পরকিয়া স্পেশাল ….
গতকাল সারা দুপুর বসে T.S Eliot পড়ছিলাম, সেই চেনা কবিতা নতুন ভাবে আবার পড়তে পড়তে নতুন করে ভালোবেসে ফেলছিলাম কবিকে। কবিতাটি “The love song of J.Alfred Prufrock.”
এলিয়টকে বলা হয় কবিদের কবি। তার আগে বোদলেয়ার, মিল্টন এবং দান্তেকেও এই রকম বলা হতো। বাংলা কবিতা এলিয়টের সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই পরিচিত। বাংলা কবিতার পাঠকেরা জানেন, তিরিশের আধুনিক কবিরা কতখানি অভিভূত হয়েছিলেন এলিয়টের কবিতা পড়ে। এলিয়টের উপর বাংলা কবিতার আধুনিকতাবাদ অনেকটুকু নির্ভর করেছে একসময়। আর তিরিশ ও তৎপরবর্তী কবিরাও ভাষা, শৈলী ও বিষয়বস্তুতে এলিয়টকে ধারণ করেছেন।
আমরা জানি রবীন্দ্রনাথও এলিয়টের কবিতা অনুবাদ করেছেন। এলিয়টের এই যে বৈশ্বিক প্রভাব, সেটি আসলে নিহিত তাঁর লেখনীর ভেতরেই। এলিয়ট বিংশ শতাব্দীর কবিতায় যে ধারাটির সংযোজন করেন তাতে বুদ্ধিবৃত্তির প্রাধান্যটি ব্যাপক হয়ে পড়ে, যুক্তি আকর্ষণ প্রয়োজনীয়তা পায়। আবার এই তিনিই যখন নিমগ্ন কোনো আধ্যাত্মচিন্তায়, তখন যুক্তি-বুদ্ধি-সত্যকে খাটো না করে বরং তা থেকেই ভেতরের যাত্রাটির সূচনাকে চিহ্নিত করেন। আমাদের সময় এলিয়ট ছাড়া আর কোনো কবি এভাবে দুটি ভিন্ন সমতলে আমাদের চেতনাকে এগিয়ে নিতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। এলিয়েট তাই একান্তই স্বতন্ত্র একটি ধারার সৃষ্টি করেছেন এবং কে না জানে, যে কোন কবির জন্যই এই স্বাতন্ত্র্য কতটা আরাধ্য। এলিয়টের আরো একটি বিশেষ অবদান এই যে, তিনি ইংরেজি কাব্যের ভাষাকে সংষ্কার করেছেন। এলিয়ট কবিতার ভাষাকে নিয়ে এসেছিলেন মুখের ভাষার কাছাকাছি। সাহিত্যে বিপ্লবের মানেটা আর কিছুই নয়, তা হচ্ছে মানুষের মুখের ভাষার কাছে ফিরে আসা- এই উপলব্ধিটুকু এলিয়টই বারবার আমাদেরকে দিয়েছেন।ফিরে আসা যাক এলিয়টের কাব্যে, বিশেষ করে “The love song of J.Alfred Prufrock.”
জীবনানন্দ এবং Eliot এই দুই কবিরই প্রধান উপজীব্য বিষয় হল আধুনিক সভ্যতার শূন্যগর্ভতা ও আকাঙ্খিত নারী- হৃদয়ের জন্য তীব্র অভাব বোধ। এই অভাববোধের ওপরেই লেখা তাঁর “The love song of J.Alfred Prufrock.” কবিতার নায়ক জীবনকে বহুভাবে দেখার ফলে কোন নারীর কাছে গিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া যায় কিনা এ বিষয়ে তীব্র সংশয় বোধ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রেমহীন নিঃসঙ্গ জীবনযাপন জীবনযাপন করেছেন। এই কবিতাটিতে কবি তাঁর জীবনবোধের গভীরতা ছাড়াও যে বিষয়ে প্রশংসার দাবী রাখেন তা হল – তিনি যে পাঠককে হাত ধরে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে তাকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে, বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত করেন। তারপর তাকে সেই অনিবার্য ও মোক্ষম প্রশ্নটির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে ভাবিয়েছেন যে সমাজের নিচের তলায়, উচ্চবিত্ত সমাজে, সর্বস্তরেই নরনারীর সম্পর্ক কি শুধু দেহকেন্দ্রিক, তাতে হৃদয়ের গভীরতার কোন স্থান নেই? শুধুমাত্র প্রয়োজন ভিত্তিক এই সম্পর্কের মধ্যে শান্তি কোথায়? উত্তরন কোথায়?
সমাজের নিচের তলায়, উচ্চবিত্ত সমাজে, সর্বস্তরেই নরনারীর সম্পর্ক শুধু দেহকেন্দ্রিক। তাতে হৃদয়ের গভীরতার কোন স্থান নেই। শুধুমাত্র প্রয়োজন ভিত্তিক এই সম্পর্কের মধ্যেই শান্তি। উত্তরন নেই দেবী। এভাবে চলছে এবং চলবেই।
হুম। সেটাই তো মনে হচ্ছে প্রিয় বন্ধু।
সুন্দর ——ঘর মুখি হচ্ছে এখণ
হলে তো খুবই ভাল কবিবাবু।
কবিতা পড়া হলো না আমার।

