বিভাগের আর্কাইভঃ রাজনীতি

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের কান্না ও আমাদের প্রত্যাশা

একটা কথা শুনা যাচ্ছে, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে তিন/চার/পাচ বছর কাজ করার সুযোগ দিলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর /মালয়েশিয়া ইত্যাকার উন্নত রাষ্ট্রের অনুরূপ হয়ে উঠবে।

Lee_Kuan_Yew

লি কুয়ান ইউ, জিসিএমজি, সিএইচ, এসপিমেজে (জন্ম: ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২৩ – মৃত্যু: ২৩ মার্চ, ২০১৫) স্ট্রেইট সেটেলম্যান্টসে (ব্রিটিশ আমলের সিঙ্গাপুর) জন্মগ্রহণকারী সিঙ্গাপুরের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মালয়েশিয়ার কাছ থেকে দেশের স্বাধীনতার পর ১৯৬৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করেন। তিন দশকেরও অধিক সময় রাষ্ট্রপরিচালনার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তাকে ‘সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার জনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে পকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে দেশ স্বাধীন হয়। তার শাসন আমলে দেশে কোন কোন উন্নয়নের সূচনা হয়েছিল বটে কিন্তু তিনি সফল হন নাই। বরং বাংলাদেশের মানুষ আরও গরীব হয়েছে, বিচার ব্যবস্থা ছিল একেবারেই নড়বড়ে। ১৯৭৪ সালে নেমে আসে দুর্ভিক্ষ। কংকালসার মানুষ হয়ে পড়ে বাংলাদেশের সিম্বল।

স্বাধীনতার পর আমরা আগাইনি। বরং আর্মিতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা পরস্পর রাজনৈতিক খুনাখুনিতে লিপ্ত হয়ে পরে।

১৯৭৪ সালে জাসদ তাদের চিন্তাধারা তৈরি হলো, “আন্দোলন মানে সশস্ত্র সংগ্রাম আর সংগঠন মানে সেনাবাহিনী।”

সেজন্য জাসদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠে বিপ্লবী গণবাহিনী। এছাড়া সামরিক বাহিনীর মধ্যে ১৯৭৩ সালে থেকে কাজ করছিল বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দৃশ্যপট বদলে যায়।

IMG_20210119_132651

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ইং হতে ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশে ঘটে যায় সামরিক বাহিনীর নানা ক্যু পাল্টা ক্যু। অবশেষে মেজর জিয়াউর রহমান চলে আসেন ক্ষমতায়। বাংলাদেশের মানুষের আছে ইসলাম ধর্মের প্রভাব, আছে সমাজতন্ত্রের প্রভাব, আছে হিন্দু সাংস্কৃতিক চর্চা, আছে মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার দ্বন্ধ । এই সকল প্রভাবের মাঝে মেজর জিয়াউর রহমান হয়ে উঠেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। কঠোর সামরিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এমনকি যাদের প্রত্যক্ষ মদদে তিনি ক্ষমতার শীর্ষে আসেন, তাদের তিনি সামরিক কায়দায় নিয়ন্ত্রণ করেন। এবং তিনি স্বৈরাচারী নীতি গ্রহণ না করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাস্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহণ করেন।

সিঙ্গাপুর যেভাবে এগিয়েছে জিয়াউর রহমান সেদিকে যান নি। সামরিক বাহিনীকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন সিভিল সোসাইটির প্রতি তিনি সেই ভাবে আগান নি। তিনি সকল রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত দ্বন্দ্বগুলিকে ঐক্যের ভিত্তিতে একত্রিত করতে চেয়েছিলেন এবং অনেকাংশে সফল হয়েছিলেন । তিনি বুঝেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বাধীন হওয়া রাস্ট্রগুলি গণতান্ত্রিক পথে ধরেই রাজনৈতিক খুনাখুনি এড়িয়ে সিভিল প্রসাশনের নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারাকে নিয়ে এলেন রাজনীতিতে। এদিন রাস্ট্র ছিল সমাজতান্ত্রিক চিন্তাচেতনার ধারক ও বাহক। বরং শেখ মুজিবর রহমান দেশকে কমিউনিউজমের মতাদর্শের চরম মতামতে দিকে দেশকে পরিচালিত করতে চেয়েছিলেন । ১৯৭৫ এর পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা পেয়ে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি সকল প্রকার মতাদর্শের মাঝে একটা ঐক্য গড়ার চেষ্টা করতে থাকেন। দেশ পেয়ে যায় গণতান্ত্রিক পথ। কিন্তু তিনিও সামরিক হানাহানির করুন স্বীকারে পরিনত হন। আর ছিটকে যায় দেশ। আবার স্বৈরাচার ঝেপে বসে দেশের নেতৃত্বে।

১৯৯০ সালের ও ২০২৪ সালের পটপরিবর্তনের ইতিহাস আমরা জানি। আমরা জানি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে চক্রকারে ঘুর্নায়মান রাজনীতি। হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও, পুড়াও, রাজপথে গণপরিবহনে পুড়ে যাওয়া মানুষের আর্তনাদ আজও আমাদের কানকে ভারী করে তুলে। কিন্তু যে-ই ক্ষমতায় যায় সেই নির্বাচন পদ্ধতিকে টেম্পারিং করে নিজের গদীকে চিরস্থায়ী করার কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। ১৯৯০ থেকে ২০২৫ সুদীর্ঘ ৩৫ টি বছর রাজনৈতিকভাবে দেশ এগোয়নি এক রত্তি। কিন্তু দেশ থেমে থাকেনি।

১৯৭২-৭৩ সালে তাজউদ্দীন আহমেদ যে বাজেট দেন তার আকার ছিল ৭৮৬ কোটি, ১৯৭৬-৭৭ সালে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাজেট দেন তার আকার ছিল ১৯৮৯ কোটি, ১৯৭৭-৭৮ সালে লে. জেনারেল জিয়াউর রহমান যেই বাজেট দেন তার আকার ছিল ২১৮৪ কোটি টাকা, ২০২৩-২৪ সালে আ হ ম মোস্তফা কামাল যেই বাজেট দেন তার পরিমাণ ছিল ৭ লক্ষ ৬১ হাজর ৭৮৫ কোটি টাকা।

সময়ের চাকা ঘুরছে আর অর্থনীতির আকার বেড়েছে। বাংলাদেশিদের মাথা চক্কর দিয়াছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ডামাডোলে। কি বিশাল কর্মকাণ্ড! আর এর অন্তরালে চলছে দূর্নীতির মহা উৎসব। এমনকি এক পর্যায়েতো দূর্নীতিতে পর পর পাঁচ বার পৃথিবীর সেরা পদ অলংকৃত করেছে। এরপর বাংলাদেশ দেখল মেগা প্রজেক্টের মেগা ডাকাতি, ব্যাংক লুটপাটের কাহিনি। আই ওয়াশ করে দুইটি পরিবারের লুটপাট দেখেছে মানুষ। আর শুনা গেছে উন্নয়নের বাদ্যবাজনা। কখনও এক পরিবার লুট করেছে তাদের স্বার্থরক্ষাকারী সহযোগিতায় আবার কখনও অন্য পরিবার আর তাদের রাজনৈতিক অনুসারীরা।

মানুষ! ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পরবর্তীতে গরীব মানুষ যেই অবস্থায় ছিল আজও সেই অবস্থায় আছে। ধনিক শ্রেণী আর চালাক সুবিধাবাদীরা রাস্ট্রীয় লুটপাতে অংশীদার হয়ে একটা অতি ধনিক শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছে। আর গরীব দিন দিন ক্রমে গরীব থেকে গরীব হয়েছে।

অতি উচ্চমাত্রার প্রচার প্রচারনায় বাংলাদেশের এই প্রকৃত চিত্রটি হারিয়ে গিয়াছিল। নব্বুইয়ের দশকেও বাজেট ঘোষিত হলে বলা হত গবীর মারার বাজেট। কিন্তু গত এক দশকে তেমন শ্লোগান শুনেছি বলে মনে করতে পারি না। সবকিছু ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, মুখগুলো ছিল তালাবদ্ধ। অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে কথা বলার লোক ছিল না। ছিল দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের দ্বন্দ্ব। এক পক্ষে লুটের মহোৎসব করেছে, আর এক পক্ষে ছিল হাহাকার। জনগণ বুঝে গিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির আন্দোলন হল ভাগ না পাওয়ার বা লুটে নেতৃত্ব দিতে না পারার ক্রোধ। তাই সব আন্দোলন ব্যর্থ হচ্ছিল।

কিন্তু যখনই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নামে আন্দোলন হল শুরু, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিল যুব সমাজ আর মরল কাতারে কাতারে। দেশের মানুষ নেমে এলো রাজপথে । শুরু হলো গণ-জোয়ার। হলে গেল গণঅভ্যুত্থান। এক পক্ষ পালাল। অন্যপক্ষ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠল। অভ্যুত্থানের তিন দিনের মধ্যে তারা নির্বাচন দেয়ার জন্য সভা সমাবেশ করল। কারন তারা জানে এই নির্বাচন ব্যবস্থা তাদের পেশিশক্তি ও অর্থশক্তির উপর নির্ভর। ঢ়েহেতু এক পক্ষ পালাইছে অন্য পক্ষের কাছে নির্বাচনে জয়ী হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার।

FB_IMG_1743688691458

কিন্তু বাধ সাধলো বৈষম্য বিরোধীরা। তারা আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহনযোগ্য নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে নিয়ে এসে সরকার প্রধান করে দিল। সেনাপ্রধানের সমর্থনে সর্বজনীনভাবে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠলেন এই অর্থনীতিবিদ। প্রাথমিক ঝক্কি সামলাতে সামর্থ্য হওয়ার পর তিনি যখন অল্পসময়ে একে একে সফল হতে লাগলেন, তখন নানা মহল থেকে দাবী উঠলো দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বানাতে তাকে রেখে দিতে হবে ক্ষমতায়।

