ট্যাগ আর্কাইভঃ ভারত সফর

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরঃ কিছু তথ্য কিছু প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার সমঝোতা স্মারকটি নিয়ে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো নানা ধরনের কথা বার্তা বলছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে এটিকে ‘দেশ বিক্রির চুক্তি হিসেবে’ অভিহিত করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে এ নিয়ে তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে না।

শেখ হাসিনার সফরের আগে বাংলাদেশের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়েছিল, কারণ, বাংলাদেশে সাবমেরিন পৌঁছানোর পর যেভাবে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসে চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং একের পর এক ভারতীয় কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর শুরু করেছিলেন, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। ফলে জনমনেও এ নিয়ে একটা ধোঁয়াশা আছে।

এদিকে অন লাইনেে নানা সূত্র থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানো নিয়ে উঠেছিলো বিতর্ক। ভারত সরকার প্রথমে প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তরুণ বাবুল কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী। ভারতের মৃলধারার জনপ্রিয় বাঙালি গায়ক। ‘কহনা পেয়ার হ্যায়’ গানটির জন্যে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। এতে ঠো’ট মিলিয়েছিলো বলিউড তারকা ঋতিক রওশন। অভিনেতা রাকেশ রওশনের সন্তান, সন্জয় খানের সাবেক জামাতা। গায়ক-রাজনীতিক বাবুল সুপ্রিয় পশ্চিমবঙ্গের সন্তান, সাবেক ব্যাংকার।মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী’র ‘তারকাদখল’ প্রকল্পমুক্ত সৌখিন রাজনীতিক। বিজেপির ‘তারকা-আহরণ’ প্রকল্পের বঙ্গবাহাদুর। বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার বিশেষ ভক্ত। ।

গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। বাঙালিত্ব ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবেই ভারতের নীতিনির্ধারকেরা তাকে গুরুত্ব দিয়েছিলো। ভেবেছিলো, বাঙালি জাতীয়তাবাদের নেত্রী তাতে বিগলিত হবেন। কিন্তু বাংলাদেশের নীতি-নির্ধারকেরা তাতে বিরাগভাজন হয়েছিলেন!

অবশেষে শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

একটি অন-লাইন পত্রিকা জানায় বাংলাদেশ- ভারতের সামরিক সমঝোতা স্মারকটি নিয়ে নানা কথাবার্তা হলেও এই সমঝোতা স্মারকে আসলে কি আছে- তা নিয়ে স্পষ্ট করে কেউ কোনো কথা বলেনি। ঢাকা ও নয়াদিল্লীর বিভিন্ন সূত্রে যোগাযোগ করে সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে ।
প্রাপ্ত তথ্যগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে দুই দেশের সামরিক খাতে ৬টি বিষয়ে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে :

(১) সামরিকখাতে ঋণ সহযোগিতা (লাইন অব ক্রেডিট)
(২) সামরিক সহযোগিতা
(৩)যৌথ প্রশিক্ষণ উদ্যোগ ও বিনিময়
(৪) প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা
(৫) প্রতিরক্ষা গবেষনা সহযোগিতা
(৬)উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা

(১) সামরিকখাতে ঋণ সহযোগিতার আওতায় ভারত বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহযোগিতা দেবে। এই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ ভারত থেকে যে কোনো ধরনের সামরিক সরঞ্জামাদি কিনতে পারবে বলে সমঝোতা স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে।

সচেতন লোকেরা বলাবলি করছে,
৫০০ কোটি ডলার ইন্ডিয়া থেকে সুদে ধার নিয়ে ইন্ডিয়ার “গার্বেজ” কিনে আনা চুক্তির একটি শর্ত ?? একটি স্বাধীন দেশ কখন আর্মস কিনবে, কার কাছ থেকে কিনবে সেইটা ঠিক করের দেবে আরেকটি দেশ ??? গদি রক্ষার দালালী আর কারে কয় ?/

(২) সামরিক সহযোগিতায় বলা হয়েছে, নিজেদের দক্ষতা এবং কর্মপরিধি অনুসারে আন্তর্জাতিক আইন, নিজ নিজ দেশের জাতীয় আইন ও পরিস্থিতির আলোকে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

(৩) যৌথ প্রশিক্ষন উদ্যোগ ও বিনিময় সহযোগিতায় বলা হয়েছে,
ঢাকার সূত্রগুলো অবশ্য বলছে, এর অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে এখনো অনসৃত হচ্ছে। সমঝোতা স্বারকের ফলে এগুলো নিয়মিত এবং দাপ্তরিক কার্যকমের আওতায় চলে আসবে।

(৪) প্রতিরক্ষা শিল্পখাতের সহযোগিতায় যৌথ উদ্যোগের (জয়েন্ট ভেঞ্চার) মাধ্যমে পরষ্পরকে প্রতিরক্ষা শিল্পখাতে সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

(৫) প্রতিরক্ষা গবেষনা সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এবং ভারত পরষ্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। প্রশিক্ষণ,তথ্য বিনিময় এবং সংশিল্ট বিজ্ঞানী প্রকোশলীদের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে এই সহযোগিতা হতে পারে।

(৬) উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা হিসেবে বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার পর্যায়ে বৈঠকঅনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিরক্ষা সচিব পর্যায়ে বৈঠক করে সামরিক ইস্যূ নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছে।

এদিকে মমতা ব্যানার্জির অনেক গুণ; এই মহুর্তে উনি পশ্চিম বংগের চীফ মিনিস্টার; কমপক্ষে ৬/৭টি মিনিস্ট্রি উনার অধীনে; তিনি তৃণমুল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা; এর আগে অনেক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ছিলেন; চুরিধারীর অপবাদ নেই; কঠিন জীবন যাপন করেন; নিয়মিত ব্যায়াম করেন, সাধারণ কাপড় পরেন, সুন্দর বক্তৃতা দেন, ভালো খান; পাক-ভারতের রাজনীতিতে আদর্শ।

উনি হয়তো এখনো টের পাননি যে, উনি মিথ্যা কথা বলেছেন, “তিস্তায় পানি নেই”; উনি গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানিকে গংগায় নিয়ে গেছেন; সবাই জানে, মোদীও জানে। সবাই জানার পরও কিভাবে এত দায়িত্বশীল, এই আদর্শবাদী মহিলা মিথ্যা বললেন?