এম এ বাসেত এর সকল পোস্ট

এম এ বাসেত সম্পর্কে

সাংবাদিক এম.এ. বাসেত গত ১৯৮৫ খ্রি. তেঁতুলিয়া সদরের বারঘরিয়া গ্রামের এক মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. নিজাম উদ্দিন, মাতার নাম মোছা. আয়েশা খাতুন। পরিবারে ৬ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। শৈশবে তেঁতুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণি পাসের পর কালান্দিগঞ্জ ফাযিল মাদরাসা থেকে দাখিল/এসএসসি সমান বোর্ড পরীক্ষায় ১৯৯৯ খ্রি. দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ২০০৩ খ্রি. তেঁতুলিয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এইচ.এস.সি বোর্ড পরীক্ষায় জিপিএ ২.৫০ পেয়ে সাফল্যের সংগে উত্তীর্ণ হন। ২০০৭ খ্রি. সালে মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ পঞ্চগড় (পঞ্চগড় এম আর কলেজ) থেকে ইতিহাস বিভাগে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় ২য় শ্রেণিতে এবং ২০০৮ খ্রি. রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজ থেকে ইতিহাস বিষয়ে মার্স্টাস ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি শৈশবে কবিতা ও ছোট গল্প লিখার মধ্যে দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ২০০০ সালে দিনাজপুর জেলার পাবর্তীপুর উপজেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক উত্তরের আলো পত্রিকার মাধ্যমে মফস্বল সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০০১ সাল থেকে দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে অদ্যাবধি কাজ করে আসছেন। এছাড়া ২০০৪ সালে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকায় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছেন। তিনি দৈনিক করতোয়া পত্রিকার উপসম্পাদকীয় পাতায় বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত কলাম লিখে আসছেন। ইতোমধ্যে তাঁর অর্ধশতাধিক কলাম প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থ মেলায়, শিক্ষা তথ্য পাবলিকেসন্স থেকে তাঁর লিখা ‘‘ লাল সবুজের পতাকা হাতে যুদ্ধা ফিরে ঘরে” এবং ”স্মৃতির কাছে’’ নামে দুটি কাব্যগ্রন্থ বই প্রকাশ হয়েছে। তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ঋণ সহায়তা নিয়ে ২০০১ সালে তেঁতুলিয়া উপজেলায় জেনুইন কম্পিউটার কমপ্লেক্স নামে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার চালু করেন। পরবর্তীতে উক্ত ট্রেনিং সেন্টারটিকে বাংলাদেশ কম্পিউটার এডুকেশন (বিসিই) তেঁতুলিয়া শাখা হিসেবে রুপান্তর করেন এবং পরিচালক ও ট্রেইনার হিসেবে বেকার-যুবক/যুব মহিলা ও ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মনির্ভরশীল প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। তিনি ২০০৪ সালে পঞ্চগড় জেলার শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বর্ষার দিনে

শ্রাবণে কালো মেঘ বৃষ্টি পড়ে রিমঝিম
অবিরাম বর্ষণে ঘরে বসে কাটে দিন
খানা দানা ভাল হলে সুখে আসে নিন
বর্ষার দিনগুলি অলস কর্মহীন।

খাল-বিলে অথৈ জল ভরে টইটুম্বর
সোনা-কুনো ব্যাঙ ডাকে রাত-দুপুর
ডগসা কাঁধে জেলে ছুটে অথৈ মাঠে
আইলে ফাঁদ জুড়ে মাছ পড়ে ঝাঁকে।

খলই ভরা মাছে দুপুরে বাড়ি ফিরে
হাতে শোল মাছ ডেরকা-পুঁটির ঝাঁক
হাট-বাজারে দেখা মিলে দেশি মাছ
জেলের মাছ ধরে সংসারে জুটে ভাত।

শ্রাবণে মেঘ দেখে গবাদিপশু ডাকে
গৃহিনী রান্নার কাজে খর কুটরা খুঁজে
গরম গরম মাছ ভাজা খেতে খুব মজা
বৃষ্টির দিনে ঘরে ঘরে চলে গল্প কথা।

শৈশব স্মৃতি মনে বৃষ্টির অলস দিনে
টুনটুনি-শালিক ভিজে ডালিম ডালে
আষাঢ়-শ্রাবণ শেষে বন্যার আভাস
শরৎ কালে কাঁশফুল ঋতুর বাহার।

বর্ষায় কদম ফুল গাছের ডালে দুলে
গাছে গাছে ডাওয়া পাকে বৃষ্টির মুল
মাঝিমাল্লা বৈঠা হাতে নৌকা ঘাটে
মানুষের কষ্ট বাড়ে বর্ষার দিন মাঠে ।
-০-
১১ আগস্ট/১৭ (সকালে)

বিরূপ বর্ষা

প্রকৃতি বড়ই বিরূপ খরা বৃষ্টির ভিন্ন রূপ
বর্ষা ঋতুই ফসল পুড়ে চাষীর নাই সুখ
পাট পঁচানো পানি নাই খাল-বিল ঠনঠন
বৃষ্টি বিহীন মাটি চৌচির ক্ষেত ঢনঢন।