কিন্তু এই সন্মানিত ব্যক্তিত্ব একি করলেন! দেশ বিদেশ থেকে গণ্যমান্য প্রভাবশালী কোম্পানির ডেকে এনে তাদের সামনে বাংলাদেশকে উলঙ্গ করে দিলেন! তিনি কেঁদে উঠলেন! এদেশের গরীব মানুষের কথা স্মরণ করে কেউ কাঁদে! তাও আবার ব্যবসায়িদের মিলনমেলায়। ব্যবসায়ীরা পুজির পুজো করে। প্রফিট করাই যাদের মুল কাজ। তাদেরকে কেঁদে কেঁদে বললেন, আমরা খুবই গরীব। এখানে চার কোটি মানুষ দৈনিক ১০০ টাকায় চলে। তিনি এখানে ইনভেস্ট করার আহ্বান করলেন। তিনি এখানে তার সামাজিক ব্যবসার কথা বললেন। তিনি গরীব মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরনের।

আর স্পষ্টতই তিনি এদেশ নিয়ে যারা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া হবার স্বপ্ন দেখেন তাদের সেই চাওয়াকে পাশকাটিয়ে সারাজীবন তিনি যা চেয়েছেন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী সেই দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন।

কিন্তু তিনি কিভাবে নির্মাণ করবেন বৈষম্য হীন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী! যেখানে তার নিজের দেশে রয়ে গেছে গরীবের অনেক বেশি ছড়াছড়ি। অন্তত একটি দেশেতো তার থিওরির বাস্তবায়ন দেখাতে হবে। সমস্ত পৃথিবীর প্রশ্নতো আসবে পরে। অন্তত একটা দেশতো করে দেখাতে হবে দরিদ্রমুক্ত বেকারমুক্ত।

অনেকে সিঙ্গাপুরের, মালয়েশিয়ার আবদার নিয়ে আসছে, কিন্তু দেশর মানুষ চেয়ে আছে তার দিকে কিভাবে তিনি গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত দেশ করতে চান তার সঠিক পথনির্দেশনার দিকে।

image-52538-1738221104

অপেক্ষায় রইলাম।

রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী

রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ
প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী FB_IMG_1743688691458

বিএনপি উঠতে বসতে সিনায় সিনায় একটা জিগির তুলছেঃ নির্বাচন নির্বাচন। ৫ আগষ্টের চেতনা তারা ধারণ করে না, এটা স্পষ্ট বরং এই ৫ আগষ্টের কথা বললে যেন তাদের অন্তর হয় ছেড়া বেড়া। নির্বাচনকে পেশী মুক্ত, কালো টাকা মুক্ত, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল প্রকার নির্বাচনের যে কোন প্রস্তাবই দেয়া হোক না কেন তারা কেবল বলে, না। নির্বাচন দাও নির্বাচন দাও জিগির তোলে কিন্তু যদি বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক তখন তারা বলে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, যখন বলা হয় আগে স্থানীয় নির্বাচন তখন তারা বলে আগে জাতীয় নির্বাচন হোক তারপর সরকার এসে স্থানীয় নির্বাচন করে নেবে। ঠিকাছে আস জাতীয় নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার জন্য সংস্কার শেষ করি, তারা বলে আগে নির্বাচন হোক পরে যারা ক্ষমতায় যাবে তারা সংস্কার করা যাবে। এবং হুমকি দেয় যদি সংস্কার কিছু করাও হয় তবে তারা সেই সংস্কার বদলে দেবে।

ড.ইউনুসের হাতের কোন সংস্কার BNP মেনে নিবে না এমনকি ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার পাল্টে ফেলবো বলে ছাত্র জনতাকে হুমকি দিলেন BNP’র মির্জা আব্বাস।

“ওদের হাতের (ইন্টেরিম সরকারের) কোন সংস্কার আমরা মেনে নিবো না, সংস্কার করলেও আমরা ক্ষমতায় এসে চেঞ্জ করে ফেলবো”- মির্জা আব্বাসের এই দাম্ভিক বক্তব্য নতুন কিছু নয়। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র!

স্মরণ করি,নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালের শাহাবুদ্দীন সরকার ২৯টি সংস্কার কমিটি গঠন করে। ৯১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে ২৯টি সংস্কার কমিটির প্রস্তাবিত তেমন কোন সুপারিশই বাস্তবায়ন করেনি।

এমনকি এরশাদ পতনের পর তিন দলীয় যে রূপরেখা হয়েছিল, ১৯৯৪ সালের মাগুরার উপ ইলেকশনে বিএনপিই সেই রূপরেখা প্রথম ভায়ালেট করে।

সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বেশিরভাগ মানুষের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীকে অগ্রাহ্য করে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নিজেদের অধীনেই নির্বাচন করে।

মনে পড়ে? তখন জামাত, আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে। গঠিত হয় জনতার মঞ্চ। আন্দোলনের তোপে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় বিএনপি।

তারপর বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে ২০০১ সালে। ২০০১ সালের লতিফুর সরকারের সময়ে টিআইবি কে দিয়ে ১৬টি সংস্কার কমিটির সুপারিশ করা হয়। বিএনপি সেগুলোও অনুসরণ করেনি।

তারপর ২০০৪ সালে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে সংবিধানের বিতর্কিত চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিএনপি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়স বৃদ্ধি করে নেয়। যাতে করে নিজেদের লোক তত্বাবধায়ক সরকারে বসাতে পারে।

এই বিতর্কিত সংশোধনীকে কেন্দ্র করেই লগি-বৈঠা আন্দোলন শুরু হয়। আওয়ামী লীগ লাশের উপর নৃত্য করার সুযোগ পায়। পরবর্তীতে এক এগারো সরকার আসে।

রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় টিকে থাকার এই অতীত ইতিহাস সম্পর্কে এই প্রজন্ম ভালো করেই জানে। সংস্কার মানি না, সংস্কার চেঞ্জ করে ফেলবো এসব নতুন ইতিহাস নয়। আগেও হয়েছে।তাই ওদের হাতের সংস্কার আমরা মেনে নিবো না বলে মির্জা আব্বাস যে বক্তব্য দিসে, সেটা তাদের দলেরই ঐতিহাসিক রূপকে প্রতিফলিত করে।

জুলাই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। সেই কমিশন নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রস্তাবনাও অলরেডি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাবমিট করেছে।

জুলাই যদি ব্যর্থ হয়, সংস্কারকে যদি রাজনৈতিক দলগুলো অপোজ করে তাহলে মনে রাইখেন ইতিহাস সচেতন এই প্রজন্ম আর কাউকে ছেড়ে দিবে না,ইনশাআল্লাহ।

এদিকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মোহাম্মদ ইউনুস প্রথম ছয় মাসে অগোছালো হলেও আস্তে আস্তে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তিনি তার জাত চিনাতে শুরু করেছেন। রমজান ২০২৫ (মার্চ ২০২৫) এ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সামর্থ্য হয়েছেন তার সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দব্যমুল্যের উর্ধগতিকে থামাতে এই সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ কাজে দিয়াছে, ঈদে মানুষের যাত্রাকে সহজ করতে পেরেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের বাংলাদেশ সফল, চীন সফরে মাথা উচু করা ভূমিকা, সর্বপরি বিমসটেক সম্মলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সম্মানসূচক কথোপকথন আমরা বাংলাদেশির ব্যাপক আমোদিত করেছে।

আর এই অভাগা জাতি আমরা এইটুকু সফলতাতে এত বেশি আবেগাপ্লুত যে, ইউসুস স্যারকে কমপক্ষে ৪/৫ বছরের জন্য ধরে রাখতে চাই।

কিন্তু কিভাবে এটা সম্ভব?

অনেকেই অনেকের কথা বলেন কিন্তু আমি মনে করি মাওলানা ভাসানী বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তার বেশভূষা ছিল গরীবি, টাইটেল ছিল মাওলানা, অত্যন্ত বাকপটুতা যাকে অনন্যতা এনে দিয়েছিল। ৭১ পূর্ববর্তী সময়ে যিনি বাঙালি জাতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল।

mawlana-vasani_original_1731830744-750x430
এবং তার তরুন উদিয়মান শিষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপোষহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো বটে কিন্তু স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব ভুলে তার গুরুর গুরুত্বের কথা।

পরবর্তী পর্যায়ে নানা পটপরিবর্তনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলেন। মাওলানা ভাসানীর তখনকার দল ন্যাপ ছিল, রাজনীতিতে তখনও তিনি ছিলেন সক্রিয়, শেখ মুজিবের সমালোচক ছিলেন। তিনি সমর্থন দেন জিয়াউর রহমানকে। জিয়াউর রহমানের অনাড়ম্বর জীবন ও রাস্ট্র পরিচালনায় অনন্য দক্ষতায় বাংলার মানুষের হৃদয়ে সেই যে ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আজও তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রয়ে গেছে।
IMG_20210119_132651
গত চুয়ান্ন বছরে দুইজন নেতা মাওলানা ভাসানী ও জিয়াউর রহমান বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।

উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে। অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই।

অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।
FB_IMG_1741931625398
এরই মাঝে জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। তিনি তার মনের এক ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।

কিন্তু কি ভাবে সম্ভব? কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন।

তাহলে? কোন উপায় কি নেই?

এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।

তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী ছয় মাসের ভিতর কিংবা সম্ভব হলে আরও কম সময়ের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে। এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব পাস করিয়ে নেয়া হবে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।

তাহলে এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ হয়ে যাবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের প্রদান হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা। এই সরকারের মধ্যে হতে কিম্বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে।

ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপি নির্বচনের প্রস্তুতি নিবেন।

স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা যায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে।

এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির অনন্য কর্ণধার।

যা দেখছি সব বলে দিবঃ চাচার কবর কই চাচী কান্দে কই-১

যা দেখছি সব বলে দিব
চাচার কবর কই চাচী কান্দে কই
French-Revolution
………..
সারাদেশে যারা দেখে, যারা বুঝে, তারা বলছেন আমাদের দেশের যেই রাজনৈতিক কালচার আছে তাতে পরিবর্ধন, পরিমার্জন করা দরকার। যাকে বলা হইতাছে সংস্কার। রাজনৈতিক সংস্কার হতে হলে রাজনৈতিক দলগুলির মাঝে এই একটা বিষয়ে একমত হতে হইবে যে, কিছু বিষয়ে আমরা সকলে একমত তারপর যার যার মতাদর্শে দল চলবে পরে যে দায়িত্ব পাবে সে রাস্ট্র পরিচালনা করবে।

একটা সাধারণ কথা বলি। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন সবাই একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। যেমন স্কুলে বিভিন্ন টেস্ট, মাসিক, ত্রৈমাসিক, বার্ষিক পরীক্ষার উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি ব্যবস্থায় বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষার অংশগ্রহণ করে যে যার মেধা ও পরিশ্রমের ভিত্তিতে রেজাল্ট নিয়ে কর্মজীবনে ডুকতে হয়েছে। পরীক্ষা পদ্ধতি, প্রশ্নপত্র প্রনয়ন, উত্তর পত্র দেখা, ফলাফল প্রকাশ সব কিছু একটা নির্দিষ্ট নিয়মের ভিতর দিয়ে যেতে হয়। নিশ্চয়ই এই পদ্ধতি কি হবে তা নির্ণয় করা ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ নয়। অটোপাশ একটা আপৎকালিন সিস্টেম। এটাকে বিবেচনায় আনা যাবে না যদিও এর মাধ্যমে পাশ করা ছাত্র ছাত্রীদের পাশ হিসাবেই বিবেচনায় আনতে হবে।

এখন এই সাধারণ আলোচনার পর আমি কিছু প্রশ্ন উদ্ভব করতে চাই। এই পরীক্ষার সিস্টেম সেটা কি ছাত্ররা নিজেরা নির্ধারণ করবে? নিশ্চয়ই না। সিস্টেম ডেভেলপ করতে হয় এক্সপার্ট দিয়ে। যদি কখনও সিস্টেমের কিছু পরিবর্তন করতে হয় তবে দেশ বিদেশের বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে যেতে হয়।

এতক্ষণ আমি শুধু এইটা বলতে চাইছি ছাত্র-ছাত্রীরা কেবল একটা সিস্টেমের ভিতর দিয়ে নিজেকে প্রমানিত করে দেশ ও রাস্ট্রের সরকারি বেসরকারি নানামুখী কাজে নিজেদের নিয়োজিত করবে এবং নিজ যোগ্যতা অনুসারে পদ পদবী দায়িত্ব পাবে।

এখন সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করি যা বলতে চাইছি।

ইতিহাসের প্রায় সকল পর্যায়েই একথা প্রতিষ্ঠিত ছিল প্রজা চলবে রাজার অধীনে। রাজা নিজের ইচ্ছা মত কতগুলি নীতি নির্ধারণ করে দিবে সেইভাবেই প্রজাদের চলতে হবে। যারা যেভাবে ইচ্ছা চলবে তাকে কোন নিয়মে রাখা যাবে না। তার ভোগ বিলাসের জন্য প্রজাদের চাঁদা দিতে হবে যার রাষ্ট্রীয় সমার্থক শব্দ কর। এই কর আদায় করে রাজা তার বিলাসবহুল জীবন চালাইতে পারবে, ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে নিতে আশেপাশের অঞ্চলগুলি যুদ্ধ বিগ্রহ ও নানামুখী কৌশলে দখলে নিয়ে সাম্রাজ্য গড়তে ও বাড়াতে পারবেন। এই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য, কর আদায় করার জন্য সৈন্য সামন্ত বাহিনী, নানা ধরনের কেরানি কর্মচারী লালন পালন করছে। এই সব কর্মচারীরা রাজার কাছাকাছি গিয়ে নিজেরাও ভোগবিলাসী জীবন যাপন করেছে, প্রজারা এদের রসদ যোগাইয়াছি । কিন্তু এই শ্রেণীটি রাজা নন, রাজা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। রাজা যা চাইবেন তাই সকলে মিলে বাস্তবায়ন করে যাবে। শুধু তাই না, অন্য কে রাজা হবার সুযোগ পাইবে এটা চলবে বংশানুক্রমিকভাবে। রাজার পোলা হবে রাজা। কখনও রাজার বড় ছেলে হবে রাজা, কোথাও বা অন্যকোন ব্যবস্থা। এই জন্য এই উত্তরাধিকারীদের মাঝে চলে নানা গোপন কারসাজি, পারিবারিক কুটনীতি, কূটকৌশল । এখানে অন্য কোন কথা নেই, সারাজীবন রাজা রাজাই থাকবে কেবল মৃত্যু হইলে বা নিহত বা বন্ধী হলে বা দেশ থেকে বিতাড়িত হইলে ক্ষমতার পালাবদল হয়। এটাই রাজতন্ত্র। সারা পৃথিবীতে ছিল সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও রাজতন্ত্র। এমন কি এখনও কোথাও কোথাও রাজতন্ত্র রয়ে গেছে।

nap
মানব জাতির ইতিহাসের এই সবেমাত্র কয়েক শত বছর আগে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনের এক ভয়াবহ দাবানল সৃষ্টি হয়। প্রজারা আর প্রজা হয়ে থাকতে চায়নি। ১৭২৯ সালে ফ্রান্সে ঘটে যায় এক ব্যাপক উলট পালট। এই উলট পালটের ব্যাপারটার রাজনৈতিক টার্ম হইতাছে বিপ্লব। ফ্রান্সের সেই উত্তাল সময়ের ইতিহাস উলট পালট করা বিপ্লবকে নাম দেয়া হয়েছে ফরাসী বিপ্লব। সারা পৃথিবীতে অনেক ধর্মীয় পরিবর্তন এসেছে, অনেক যুদ্ধ, অনেক রক্তপাত, খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, জুমুল চলেছে পৃথিবীর মানুষের উপর, চলেছে নানা প্রতিবাদও। সব কিছুর মুল বিষয় এই ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন ও অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ। আধিপত্য বিস্তার। ভোগবিলাসী জীবন। শৈল্পিক কারুকাজে প্রাসাদ, মিনার নির্মাণ, রাণীর সৌন্দর্য স্পৃহা, স্বর্ণ, হীরা মতির সুনিপুণ কারুকার্যময় অলংকারের পিছনে চলে গেছে বহু অর্থ যার জোগান দিতে হয়েছে প্রজাদের। কিন্তু ফরাসি বিপ্লব কেবল প্রজাদের এনে দিয়েছে নিজের শাসন নিজে করার অধিকার। প্রায় একই সময়ে ঘটে যাওয়া আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ইত্যাদি পৃথিবীতে এনে দিয়াছে রাজতন্ত্রের বিপরীতে প্রজাতন্ত্রের ধারা। আর আস্তে আস্তে ডেভলব করেছে এক সুমহান ব্যবস্থা গণতন্ত্র।

সেই ইতিহাসের বিস্তারিত বর্ণনা৷ ও বিশ্লেষণ আমি এখানে দিতে চাইছি না কারণ আমি বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে আলোচনা করতে চাইছিলাম। এছাড়া ফরাসি বিপ্লব, আমেরিকার গনতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনা করলে অবশই অথেনটিক সোর্স থেকে আলেচনা করতে হবে, নানা বইপত্র রেফারেন্স দিতে হবে। কেউ আগ্রহী হলে খোঁজে নিতে পারেন সেইসব ইতিহাসের আাদ্যপান্ত।

Abraham_Lincoln_O-77_matte_collodion_print

আমি কেবল ফরাসি বিপ্লব পরবর্তী সময়ের পরিবর্তন পৃথিবীর কিছু চিত্র উল্লেখ করতে চাই। ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তী সময়ে পৃথিবীর নেতৃত্ব দিয়াছে ইসলামি ভাবধারার রাজতন্ত, মুসলিম সাম্রজ্য। ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে শাসন করত অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতানরা। সুলতানী রাজত্বের অবসান হয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে। ফরাসি বিপ্লবের পর সেই সাম্রাজ্যের পতন হয় নানা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে। সাম্রাজ্যগুলি ভেঙে দেশে দেশে বিভক্ত হয়। প্রজাদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে একেক দেশে। মানুষের রাজনৈতিক নিপীড়নে মুক্তির কারণে জ্ঞান বিজ্ঞানের ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। এমন কি ধর্মীয় প্রভাব থেকেও তারা আলাদা হয়ে যেতে থাকে। তাদের মাঝে জন্ম নিতে থাকে ধর্মনিরপেক্ষ ধারণা। তারা রষ্ট্রকে ধর্ম থেকে আলাদা করে নেয়। ফলে মানুষের ধর্মীয় বিভেদগুলি ব্যক্তি পর্যায়ে নেমে আসে। রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা চলে আসে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে। ফলে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হয়। মানুষ এগিয়ে যায়। রাষ্ট্র অনেক ক্ষমতাবান হয়। কিন্ত গরীব প্রজাদের ভাগ্য থেকে জুলুম নির্যাতন মুক্ত হয়নি। মানবতার মুক্তিকামী মানুষের মাঝে আবার শুরু স্বাধীনতার স্পৃহা। আর একটি বিপ্লব সংগঠিত হয় কমুনিষ্ট বিপ্লব। ফরাসি বিপ্ববের পরবর্তীতে সংগঠিত এই বিপ্লবের মাধ্যমে ইউরোপজুড়ে আবার সাম্রাজ্যের সুচনা হয়। ইউরোপের অনেকগুলি রাষ্ট্র যুক্ত হয়ে গঠিত হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন।

