পুতুলের বিয়ে


সুমি তার আব্বুকে বলছে, আব্বু আমি আমার পুতুলের বিয়ে দিব।
সুমির বাবা বললো, তাই নাকি! কার পুতুলের সাথে?
– রিমার পুতুলের সাথে।
– এখন আমাকে কি করতে হবে?
– রিমার বান্ধবী সবাই বরযাত্রী নিয়ে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসবে। তাদেরকে আয়োজন করে খাওয়াতে হবে।
– ঠিক আছে। তুমি আমার আদরের মেয়ে তোমার কথা কি ফেলতে পারি।
বাবার সম্মতি পেয়ে সুমি তার মেয়ে পুতুল বান্ধবী রিমার ছেলে পুতুলের সাথে বিয়ে ঠিক করল। গতকাল রিমা তার বান্ধবী মিমকে নিয়ে সুমির বাসায় এসে বিয়ের কথাবার্তা চূড়ান্ত করেছে। বিয়ের আয়োজন হবে সুমির বাসায়।
আজ গায়ে হলুদ। তাইতো দু’বাড়িতেই চলছে হলুদের আয়োজন। কাঁচা হলুদ বেটে একে অন্যের মুখে মেখে হাসি খেলায় মেতে উঠল সুমি ও রিমার বান্ধবীরা।
পরদিন সকাল বেলায় সুমি তাদের বাড়ির সামনে কালাগাছ দিয়ে গেইট বানাইল। রিমা তার পুতুলকে পাঞ্জাবী পায়জামা পরিয়ে বর সাজিয়ে বরযাত্রী নিয়ে সুমির বাড়িতে হাজির। ইতোমধ্যে কনেও সেজেগুজে প্রস্তুত। সুমি তার পুতুলকে লাল শাড়ী পরিয়ে কনে সাজাল। রঙিন কাগজে সাজানো হয়েছে বিয়ের আসর। বন্ধু বান্ধবসহ মেহমান সকলের মনের মধ্যে কাজ করছে এক উৎসবের আমেজ। সুমির বান্ধবীরা ফিতা দিয়ে গেইট আটকাল। রিমা বেলুন ফাটিয়ে ফিতা কেটে সবাইকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করল।
সবাই আজ নানা রঙের পোশাক পড়ে আসছে। সুন্দর করে সেজেছে। সবাইকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছিল। মনে হয় যেন এটি সত্যিকারের বিয়ে।
রিমার বান্ধবীদের জন্য খাবারের আয়োজন করেছে সুমির বাবা। আদরের মেয়ে বলে কথা তার আবদার রাখতে গিয়ে এতসব আয়োজন। আর রান্নার কাজ করছে সুমির মা।
খাবারের পর যথারীতি কাজী এনে বিয়ে পড়ানো হলো। এবার কনে বিদায়ে পালা। বিদায়ের করুণ সুর বেজে উঠল সুমির বাড়িতে। সুমি এবার কান্না শুরু করে দিলে। তার এত সাধের পুতুল কিছুতেই হাত ছাড়া করতে চায় না। তারপরও বিয়ে বলে কথা। সুমি রিমার হাত ধরে বললো, কথা দাও। আমার পুতুলকে প্রতিদিন আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসবে।
সুমি বললো, ঠিক আছে।
রিমা কনেকে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসল। কনে পেয়ে রিমার বান্ধবীরা সবাই আনন্দিত।

তারিখ: ২৫/১২/২০১৫খ্রি:

আমির ইশতিয়াক সম্পর্কে

আমির ইশতিয়াক ১৯৮০ সালের ৩১ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ধরাভাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা শরীফ হোসেন এবং মা আনোয়ারা বেগম এর বড় সন্তান তিনি। স্ত্রী ইয়াছমিন আমির। এক সন্তান আফরিন সুলতানা আনিকা। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন মায়ের কাছ থেকে। মা-ই তার প্রথম পাঠশালা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করেন মাদ্রাসা থেকে আর শেষ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। তিনি লেখালেখির প্রেরণা পেয়েছেন বই পড়ে। তিনি গল্প লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও সাহিত্যের সবগুলো শাখায় তাঁর বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। তাঁর বেশ কয়েকটি প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো- এ জীবন শুধু তোমার জন্য (২০০৩) ও প্রাণের প্রিয়তমা (২০০৬)। তাছাড়া বেশ কিছু সম্মিলিত সংকলনেও তাঁর গল্প, কবিতা ছাপা হয়েছে। তিনি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় গল্প,কবিতা,ছড়া, ভ্রমণ কাহিনী ও কলাম লিখে যাচ্ছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ব্লগ ও ফেসবুক গ্রুপে নিজের লেখা শেয়ার করছেন। তিনি লেখালেখি করে বেশ কয়েটি পুরস্কারও পেয়েছেন। ফেসবুক লিংক- https://www.facebook.com/amirhossain243 ই-মেইল : [email protected] ব্যক্তিগত ব্লগসাইট: http://amirishtiaq.blogspot.com

8 thoughts on “পুতুলের বিয়ে

  1. শব্দনীড়ে আপনাকে স্বাগতম মিঃ আমির ইশতিয়াক । ধন্যবাদ সুন্দর শিশুতোষ গল্পের জন্য !

  2. প্রথম দিনের প্রেজেন্টেশন দারুণ হয়েছে মি. আমির ইশতিয়াক।
    শব্দনীড় এ পুনরায় স্বাগতম। আশা করবো ভালো আছেন। :)

    1. আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? নতুন করে আবার শব্দনীড়ে আসতে পারায় খুব ভালো লাগছে। দোয়া করবেন যেন নিয়মিত থাকতে পারি।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_dance.gif

  3. শব্দনীড়ে কবিতার বাইরে ভিন্ন কিছু দিয়ে শুরু করায় আপনাকে অভিনন্দন জানাই। সত্য কথা বলতে এত কবিতার ভীড়ে আপনার গদ্যটা পেয়ে যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম।

    অন্য কোন পোস্ট এ আবারো কথা হবে এই প্রত্যাশা। ভাল থাকবেন।

    1. আনোয়ার ভাই কেমন আছেন? বইমেলায় আপনার সাথে কথা হয়েছিল। মনে আছে কি? দোয়া করবেন এরকম গল্প যেন আরো উপহার দিতে পারি। ধন্যবাদ আপনাকে। শুভ কামনা রইল।

      1. আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি, ইশতিয়াক ভাই। আশা করি আপনিও ভাল আছেন। । হ্যাঁ, মনে আছে বই মেলার কথা। মামুন ভাই, রুদ্র আমিন ও আপনার সাথে সেদিন খুব ভাল সময় কাটিয়েছি। আবারও দেখা হবে ইনশাআল্লাহ সময় সুযোগমত https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।