সব মাথার উপর দিয়ে যায়।
হাহা। এটা সমসাময়িক ভাবনা নিয়ে লেখা ছবি দা।
Kamal Uddin Mehedi ভাই ফেবুতে লিখেছে –
[পদ্মা নদীর মাঝিঃ পরকীয়া ভার্সন]
:3
:/
😀
.
: আমারে নিবা মাঝি লগে?
: চিন্তে করিস না কপিলা। তরে ছাড়া কি আমার চলে! তরে সাথে নিয়াই ত গাঙ্গে নাও ভাসামু, তারপর ময়না দ্বীপে গিয়া বাকুম বাকুম করুম। তয় আগে তোর আপারে বইলা আস!
: কিবা কও কুবের মাঝি! আপারে বললে কি তোমার লগে আমারে ময়না দ্বীপে যাইতে দিবো!
: তুই ত কিছুই জানোস না রে কপিলা! আমাগো ভারতীয় সুপ্রীম কোর্ট অখন পরকীয়ারেও স্বীকৃতি দিছে! আর কোন সমস্যা হবে না।
.
: ঘটনা হাছাই নি মাঝি? তয় আপায় ঘরে এই কয়দিন একলা থাকবো ক্যামনে?
: তারও ব্যবস্থা কইরা রাখছি। আমার বন্ধু গণেশ তোর আপার দেহাশুনা করবো।
: আমার ভয় হয় মাঝি! গণেশ যদি আপার সাথে…
: করলে করবো, সমস্যা কি! তোরে ত আগেই কইছি, পরকীয়া এহন বৈধ।
.
: কিন্তু তাই বলে নিজের বউরে পরপুরুষের কাছে দিয়া যাইবা মাঝি?
: আর কোন কিন্তু নয়। অখন থেইক্যা বউ যার যার, ভাগ সবার।
.
প্রসঙ্গঃ পরকীয়াকে বৈধ বলে ঘোষণা করলো ভারতীয় সুপ্রীম কোর্ট।
দিদি ভাই বিশাল এক জটিল প্রশ্নের মধ্যে ফেলে দিল! এখন তাকে কি জবাব দেই? আসলে কি দিদি, এটা নিতান্ত ব্যাক্তি কেন্দ্রিক অভিরুচি। যেমন, কেও মদ বিক্রি কতে দুধ কিনে খায় আবার কেও দুধ বিক্রি করে মদ কিনে খায়। হোটেলে খেতে বসে নিজের ভেবেচিন্তে অর্ডার দেয়া বিরিয়ানির প্লেট সামনে রেখে যেমন অন্যের প্লেটের নান আর শিক কাবাবের দিকে তাকিয়ে থাকে, আমার মনেহয় ব্যাপারটা অনেকটা তেমনি।
দেহ এবং প্রান এর সমন্বয় না হলে যেমন হয় তেমনি কিছু একটা হতে পারে। যদিও এটা অনেক দিনের পুরোন প্রশ্ন, এর সমাধান অনেক জ্ঞানিগুনিরাই দিতে পারেনি।


জীবনানন্দ এবং Eliot এই দুই কবিরই প্রধান উপজীব্য বিষয় হল আধুনিক সভ্যতার শূন্যগর্ভতা ও আকাঙ্খিত নারী- হৃদয়ের জন্য তীব্র অভাব বোধ।

লেখা বেশ ভালো হয়েছে, শুভকামনা থাকলো।

ধন্যবাদ প্রিয় মন দা।
তৃষ্ণা যদি দেহকেন্দ্রিক হয় তবে তার স্থায়িত্ব এবং সৌন্দর্য কতটুকু? তৃষ্ণা যদি মনকেন্দ্রিক হয় তবে তা শাশ্বত ও সুন্দর!
ধন্যবাদ কবি মৃধা বেলাল।
* সুপ্রিয় কবি দি, অনেক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা। মুগ্ধ হলাম।


আপনাকেয়ো ধন্যবাদ কবি দা।
আধুনিক যুগের শুন্যগর্ভতা এই বিষয়টা নিয়ে আমার সংশয় আছে ।
আকাঙ্ক্ষিত নারীর জন্য তীব্র অভাববোধ এটা কবিদের একধরনের হাহাকারের জন্যই তৈরী । নইলে ভালো কবিতার জন্য সেই হাহাকার শুন্যতাবোধ বোধ পাঠকের হৃদয়ে কি করে ছড়িয়ে দিতেন ? আমার মনে হয় শুন্যতাবোধ এটা সবসময় থাকেই । সব আছে অথচ কিছু নেই এই বোধে উত্তীর্ণ মাত্রই তিনি অন্যরকম বেদনাবোধে আক্রান্ত হতে পারেন – এটা তো জরুরীই ।
সত্য বলেছেন দিদি ভাই।