যে সমাজে নিরাপত্তা নেই, যে সমাজে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি তো দূরের কথা আড়াই বছরের বালিকা পর্যন্ত ধর্ষিতা হয়, সাত বছরের বালিকা যেখানে গ্যাং রেপের শিকার হয় সেখানে ভবিষ্যত প্রজন্মকে বড় করে তোলা কিংবা নিজে একটুকু ভালো থাকার আশায় একটা চাকুরি, সুন্দরী স্ত্রী, একটা বাড়ি করার স্বপ্ন বড় বেমানান জিনিস।
এখানে সন্ত্রাসী, র্যাব পুলিশ যোগসাজস করে ৭টা মানুষকে তুলে নিয়ে হত্যা করে ফেলে। লাশ গোপন করার জন্য পেট ফেড়ে শরীরে ইট বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেয়, ঘর থেকে তুলে নিয়ে গুম করে ফেলা হয় সেই সমাজে সুদ-ঘুষের হারাম উপার্জন দিয়ে সন্তান বড় করে লাভ কী? কোথায়, কোন পৃথিবীতে আমরা তাদেরকে রেখে যাচ্ছি? একটিবার ভেবে দেখেছেন আমাদের চলে যাওয়ার পর তারা কোথায়, কোন দুনিয়ায় গিয়ে পড়বে?
আমরা কিন্ত মনে করছি আমরা তাদের ভালোটাই করার চেষ্টা করছি। তাদেরকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করছি, আরাম-আয়েশের জীবন দিচ্ছি। কিন্তু তাদের উপকার করতে গিয়ে আমরা যে খাল কাটছি সেই খাল বেয়ে একদিন কুমির আসবে আপনার আপনার আমার সন্তানকে গিলে খেতে। সেই কাজটা আমরাই করে যাচ্ছি। আমরা ঘুষ দিয়ে চাকুরি নিচ্ছি, টেন্ডার বাগাতে বড় কর্তাদেরকে খুশি রাখার চেষ্টা করছি। এভাবে অসৎপথের একটা জোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
আজকে পুলিশের কিংবা সরকারি চাকুরি করতে যতটাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে তার পরিমাণ আগামী দশ বছর পরে কতগুণ বৃদ্ধি পাবে সেটা আপনারাই চিন্তা করুন। আপনার আমার সন্তানের উপর তখন চাপটা কত পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে সেটাও ভেবে দেখুন। আর তারাও অনুরূপ আত্মসার্থ বিবেচনা করতে গিয়ে একসাথে কয়টা খুন করতে পারে সেটাও অনুমান করুন। খুন করে গুম করাতো তখন আরো স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে যাবে। রাখঢাক করে অবৈধ উপার্জন হবে না। বরং কে কত মারতে পারে সেটা দিয়ে মর্যাদা নির্ণয় হবে।
সুতরাং, আসুন চিন্তা করি কোথা বাঁধছি ঘর? কিসের উপর বানাচ্ছি স্বপ্নের আবাসন? কোনদিকে ঠেলে দিচ্ছি আগামী প্রজন্মকে? অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে তাদেরকে আপাত ভালো রাখতে গিয়ে কত বড় ক্ষতি করছি সেটাও আসুন ভেবে দেখি।
সুতরাং, আসুন চিন্তা করি কোথা বাঁধছি ঘর? কিসের উপর বানাচ্ছি স্বপ্নের আবাসন? কোনদিকে ঠেলে দিচ্ছি আগামী প্রজন্মকে? অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে তাদেরকে আপাত ভালো রাখতে গিয়ে কত বড় ক্ষতি করছি সেটাও আসুন ভেবে দেখি।

নতুন অথবা আগামী প্রজন্মকে আমরা কোথায় গন্তব্য করে দিচ্ছি কেউ ভাবি না।