ইতিহাসে পড়েছি যে তানসেন গান গাইলে নাকি বৃষ্টি নামতো! আর দেবব্রত বিশ্বাস গাইলে? মন প্রাণ জুড়িয়ে যেতো। আজ এই প্রিয় কণ্ঠশিল্পীর জন্মদিন। আজ সারাদিন আমি তাঁর গাওয়া গান শুনছিলাম। যেমন- ‘আবার এসেছে আষাঢ়’ অথবা ‘বহুযুগের ওপার হতে আষাঢ়’- তাঁকে শুনছি আর আকাশ জুড়ে মেঘের আনাগোনা কিছু পরেই বৃষ্টি। খুব অবাক হয়েছিলাম। মুগ্ধ হয়ে শুনছি গানের জগতের এই আপোষহীন সম্রাটের গান। তারপর মনে হল “আষাঢ়” শব্দটি কি আমরা নির্ভুল উচ্চারণ করতে পারি? তিনি ‘আষাঢ়’ শব্দটি যেভাবে উচ্চারণ করলেন মনে হয় না আমরা কেও সেইভাবে উচ্চারণ করতে পারি।
পল রবসনের তথাকথিত ‘চ্যুতি’ যেমন ইতিহাসের মাত্রা পায়, তেমন ভাবে জর্জ বিশ্বাস কে খোঁজার জন্য জাতীয় চৈতন্যের গহন শিকড়ে নেমে যেতে হয়। পল রবসনের কথা মনে হল কারণ – দেবব্রত বিশ্বাসও শেষপর্যন্ত একজন আমাদের অতি প্রিয় আশ্রমিক গীতিকার ও সুরকারকে আমাদের সামনে নতুনভাবে নিয়ে আসার প্রয়াস করেছিলেন। রবসন যেমন নিগ্রো আধ্যাত্মিকতাকে ক্রমশ মুক্তি দিতে চাইছিলেন মার্কিনি শ্রমজীবীর মূল সংস্কৃতিতে তেমনই দেবব্রত বিশ্বাস তাঁর পূজা পর্যায়ের গানে রক্ষণশীলতাকে মুক্তস্রোত করে দিয়েছিলেন। সেই সময় রবীন্দ্রসংগীতের মৌলবাদ তাকে ব্রতভ্রষ্ট মনে করেন কিন্তু জর্জ বিশ্বাস রবীন্দ্রচর্চা সীমানার বাইরেও জনসমর্থন পেয়ে যান; অনেকটাই রবসন যেমন কালো সমাজের।
দেবব্রত বিশ্বাস যখন সক্রিয়, তখনও আমরা বুঝিনি সংস্কৃতির নির্দিষ্ট ফ্রেমের বাইরে কীভাবে চলে যাওয়া যায়। আজ হয়ত দেবব্রত বিশ্বাস রবীন্দ্রগানের একটি উপসংস্কৃতিও হয়ে উঠতে পারেন, যেমন হয়ত বিটল ঘরানায় পল ম্যাকার্টনি। নিগ্রো স্পিরিচুয়াল ও ব্রাহ্ম উপাসনারীতি আসলে উপলক্ষ ছিল। বিপ্লবী হয়ে ওঠা ছিল এদের নিয়তি।
দেবব্রত বিশ্বাস আমার ভীষণ প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। রবীন্দ্র সুরের সাথে যাদের শৈশব কৈশোর যৌবনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে তাদের কাছে দেবব্রত বিশ্বাস নামটি ভীষণ উঁচু মর্যাদায়। সঙ্গীতকে যিনি একাধারে একাই প্রতিনিধিত্ব করেছেন। জন্মদিনে জানাই বিশেষ শুভকামনা।
আসলেই চমৎকার শুনলাম
’আবার এসেছে আষাঢ়’ গানটি রিয়া দিদি অনেক শুভেচছা রইল
Respect