440px-Battle_of_Mill_Springs

অন্যদিকে আমেরিকায় কৃশাঙ্গ ও শেতাঙ্গ বিরোধের কারণে গৃহযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে আব্রাহাম লিংকনের গনতন্ত্রের ধারণা। নানা রাজতন্ত্রের মাধ্যমে পৃথিবীতে নেতৃত্বদানকারী শাসন ব্যবস্থার অভিজ্ঞতা অর্জনকারী বৃটিশ সাম্রাজ্যের অবসান হওয়া রাষ্ট্র ব্রিটেনের রাজাকে প্রতীক হিসাবে রেখে এক ধরণের সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হয়।

ফরাসি বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে এই বিপ্লবের মুল ধারনা সাম্য, স্বাধীকার, নারী স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, মানবতাবাদ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য নিয়া দুই ধারার চিন্তা চেতনায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। একদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন অন্যদিকে আমেরিকা, বৃটেন প্রভৃতি ইউরোপীয় রাষ্ট।

পরবর্তী সময়গুলিতে এই দুইটি মতবাদের প্রভাবেই সারা পৃথিবী চলতে থাকে।

চলবে

ড. ইউনুসকে হঠানোর প্লান

;নিচের তিনটি ঘটনা বহুল আলোচিত :

২০২০ সালে সিলেটের এমসি কলেজে স্বামী কে বেঁধে রেখে স্ত্রী কে গণধর্ষণ করে তখনকার রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন।

২০১৮ সালে বিএনপিকে ভোট দেওয়ায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ৪ সন্তানের মা’কে গণধর্ষণ করা হয় ।

২০১৬ সালে কুমিল্লা ক্যান্টমেন্টের মধ্যে তনুকে নির্মম ভাবে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয় ।

এই ৩ টা ঘটনা তে ই নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে এবং ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবিতে সারাদেশের মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করে ।

মোটামুটি সকল জায়গায় আন্দোলনকারীদের উপর ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের লোকেরা হামলা করে ।

তখন লাকি আক্তারেরা রাজপথে গদিতে আগুন জ্বালো স্লোগান দিয়ে রাজপথ কাঁপাতে দেখা যায়নি। গিয়াছে কি?
তখন কেন গণভবনে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে পুলিশের উপর হামলা করেনি?

উপরের আলোচিত ৩ টা ঘটনার একটায় ও ভিক্টিম বিচার পায়নি ।
আসামিরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে গেছে ।

এখনকার সময়ের আলোচিত ধর্ষণের ঘটনা আমরা দেখলাম সরকার ও সেনাবাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে নিষ্ঠুর পাশবিকতার শিকার মেয়েটিকে বাচাতে এবং সরকার অপরাধীদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে, আইনের সংশোধন এনেছে, দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা নিচ্ছে। এটাই গত ৭ মাসে ফিরে পাওয়া স্বাধীনতা । এই স্বাধীনতা আনতে দেশের মানুষের তাজা রক্ত ঝরাতে হয়েছে রাজপথে ।

এখন যাতে দৃষ্টান্তমূলক বিচার৷ হয় এবং রায় কার্যকর হয় আমরা সবাই এটা চাইছি। আর এইসব বামপন্থীরা ও কিছু উশৃংখল রাস্তায় বিড়ি খেতে চাওয়া অসভ্য মেয়েরা দেশের সকল মানুষের দাবীর সাথে একমত না হয়ে এরা যাইতাছে যমুনা ঘেরাও করতে। ওদের উদ্দেশ্য বিচার চাওয়া নয় এটা স্পষ্ট। এরা পুলিশের উপর হামলা করেছে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুলিশের উপর হামলা করে নিজেরা ভিক্টিম সাজতে চাইছে। তারপর গ্রেফতারের দাবি উঠলে গ্রেফতার হবে। তারপর এদের সহযোগি বন্ধুরা বিশ্বকে দেখাবে যে,বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে এবং ইউনুস যৌক্তিক আন্দোলন দমাতে আন্দোলকারীদের উপর নিপীড়ন শুরু করেছে ।

আর তারপর দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে ড. ইউনুসকে হঠানোর প্লান নিয়ে আসবে সেটা অন্তত দেশের সচেতন কোন নাগরিক হতে দেবে না ।

এসব বাদ দিয়ে দেশে সুশাসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন ।

একটি গালি ও একটি উচ্চাভিলাষী চিন্তভাবনা

একটি গালি ও একটি উচ্চাভিলাষী চিন্তভাবনা

FB_IMG_1741931625398
ফকির আবদুল মালেক ১৪/০৩/২০২৫

জ. ই. মামুনের স্ট্যাটাস থেকে শুরু করি। তিনি লিখেন-

Off the Record বলে একটা কথা আছে ইংরেজিতে, যার মানে হলো রেকর্ডের বাইরে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা। আমরা যারা টেলিভিশনে ক‍্যামেরার সামনে কাজ করি, যে কোনা লাইভ টক শো বা সংবাদের বিজ্ঞাপন বিরতিতে কিংবা অনুষ্ঠানের আগে-পরে স্টুডিওতে বসে অতিথি বা কন্ট্রোল রুমের সহকর্মীদের সাথে নানারকম কথা বলি। তার মধ্যে কাজের কথার বাইরে অকাজের কথাও থাকে। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সংবাদ কর্মীরা অফ দ‍্যা রেকর্ডে মাঝে মধ্যে গালাগাল‍িও করে থাকে। বেশিরভাগ সময় গালাগালির প্রধান টার্গেট থাকে নিজের কপাল, নিউজরুমের বস, অথবা টিভির মালিক কিংবা কখনো কখনো নেতা- মন্ত্রী থেকে শুরুর করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব‍্যক্তি।

শুনলাম, সেরকম একটা অফ দ‍্য রেকর্ড বক্তব‍্যের জন‍্য আজ এখন টেলিভিশনের একজন সংবাদ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

উনি হয়ত ঠিকই শুনেছেন। আমরা অনেকেই শুনেছি। তবে আমাদের শুনা আর জ. ই. মামুনের শোনার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে। তার শোনাটা আমাদের থেকে বেশি অথেনটিক হবে এটা স্বাভাবিক।

এখন অনলাইনের যুগ। অডিওটি আমরাও শুনেছি। সেখানে সারসিজ ও হাসনাত আবদুল্লাহকে শুয়র বলে গালি দেয়া হয়েছে।

জ.ই. মামুন সবশেষে একটি কথা বলেছেন যা আমার খুবই নজর কেড়েছে। তিনি লিখেন-

সবচেয়ে বড় কথা, একজনের গালি টেলিভিশনের টেকনিক‍্যাল ভুলের কারণে আপনি শুনে ফেলেছেন বলে তাকে চাকরিচ‍্যুত করলেন, কিন্তু যাদের গুলো শুনছেন না- তাদের মুখ বন্ধ করবেন কি করে!

এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বেড়িয়ে আসছে গালিগালাজ অনেকেই করছেন। এখন আমি যে বিষয়টা আলোচনায় আনতে চাইছি সেখানে প্রসঙ্গিক ভলতেয়ার ও আমাদের দেশের সমসাময়িক আলোচিত সমালোচিত শুয়র গালি খাওয়া হাসনাত আবদুল্লাহ।

অনেকে হয়ত বলে বসবেন কিসের সাথে কি পান্তভাতে ঘি! অনেকে হয়ত হাসতে পারেন কিন্তু যে যাই বলুক, আমারও স্বাধীনতা থাকতে হবে নিজের মত প্রকাশের।

মত প্রকাশের প্রচলিত পথগুলো যখন সংকুচিত হয়ে আসে, তখন মনে পড়ে ফরাসি লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক ম্যারিক আরোয়েট ভলতেয়ারকে। যিনি বিশ্বব্যাপী ভলতেয়ার নামেই পরিচিত। যাঁকে বলা হয় অষ্টাদশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী ফরাসি সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ ও দার্শনিক।

ভলতেয়ারের যে উক্তি সমাজে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক তা হলো, “তোমার মতের সঙ্গে আমি হয়তো একমত নাও হতে পারি; কিন্তু তোমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আমি আমার জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে যাব।”

এখন আসি খালি খাওয়া আমাদের সেই ছেলে কি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সে তার স্ট্যটাসে লিখেছে-

“এখন” টিভির সাংবাদিকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা এই দ্বিমত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম। আপনার এই গালির স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম।

শুধু মত প্রকাশ নয়,দ্বিমত প্রকাশও অব্যাহত থাকুক।’

এখন যারা তাদের গালি দিচ্ছেন আরও উচ্চস্বরে দিন। কিন্তু এই গালি খাওয়া ছেলেমেয়ের চিন্তাভাবনাকে আমি সন্মান জানাই। কেউ হয়ত বলবেন এটা চমক। আমাদের চমকে দেয়ার আর ভালোবাসা পাওয়ার মত কাজ আর মতামত তারা অব্যাহতভাবে দিয়ে যাক এই কামনা রইল।

নেতাদের নীতির চেয়ে বেশ্যাদের নীতিই শ্রেষ্ঠ

WhatsApp-Image-2023-07-16-at-23.22.35

নেতারা কি সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা করার কাজ করেন? না, মোটেও না। তারা সাধারণ জনগনের মাথায় টুপি পরিয়ে নিজেদের পকেট ভর্তি করেন। বর্তমানের এক একজন নেতাদের কাছে এক একটা করে তেলের খনি আছে, আর সে খনিতে অনভিজ্ঞ কর্মীরা টাকার বিনিময়ে তেল মালিশের কাজ করে।

যে দেশে দেশপ্রেম না থাকা স্বত্ত্বেও টাকার বিনিময় রাজনৈতিক অভিভাবক বা নেতা হওয়া যায় সে দেশে আবার রাজনৈতিক কোন দলকে ভালো বলবো? ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে যেমন ভগবত সিংহ কিংবা মহাত্মা গান্ধী বা জিন্নাহর যে দেশপ্রেম ছিল এবং পাকিস্তানের দুঃশাসন থেকে বাঙালির মুক্তির জন্য সালাম, রফিক, বরকত, শফিক, বঙ্গবন্ধু, ভাসানী, সরোওয়ার্দী বা ফজলুল হকের মত যারা দেশপ্রেমিক ছিল তাদের মত এখন কি আর দেশপ্রেমিক আছে? কোথায় নুর উদ্দীন? কোথায় হিমাদ্রি সহ শত শত খুন হওয়া দেশপ্রেমিক ব্লগাররা?

