চেনা শহরের বড় রাস্তাগুলো আজকাল খুব বেশি অচেনা লাগে।
হাতিরপুলে কোন কালেও হাতির দেখা না মিললেও ফুচকা আর চটপটির আসর বসতো হাতির মতো বিশালাকার আয়তনে। কলেজ ফেরা এক দঙ্গল উচ্ছল তরুণীর চোখে তখন স্বপ্ন আকাশছোঁয়া। লেখা পড়া শেষ করে কেউবা ডাক্তার আর কেউবা আর্কিটেক্ট হবার ইচ্ছেয় মশগুল, আবার এও দেখা গেছে শুধু ভালো বর পাবার আকাঙ্ক্ষায় বিভোর অনেকে ৷
রুমানা বড়লোক ঘর পেয়েছে কীনা জানিনা, মৌসুমী ঠিকঠাক চলে গেছে সিডনীতে আর এদেশে সরকারি চাকরি করেও আনিকার কাছে মনে হয়েছে সন্তানের কোন ভবিষ্যৎ নেই এখানে, সে দিন রাত এক করে প্রবাসে ঘাম ঝরাচ্ছে।
আমরাও তো কাজ করেই চলেছি নিরন্তর, সকাল থেকে রাত ; কী অফিসে ; কীবা বাড়িতে। আলাদা করে কোন দিন নেই আমাদের জন্য, সেই একই রকম হুড়োহুড়ির মধ্য দিয়ে দিনের শুরু। বৈচিত্র্য ঝরানো বৃষ্টি এই ফাগুন দিনেও জলে ভেজায়, কাঁদায় মাখামাখি করে কোন রকম অফিসে ঢুকতেই লেইট কাউন্ট হয়, মাস শেষে বেতনের গলায় ছুঁড়ি।
ফিরতি পথে সূর্যের সাথে আর দেখা হয় না, কখনো সে আড়ি নিয়ে গেছে দূর পশ্চিমায় ; শহরের হেজাক বাতিগুলো আরো বেশি জ্বলন্ত, ট্র্যাফিক তখন বেপরোয়া ভীষন। রসায়নে ডুব সাঁতার কাটা এই সাহসী জনতা অবিরত ভাসতে থাকে মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারে শরীর এলিয়ে।
আমাদের আসলে পালাবার কোন পথ খোলা নেই, বিনোদন খুঁজতে চাওয়া উৎসব প্রিয় মানুষ তাই বারুদে মিশে যায়। সব কিছুই এখন ভাগ্যের কাছে সঁপে দিয়ে নির্বিকার হেঁটে চলাই নিয়ম, মুখ ফোসকে কখনও কীযে বেরিয়ে আসে সেই আতংক সারাক্ষণ ওত পেতে থাকে।
আমার বন্ধুদের মতো আমি বিদেশ বিভূঁইয়ে নিবাস করতে পারিনি, মাস শেষে লক্ষ টাকাও ঘরে তুলতে পারিনি আর পারিনি মানিয়ে নিতে কী নিয়মে কীবা অনিয়মে। নিজের সামনে মাথা উঁচু করে থাকা যতোই সন্তোষ এনে দিক, মাস গেলে কিন্তু ওই অর্থটার ওপর নজরখানাই বেশি ত্বরান্বিত হয়। তাই, বাড়ি ফেরা পথিক মন দু’হাতের মুষ্ঠিতে সময়কে ধরে রাখবার প্রাণান্ত চেষ্টায় মগ্ন।
অনবদ্য অসাধারণ লেখা পড়ে মুগ্ধ হলাম রুদেলা কাব্য (থুক্কু) নীল.
আপনি কী "রুদেলা কাব্য" এই নিক নামে "প্রথম আলো ব্লগে" লিখতেন?
আমার যদ্দুর মনে পড়ে,
এই লিখক রোদেলা নীলা নামেই প্রথম আলো ব্লগে নিয়মিত লিখতেন।
রুদেলা কাব্য নামে উপন্যাস/গল্প লেখকের প্রোফাইল পিকচার ছিলনা- হঠাত একদিন হারিয়ে গেলেন।
এই রোদেলা নীলা প্র: আ: ব্লগ বন্ধ হওয়া পর্যন্ত প্রোফাইল ছবিসহ ছিলেন।
প্রাচ্যের 'রোদেলা নীলা' আমি, কোন ভাবেই রুদেলা … কিংবা অন্য কোন নিক নেই আমার। ছবি সব সময় দৃশ্যমান।
শুভেচ্ছা জানবেন রুদেলা নীলা। ভালো থাকুন অনেক অনেক।
'চেনা শহরের বড় রাস্তাগুলো আজকাল খুব বেশি অচেনা।' ফেরা না ফেরার দোলাচলে নৈমিত্তিক যে ভাবনা আমাদের তাড়া করে ফেরে, সেটা আপনার লিখার শেষ প্রান্তে ঠিকই উঠে এসেছে … ; বাড়ি ফেরা পথিক মন দু’হাতের মুষ্ঠিতে সময়কে ধরে রাখবার প্রাণান্ত চেষ্টায় মগ্ন।' ___ আপনি অসাধারণ লিখেন রোদেলা নীলা। ধন্যবাদ।
আপনি শব্দবোদ্ধা, ভালো বোঝেন এর বিন্যাস। সব পাঠক আজকাল ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারেন না বড় লেখায়, তাই তেমন করে লিখতে পারছি না আগের মতোন।
চমৎকার লেখেছেন আপু
শুভেচ্ছা জানবেন লিটনদা ।
চেনা শহর এই আমাদের মতো মানুষের চোখে বেশীর ভাগ সময় অচেনা হয়ে যায়।
সিমেন্টের শহরে এই ই আমাদের বাস্তবতা দিদি ভাই। আপনার লেখা নিয়মিত পড়তে চাই।