আদর্শভেদী লক্ষ্যের দ্বারাই মানব জীবনের প্রকৃত প্রজ্ঞা লাভ

মার্চ ২৮, ২০১৯
জীবন অতীব মুল্যবান একটি সম্পদ কিন্তু তারচেয়ে বড় সম্পদ হয় তাঁর আদর্শ, আদর্শের কোনো শ্রেণী বিন্যাস নেই। একটি সৎ ও আদর্শভেদী লক্ষ্যের দ্বারাই মানব জীবনের প্রকৃত প্রজ্ঞা লাভ হয়। মস্তিস্কের আধার থেকে প্রাপ্ত “জ্ঞানার্জন “জ্ঞানই হয় শাশ্বত অমায়িক ও নির্ভুল জ্ঞান। যেখানে নারী কিম্বা পুরুষ পার্থক্যহীন এখানে সবাই যখন মানুষ সেখানে কি আর ভেদাভেদ, কি আর ব্যবধান?

তেমনি মানুষের আত্মার আত্মপ্রকাশ, আত্মজীবনীর যে আত্মশুদ্ধি তাঁর সমান শর্তে একই দিক নির্বাচিত করে আর নির্দিষ্ট ভাবে নির্দেশনা করে। যে মানুষ শুধু নদীর গভীর স্রোতে ভাসতে থাকে সে কখনও কোথাও স্থির হতে পারেনা স্থিতিশীলতা একটি বিরাট লক্ষ্য যাঁর মধ্যে রয়েছে আত্মনির্ভরতার বিস্তৃত বিস্ময়। এই মহাজাগতিক মানুষের কর্মে ধর্মে জ্ঞানে গরিমায় তাঁর সব সারমেয় সারমর্ম সারশূন্যতা ও অধঃপতনের দিকে নিয়ে যায়।

সাগরের লৌকিক ও দৃশ্য কবির কাব্যের মতো লাগলেও যেই মানুষ সেই অতলান্তিক সাগরের ইন্দ্রজালে উতাল পাতাল হয় হাবুডুবু খায় তাঁর শরীরের শক্তি থাকাকালীন পর্যন্ত বাঁচার লড়াই চালিয়ে যায়। শাস্ব থাকাকালীন পর্যন্ত কোনো মানুষই বেঁচে থাকার জন্য হাল ছেড়ে দেননা। কিন্তু, যে মানুষ নিজের শাসন ভার নিজের স্বাধীনতাকে অস্বাধীনতার রূপ বলে নিজের শাসনব্যবস্থার করায়ত্ব করে। তাঁর কোনো পরামর্শ দাতা থাকেনা । যাঁরাই তাঁর চারপাশে বিরাজমান তাঁদের প্রতিরূপ সে একজন। তাঁর কাছে সবাইকে মনে হয় একরকম একই চিন্তার ফসল।

তখন সেই মানুষ তাঁর প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যায়। তখন সে এই পৃথিবীর সকল সৌন্দর্য্য থেকে হারিয়ে যায়।আড়াল হয় সত্য থেকে, আড়াল হয় মহাজগতের সকল সৌন্দর্য্য থেকে সভ্যতা থেকে।

আমাদের এই সবুজ শ্যামল সুফলা পৃথিবীতে যতটা না জ্ঞানার্জন করি, যতটা না সম্মান কুড়োয়, আর সাফল্য দেখায় তারচেয়ে বেশী বিচিত্র এই কারণে যে, মানুষ তাঁর প্রাপ্য বিবেক প্রাপ্য সম্মান কিম্বা ইজ্জত সবচেয়ে বেশী হারানোর প্রবণতা। এটিকে কোনো প্রকৃতির খেলা বলে উড়িয়ে দেবেন না। আসলে এটি কোনো প্রকৃতির নিয়ম নয়।এটা হলো মানব চিত্তের বিকৃত কুরুচিপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার প্রতিদান। এই সুন্দর ও মহান পৃথিবীর বুকে অর্থ বিত্ত প্রতিপত্তি আপনি সহজেই কামাতে পরবেন। কিন্তু আপনার আত্মসম্মান যেভাবে তিল তিল করে হাসিল করেছেন গড়ে তুলেছেন তাঁর সবকিছু হারাতে এক মিনিটই যথেষ্ট।