আজ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আছে বলে হঠাৎ বড়লোক হওয়া হাজার হাজার ব্যাক্তি টাকার বিনিময়ে আওয়ামীলীগের পদ নিয়ে কোটি টাকার সুবিধা নিচ্ছে। আর এইসব আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়া সমাজ সেবকদের কাছে সত্যিকার অর্থে আওয়ামীলীগ বা দেশপ্রেমিকেরা লাঞ্ছিত হচ্ছে। যে লোকটির পরিবার দেশ স্বাধীন হোক চায় নাই, এমনকি আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করেছিল, সে ব্যক্তিটিও আজ টাকার বিনিময়ে বলে বেড়ায় সে একজন খাঁটি আওয়ামী লীগার।

আগের রাজনীতি ছিলো সেবা, এখন রাজনীতি হচ্ছে শোও-অফ সেবার নামে ব্যবসা। আগের রাজনীতি ছিলো মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্য, এখন রাজনীতি হচ্ছে অধিকার হরণ করে ক্ষমতাবান হওয়া। আগের রাজনীতি ছিলো ধর্ম নিরপেক্ষতার রাজনীতি, এখন রাজনীতি হচ্ছে ধর্ম সহিংসতার রাজনীতি।

যে দেশে শুয়োরের মাংস খাওয়া হারাম বলে খায় না অথচ এর চেয়ে জঘন্য পাপ কাজ তথা পর-নারী বা পর-পুরুষের সাথে শয্যাশায়ী হওয়াকে আধুনিকতা বলে, আর সুদ খাওয়াকে মর্ডান বিজনেস বলে, সে দেশের মানুষদের রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বলে লাভ কি?

নেতারা কথা দিয়ে কথা রাখে না ঠিকই তবে অর্থকড়ি আত্মসাৎ করে নেয়, কিন্তু বেশ্যার টাকার বিনিময়ে ঠিকই সাময়িক শারীরিক ক্ষুধা মিটিয়ে দেয়। তাই আমি মনে করি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের নীতির চেয়ে বেশ্যাদের নীতিই শ্রেষ্ঠ।

লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু

FB_IMG_1659650469838

রাজায় রাজায় যুদ্ধে রাজার কোনো ক্ষতি হয় না। মরে শুধু উলু খাগড়ার দল।

সামনে নির্বাচন। কে জিতবে, কে হারবে, তা বড় ব্যাপার না। বড় ব্যাপার হচ্ছে, আপনি বা আপনারা তথা কর্মীরা নির্বাচনকালীন সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে রাতদিন পরিশ্রম করে প্রার্থীকে জয়ী করেন। অতঃপর প্রার্থী বিজেতা হয়ে রাক্ষস বনে যায়। হোক সে নৌকার সমর্থনে জয়ী কিম্বা ধানের শীষ বা দাঁড়িপাল্লা সমর্থনে বিজয়ী।

রাক্ষস বনবে না কেন? গরুচোর, সাইকেল চোর, চাঁদাবাজ, আর ধর্ম ব্যবসায়ীরা যখন আঙুল ফুলে কলাগাছ হয় তখন সামাজিক মর্যদা বাড়ানোর জন্য বড় বড় নেতাদের ডোনেশন দিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়। আর এইসব মানুষদের কাছে আমরা সামন্য কিছু অর্থের বিনিময়ে গোলাম বনে যাই।

তথাকথিত নেতারা তাদের নিতম্বে ফেবু নামক তেল মর্দন উপভোগ করেন। আর সে মর্দনের তেলসমতিতে জনগনের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে মিষ্টি কোঁয়া চুষুন করে হাসতে হাসতে স্বাদ উপভোগ করেন।

আমরা সাধারণ পাবিলক যারা আছি তারা সবাই নিজ স্বার্থের কথা চিন্তা করি। কিন্তু সমাজ, রাষ্ট্র বা জাতির কথা একটুও ভাবি না। আমাদের চিন্তা এমনই, দেশ যাক রসাতলে আমাদের কি, আমি তো নেতার চামচামি করে আমারটা পাচ্ছি। আর এই স্বার্থন্বেষী লোভের কারণে হাজারো পরিবার না খেয়ে মরে।

সরকার জনগনের উপকারের জন্য যেসব কাজে বরাদ্দ দিয়ে থাকেন, নেতা নামক টেন্ডারবাজরা ঐসব বরাদ্দের ৭০% যদি সম্পূর্ণ করতো তাহলে বাংলাদেশ সোনার বাংলায় রুপান্তরিত হতো।

সোনার বাংলায় অযোগ্যরা নেতা হয় আর যোগ্যরা ঐসব নেতার আমলা বনে বলে দেশের সাধারণ জনগণ কখনোই স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলতে পারিনি, পারবেও না। আর এই জন্য দায়ী আমরা সাধারণ জনগনই। কারণ আমরা সব্বাই হিপোক্রেট।

তৈল মর্দন নয়: দেশকে ভালবাসুন

FB_IMG_1607

আবেগ দিয়ে সংগঠন হয় না, বাস্তবতা আর দেশপ্রেম দিয়ে একজন ব্যাক্তি হয়ে উঠে সাংগঠনিক। যার মাঝে দেশপ্রেম নেই, সেই সামান্য রাজনৈতিক পদবী নিয়ে অহংকার আর দেমাগে কর্মী কিংবা সাধারণ মানুষকে বিচ্ছিন্নকরণ করে। পদ বড় নয়, বড় ব্যাপার আমি বা আমরা দেশের জন্য কি করছি? ৫২’র ভাষা আন্দোলনে, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিলো তারা নিজেকে বিসর্জন দিয়ে দেশ রক্ষা করেছে। তাদের কোনো রাজনৈতিক পদ ছিলো না, পকেট ভর্তি অর্থ ছিলো না। তাদের একটি পরিচয় “আমি বাঙ্গালী”।

বাঙ্গালি জাতির পিতা কি চেয়েছিলো? সাধারণ মানুষদেরকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে মুক্তি দিতে। অথচ ১৫ই আগস্ট ঘাতকরা তাঁকে নির্মম ভাবে খুন করলো। ১৪ই ডিসেম্বরে খুন হওয়া বুদ্ধিজীবীরা দেশের কথা ভাবতেন বলেই তৈল মর্দনে তৈলাক্ত রাজনৈতিক খেকরা তাঁদের বাঁচতে দেয়নি।

জহির রায়হান বা নুর হোসেন দেশের জন্য নিজের মায়া ত্যাগ করছেন। বছরে একটি দিন আসলে তাদের আমরা স্বরণ করি অথচ তাদের পরিবার বাকী ৩৬৩দিন ঠিক মত খাচ্ছে কি-না তা আমরা তলিয়ে দেখি না।

আমার জানাশুনা কিছু রাজনৈতিক কর্মী দেখেছি যারা সামান্য পদবী নিয়ে নিজেকে মনে করে স্বাধীন বাংলার প্রধান কিন্তু দেশের জন্য ঘোড়ার ডিম। তারা পদ পায় নেতার চামচি করে, দেশের জন্য নয়।

দেশকে যদি ভালোবাসতো তবে নিপীড়িত মানুষের পাশে, বস্তিতে, রেললাইনে, ফুটপাতে পড়ে থাকা মানুষকে নিয়ে ভাবতো। ধনীদের এক রাতের ডিনারের টাকা দিয়ে ১০জন বস্তির ছেলে মেয়েকে পড়ানো যায়। যে বস্তির ছেলেগুলো শিশু বয়স থেকে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে দেশ ও জাতির জন্য হুমকি হয়। এখন রাজনীতি পুরো তৈল মর্দনের রাজনীতি। তাই আমি রাজনীতি থেকে বহুদূরে। তবে মনের ভিতর কাঁদে নিপীড়িত, অবহেলিত মানুষের জন্য, তবুও কিছু করার নেই কারণ কিছু করতে গেলে তখন হাইব্রীড নেতাকর্মীদের ঘা জ্বলে যে এই ছেলে দেশের জন্য কিছু করতে গিয়ে আমাদের ডিঙিয়ো যাচ্ছে। ধিক্কার তোদের মত রাজনৈতিক কর্মীদের।

আমি বৃহৎ বাগানের কোনো এক কোণে পড়ে থাকা ছোট্ট একটি ফুল। সুঘ্রাণ হয়তো কেউ অনুভব করে, হয়তো কেউ করে করে না। আমার কেউ না থাকুক, কলম আছে।

আসুন, নেতাদের তৈল মর্দনের তৈল নর্দমায় ফেলে দিয়ে নিজগুণে দেশকে ভালবেসে দেশের নিপীড়িত আর অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়াই। আর নেতাদের বলছি, আপনারা যাদের দিয়ে নেতা হয়েছেন দৈনিক তাদের সাথে দেশের স্বার্থে আধ-ঘন্টা সময় দেন, দেখবেন দেশ কত দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে।

ভাস্কর্য বনাম জ্বী হুজুর

15801820425292_S-1

দেশের সবচেয়ে আলোচিত টপিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি বা ভাস্কর্য।
এমনিতেও দেশের যেকোন ইস্যু ঘষামাজার ফলে ঘটনার চেয়ে কথা বেশ বড় হয়ে যায়…
ঠিক তেমনি ভাস্কর্য ইস্যু একশ্রেণীর মানুষের কাছে নাপাক-নাপাক হয়ে তা দ্রোহের মতো যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব তাদের আচরণে!
কিন্তু কেন?
কারণ, ভাস্কর্য তৈরী শির্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি চিন্তা করে দেখেন পৃথিবীতে কিভাবে শির্কের সূচনা হয় তবে দেখবেন,
এর একমাত্র কারণ হলো নেককার লোকদের নিয়ে বাড়াবাড়ি-
তাদের যা মর্যাদা তার চাইতে বেশী তাদের সম্মান করা।

শুধু কি মূর্তি বা ভাস্কর্যই শির্ক আর কিছু নেই?

