কথায় আছে, ‘ভুল মানুষেরই হয়! ভুল হয় না শয়তানের।’ তাই আমারও ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক! কারণ আমিও তো একজন মানুষ, তাই। তবে জীবন চলার পথে অনেক ভুলই আমার হয়েছিলো। যেমন– চলার পথে রাস্তা ভুলে গিয়ে অন্য রাস্তায় চলে গিয়েছিলাম। ভুল করে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আবার ঠাণ্ডা পানি মনে করে সেভেনাপ গিলে ফেলেছিলাম। ভুল করে টিপ তালার চাবি ঘরে রেখে দরজায় তালা ঝুলিয়ে গিয়েছিলাম। তরকারির রান্না করার সময় লবণ মনে করে চিনি দিয়েছিলাম অনেকবার! ভোররাতে অন্ধকার ঘরে নিজের লুঙ্গি মনে করে গিন্নীর পেটিকোট পরে রাস্তায় বেরিয়েছিলাম একবার। রাস্তায় হেঁটে যাওয়া অন্যের স্ত্রীকে পেছন থেকে নিজের স্ত্রী ভেবে নাম ধরে ডেকে ক্ষমাও ছিলাম। নিজের ঘনিষ্ঠ পরিচিত মনে করে অন্যজনকে জড়িয়ে ধরিয়ে সরিও বলেছিলাম। নিজের বাবা মনে করে অন্যজনকে বাবা বলে ডেকে লজ্জায় মাথা নিচু করেছিলাম। ভুল করে দোকানে বা যাত্রীবাহী বাসে মোবাইল ফেলে চলে এসেছিলাম। ভুল করে অপরিচিত নাম্বারে কল করেছিলাম অহরহ! তা এখনও সময় সময় হয়ে থাকে। ভুল করে গুরুজনের সাথে অন্যায় করে মাপও চেয়েছিলাম। হিসাবের খাতায় ভুল তো এখনো হয়। ভুল করে প্রেমে করেছিলাম। তারপর বিয়ে। এমন হাজার রকমের ভুলের মধ্যে কয়েকটা ভুলের কথা আজও ভুলতে পারছি না। যেই ভুলগুলো আজও নিজের মনটাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, সেই ভুলগুলোই আজ সবার মাঝে তুলে ধরলাম।
ভুল-১
তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। সময়টা হতে পারে ১৯৭৪ সাল। তখন আমরা সপরিবারে থাকতাম, নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন লক্ষ্মণ খোলা সংলগ্ন আদর্শ কটন মিলের ভেতরে শ্রমিক কলোনিতে। আমার বড় দাদা চাকরি করতেন আদর্শ কটন মিলে। আর বাবা চাকরি করতেন শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাড় সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল এলাকায় চিত্তরঞ্জন কটন মিলে। একদিন সকালবেলা বাবা চিত্তরঞ্জন মিলের উদ্দ্যেশে বাসা থেকে বের হয়। এরপর আমার মা আমাকে বললো, ‘তাড়াতাড়ি গিয়ে তোর বাবাকে বল, মিল থেকে বাসায় আসার সময় যেন আমার জন্য পান সুপারি নিয়ে আসে।’ ততক্ষনে আমার বাবা বাসা থেকে বেরিয়ে গুদারা ঘটে গিয়ে পৌঁছায়।
আমি মা’র কথা শুনে বাবাকে পান সুপারির কথা বলতে দৌড়াচ্ছিলাম। দৌড়াচ্ছি আর দেখছি বাবা মিলের ডিউটি ধরার জন্য দ্রুত হেঁটে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই, পেছন ফিরে তাকাচ্ছে না। আমিও বাবা বাবা বলতে বলতে একসময় বাবার খুব কাছে পেছন থেকে জোরে বাবা বাবা বলে ডাক দিতেই বাবার মতো লোকটি পেছন ফিরে তাকালো। হায় হায়! এ দেখছি আমার বাবা নয়! লোকটি ছিলো অপরিচিত অন্য একজন পথচারী। কিন্তু পেছন থেকে লোকটিকে দেখতে হুবহু আমার বাবার মতই দেখা যাচ্ছিল। তারপর আমার ডেকে লোকটি দাড়ালো। জিজ্ঞেস করলো, ‘এই বেডা, আমারে কিছু কইতাচস?’ আমি অক্কার মা টক্কা হয়ে শরমে মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিলাম, না। লোকটা আমার ভুল হয়েছে বুঝতে পেরে মুচকি হেসে উনার পথে উনি চলে গেলো।
ভুল-২
একসময় আমি আর আমার বড় দাদা ফতুল্লা কাঠের পুল মিলন টেক্সটাইল মিলে কাজ করতাম। আমরা দুই ভাই একজোড়া তাঁত পার্মানেন্ট চালাতাম। বড় দাদা কাজ করতো দিনে, আর আমি করতাম রাতে। তখন আমাদের ফ্যামেলি বাসা ছিলো, নারায়ণগঞ্জ গলাচিপা গোয়াল পাড়া। ফতুল্লা মিলন টেক্সটাইল থেকে আমাদের বাসার দূরত্ব ছিলো প্রায় ৪ কিলোমিটার। প্রতিদিন এই ৪ কিলোিটার পথ পায়ে হেঁটে আসা-যাওয়া করে কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না। আবার তখনকার সময়ে নারায়ণগঞ্জ-টু-ঢাকা যাত্রীবাহী মুড়ির টিন করে আসা-যাওয়া করাও সম্ভব ছিলো না, টাকার খুবই দাম ছিলো বলে।
