এম এ বাসেত এর সকল পোস্ট

এম এ বাসেত সম্পর্কে

সাংবাদিক এম.এ. বাসেত গত ১৯৮৫ খ্রি. তেঁতুলিয়া সদরের বারঘরিয়া গ্রামের এক মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. নিজাম উদ্দিন, মাতার নাম মোছা. আয়েশা খাতুন। পরিবারে ৬ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। শৈশবে তেঁতুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণি পাসের পর কালান্দিগঞ্জ ফাযিল মাদরাসা থেকে দাখিল/এসএসসি সমান বোর্ড পরীক্ষায় ১৯৯৯ খ্রি. দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ২০০৩ খ্রি. তেঁতুলিয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এইচ.এস.সি বোর্ড পরীক্ষায় জিপিএ ২.৫০ পেয়ে সাফল্যের সংগে উত্তীর্ণ হন। ২০০৭ খ্রি. সালে মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ পঞ্চগড় (পঞ্চগড় এম আর কলেজ) থেকে ইতিহাস বিভাগে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় ২য় শ্রেণিতে এবং ২০০৮ খ্রি. রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজ থেকে ইতিহাস বিষয়ে মার্স্টাস ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি শৈশবে কবিতা ও ছোট গল্প লিখার মধ্যে দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ২০০০ সালে দিনাজপুর জেলার পাবর্তীপুর উপজেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক উত্তরের আলো পত্রিকার মাধ্যমে মফস্বল সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০০১ সাল থেকে দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে অদ্যাবধি কাজ করে আসছেন। এছাড়া ২০০৪ সালে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকায় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছেন। তিনি দৈনিক করতোয়া পত্রিকার উপসম্পাদকীয় পাতায় বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত কলাম লিখে আসছেন। ইতোমধ্যে তাঁর অর্ধশতাধিক কলাম প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থ মেলায়, শিক্ষা তথ্য পাবলিকেসন্স থেকে তাঁর লিখা ‘‘ লাল সবুজের পতাকা হাতে যুদ্ধা ফিরে ঘরে” এবং ”স্মৃতির কাছে’’ নামে দুটি কাব্যগ্রন্থ বই প্রকাশ হয়েছে। তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ঋণ সহায়তা নিয়ে ২০০১ সালে তেঁতুলিয়া উপজেলায় জেনুইন কম্পিউটার কমপ্লেক্স নামে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার চালু করেন। পরবর্তীতে উক্ত ট্রেনিং সেন্টারটিকে বাংলাদেশ কম্পিউটার এডুকেশন (বিসিই) তেঁতুলিয়া শাখা হিসেবে রুপান্তর করেন এবং পরিচালক ও ট্রেইনার হিসেবে বেকার-যুবক/যুব মহিলা ও ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মনির্ভরশীল প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। তিনি ২০০৪ সালে পঞ্চগড় জেলার শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

দুনিয়া ভরে

গগণে বাদল ভাসে বহুদূর দূরে
কোথায় ঝড়ে ভাবি দু’নয়ন জুড়ে
কখনো রোদ-বৃষ্টি গগণের খেলা
শেষ বিকালে দেখি রংধনুর মেলা।
সষ্ট্রার কুদরতি খেলা এই দুনিয়া ভরা
জগতে যা কিছু তাঁর নিপুন হাতে গড়া
নিশিতে জ্বলে মিটিমিটি আলো ছুড়ে
চাঁদা-তারা দিন-রাত গগণে ঘুরে।
নিশি ধরা আলো ফুটে গগণে চাঁদ হাসে
ফুটফুটে জোসনা নদীর জোয়ারে ভাসে
ত্রিভুবনে বিশাল গগণ খুটি বিহীন দাঁড়
বিজলী ঝলক শিলা বৃষ্টি মন হলো ভার।
কৃষান-কৃষানীর কাজ রোদ বাদলে ভিজে
সোনার ফসল ঘরে তুলে ক্লান্তি নাই মিছে
রাখালি মেঘ দেখে গোয়াল আনে ঘরে
খুশিতে খোকা-খুকু জলে আচড়ে পড়ে।
চোখে দেখি দূর গগণ তীরে নুঁয়ে পড়ে
মন জুড়ানো নীলাকাশ ফের যায় সরে
রবি মামা দেয় হানা শূণ্য ভুবন জুড়ে
মেঘ বাদল করে খেলা দুনিয়া ভরে।
-০-
১০ জ্যৈষ্ঠ-১৪২৫/ ২৪ মে-২০১৭
সকাল-৯ ঘটিকা।

জীবন বাতি

আমি যেদিন থাকব না থাকবে শুধু বাড়ি
সেদিন থমকে যাবে জীবন নামক গাড়ি
প্রাণ বাতি নিভে যাবে প্রতিবেশীর ভিড়
সাদা চাদর পড়াবে গোরস্থান হবে নীড়।
ভাই-ভাতিজা ঘাড়ে নিবে দ্রুত মাটি দিবে
বাড়ি ফিরে সম্পত্তি টামটুপলি খুঁজে নিবে
সঙ্গি শুধু পাট বাঁশ ভুবনে ছিল ভুড়িভুড়ি
আখিরাত ভুলে ঘর গোছায় দুনিয়া জুড়ি।
সাত দিনে কুলখানি চল্লিশ দিনে মিলাদ
আত্মার শান্তির জন্য স্বজন পড়ে ক্বিরাত
দুনিয়া দারী খারাপ হলে মরনে আযাব
পরকালে ফিকির হলে জীবনে নাজাদ।
হাসর-নাশর দিনে হবে জীবনের হিসাব
পঞ্চ ইন্দ্রের সাক্ষ্য ভাল মন্দের নিকাশ
নেকিপাল্লা ভারী হলে বিচার হবে পার
বদির পাল্লা হেলে গেলে দুনিয়া সার।
কেরামান-কাতেবিন দু’জন দুুই কাঁধে
বান্দার হিসাব নিকাশ সময়ে বাঁধে
বিধাতা মহাজ্ঞানী সবার মন জানে
দুনিয়া কর্মকালে ক’জন সব মানে।
দুনিয়াবীর পাগল পরকালে সব বিফল
ভোগ বিলাশের মোহে জীবন নিস্ফল
গৌরব গাঁথা জীবন ভুবনে করো কাম
জীবন বাতি ফুরালে নাই কোন দাম।
-০-
২৬-০৫-১৭ খ্রি./ ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বঙ্গাব্দ
বিকাল-৩ টা। বাড়ির বেলকুনিতে বসে।