আছে, কবর ও মাজারের মাধ্যমে।
কবর পূজারীদের কেউ কেউ বলতে পারে,
তোমরা আমাদের উপর বেশী বাড়াবাড়ি করছ।
আমরা তো কোন মৃতের ইবাদত করিনা,
ভাস্কর্যকে সম্মান দেখাই না-
কবরে এ সমস্ত ওলী-আউলিয়া নেককার লোক।
আল্লাহর কাছে তাদের সম্মান রয়েছে, তারা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে পারেন!
জবাবে আমরা বলব, এটাই ছিল কুরাইশ কাফেরদের কথা তাদের মূর্তি সম্পর্কে।
পাথর পূজা আর কবর পূজার মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
কি পার্থক্য আছে সেই ব্যাক্তির মাঝে,
যে মূর্তির কাছে নিজ প্রয়োজনের কথা বলে আর যে গলিত মাঠি মিশ্রিত হাড্ডির কাছে যায়!
কোনই পার্থক্য নেই।

”আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা এমন বস্তুর উপাসনা করে যা তাদের কোন লাভ বা ক্ষতি করতে পারে না এবং বলে এরা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশকারী।
তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহর এমন বিষয়ে অবহিত করছ;
যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে?
তিনি পুত:পবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছো।”
(সূরা ইউনুস [১০]:১৮)

অতএব, শুধু ভাস্কর্য নয় একজন মুসলিম হিসেবে উচিৎ কবর বা মাজারের বিরোধিতা করা।

এখন আসা যাক বর্তমান সময়ের মূর্তি বিরোধী আলেমসমাজদের ব্যাপারে।
আলেমদের কাজ প্রথমে নিজের ধর্মের যাবতীয় অনাচার থেকে ধর্মকে সঠিক পর্যায়ে নিয়ে এসে তা অনুসারীদের কাছে সঠিক পথে পৌঁছে দেওয়া-
দেশে সেই শাহ জালাল (রহঃ) মৃত্যুর পর থেকে যে পরিমাণ শির্কের কারখানা মাজার প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা কি তারা চোখে দেখেনি?
তারা দেখেনি যে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর পবিত্র নামের বিকৃত জিকির করে তালে তালে ছন্দে নারী-পুরুষের অবাধ যৌন উন্মুক্ত গাঁজা খোরের নাচন!!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য হচ্ছে সম্প্রতি সময়ে,
আশার কথা হলো-
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে কেউ পূজা দেয়নি সন্তানের জন্য উনার ভাস্কর্যের নিচে গড়াগড়িও খায়নি এমনকী সন্তান লাভের প্রলোভনে কেউ খাদেম বা পীর দ্বারা ধর্ষণ হওয়ার সুযোগ নেই।
কিন্তু ইসলামের নাম ভাঁঙিয়ে দরগাহ মাজারে বড়বড় ওয়াজ ও জিকিরের আয়োজন করা শির্কবাদীদের দ্বারা ধর্মের চরম ক্ষতি হচ্ছে –
সে বিষয়ে ভাস্কর্য বিরোধী আলেমসমাজ চুপচাপ-খামোশ।
ওসব ধর্মের কথা বলে তাই না!

ফাজলামির একটা সীমা থাকা উচিৎ-
নিজের ধর্মের ভিতর শির্কের কারখানা খোলা রেখে একজন মহান নেতার তর্জনী উঁচু হাতের ভাস্কর্যের বিরোধীতা কতটা যৌক্তিক?
ভাস্কর্য বিরোধীতার ফতোয়া দেওয়ার আগে ফতোয়া দিন মাজার নামক ভন্ডদের বিরুদ্ধে।
ভাঙতে হলে প্রথমে ভাঙুন মাজার গুলো,
বুল্ডুজার চালিয়ে গুড়িয়ে দিন প্রতারক ধোঁকাবাজ বাটপার গুলোর বেহায়াপনার আর্থিক উপার্জনের আস্তানা।

কিন্তু তা না করে আপনার হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিচে!
একটা গনতান্ত্রিক দেশে কে আপনাদের ধর্মীয় নীতিমালা প্রয়োগ করতে প্রমোট করলো?

“ভোট”এর ব্যাথা

ও ভাই আমার সরকার!
মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া ছাড়া কি কোন নেই কর্ম আর?
কোন সালে সেই খুলেছ বদন তোমা অতি কাল হলো,
কত গড়েছ মৃত্যু মিছিল, আজ ভোল গো মোহ ভোল!
কর্কশ শব্দে ভরেছ দেশ, যেন মম মালিক গেছে ঘুমে।
হাজার হস্ত ছেড়েছে মম, বিদায় নিছে মাতৃভূমি চুমে!
দেখ গো হেথায়, ভোটার হাঁপাই, অশান্তি মাগিছে ছুটি!
দেশে ধ্বংসের গন্ধ, কর গো বন্ধ, মোহের লোটা লুটি!

মনে নাহি পড়ে, মালিকের গড়ে,কি ছিলাম আমি ভোরে?
তুমি বুঝালে সুঝালে সিধে বাঁকা গোল লম্বা চৌকা করে!
কভু হিংসা বিদ্বেষ, কভু সম্প্রীতি শেষ, কভু বা নম নম,
কভু মিথ্যে ফুঁৎকার-এ জড়িয়ে দিলে অসচ্ছ দাপ মম।
গঞ্জে গঞ্জে, অতি রঞ্জে, উড়িয়ে পুড়িয়ে মিটালে মম সাধ।
মোহের টানে, সম্প্রীতির প্রাণে, আজ জন্মে দিলে তুমি উন্মাদ!
আমার মালিক যারা, হয়ে পাগলপারা, অহর্নিশে তারা,
মোহের ঢিপে, দিলে গলা টিপে করে তাদের আত্মহারা!

গলির কোণে, মালিকের মনে,তুমি ধরিয়ে চুলা চুলি,
ঘন ঘন ঘন, পরিবর্তনে তোমার মোহের ফুঁৎকার তুলি।
তোমার মিথ্যা ফুঁৎকারে জনের কর্ণব্যাধিতে আমি নিরুপায়!
সেই হেতু গড়ে সেতু পড়েছি তোমার গর্দানে আমি ভাই।
যা হওয়ার ন্যায় হোক না, প্রবল করিয়াছি প্রতি বাদ;
আমায় ন্যায্য মূল্যে গড়িলে ভরিয়া যাবে কত মন স্বাদ।
তোমার ওই মরা দেহেতে আজ যারা ঢেলে দিলো প্রাণ,
তাদের হারায় গেল সবকিছু, অসহায়, নেই কোন ত্রাণ!

মালিকদের অন্তঃ অন্তঃ সুঘ্রাণ দিয়ে আমি, বেঁকে বসি যদি!
দেখো কি হবে তোমার তাঁবেদারি? কোথায় রবে
তোমার গদি?
তোমার যারা শ্বাসপ্রশ্বাস, তোমার ঘরের আলোক বাতি,
তারা আজ অজানা অচেনা, তাদের পেটে প্রতি দানে লাথি!
আমার কিছু মালিক আছে তাদের জন্ম যেন কুকুরের কাছে!
না বুঝে চাতুরী, তোমার বিষ্ঠার কোন সে স্বাদে ঘুরে পাছে
পাছে?

ও ভাই আমার সরকার!
রাখিবো কাহাকে সাক্ষী? কাহার কাছে করিবো বিচার?
তুমি শয়তান দেখেও কেন দেখোনা অমৃত সব কূল?
আমি যে অমর,আমার মালিকের দ্বারা আমিই তোমার মূল!
কত শত মস্তক আর হস্তে পদে তোমায় গড়ে দিয়েছি মতি।
তুমি ছিলে কোন অচেনা আবাল, আজ তোমায় দিয়ে জ্যোতি!
তুমি না থাকিলে মোর মালিকদের কিবা হতো তাতে ক্ষতি?
কৃতজ্ঞতা কি এই পাঠাইছো হিংসা বিদ্বেষ দাঙ্গা লড়াই আর অশান্তির মারফতি?

দেশ ও দশকে তুমি, ধ্বংসের ভেলা চুমি, করিয়ে দিলে ছারখার!
মরণের পরে হায়! হবে কি উপায়? পাইবে কি তারা মম ন্যায্য অধিকার?

শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে নিজ পরিবারের দুর্নীতি এবং ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ

শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে নিজ পরিবারের দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ। ১৯৭২ সালে মুজিব ক্ষমতায় যাওয়ার পর মুজিব পরিবারের প্রত্যেক সদস্য ঘুষ-দুর্নীতির চুরি ডাকাতি রাহাজানি ছিনতাই হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে বেগম মুজিব বাড়িতে বসে ঘুষ নিয়ে সবার কাজ করে দেন লাইসেন্স পারমিট ডিলারশিপ প্রভৃতি কাজের জন্য বেগম মুজিব এই ঘুষ গ্রহণ করতেন।

বেগম মুজিব মন্ত্রণালয়ে নির্দেশ দিতেন এই কাজের জন্য পাঠালাম কাজটা ঠিক মত করে দিও। শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল ছিল বখাটে যুবক। তার ছিল এক বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। শেখ কামাল শত্রুদের হত্যা করতো, সুন্দরী যুবতী ধর্ষণ করতো, দিনে-দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডাকাতি করে আসার পথে পুলিশের গুলিতে আহত হন। শেখ কামাল এক সুন্দরী যুবতীকে জোরপূর্বক তুলে এনে বিবাহ করে।

বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ সামগ্রী ভারতের ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে রাতারাতি ধনী হয়ে যান এবং একমাত্র ক্ষমতার মোহে ধরাকে সরা জ্ঞান ভাবতে শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে পরেরদিন এই পৃথিবী থেকে তাকে বিদায় নিতে হতো। এভাবে তার ত্রাসের রাজত্ব শুরু। সে একজন সেনা কর্মকর্তার সুন্দরী স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে একটুও বিচলিত হননি। সেই সেনা কর্মকর্তা শেখ মুজিবের কাছে নালিশ নিয়ে গেলে উল্টো চাকরি হারান। “”সম্ভবত এটাই সেই মেজর ডালিমের কথা বলা হচ্ছে”।