যদিও তখন নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা সদরঘাট পর্যন্ত মুড়ির টিন স্টার্টবাসে জনপ্রতি ভাড়া ছিলো ১.৫০ পয়স। নারায়ণগঞ্জ থেকে ফতুল্লা পোস্ট অফিস পর্যন্ত ভাড়া ছিলো ০.৬০ পয়সা। তবুও এই ০.৬০ পয়সা করে আসা-যাওয়ায় জনপ্রতি ১.২০ পয়সা খরচ করা কিছুতেই সম্ভব ছিলো না। কারণ প্রতিদিন দুইজনের আসা-যাওয়ায় খরচ ২.৪০ পয়সা তখনকার সময়ের জন্য ছিলো অনেককিছু।
তাই আসা-যাওয়ার খরচ বাঁচানোর জন্য আমরা দুই ভাই মিলের ভেতরেই ব্যাচেলর শ্রমিকদের সাথে আলাদা থাকতাম। প্রতি বৃহস্পতিবার সপ্তাহের বেতন পেয়ে বাসায় যেতাম। শুক্রবার ঘোরাফেরা করে আবার শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ গোয়াল পাড়া থেকে পায়ে হেঁটে ফতুল্লা মিলন টেক্সটাইল মিলে যেতাম। রান্না-বান্না মিলের ভেতরে ব্যাচেলর কোয়ার্টারে নিজেদের টা নিজেরাই করতাম। দশজনের সাথে মিলে-মিশে ম্যাচে খেতাম না। তো প্রতিদিন আমাদের দুই ভাইয়ের রান্না-বান্না টা বেশিরভাগ সময় আমার কাঁধেই পড়তো। কারণ আমি রাতে ডিউটি করে সারাদিনই থাকতাম ফ্রি, তাই। একদিন সকালবেলা ডিউটি শেষ করে মিলের কোয়ার্টারে এসে হাতমুখ ধুয়ে চা দোকানে গেলাম। চা-বিস্কুট খেলাম। সিগারেট টানলাম। চা দোকান থেকে কোয়ার্টারে আসার সময় নিজের প্রয়োজনমতো কয়েকটা সিগারেট সাথে নিয়ে গেলাম।
ব্যাচেলর রুমে গিয়ে ভাতের হাঁড়িতে দুই ভাইয়ের একবেলা খাবারের আন্দাজমত চাল নিলাম। চালগুলো ধুয়ে স্টোভ জ্বালিয়ে ভাতের হাঁড়ি স্টোভের উপরে বসালাম। স্টোভ জ্বলছে। ভাতের হাঁড়িতে থাকা চাল-সহ পানি গরম হচ্ছে। আমি সারারাত জেগে তাঁতের কাজ করাতে আমার ছিলো ঘুমের ভাব। তখন চোখে ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে চৌকির উপরে শরীরটাকে লেলিয়ে দিলাম। হাতে ছিলো একটা সিগারেট জ্বালানো। দুই আঙুলে চিপায় সিগারেট রেখে কাত হয়ে কোমড়ের উপরে হাত রেখে শুয়ে রইলাম। যেই হাত কোমড়ের উপরে ছিলো, সেই হাতেই ছিলো জলন্ত সিগারেট। হাতে সিগারেট নিয়েই কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম, তা আর একটুও টের পাইনি। এই ঘুমের মাঝেই আমার জ্বালানো সিগারেটটা আঙুলের চিপা থেকে পরনের লুঙ্গিতে পড়ে যায়। সাথে সাথে পরনের লুঙ্গি পুড়তে থাকে। কিন্তু আমি একটুও টের পাচ্ছিলাম না।
টের পেয়েছি তখন, যখন আঙুলের চিপা থেকে সিগারেট পরনের লুঙ্গি পড়ে জ্বলতে জ্বলতে নিজের পা পুড়ছিলো, তখন। সিগারেটের আগুনে যখন পরনের লুঙ্গি পুড়ে পা পুড়ে যাচ্ছিল, তখন ঘুম থেকে জেগে দেখি, আমার পরনের নতুন লুঙ্গিটা জ্বলছে। আবার লুঙ্গির আগুনে আমার দুই পায়ের হাঁটুর উপরিভাগে ঠোসা পড়ে গেছে। ভাতের হাঁড়ির পানিও শুকিয়ে গেছে। তখন বিছানা থেকে তাড়াতাড়ি লাপ দিয়ে উঠে হাউমাউ করে চিল্লাতে চিল্লাতে লুঙ্গির আগুন নেবাতে থাকি। আমার ডাক চিৎকার শুনে পাশের রুম থেকে আরও কয়েকজন তাঁতি দৌড়ে আসলো। মিল থেকে বড় দাদা-সহ আরও অনেকই এসে জিজ্ঞেস করলো, ‘ঘটনা কী?’ সাথের শ্রমিক ভাইয়েরা আমার বড় দাদাকে পোড়া লুঙ্গিটা দেখিয়ে বললো, ‘দেহেন বাবু আম্নের ছোডু ভাইয়ে কারবার!’ বড় দাদা কপালে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলো, ‘এভাবে নতুন লুঙ্গিটার অর্ধেকের বেশি পুড়লো কীভাবে?’ সবাই হাসতে হাসতে বললো, ‘আরে বাবু, শয়তানে বোমা ফাডাইছে!’
