আমার কপালের মাঝ বরাবর পিস্তলটা ঠেকিয়ে যখন আমার শেষ ইচ্ছাটি জানতে চাওয়া হল আমি তখন আমার মধ্যে নেই। পুরো শরীর জুড়ে বিজলীর মত ঝাকুনিতে ঘামের অনুভূতি আন্দাজ করা কঠিন হবে।
-না ! আমাকে বাঁচতে দিন, আমাকে মারবেন না।
লোকটির অদ্ভূত হাসি এবং পিস্তলের গুলির শব্দের মিশ্রণে আমি হারিয়ে যাই গভীর অতলে, শূন্য থেকে শূনে, যেখানে কোন ব্যথা নেই, নেই কোন অনূভূতি!
হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করি আধা ঘুমে আধা জাগ্রত অবস্থায়। মাঝে মাঝে আমি এমন স্বপ্ন দেখি নাক মোটা কালো বর্ণের একজন ব্যক্তি আমাকে মারতে চায় কিন্তু তার চেহারা কখন দেখতে পারি না, পুরো মুখ জুড়ে বড় নাক!
বালিশের নিচে থেকে মোবাইল বের করে সময় দেখলাম রাত ৩:২৫ মিনিট কিন্তু ততক্ষণে ঘুমের ভাবটা কেটে গেছে। হঠাৎ গোসল করার তীব্র ইচ্ছে হল। যখন আমাকে কেউ বলে আপনার শখ কি? আমি নি:সন্দেহে বলি গোসল করা! বাথ ট্যাবের মধ্য বসে সিগারেটের টান দিয়ে পানিতে মুখ ডুবিয়ে ধোয়া ছাড়ার মধ্যে একটা আনন্দ আছে যদিও পানিতে ধোয়া ছাড়া যায় না তবে পানির বুদ বুদ শব্দ আমাকে আনন্দ দেয়। নাহ্ উঠে একটি সিগারেট গরম করতে হবে! সিগারেটকে হলকা আচেঁ গরম করে টানলে তামাক পাতার চির চির শব্দ সেটিও আমাকে আনন্দ দেয়। আমি সব সময় তাই করার চেষ্টা করি যা আমাকে আনন্দ দেয়। প্রতিটি মানুষের তাই করা উচিৎ যাতে সে আনন্দ পায় তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এতে অন্যের ক্ষতি যেন না হয়।
এই মাঝ রাতে আমার সকল আনন্দের প্রস্তুতি ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট ছিল একটি ফোন কল! ফোনটা বার বার বেজে যাচ্ছে কিন্তু সেটি ধরার বিন্দুমাত্র আগ্রহ আমার নেই। আমি চাই না এই মুহূর্তে মোটা কণ্ঠস্বরে কাউকে হ্যালো বলতে তবে আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি তাদের জন্য মাঝ রাতের ফোন কল গুলো অনেক বিপদের সংকেত বয়ে আনে।
-হ্যালো
-(অপর পাশে নিরবতা)
-যদি কথা না বলতে চান ফোনটা রাখতে পারেন !
-১৫ মিনিটের মধ্যে নর্থ-ওয়েস্টার্ন হসপিটালে আসতে পারবে ?
-মাই গস!!! লেলিনা!!!! এতদিন পরে? তুমি ঠিক আছতো?
-হুম…
-একটু অপেক্ষা কর, আমি আসছি …
ফোন রাখার পরে আমার অবস্থা চক্রবৃদ্ধি সুদ নির্ণয়ের সূত্রের ন্যায়। যেমন : C= P(1+r)n [এখানে, C= আমি P= লেলিনা, n= সময় এবং ফোন কল, r= হাসপাতাল]
ছোটবেলা থেকে গনিত নিয়ে আমার সমস্যার কোনই অন্ত ছিল না। আজও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটলো না, না জানি কি ঘটলো হাসপাতালে? ফলাফল জানার জন্য এখনি হাসপাতালে যেতে হবে।
(চলবে ….)
দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব পোস্ট করা হবে শনিবার সকালে
গল্পটি পড়তে গিয়ে এক ধরণ ঘোরের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। আপাতত এই অংশটি পড়লাম। বাকি গুলোন প্রকাশিত হলে নিশ্চয় পড়বো। ধন্যবাদ পবিত্র হোসাইন।
দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব এর অপেক্ষায় আছি।