শেখ মুজিবের ছোট ভাই শেখ নাসের সুন্দরবনের কাঠ চুরি করে বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতো। ঠিকাদাররা কাজ পেতে হলে শেখ নাসের’কে কমিশন দিতে হতো। অন্যথায় কাজ পেতনা। অথবা কাজ শেষে বিল পেতনা। শেখ নাসের, বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ সামগ্রী ভারতে পাচার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে রাতারাতি বিশাল ধনী হিসেবে পরিচিত লাভ করে। যশোহর থানার ওসি একবার না জেনে শেখ নাসেরের ১২ ট্রাক চাউল আটক করায় ওসিকে থানার ভিতরে থাপ্পর মেরে তার ইউনিফর্ম খুলতে বাধ্য করে, পরে সে চলে যায়।

ফজলুল হক মনি শেখ মুজিবের ভাগ্নে। ফজলুল হক মনির বাড়ি বরিশাল। বংশ পদবী মোল্লা। কিন্তু তার বাবা ঘরজামাই থাকতেন। টুঙ্গিপাড়ায় স্ত্রীর ভাগের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতেন। মনির বাবা কোনদিনও বংশ পদবী বলেননি সকলে তাকে ইন্দু মিয়া বলতো। শেখ মুজিবের ভায়রা শেখ মুসা মনির বাবাকে ইন্দুনিয়া বলতো শেখ মনি ছিল দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। শেখ মুজিবকে কোন মূল্য দিতেন না।

রাজধানী ঢাকায় জমি জালিয়াতি করে দখল করা, ব্যাংক ডাকাতি, দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকা অফিস, জায়গা বাড়িসহ দখল করা, এসবই ছিল শেখ মনির কাজ। শেখ মনির নিজস্ব একটি বাহিনী ছিল। রাজনীতিতে শেখ মনি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মনি, শেখ মনি, শেখ মুজিবকে সবসময় প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে চলতেন।

টুঙ্গিপাড়া থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মুজিবের সম্মুখে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি হতে ঘাড় ধরে বের করে দেয় ফজলুল হক মনি। শেখ মুজিব নিজের জীবন বাঁচাবার জন্য নিজ কন্যা শেখ হাসিনাকে বিবাহ দিতে চেয়েছিলেন মনির সঙ্গে আর বেগম মুজিব চেয়েছিলেন তার ভাগ্নে শেখ শহীদের সঙ্গে কন্যা হাসিনাকে বিবাহ দিতে। পারিবারিক দ্বন্দ্বে ফজলুল হক মনি শেখ শহীদকে শেখ মুজিবের সামনে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি হতে চরম অপমান করে বের করে দেন। শেখ মুজিব ভয়ে কোন প্রতিবাদ করেননি। শেখ মুজিব মনিকে খুব ভয় পেতেন। শেখ মুজিব ভাবতেন। মনি’ শেখ মুজিবের চরম ক্ষতি করবে, অন্য কেউ সাহস পাবে না। কথাটি বাস্তবে ঘটেছিল যার প্রমাণ পরবর্তীতে জানতে পারবেন।

শেখ মো: মুসা শেখ মুজিবের ভায়রা। একই বাড়ি একই ভিটা একই উঠান। শেখ মো: মুসা শিক্ষকতা করতেন। বঙ্গবন্ধু তার আপন ভায়রা হওয়ার কারণে বহু লোককে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেছে। বহুদিন ঘুরাঘুরি করে চাকরি না পেয়ে চাকরিপ্রার্থীরা যখন টাকা ফেরত চাইলেন তখন পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে বিভিন্ন মামলায় জরাবার ভয় দেখাতেন। মামলায় যাবার ভয়ে পরে কেউ আর টাকা ফেরত চাইতো না।

শেখ মো: মুসা একবার গোপালগঞ্জ হতে টুঙ্গিপাড়ার বাড়িতে যাচ্ছিলেন স্পিডবোটে বর্ণী গ্রামের বাওর পার হয়ে যখন খালে প্রবেশ করে তখন সাত বছরের একটি অবুঝ ছেলে বরই গাছে ঢিল মেরে বরই পারবার চেষ্টা করছিল। সাত বৎসরের অবুঝ বাচ্চার একটা ঢিল স্পিডবোটে গিয়ে পড়ে। স্পিড বোর্ড এর কোনো ক্ষতি হয়নি এমনকি কারো গায়ে লাগেনি অথচ শেখ মো: মুসা স্পিডবোর্ড তীরে ভিড়িয়ে সেই সাত বছরের অবুঝ বাচ্চাকে প্রকাশ্য দিবালোকে অসংখ্য মানুষের সামনে পায়ের তলায় পিষে হত্যা করে। সাত বৎসরের অবুঝ শিশু বাঁচার জন্য অনেক কাকুতি-মিনতি করেছিল। বাচ্চার মা বাবাও পা ধরে সন্তানের প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল কিন্তু পাষাণ হৃদয় গলায় কে?

৭ বছরের অবুঝ শিশু ঘটনাস্থলেই প্রচুর রক্তক্ষরণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ভয়ে কেউ ঠেকাতে আসেনি। কারণ তিনি শেখ মুজিবের ভায়রা। শেখ মোঃ মুসার সঙ্গে রক্ষীবাহিনী ছিল। এই নির্মম হত্যার বিচার চাইতে গিয়েছিল থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে। আর সেই বিচারের উত্তরে সেদিন পেয়েছিল থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে চরম লাঞ্ছনা।

সেদিন শেখ মুজিবের সম্মুখে তারই ভাগ্নে ফজলুল হক মনি থানা কমান্ডারকে রাজধানীর ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি থেকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিল এবং বলেছিলো “শেখ পরিবারের লোকেরা এরকম দু’চারটা পায়ের তলায় পিষে ফেললে কিছুই যায় আসে না”। শেখ মুজিব পরে থানা কমান্ডার এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন অথচ মনিকে টু শব্দও করতে সাহস পাননি।

শেখ মুজিবের ভায়রা শেখ মুসার আরো একটি ঘটনা এলাকায় সবাই জানেন। টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিব তার মায়ের নামে শেখ সাহেরা খাতুন রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল তৈরি করেন। হাসপাতালের এক হিন্দু সুন্দরী যুবতী নার্স ছিল সুন্দরী নার্সকে শেখ মো: মুসা বাড়িতে ডেকে পাঠান হাসপাতালের ডাক্তার নার্সকে নির্দেশ দেন মুসা সাহেবের বাড়ি গিয়ে সেবা-যত্ন করার জন্য। শেখ মো: মুসা সুন্দরী নার্সকে রুমের ভেতর জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

নার্স আত্মহত্যা করার হুমকি দেয়। অবশেষে মান-সম্মানের চিন্তা করে সে ডাক্তারের সহযোগিতায় বুঝাতে চেষ্টা করেন যে সে যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তবে তাকে বিবাহ করবে। যদি সে অন্য কোন চিন্তা করেন বা ব্যাপারটা প্রকাশ করে তবে তার বাবা মা ভাই বোনদের হত্যা করা হবে। এই হুমকির ভয়ে বাবা মা ভাই বোনদের কথা চিন্তা করে নার্স শেখ মো: মুসার প্রস্তাবে রাজি হয়।

শেখ মো: মুসা পরবর্তীতে এই কিছুদিন পর তোমাকে বিবাহ করব, কিছুদিন পর ঢাকায় নিয়ে বিবাহ করব ইত্যাদি বলতে বলতে বছর গড়িয়ে যায়। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। শেখ মো: মুসা তখন বিবাহের দিন ধার্য করে কথা মতো নির্দিষ্ট তারিখে মুসা সাহেব’কে বিবাহ করার জন্য তার সঙ্গেই স্পিডবোটে ঢাকার উদ্দেশ্যে টুংগীপাড়া ত্যাগ করে কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, সে নার্স আর কোনদিন ফিরে আসেনি। মধুমতি নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়।

এলাকাবাসীর নদীতে লাশ পেয়ে শেখ মুজিবের নিকট ঘটনাটি জানায় কিন্তু শেখ মুজিব ভায়রার অপরাধ চাপা দেয়। এই ঘটনা যারা শেখ মুজিবকে জানিয়েছিলেন তাদের শেখ মুজিব এবং বেগম মুজিব অর্থ দ্বারা মুখ বন্ধ করে দেন। ঘটনা ওই পর্যন্ত চাপা পড়ে যায়।

শেখ মুজিবের শ্যালক শেখ আকরাম শেখ আকরাম টুংগীপাড়া থানার ওসিকে থানায় ঢুকে স্যান্ডেল দিয়ে পেটান ওসি মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু না বলে বদলি হয়ে যায়। গোপালগঞ্জ মহকুমার এসডিও সাহেবকে বহু লোকের সামনে তারই সরকারি অফিসে ঢুকে চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারেন। মান-সম্মানের ভয়ে এসডিও সাহেব কোন উচ্চবাচ্য করেননি। প্রশাসনের লোক আলোচনা সমালোচনা করেন। ঘটনাটি শেখ মুজিবের কাছে পৌঁছে যায়। অথচ শেখ মুজিব এরও কোন বিচার করেন নি।

অবশেষে লজ্জায় এসডিও সাহেব চাকরি থেকে পদত্যাগ করে বিদেশ চলে যান। এরূপ অসংখ্য অন্যায় কাজ করে গেছেন শেখ পরিবারের লোকেরা। আর পার পেয়ে গেছেন শুধুমাত্র শেখ মুজিবের কারণে। অথচ একটি অন্যায়ের বিচার ও শেখ মুজিব করেননি। মানুষের অভিশাপ শেখ পরিবার এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন পাপের পালা, ক্রমে ক্রমে ভারী করে তুলেছিল। পাপ কোনদিন ক্ষমা করেনি, করেও না। সত্য প্রকাশ পাবেই, তবে সত্যের জয় দেরিতে হলেও হবে। এটাই নিয়ম এটাই সত্য।

এ. আর. ভূঁইয়া
গণতন্ত্রের কবর
বইটির স্বত্বাধিকারী নিজ। বইটি বিক্রির জন্য নহে।
বইটির প্রথম প্রকাশ আজ থেকে ৩৩ বছর আগে।
Translate by Shamim Bakhtiar.