ভুল-৩
আমার একটা ভালোবাসার কুকুর ছিল। এখনো আছে। আদর করে ওর নাম রেখেছিলাম ‘ধলু’। আমি থাকি পরের বাড়িতে ভাড়া। এক বাড়িতে শুধু আমিই ভাড়াটিয়া নয়, একসাথে আরও অনেকেই ভাড়া থাকে। আবার ভাড়া বাড়ির পাশে আরও অনেকের বাড়ি থাকে। পাশের বাড়িতেও কুকুর আছে। এমনিতেই একটা কুকুর আরেকটা কুকুর দেখলেই শত্রু ভেবে ঘেউ-ঘেউ করতে থাকে। আমার ভালোবাসার ‘ধলু’ গরিবে ‘ধলু’ হলেও, ও কখনোই নিজেকে গরিব ভাবতো না। পাশের বাড়ির বড়লোকের কুকুর দেখলেই ‘ধলু’র ঘেউঘেউ শব্দে আরও দশটা বাড়ির লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়তো। সাথে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়তো আমার পাশে থাকা ভাড়াটিয়ারা। কিন্তু ‘ধলু’ কাউকে কামড় দিতো না। তারপরও পাশের বাড়ির বড়লোকদের জ্বালায় আমার ‘ধলু’কে আর ভাড়া বাড়িতে রাখতে পারলাম না৷ একসময় ভালোবাসার আদরের ‘ধলু’কে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড় নিয়ে ছেড়ে দিই। সময়টা তখন করোনা কালের লকডাউনে আলামত। তখন নদী পারা-পারে নিয়জিত থাকা প্রায় খেয়া নৌকাও ছিলো বন্ধ। কিন্তু নদী পাড় হতে আমার ‘ধলু’র নৌকার প্রয়োজন হতো না। ও সাঁতরে নদীর পূর্ব পাড় থেকে পপশ্চিম পাড়ে চলে আসতে বীরদর্পে। আবার নিয়ে যেতাম শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়। এভাবে তিন-চার দিন এপার-ওপার করার পর এখন ‘ধলু’ শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়েই স্থায়ীভাবে বসবাস করছে।
ক’দিন আগে ‘ধলু’কে দেখতে গিয়েছিলাম নদীর পূর্ব পাড় চৌরাপাড়া এলাকায়। অনেক খোঁজা-খুঁজির পর ‘ধলু’র সন্ধান পেলাম। নিয়ে গেলাম একটা চা দোকানে। ‘ধলু’কে তিনটা পাউরুটি খাওয়ালাম। আমি চা-বিস্কুট খেলাম। এরপর ‘ধলু’র সাথে খেলা করতে করতে দোকান থেকে বের হলাম। দোকানদার আমার দিকে চেয়েই থাকলো, কিছুই বললো না। আমিও ‘ধলু’র কাছ থেকে কেটে পড়তে পারছিলাম না। ‘ধলু’ কিছুতেই আমার পিছু ছাড়ছিল না। তখন একটা ব্যাটারি চালিত রিকশা ডেকে বললাম, ‘ভাই, আপনার রিকশার যত স্প্রিরিট আছে, সেই স্পিরিটে রিকশা চালাবেন। কারণ এই ‘ধলু’র থেকে আমাকে আড়াল হতে হবে।’ আমার কথা শুনে রিকসাওয়ালা রাজি হলো। আমি রিকশায় উঠলাম। রিকশা চলছে দ্রুত গতিতে। রিকশার পেছনে পেছনে আমার ভালোবাসার ‘ধলু’ও দৌড়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দৌড়াচ্ছে।
