দেনমোহর

দেনমোহর

আইনুল, নাম এবং কর্মে অনেকটাই মিল রেখে চলেছেন, ভালো চাকরি করেন, মাসিক বেতন প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা, হয়তো গায়ের রঙ একটু ছাই রঙের, তাতে কি মেয়েটার বয়স দিন দিন বেড়ে চলে, যেহেতু ছেলে পক্ষের পছন্দ হয়েছে এখন আর দ্বিমত করে লাভ নেই। যে দিনকাল যাচ্ছে, মেয়ের চঞ্চলতা দিনে দিনে সহ্যের বাহিরে চলে যাচ্ছে, এখন তাকে বেঁধে দিতে পারলেই বেঁচে যাই।-

দুপক্ষের মাঝে কথা পাকাপাকি হয়েছে, মেয়ে পক্ষ ছেলেকে (বর) বেশ কিছু ঘরের প্রসাধনী দিবেন, ধরতে গেলে ঘর সাজিয়ে গুছিয়ে, ছেলের বাবার এমন চাহিদা ছিলো না তা সত্তেও, ছেলের বাবা আপত্তি ছিলো শুধু দেনমোহরের টাকার পরিমান কমানোর জন্য, হ্যাঁ সেখান থেকেও অনেকটা কমিয়ে পাঁচ লক্ষ পঁচিশ হাজার পাঁচশত পাঁচ টাকা করা হয়েছে…

মেয়ের বাবা মেয়ের সাথে ছেলে পক্ষের সাথে যে সকল কথা হয়েছে সবটুকুই বলে দিলেন, মেয়ের কথা বাবা তোমরা যা ভালো মনে করো তাই হবে, আর ঠিক তাই হলো, কিন্তু ছেলের বাবা ছেলেকে যখন দেনমোহরের কথা উল্লেখ করলেন তখন ছেলে বললো,

বাবা, এতো টাকা আমি কোথায় পাবো, আমার কাছে এখন তো আর এতো টাকা গচ্ছিত নেই, আমি এখন বিয়ে করতে পারবো না, পাঁচ ছয়মাস সময় নাও, দেখি কি করা যায়, দেনমোহর ছাড়া বিয়ে করা উচিত হবে না। এমন কথা শুনে মকবুল সাহেব বললেন, আইনুল বাবা, তোমার দাদাও আমাকে এমন করে বিয়ে দিয়েছিলেন, শুনেছি আমার দাদার অবস্থাও তোমার মতো হয়েছিল, স্বামী স্ত্রী যদি দুজনার মাঝে সবটুকু মেনে নিতে পারে আর একজন আরেকজনকে ক্ষমা করতে নিতে পারে তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা না। এভাবেই তো চলছে বাবা আইনুল।

বিয়ে হলো, বাসর রাত, স্বামী স্ত্রী যখন নিজেদের মাঝে মধুর সময় অতিবাহিত করবে, তখনি ঘটলো সমস্যা, স্ত্রী দেনমোহর ছাড়া তার স্বামীকে শর্ত দিলেন আমাকে স্ত্রী করবে না, আমার প্রাপ্য আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে তারপর আমাকে স্পর্শ করবে।

এভাবেই কেটে গেলো প্রায় একটি বছর, আইনুল বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে রইলো, আর এই একটি বছরের শেষ সময়ে আইনুল লটারির মতো নিজেকে উন্নতি করে নিলেন। বিয়ের একবছর পূর্ণ হলো, ঠিক সেই রাতেই আইনুল দেনমোহর পূর্ণ করে দিলেন, কিন্তু মধুর বাসর আর তার কপালে জুটেনি, তার স্ত্রী মুন্নী তার সাথ ঘর করবেন না, তিনি তার পছন্দের ছেলের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছেন গত একটি বছরে, ছেলেটি আইনুলের পাশের গ্রামের, কসমেটিকস এর দোকান করেন মুহিব, দেখতে বেশ ভালো উচ্চতা যেমন গায়ের রঙও ঠিক তেমন। অনেক অনুনয় বিনয় করেও আইনুল তার স্ত্রীকে রাজী করতে পারলেন না, দুটি পরিবারের কথাও তিনি বুঝালেন, কিন্তু না, তার স্ত্রী বলেছে তার পরিবার থেকে কোনো সমস্যা নেই, ক্যানো না, তিনি বলেছেন তার স্বামী আইনুলের শারিরীক সমস্যা আছে, একটি বছরে একটি বারের জন্যেও সে তাকে স্পর্শ করেনি…

–আসছে…..

আমিনুল ইসলাম রুদ্র সম্পর্কে

মোঃ আমিনুল ইসলাম রুদ্র, জন্ম : ১৪ জানুয়ারি, ১৯৮১। ডাক নাম রুদ্র আমিন (Rudra Amin)। একজন বাংলাদেশ কবি, লেখক ও সাংবাদিক। নক্ষত্র আয়োজিত সৃজনশীল প্রতিযোগিতা-২০১৬ কবিতা বিভাগে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন। জন্ম ও শিক্ষাজীবন মোঃ আমিনুল ইসলাম রুদ্র ১৯৮১ সালের ১৪ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার ফুলহারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোঃ আব্দুল হাই ও মাতা আমেনা বেগম। পরিবারে তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন কেটেছে খাগড়াছড়ি এবং বগুড়া সদর উপজেলায়। বগুড়ার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি ও মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর তিনি ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি থেকে ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স সম্পন্ন করেন। কর্মজীবন মূল পেশা থেকে দূরে সরে গিয়ে তিনি লেখালেখি এবং সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি প্রায় সব ধরনের গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায়। বর্তমানে তিনি জাতীয় দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন এর ষ্টাফ রিপোর্টার ও অনলাইন নিউজপোর্টাল নববার্তা.কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি উইকিপিডিয়াকে ভালোবেসে উইকিপিডিয়ায় অবদানকারী হিসেবে উইকিপিডিয়া অধ্যয়নরত আছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : যোগসূত্রের যন্ত্রণা (২০১৫); আমি ও আমার কবিতা (২০১৬); বিমূর্ত ভালোবাসা (২০১৮); অধরা- সিরিজ কবিতা (২০২০) প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ : আবিরের লালজামা (২০১৭)। আমার সকল লেখা পড়তে ভিজিট করুন : রুদ্র আমিন

2 thoughts on “দেনমোহর

  1. লিখাটির এই পর্যায় পর্যন্ত পড়ে রাখলাম। আশা করবো বাকি অংশ বেশ দ্রুতই আসবে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।