আদীতে মানুষ যেভাবে জীবনযাপন করেছে বর্তমান সেখান থেকে লক্ষ কোটিগুন দূরে। আজকের এই বর্তমানে থেকে যখন মানুষ সেই প্রাচীনতম অসভ্য বর্বর যুগের আঁধারে অনুপ্রবেশ করে তখন বর্তমান তারকাছে মুল্যইীন আনকোরা লাগে।

মানব জীবনের মানদণ্ড যদি শুধু নিজের ইচ্ছাধীন হতো তাহলে সভ্যতার এই অভূতপূর্ব ভুৎপত্তি আজ এতোদূর অগ্রসর হতোনা।


VICTORIA MEMORIAL INDIA.

মানুষেই ঐচ্ছিক চিন্তা ভাবনার সুদূরগামিতার দৃষ্টান্ত যখন তাঁর বিবেক থেকে থমকে যায় তখন তাকে দীক্ষাদান”গুরুজন” কারিও যদি বলেন বিষয়টি ঠিক নয়। তখন সেই দীক্ষাদান”শিক্ষক” কারিও তারকাছে ভুল বলে মনে হয়। আসলে বিবেক যখন চারপাশের নষ্টদের দ্বারা আচ্ছন্ন হয় তখন পৃথিবীর সকল সত্য ও অদূরদর্শীতাকে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভালো কিছু মনে হবেনা।

মানুষ যখন তাঁর হৃদয়ে মরমীবাদের প‌রিবর্তে ধ্বংসবাদের চাষাবাদ করে চারদিকের সত্য তখন ফিকে হয়ে যায়। সব সত্য সব ন্যায় সব ভালোবোধ তখন ভুল দেখা যায় আর সকল নষ্ট আত্মচরিত চেতনা তখন সত্য ও সঠিক বলে মনে হয়। মানুষ যে বিলাসী জীবনের পিছনে ছুটছে, ছুটে চলছে তা একদিন তাদের অজৈবনিক মনে হয়। কিন্তু তখন তো আর সেই সময়, সেই যৌবন এমনকি সেই জৌলুস আর অবশিষ্টও নেই।

যখন আপনার সেই মিথ্যা ভুলগুলো ভেঙ্গে ভালো আর মন্দের পার্থক্য খুঁজে দেবে সাদৃশ্যপূর্ণ বাস্তবতা থেকে যে মানুষ নীতিগতভাবে তাঁর নৈতিক শিক্ষালাভ করতে পারেনা। সে কোনোদিন কোনোভাবেই প্রকৃত দীক্ষার সন্ধান পায়নি। সভ্যতার এই একবিংশ শতাব্দীর সুবৃহৎ পথে আজকের যেটি আপনার ভালোলাগা কালকের জন্য তা অভিশপ্ত। মানুষকি এই বিলাসপূর্ন জীবনের খোঁজেই বর্তমানের পথে ছুটে চলছে।

মানুষ কি ট্রেনের বগির একেকটি স্টেশন! একেকটি যাত্রী! একটি নৌকায় চেপে যখন আরেকটি নৌকায় উঠতে স্বাদ জাগে তাহলে সেই মানুষ তাঁর প্রকৃত পথ ভুলে যায়। সূর্য গ্রহণের অন্ধকার অতলে যে মানুষ সুখ ও সুখের বর্ণ খোঁজে সুখ্যাতি খোঁজে সে কখনও আলোকিত জীবনের রহস্যময় পথ দেখতেই পায়না। জীবনবেদ হচ্ছে উদার চিত্তের বহ্নিঃপ্রকাশ চন্দ্রগ্রহণের পূর্বাভাস জানা সত্ত্বেও যে মানুষ অন্ধকার পথে পা বাড়ায় সে কী বুঝবে জীবনের প্রকৃত সত্য কি! জীবনের প্রকৃত মানে কি?

