপ হবার কোন ইচ্ছা কখনো ছিলনা; তবুও দেখি হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে বিষদাঁত ; রপ্ত হয়ে গেছে খোলস বদলের কলাকৌশল। অজান্তে জীবন কি তবে বদলে গেল অন্য কোন জীবনের সাথে ! দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকি।
“একদিনেরই জীবন হলেও ফুল হয়ে যে জন্ম নেবো …..”
হ্যাঁ ফুলইতো হতে চেয়েছি। একটি উজ্জ্বলউচ্ছল কুমুদকুসুম। কোন অনামিকায় জড়ানো বৈদুর্যমণিরআংটির মতো; দীপ্তি ছড়ানো। কথিতবাক্যে শুনি, সবার সহ্য হয়না নীলা। কারো দুর্ভাগ্যের প্রতীক হয়ে থাকে। তবু কেউ না কেউ চড়া দামে একখণ্ড নীলকাচের অভিশাপ কিনে বাড়ী ফেরে।
খোয়ারি ভাঙ্গার পরে দেখি আমিও সিন্ধুক ভরেছি কত ভুল পণ্যে !
পিযুষপাত্র ভেবে কিনে এনেছি বিষের পেয়ালা।
বার কয়েকের পাঠে একজন পাঠকের দৃষ্টি আর শব্দ একটিই …
অসাধারণ হয়েছে এই মুক্তকাব্য। অভিনন্দন প্রিয় আপা। আমার ভালো লেগেছে।
ভালোলাগা রেখে গেলাম।
আর আপনি ফুল হয়ে ফুটেছেন।
অজান্তে জীবন কি তবে বদলে গেল অন্য কোন জীবনের সাথে ! দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকি।
গভীর অনুভুতি নিয়ে গদ্য কাব্য ভাল লেগেছে। গদ্যকাব্য দাড়িয়ে গেলে বীটোফেনের সিম্ফনি হয়ে এক মাদকতায় পাঠককে দোলাতে থাকে । শুভেচ্ছা।
শব্দনীড়ে এটাই প্রথম মন্তব্য।।