ঘুম
তোমরা বল মৃত্যু;
আমি বলি ঘুম,
লম্বা একটা ঘুম;
ইস্পাত কঠিন অভঙ্গুর একটা ঘুম;
ডাক্তার বৈদ্য কবিরাজ কারো সাধ্য নেই এ ঘুম ভাঙানোর,
খুব হঠাৎ
অসময়ে
অনিচ্ছায়
স্বপ্নহীন চির চোখ বন্ধ হয়ে যাওয়া এক ঘুম,
তোমরা যাকে মৃত্যু বল;
একদিন খুব হঠাৎ আমিও ঘুমিয়ে পড়ব,
চিরঘুমে;
আমার ঘুমে কিছু আসবে যাবে না পৃথিবীর,
যথারীতি ভোর হবে পাখি ডাকবে
সকাল হবে সূর্য উঠবে
নীলাকাশে সাদাকালো মেঘ ভাসবে
দুপুর রোদে ঘাম হবে
বিকেল বেলায় হলুদ সূর্যে প্রেমিক প্রেমিকার মন খারাপ
সন্ধ্যেবেলায় সূর্য ডুববে
রাতে উঁকি দেবে চাঁদ
কখনো জ্যোৎস্না হবে
কখনো চাঁদ লুকোবে অমাবস্যায়
আকাশ জোড়া তারার মেলা
আরও কত কই?
পৃথিবী ঘুরবে তার অক্ষ-পথে সূর্যের চারিদিকে
আপন মনে;
শুধু আপনজনরা আমায় ঘিরে থাকবে
অনেক আদরে ডাকবে
কান্নাস্বরে ডাকবে ঘুম ভেঙে উঠে বসতে
আমি তখনো ঘুমোতেই থাকব
অভঙ্গুর চিরঘুমে;
বাসা ভরা লোক আসবে
আত্মীয়স্বজনদের মন খারাপ
মলিন মুখে একপাশে একঠায় দাঁড়িয়ে বন্ধুবান্ধব
স্ত্রী পুত্র কন্যারা আকুল কাঁদছে
আমি সব দেখছি ঘুমের ভেতর
খুব ঘুম ভেঙে উঠতে ইচ্ছে করছে
ইচ্ছে করছে তাঁদের সান্ত্বনা দিতে
অবশ হয়ে আসা হাত পা
অসাড় দেহ সাড়া দিচ্ছে না আমার কথায়
আমি ঘুমঘোরে
চিরঘুমে;
আপনজনরা আমায় গোসল করাচ্ছে বড়ই পাতায় গরম জলে
আমার বড্ড শীত শীত লাগতেই
সাদা কাপড়ে জড়িয়ে দিচ্ছে অনেক আদরে
কাঠের খাটিয়ায় শুইয়ে দিচ্ছে নাকে তুলো গুঁজে
জানাজায় অনেক অনেক লোক জড়ো হয়েছে
আমার খাটিয়া কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছে কবরস্থানে
শুইয়ে দিচ্ছে ছোট্ট সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে
আমি সব দেকছি শব হয়ে
শুয়ে থেকে গভীর ঘুমে;
এরপর ছোট্ট ঘরে বাঁশের বেড়া
তার ওপর মাটি পড়ছে কোদাল কোদাল
আমি অন্ধকার ছোট্ট ঘরে
গভীর ঘুমে;
তোমরা যাকে মৃত্যু বলো।
"ঘুমে কিছু আসবে যাবে না পৃথিবীর,
যথারীতি ভোর হবে পাখি ডাকবে
সকাল হবে সূর্য উঠবে
নীলাকাশে সাদাকালো মেঘ ভাসবে
দুপুর রোদে ঘাম হবে। " ___ এটাই বাস্তবতা প্রিয় কবি।
হুম ভাই
মন বিষণ্ন করা লেখা কবিতা কবি জীবনবাবু।
মৃত্যুর কথা মন বিষণ্ণ করে দেয়
দারুণ।
ধন্যবাদ ভাই