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও গণতন্ত্র

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে জমে উঠছে আকর্ষণীয় দ্বৈরথ,
দুরন্ত পেস এটাক আর মায়াবী স্পিনের আক্রমণ সাজিয়ে
কখনো বোলারের ইনসুইং, কখনো আউট সুইং বা কাটার,
জবাবে ব্যাটসম্যানের বুক চেতানো অফ, অন ড্রাইভ, হুক, পুলের শৌর্য !
স্ট্যাম্পড, কট বা বোল্ড আউটের বিপরীতে সীমানা ছাড়ানো ছয় বা চার,
দর্শক উত্তেজনার পারদ চড়ায় প্রতি পলে পলে।
সম শক্তির দ্বৈরথে এইতো হয়, ঘাত প্রতিঘাতেই আসে সাফল্য,
শক্তির নিত্যতা সূত্রের মতো অমোঘ নিয়মের ব্যতিক্রম শুধু এই দেশে !

শব্দহীন স্বাধীনতার শঙ্খনীল কারাগারে বন্দি অহর প্রহর,
অনির্বাচিত শাসনে জব্দ সব ভিন্নমত, উচ্ছল কলকণ্ঠ I
প্রতিবাদী যৌবন পলাতক দেশের বিস্তীর্ণ পথ প্রান্তরে,
ক্ষমতাসীন রাজনীতির বাইশ গজে সমশক্তির কোনো দ্বৈরথ নেই I
প্রতিপক্ষের ধারালো বোলিং অস্ত্র নেই, আক্রমণ প্রতি আক্রমণের শংকা নেই,
তবুও ভয়াল কোন ইনসুইংয় শংকায় অষ্টপ্রহর কাপে সরকারি ব্যাটসম্যান !
শুভবাদের মিডিয়াম পেসেই একের পর এক সরকারি উইকেট পতন,
নীতি, ন্যায়, শুভ ও সত্যের উইকেট হারিয়ে ইনিংস চলে খুঁড়িয়ে… I

উদার গণতন্ত্র, সুশাসন আর উন্নয়নের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিশ্বকাপে
এমন দল হয় কি কখনো বিজয়ী? পেতে পারে কি কোনো ফেয়ার প্লে ট্রফি ?

মাইডাস টাচ

পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার ‘মাইডাস টাচ’ বাজেট স্পর্শে,
ক্ষুধা কাতর মানবাত্মার হলো কি কোনো পয়মন্ত প্রাক্কলন?
কথা ছিলো মধ্যম আয়ের এই দেশে বাজেট স্পর্শে
ক্রমশ বিলীন হবে অবিনাশী দারিদ্র্যের প্রলয় অশ্রুজল I
অতলান্ত উন্নয়নের জোয়ার, সুখ সমৃদ্ধির প্লাবনে দেশ আমার,
হবে দূর প্রাচ্যের কোনো সিংহ নগরী বা নিখোঁজ আটলান্টিস !
কিন্তু ‘কেউ কথা রাখেনি’-র বরুনার মতোই ধোকা দিয়েছে কেউ,
অপ্রাপ্তির ডালি সাজিয়ে ফোটা গোলাপে আজ মৃত শবের গন্ধ!
সোনার ধানের সোনালী খাঁচায় বন্দি কৃষক সোনালী আগুনে অঙ্গার,
নিষিদ্ধ নৈবদ্য বাজিয়ে বুঝি চলবে অন্ত্যজের অন্তহীন আরতি !
নুন আন্তে পান্তা ফুরোনোর পুরোনো গল্পেই রাত কাবার,
ধুর শালা, কে শোনায় আবার সোনালী ভোরের কল্পগল্প!
‘মাইডাস টাচ’ বাজেট স্পর্শেও অপাঙতেয় আমি অন্ত্যজ অস্তিত্বে,
অস্তিত্ব বিনাশী পরিচয়ে হয়ে গেছি রাজা মাইডাসের গড়া নিস্প্রান স্বর্ণমূর্তি !

*********
ইংরেজি ফ্রেজ ‘মাইডাস টাচ’ মানে হলো যে স্পর্শে সব কিছু সোনা হয় । গ্রিক মিথলজির রাজা মাইডাস দেবতার বরে যা স্পর্শ করতেন তাই স্বর্ণ হয়ে যেত। একদিন ভুল করে রাজা মাইডাসের স্পর্শে তার একমাত্র মেয়ে প্রাণহীন সোনার মূর্তিতে পরিণত হন । সেই শোকে রাজা মাইডাস মৃত্যুবরণ করেন I

গুগল স্ট্রিট ম্যাপ

প্রবাসের জীবন জঠরে দিনগুলো যায় গুগল স্ট্রিট ম্যাপ দেখে,
আকাশের ঠিকানা থেকে তোলা পৃথিবীর কত ছবি !
আটলান্টিকের এপার ওপর কসমোপলিটান নিউয়র্ক.
লন্ডন, প্যারিস, রোম, স্টকহোম কত শহর!
প্রশান্ত পারের লস এঞ্জেলস পার হয়ে দৃষ্টি ফেরাই অন্য পারে
সব ছাড়িয়ে দৃষ্টি খোঁজে ফেরে আমার প্রিয় দেশটা।
ছোট বেলা থেকে চেনা জানা দেশটার গ্রামীণ সবুজ,
হলুদের চাদোয়া ঢাকা ধান, সর্ষের ক্ষেত, রাঙা মাটির পথ!
মফস্বলের ব্যস্ত সরু রাস্তা, পলেস্তরা খসে যাওয়া বাড়ি,
রিকশা সেই আগের মতোই আছে।
রাজধানীর এলো পাথাড়ি উড়াল সেতু, স্কাইস্ক্র্যাপার,
বদলে যাওয়া বিমানবন্দরের নাম প্রথমেই চোখে পরে।
অভিজাত পাড়ার প্রশস্থ রাজপথ, সারি সারি আলিশান বিল্ডিং,
জাক জমকপূর্ণ সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, বঙ্গভবনের জেল্লায়
এখনো চোখ জুড়ায়।
আহা মধ্যম আয়ে উন্নীত আমার জন্মভূমি !

আমার চোখ খোঁজে বাংলাদেশের শহর, বন্দরে কিছু হারানো মুখ,
যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে উচ্চকিত হয়েছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ।
ঢাকা ইউনিভার্সিটির উচ্ছল দিনগুলোর সৃষ্টি কিছু বুক চেতানো যুবক,
তাদের খোঁজে আমার এই চোখ গুগুল স্ট্রিট ম্যাপের নিরপেক্ষ ঠিকানায়।
তাদের শাব্দিক উচ্ছাসে মুখরিত হয়না দেশের কোনো
নগর, রাজপথ বা গ্রামীণ সবুজ।
ছদ্মবেশী গণতন্ত্রের আড়ালে কালো মেঘের কালবৈশাখী আজ
আইনশৃঙ্খলা ও বিশেষ বিশেষ বাহিনী।
অপশাসনের গুম, খুনের কালবৈশাখীতে,
ঝরে গেছে সেই অপাপবিদ্ধ কলিগুলো বড় অসময়ে।
মা’র অশ্রুজল আজও বয় বন্যা ধারায় না ফেরা খোকার খোঁজে।
গাঙ্গেয় উপত্যাকার এই বৃহত্তম ব-দ্বীপের সবুজে, অলি গলিতে,
কোথাও তাদের কোনো খোঁজ নেই, তাদের শবের গন্ধ নেই!
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সুবোধ নিষ্পাপ প্রেসনোটে বিশ্বাসহারা মন,
তাই গুগুল স্ট্রিট ম্যাপে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে খুঁজি তাদের ঠিকানা।
কোনো ভগ্ন পরিত্যাক্ত কবরস্থানেও যদি মেলে ভাঙা তাদের নাম ফলক !

কোনো একটি পবিত্র গোলাপের সন্ধানে

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের।
যে গোলাপ মধুকরের গুঞ্জন শুনবে না,
অসূর্য্যস্পর্শা কোনো আধার যার পাপড়ি ছোঁবে না।
শুধু রাতের শিশির ঝরবে যার গায়ে
মুছে দিতে দিনের ধুলো, ধোয়া, ক্লান্তি এবং ক্লেদ।

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের ।
যে গোলাপ স্বৈরাচারের গলায়
শুভেচ্ছা মালা হয়ে ঝুলবে না।
কোনো স্বৈরাচারের আগমনী তিথি,
যার সৌরভে হবে না সুরভিত কোনোদিন।

দেশে আজ অজস্র গোলাপের ছড়াছড়ি,
কিন্তু আজও সে গোলাপ কোনো কলি গর্ভে ধরেনি।
এই হতভাগ্য দেশের কোনো বনে বা বাগানে ফোটেনি,
রাজধানীর অভিজাত ফুলের দোকানেও অদৃশ্য সেই গোলাপ।
গোলাপ আজ ব্যক্তি পূজা, স্তব আর বাণিজ্য উপকরণ,
মিথ্যা নেতৃত্বের স্তবগানে গোলাপ হারিয়েছে তার পবিত্র সত্তা।

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের।
দেশের সব গোলাপ হারিয়েছে তার সব সৌরভ, গৌরব,
সারা দেশ খুঁজে আমি পেলাম না একটিও পবিত্র গোলাপ।
যার গায়ে আঁধারের ছায়া নেই, ক্লেদাক্ত বৃষ্টির ছোয়া নেই,
যা দিয়ে করি তোমার ভালোবাসা স্তব।