অশ্লীল কর্ম আর মাদকতাকে যখন কেউ সভ্যতার স্ট্যান্ডার্ড ধরে নেয়। তাঁর ভেতরে সামাজিক, পারিবারিক, কিম্বা রাষ্ট্র জীবনের কোনো অধিকার নেই। পরিচয়হীন জীবন কখনও সুখের রাজ্য স্থাপন করতে পারেনা। জীবনের এই অভূতপূর্ব সত্য যখন অনুভূতিহীন হয় তখন হৃদয়ের আত্মিক সত্যগুলোতে মরিচীকা ধরে। মানুষের ভালোমন্দ বোঝার জ্ঞান বুদ্ধি যখন অপরাধের দাসত্বে বন্দী হয় তখন একটি সময়ের ঘন্টাধ্বনি বেজে ওঠে। একটি বেঁধে দেয়া সময় তাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। সব আপরাধ যখন কাউকে চারপাশ থেকে বেষ্টনী করে রাখে। তাকে ধরে রাখবে কার সাদ্ধি।

এইযে ভালো থেকে কালোয় রুপান্ত‌রিত হৃদয়, কোনো আহত চিত্ত নয়। এটাই মন্দের পরিভাষা, মন্দরা শুধু খোলস পাল্টে। এই হৃদয়ের কথা যখন আমরা চারপাশ থেকে শুনতে পাই, তখন আমি, আমার ব্যক্তিসত্ত্বার কাছে- বিবেক হঠাৎই প্রশ্ন করে বসে, ভালো আর কালো কখনও একে অন্যের হতে পারে কিনা? সোনার শরীরে যদি ময়লা জমে তবে জলের ছিটায় সোনা সোনাই থাকে। কিন্তু কালোর শরীরে যখন ময়লা জমে তখন তাঁর একই রূপ দেখা যায় তা কখনও সোনার মতো চকচকে ঝকঝকে হয়না। মানুষের জীবন অতীব মুল্যবান আপনি যদি এই মুল্যবান সময়ের সাথে জীবনটাকেও দুর্মুল্য করেন শেষ করেন তখন আপনার জীবন হবে সত্যিই মুল্যহীন।

সত্যের জাগ্রত আর মিথ্যার বিনাশ মানুষ চিরকাল দেখেছেন। মানুষ যখন তাঁর পাপ বুঝবে, ভালো আর মন্দের দ্বারা পার্থক্য বুঝবে সত্য আর মিথ্যার ব্যবধান চাক্ষুষরূপে সামনে আসবে। সেদিনই প্রথম মানুষ তাদের প্রকোষ্ঠ ভেদকরে প্রকৃত সত্যের সাক্ষাৎ পাবে। বিবেকের মুল্যবান বোধিসত্ত্ব মানুষকে নিয়ে যায় অমরত্বের দিকে। এরচেয়ে বড় সত্য জগতে আর কিছু নেই থাকতেও পারেনা। মনে রাখবেন সত্যকে কাছ থেকে দেখতে হয়। হৃদয় থেকে দেখতে হয়।

বিবেকবান মানুষের বিবেকবোধ দ্বারা খুঁজতে হয় বলেই সত্য চিরকাল চিরস্থায়ী, চিরায়ত, চির অমর। আর এতোটাই সম্মানিত ও মুল্যবান যে তা একদিন পবিত্র সূর্যের মতোই পৃথিবীর মানুষের কাছে দেখা দেবে।

সংক্ষিপ্ত
রাতঃ ২:৫০মি.