এভাবে প্রায় এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর ‘ধলু’কে রাস্তার আরও কয়েকটা কুকুরে আক্রমণ করে ফেললো। ‘ধলু’ অপরিচিত কুকুরগুলোর সাথে ফাইট শুরু করে দিলো। সেই সুযোগে আমি রিকশা নিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে আবার সেই বাজারে সেই দোকানের সামনে আসলাম। দোকানদার তার বেচা বন্ধ করে আমার দিকে তাকাচ্ছিল। আমি দোকানদারে দিকে চেয়ে লজ্জায় পড়ে গেলাম! দোকানদারে সামনে গিয়ে ১০০/= টাকার একটা নোট বের করে দিয়ে বললাম, ‘ভাই তখন আমার ‘ধলু’র থেকে কেটে পড়ার টেনশনে ছিলাম। তাই আপনার পাউরুটি আর চায়ের দাম দিতে ভুলেই গিয়েছিলাম। এখন আপনার রুটি চায়ের দামটা রেখে দিন। দোকানদার মুচকি হেসে আমার হাত থেকে ১০০/=টাকার নোট খানা নিয়ে আমাকে ৬৫/=টাকা ফেরত দিয়ে বললো, ‘ভাই, সত্যি আমি কিছু মনে করেনি। ভুল তো মানুষেরই হয়! আপনারও হয়েছে, তাতে কী আর এমন হয়েছে!’
ভুল-৪
গেলো ক’দিন আগে সকালবেলা অফিসে গেলাম। অফিসের কাজ সেরে টিক দুপুরবেলা বাসায় ফিরলাম। গিন্নী আমার আগেই খেয়ে-দেয়ে আশা সমিতির একটা মিটিংয়ে যোগ দিতে বাসা থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেলো। যাবার আগে আমাকে বলে গেলো, ‘খাওয়া-দাওয়া কইরা যদি কিছু থাহে, তাইলে ফ্রিজে ঢুকাইয়া থুইও।’ আমি মাথা নেড়ে গিন্নীকে সায় দিলে, গিন্নী তার নিজের কাজে চলে যায়। আমি স্নান করে মনের আনন্দে খেতে বসলাম। মনের আনন্দ শুধু গুড়া মাছের তরকারির জন্য। সেদিন গুড়া মাছ রান্না হয়েছিলো। ভাত খেতে বসে গুড়া মাছের তরকারির ঝোল দিয়ে ভাত মেখে প্রথম নলা মুখে দিয়ে দেখি তরকারিতে লবণ বেশি! মনের আনন্দটা মুহূর্তেই বিলীন হয়ে গেলো। কী আর করা, নামমাত্র দু’মুঠো খেয়ে বাদবাকি তরকারি ফ্রিজে রেখে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম থেকে উঠলাম বিকাল পাঁচটার সময়।
ঘুম থেকে উঠেই ভাবছি শখের গুড়া মাছের তরকারির কথা। ভাবলাম স্বাদের তরকারিতে আরেকটু জল মিশিয়ে গ্যাসের চুলায় গরম করলেই তো তরকারির লবণ ঠিক হয়ে যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। ফ্রিজ থেকে তরকারির বাটি বের করলাম। বাটি থেকে তরকারি গুলো একটা ছোট কড়াইতে ঢেলে এর সাথে পরিমাণমতো জল মেশালাম। গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে তরকারির কড়াই বসালাম। চুলা জ্বলছে। স্বাদের গুড়া মাছের তরকারিও গরম হচ্ছে। আমি ঘরে এসে মোবাইল অন করে অনলাইন বিডিনিউজ ২৪ -এ দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির খবর পড়ছি। কয়েকটা ব্লগে পরিচিত ব্লগারদের লেখা পড়ছি। পোস্টে মন্তব্য করছি। বেশ কিছুক্ষণ পর নাকে পোড়া পোড়া গন্ধ লাগলো! ওমনি মোবাইল রেখেই রান্নাঘরে গিয়ে দেখি আমার স্বাদের গুড়া মাছের তরকারি পুড়ে ছাঁই হয়ে মৌ-মৌ পোড়া গন্ধে পুরো বাড়ি দুর্গন্ধে একাকার। কী আর করা! নিজের কপালে তিন-চারটা থাপ্পড় মেরে চুলা থেকে তরকারির কড়াই এনে খানাডুলিতে রেখে আবার অফিসের কাজে বেরিয়ে গেলাম। রাতে বাসায় এসে দেখি গিন্নী মুখ ভার করে বসে আছে! আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আমি নরম গলায় বললাম, ‘ভুল তো মানুষেরই হয়!’
ছবি গুগল থেকে সংগ্রহ।