মধুমাস

জ্যৈষ্ঠ হলো মধুমাস নানা ফলের মেলা
খোকা খুকুর স্কুল ছুটি গ্রামে করে খেলা
মধুমাসে ব্যাংক মেলা ঋণ আদায় ক্যাম্প
খেলাপির মাথায় চাপ শরীর ঘামে হ্যাম
খোখা খুকুর ছুটি নাড়ীর টানে গ্রাম ঘুরি।
মধুমাস ফুরাবে তার আগে ফল জুটাবে
নানা-নানীর সংগ্রহ দাদা-দাদী লুকাবে
তাড়া ক্ষনে ক্ষনে ফল পাকড় শেষ হবে
তোমরা না এলে গাছে ফল ধরে রবে
ফুসরতে টপলা ঘরে ঘরে দেয় পৌছে।
জ্যৈষ্ঠের ভেপসা গরম শান্তি আম তলে
বৃষ্টিতে ভিজি সাথে আম কুড়ার থলে
কাঁচা-পাকা গাছের ফল বাতাসে নড়ে
খোকা খুকুর ছুটাছুটি কখন আম পড়ে
কাক পক্ষি খিদে মিটে পাক ফল ঠকালে।
হাইব্রিডের সমাহার চাষীর ঘরে স্বভাব
বন জঙ্গল বিলীন দেশি ফলের অভাব
উৎপাদনে কীটনাশক ফলে নাই সাধ
চড়া দামে বিক্রি গরীবের মাথায় হাত
অনেকে খেতে পায় না জ্যৈষ্ঠ মধুমাস।
-০-
সকাল-৯ ঘটিকা।
৯ জ্যৈষ্ঠ-১৪২৪ বঙ্গাব্দ ২৩-০৫-১৭

খুশির ঈদ

রমজানের রোজা শেষে এলো খুশির ঈদ
আকাশে-বাতাসে সরোবর মহানন্দের ঈদ
ভোর প্রভাতে শুরু হয় মহা খুশির ঈদ
ছেলে-মেয়ে সাধ সাজে নতুন কিছুর ঈদ
ঈদে কারো আনন্দ ফূর্তি দুস্থের মন মলিন
ব্যস্ত কেহ কেনা কাটায় ঘরে ফেরার দিন
গাড়িতে বড্ড জ্যাম্ টিকিটহীন কারবার
লঞ্চ-ইস্টিমারে দুর্দশা নদীতে অথই জল
পথে বসে ভ্রাম্যমান আদালত ট্রেনে ছিনতাই
যাকাত নিতে ডাকাত হাতে প্রাণ হলো সার।
হত্যা গুমের রাজনীতিতে কতই শোকাকার
কারো থাকে মাংস পোলাও কারো ডাল ভাত
হায়রে খুশির ঈদে পথে ক’জন চাইছে ভাত
বছর ঘুরে এলো ঈদ আনন্দ হোক সবার।
-০-

_________________
অমর ২১ শে বই মেলা-২০১৭
আমার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘‘স্মৃতির কাছে’’ বই থেকে।

নিরন্তর

অমানিশা কেটে গেল ফুটফুটে চাঁদের আলো
প্রকৃতির হাসি মাখা মুখ নয়নে দেখি ভালো
তন্দ্রাহীন রাত প্রকৃতির মুগ্ধ প্রাণে জাগরণ
শান্তি বারতা নিয়ে রজনীতে কার আগমন
বন্ধ হোক বিশ্ব দামামা চাই শান্তির ঠিকানা।

সুনসান নীরবতা বাগানে জোনাকির খেলা
চাঁদনী ভরা আঁধারে ঝিঝি পোকার মেলা
বৃষ্টি হলেই ব্যাঙ ডাকে বিলে শাপলা ফুটে
নদী-নালা খাল-বিল অথৈ জলে ভরে উঠে
বাদলে বান উঠলে খাল-বিলে মাছ ঢুকে।

চাঁদনী রাত পোহাল ফজরের আযান হল
পাখির কলোহলে সবার ঘুম ভেঙ্গে গেল
চাঁদ মামার প্রস্থান সূর্যি মামার আগমন
রঙ্গিন প্রভা নিয়ে ভরা মণ্ডলে করে গমন
একাকি নীরবে ভাবি সৃষ্টি খেলা নিরন্তর।

রাজা-বাদশার হুংকার রাজ্য জয় করার
সৃষ্টিকূল ধ্বংস হবে প্রাণে লড়াই মরার
কেনো হিংসা বিদ্বেষ মানবে মানবে ভেদ
অশান্তির বেড়া জালে কত জাতি শেষ
চাঁদনী ন্যায় এ ধরা হোক শান্তির দেশ।

০২-০৬-১৭ খ্রি.
[গভীর রাত, বাড়ির বেলকনিতে লিখা]