রুনুর মা সাধারণ মানুষ। অতি সাধারণ। বাড়ি উত্তরবঙ্গে। জীবন ফেরাতে ঢাকায় এসেছিলেন। গৃহকর্মীর কাজ করতেন। দিনমজুর স্বামী, শিশুপুত্র আর কিশোরী কন্যাকে নিয়ে শহরের এক ঝুপড়ি বস্তিতে প্রশ্নহীন ভালো ছিলেন। শস্তা স্কুলে পড়ুয়া ছেলে মেয়েকে ঘিরে দিনবদলের দামী স্বপ্ন দেখেছিলেন।
আমাদের দেশপ্রেমিক নেতারা সর্দি হলেও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর আমেরিকায় যান। তিনি ঢাকা শহরের সাধারণ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যায় চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। তাই উপজেলার এনজিওর এক হাসপাতালে গিয়েছিলেন। যদিও উন্নয়নের জোয়ারে নেতার মত তারও বার্ষিক গড় আয় সরকারি হিসাবে হাজার ডলার।
রুটিরুজির জীবন ঢাকায় বাঁধা। তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ঢাকায় যাত্রা করেছিলেন। সাথে দিনমজুর স্বামী আর পুত্র কন্যা। মেহনতী মানুষের গাদাগাদি ভীড়ে বাসের পেট ভরে গিয়েছিল। ৬০টা অতি সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের স্বপ্ন, আশা, দ্রোহ, লড়াই, প্রেম, ভালোবাসা, ক্ষোভ আর সব কিছুকে তুচ্ছ করে বেচে থাকার প্রতিদিনের লড়াইকে বোঝাই করে ছুটেছিলো ৫২ সিটের বাস।
হঠাৎ বাসের ভিতরে পেট্রোল বোমা। দাউদাউ আগুন। চিৎকার, আহাজারী, কাতরানি। ঝলসে যাচ্ছিল সব। পুড়ে যাচ্ছিল সব। শীতের বাতাসে হুহু করে ছড়িয়ে পড়ছিলো মানুষের মাংস পোড়ার গন্ধ। বাসের ভিতরে পুড়ে কয়লা হয়ে গিয়েছিলেন রুনুর মা আর তার শিশু পুত্র। রুনু মারা যায় পরের দিন বিকালে। দিনমজুর স্বামী বেচে থাকার জন্য মৃত্যুর সাথে লড়াই করেছিলেন কিনা জানিনা। তবে চারদিন পরে মৃত্যু তাকে স্ত্রী পুত্রকন্যার কাছে পৌছে দিয়েছিল।
এসকল মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। তারা বেঁচে থাকতে পারে নাই এটা তাদের ব্যর্থতা। হয়তো তারা কখনোই বেচে ছিলোনা।
মর্মান্তিক এবং অসহনীয়।
তারা বেঁচে থাকতে পারে নাই এটা তাদের ব্যর্থতা। হয়তো তারা কখনোই বেচে ছিলোনা।
নিগূঢ় সত্য কথন…
সালাম ও শুভেচ্ছা জানিবেন প্রিয় স্যার।
এসকল মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। তারা বেঁচে থাকতে পারে নাই এটা তাদের ব্যর্থতা।
হয়তো তারা কখনোই বেঁচে ছিলো না।
এভাবে তার বেঁচে থেকেও না বেঁচে জীবিত থাকে। শুভেচ্ছা হরবোলা ভাই।
মনে করিয়ে দিলেন সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা। সেসময় এভাবে কতনা তাজা প্রাণ ঝরেছিল বাংলার শহরের রাস্তাগুলোতে। তা ইতিহাস সাক্ষী হয়ে থাকবে। আপনার এই সুলেখিত লেখনীও ইতিহাস হবে বলে আশা করি।
দুঃসহ বর্ণনা।
কঠিন জীবন, লালসার শিকার আর কত হবে