9 thoughts on “আদর্শভেদী লক্ষ্যের দ্বারাই মানব জীবনের প্রকৃত প্রজ্ঞা লাভ

  1. মানব জীবনের মানদণ্ড যদি শুধু নিজের ইচ্ছাধীন হতো তাহলে সভ্যতার এই অভূতপূর্ব ভুৎপত্তি আজ এতোদূর অগ্রসর হতোনা। কারেক্ট শামীম ভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. আমি নিজেকে যখন অন্যান্যদের মধ্যে খুঁজে পাই তখনই আমার প্রকৃতি জ্ঞান ভাবতে সহায়তা করে। ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানবেন সুমন ভাই।

  2. আত্মিক বিশ্লেষণ টুকু নিজের সাথে মিলিয়ে নিলাম ভাই।

    1. আমার ভাবাদর্শণ খুব সাধারণ আত্মিক বিষয়ের সব সারমর্ম যখন চারপাশের আবহমণ্ডলকে কলুষিত করে তখন আমার মন নিজের অজান্তেই জেগে ওঠে। কি জানি এটাই হয়তো আমার পরিভ্রমণ। ধন্যবাদ আপু ভালো থাকুক আপনার দিনগুলো।

  3. মানুষের জীবন অতীব মুল্যবান আপনি যদি এই মুল্যবান সময়ের সাথে নিজের জীবনটাকেও দুর্মুল্য করে শেষ করেন তখন আপনার জীবন হবে সত্যিই মুল্যহীন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. জীবন অত্যন্ত সহজ যদি আপনি তাঁর প্রপার ব্যবহার করতে পারেন। আমি প্রতিনিয়ত অন্যের হৃদয়ে বসবাস করি খুবই নিশ্চুপ, নিশ্চিতভাবে। আর যখন যেখানে কিছু খুঁজে পাই তখন আমার শিল্প সত্তার নিগুঢ় রহস্য ভেদ করে একটি সমাজ দাঁড় করাই দ্বায়িত্ব যখন হৃদয়ের ভেতর তাকে ত উপলব্ধি করতেই হয়। এটাই আমার ভাবাদর্শ ভাইয়া। অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

  4. মস্তিস্কের আধার থেকে প্রাপ্ত “জ্ঞানার্জন “জ্ঞানই হয় শাশ্বত অমায়িক ও নির্ভুল জ্ঞান। যেখানে নারী কিম্বা পুরুষ পার্থক্যহীন এখানে সবাই যখন মানুষ সেখানে কি আর ভেদাভেদ, কি আর ব্যবধান?

    জীবনে কত কিছুই শিখে নেয়ার আছে। মনোবিজ্ঞানের ছাত্রী হলেও আমার মনে হয় আমার শেখার সুযোগ এখনও শেষ হয়নি। ধন্যবাদ কবি দা। শুভেচ্ছা নিন। :)

    1. সৃষ্টির শুরু থেকেই মানবজীবন কঠিনতর পরিবেশের সাথে যুদ্ধ করে আজকের সভ্যতায় পৌঁছে। কেউ কাউকে শেখায় কিম্বা কেউ কাউকে কিছুই শেখাতে পারেনা। আমার আত্মচরিত মন তাঁর উজানে পৌঁছে মানবতার নানাবিধ দৃশ্যের মাধ্যমে এটাই আমাকে শেখায়। তবে আমার ভেতরে মনোবিজ্ঞানের জটিল তত্ত্বীয় জ্ঞান হয়তো নেই। জন্মগ্রহণের আগেই কেউ শিখে আসেনা কিছু। এখানকার যা প্রাপ্তি সেটাই আমার আত্মবিশ্বাস সেই বিশ্বাসের দরজা থেকে যেটুকু আমার সংকীর্ণ চোখে ধরাপরা তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করি। যদি কিছু জানতাম হয়তো আরও ভালো হতো। আপু অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা।

  5. জীবনের মুল্য ও অন্যান্যা নিয়ে মুল্যবান  একটি লেখা। তবে মিথ্যা সব সময় বিনাশ হয়েছে সেটা বলা মুশকিল। 

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।