শীতসন্ধের হিজিবিজি

শীতের রোঁয়া ওঠা সিরসিরে চাদরটা সাটারের স্পীডে নামিয়ে সন্ধেটাও নামলো ঝুপ্পুস-
আর যতো কিলবিলে চিন্তাগুলোও হিজিবিজি টানে আঁকতে শুরু করলো মনখারাপী বিমূর্ত।
পুরনো তক্তাপোষের ওপরে শতচ্ছিন্ন শতরঞ্জিতে যে ছায়ামানুষ উদাসী,
বড়জোর করুণা ছাড়া হয়তো তাকে কেউ কিছু দেয়নি – কেউ কিছু দেয় না।
চোখের কোটরে যে মাছের অক্ষিবলয় ভাবলেশহীন ধরাছোঁয়ার সাতশো হাত দূরছবি অস্তে-
সেই অবতলে এতটুকু স্পর্শের ক্ষমতা হয়নি কোনও স্বঘোষিত পিয়ামুখচন্দার।
সন্ধে নামে ভয়ে ভক্তিতত্ত্বে সাংবিধানিক অজস্র সংকটে প্রেম প্রেম খেলায়,
শুধু মোমপিয়ালী আলোর তুরতুর নাচে ছায়ামানুষ নির্ধারণ করে চরম ব্যক্তিগত উদাসীন জগৎ-
সব সম্পর্কসুতো টুকরো হয়ে ভাঙাছেঁড়া তক্তাপোষের নীচে পড়ে আছে দলাপাকানো।

সৌমিত্র চক্রবর্তী সম্পর্কে

পরিচিতিঃ জন্ম বিহারের এক অখ্যাত বনাঞ্চলে বাবার চাকরীস্থলে। রসায়নে স্নাতকোত্তর এবং ম্যানেজমেন্ট পাশ করে কিছুদিন সাংবাদিকতা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মচারী। একাধারে নাট্যকার, কবি এবং গল্পকার। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, পুস্তক পর্যালোচনা, বিভিন্ন ধরনের লেখা ছড়িয়ে আছে দেশ বিদেশের অসংখ্য পত্র পত্রিকায় ও সংবাদপত্রে। উৎপল দত্ত সহ বহু বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে শিখেছেন থিয়েটার। বহু বিচিত্র ও ব্যাপ্ত ময় তাঁর জীবন। বন, জঙ্গল, পশু, পাখি, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে তাঁর দীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরঙ্গ পরিচয়। কবিতা ও বিভিন্ন লেখা লেখিতে তিনি মস্তিস্কের থেকে হৃদয়ের ভুমিকাকে বড় করে দেখেন। কবিতা, গল্প, নাটক এবং মুক্তগদ্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা নয়। প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হলো বইছে লু, থিয়েটার কথা, তিতলিঝোরা, নীলপাখিকে উড়ো চিঠি, রাত্রি আমার নৈশপ্রিয়া, ব্রিজের নীচে বৃষ্টি, ২ একাঙ্ক, প্রতিলিপি এবং বেবুশ্যে চাঁদ, খণ্ড ক্যানভাস। ইতিপূর্বে অঙ্গন সহ কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে অক্ষর বৃত্ত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। নেশা ফটোগ্রাফি ও ভ্রমণ।

1 thought on “শীতসন্ধের হিজিবিজি

  1. ‘শুধু মোমপিয়ালী আলোর তুরতুর নাচে ছায়ামানুষ নির্ধারণ করে চরম ব্যক্তিগত উদাসীন জগৎ-
    সব সম্পর্কসুতো টুকরো হয়ে ভাঙাছেঁড়া তক্তাপোষের নীচে পড়ে আছে দলাপাকানো।’

    __ এমনটাই হয় বোধকরি প্রিয়কবি প্রিয় সৌমিত্র। :)

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।