ভদকা

নিদানের দিনে সে আমাকে যত্ন করে সোমরস পান করিয়েছিল। তখন বেকার; টিউশনির যে তরুণীর সাথে প্রেম হব হব করছে, সে হঠাৎ পছন্দ বদলে ফেলল। ফকিরের পুত্রের সঙ্গে প্রেমে তার পোষাবে না। পছন্দের সাথে সাথে বদলে গেল টিউশন মাস্টার।

বিপর্যস্ত আমি মেসের ম্যানেজারের ভয়ে পালিয়ে থাকি। রাস্তায় তার সাথে দেখা, অনেক বছর পরে। স্কুলের মাস্তান ছিলাম সে ছিল আনকোরা, মাস্তানি দেখাতে গিয়ে পাছায় লাথি মেরে ছিলাম। সে কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি। স্কুলে তার দিন যন্ত্রণায় কেটেছে; আমার আনন্দে।

আমি তাকে চিনিনি সে ঠিকই চিনেছে। সামাজিকতার শেষে যখন নিজের দুরবস্থা বর্ণনা করছি, তার চোখে সহমর্মিতা দেখেছি অথবা দেখার ভুল।

সব শুনে দুপুরের খাবারের জন্য পাঁচ তারকায় নিয়ে গেল। দীর্ঘদিন এমন খাবার খাইনি। পাশের টেবিলে সোমরস পান হচ্ছে আমি লোভাতুর চোখে তাকাচ্ছি। আমার চোখ অনুসরণ করে সে বলল ‘খাবি নাকি’! আমি হ্যাঁ বললে সে বলল ‘আমার একটা শর্ত আছে’। আমি অবাক চোখে তাকালে সে বলল ‘তুই যত দামী মদ খেতে চাস খাওয়াব; কিন্তু খাওয়া শেষে সবার সামনে তোর পাছায় লাথি মারব’!

বাংলা মদ দুয়েক বার চেখে দেখেছি বিদেশি মাল স্বপ্নেও দেখিনি, এই সুযোগ একবার চেখে দেখা যায়। পাছায় লাথি দিতে চায়; দিক। জীবনের পাছায় এমনিতেই লাথি খেয়ে আসছি। শর্তে রাজি হয়ে গেলাম।

পুরো এক বোতল ভদকা গলাধঃকরণের পরে টলোমলো অবস্থা, তবু শর্ত ভুলিনি। দাড়িয়ে বললাম ‘এবার নিশ্চিন্তে লাথি কষাতে পারিস’! সে আমার মুখের দিকে চাইল, বললো ‘না থাক তুই আর লাথির যোগ্য নস’। বিল মিটিয়ে সে চলে গেল, ভদকার নির্যাস নিয়ে আমি অনেকক্ষণ বসে থাকলাম।

1 thought on “ভদকা

  1. লিখাটি দারুণ উঠে এসেছে প্রিয় কবি প্রিয় আবু মকসুদ ভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।