শ্রাবনে বৃষ্টি নামে বর্ষা ঋতুর শেষ সপ্তাহ
বীজতলা পুরাট রোপা আমনে নাই সাধ
দিনের পানি ধান রাতের জলে উঠে বান
জাল-খলই হাতে জেলে মাছ ধরতে যান।

ভরা আষাঢ়ে যায়নি শোনা ব্যাঙের ডাক
শ্রাবণে টানা বৃষ্টি খাল-বিল থৈ-থৈ করে
মুষলধারে বৃষ্টি পড়ে কাজ বিনা ঘরে বসে
চাষী দুখে একাকার গরীব-দুখীর হাহাকার।

হাটে ফসলের দাম নাই চাষীর মাথায় হাত
নানান পণ্যে দাম ধরা শ্রমিকের মজুরি চড়া
প্রকৃতির যত ধকল চাষীর চিন্তা ক্ষেত ফসল
ঘরে ফসল না এলে বিরূপ বর্ষা ক্ষতি হবে।
-০-
১০-০৮-১৭

এক দুখিনী মায়ের জীবনযুদ্ধ

তেঁতুলিয়া বন্দরের পাশে দক্ষিন বাড়ি গ্রাম। এই গ্রামের বড় বউ মা ছিলেন আলেমা। তিনি বিবাহিত জীবনে দুই ছেলে-চার কন্যার জননী। শ্বশুর-শাশুড়ী, দেবর-ননদ সবার মন জয় করে ভালই ছিল তাদের সংসার। সংসার পরিচালনার জন্য স্বামীর ছোট একটু চাকুরি একমাত্র ভরসা। নববধু আলেমা বুঝতে পারেন স্বামীর চাকুরির স্বল্প বেতন দিয়ে সংসার পরিচালনায় বেশ কষ্ট হচ্ছে। তাই সিদ্ধান্ত নিল স্বামীর সংসারে সহায়তা করার। এজন্য প্রতিবেশী গ্রামের ধর্নাঢ্য লোকের বাড়ির থেকে তিন থেকে চার কাঠা মুড়ির ধান নিয়ে আসেন। আনায়নকৃত ধান চুলায় সিদ্ধ ও শুকায়ে ঢেঁকিতে চাউল করে মুড়ি ভাজেন। এই কাজে তার দু’এক কাঠা বাড়তি মুড়ি তা সংসারে খাবারের পর কিছু বিক্রি করেন। আলেমা এভাবে স্বামীর সংসারে খরচ যোগাতে সহায়তা করেন।

ইতোমধ্যে বড় ছেলে রবুল জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ছেলের চিকিৎসার জন্য তার পরিশ্রম আরও বাড়াল। কিন্তু দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরও ছেলের স্বাস্থ্যের কোন উন্নতি হল না। আদরের ছেলের রোগাক্রান্ত দেহ দেখে নিজে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিলেন। ছেলের রোগ মুক্তির জন্য যে গ্রামে কবিরাজ আর উঝা-মাহান আছে সবার কাছে ছুটে গেলেন। এত কিছুর পরও ছেলেকে বাঁচাতে পারল না। কিশোর ছেলের মৃত্যুর শোকে নিস্তব্ধ হয়ে গেলেন। পাড়া প্রতিবেশী লোকজনের স্বান্ত¦নায় ছেলের মৃত্যুর শোক সহ্য করে আলেমা। ছেলে হারানো শোক আর চাপা কান্নায় তার দু’চোখের নীচে কালো দাগ যেনো বহমান শুকনা নদীর সাদৃশ্য। এই শোক সামলে নিয়ে যথারীতি সংসারের কাজ করেন। আর অবকাশ পেলে ছেলের কবরের পাশে গিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। বড় ছেলেকে হারানোর পরে ছোট ছেলে রাহুলকে নিয়েও বেশ চিন্তিত। কারণ বড় ছেলের দেহের অসুখ যদি তার শরীরে দেখা দেয়..?

ইতোমধ্যে রাহুল এগারো বা বারো বছর বয়সে পৌছাল। আলেমা রাহুলের শরীর দেখে অনুভব করে; প্রতিনিয়ত ছেলের চোখ ও মুখে হলদে প্রকৃতি হয়ে উঠছে। কারো মনে সাই না দিলেও মায়ের মনে ঠিকই জানা পরে এই রোগ যেনো বড় ছেলে মরেছে। আলেমার অভিজ্ঞতা জানান দেয় রাহুলের শরীরে জন্ডিস ধরেছে। একমাত্র কলিজার টুকরা ছেলেকে বাঁচানোর জন্য পাড়া প্রতিবেশী লোকজন যত চিকিৎসা ও কবিরাজ দেখালেন পুরোপুরি তা পালন করেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যে তার কোল খালি করে রাহুলকেও নিয়ে যাবে এটাই সত্য। কিছু দিনের মধ্যে রাহুলও মারা গেলো। আলেমা পরপর দু’ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায়।

বড় কন্যা রাবিয়া মায়ের বুক চাপা কষ্টের কান্না দেখে সর্বক্ষণ পাশে থেকে স্বান্ত¦না দেন। কিন্তু সে কোন ভাবে মা’র ছেলে হারানোর শোক পূরণে করতে পারছে না। এভাবে ঘরের বিছানায় শুয়ে শুয়ে বুকে চাপা কান্নায় দিন কাটে আলেমা। আবারও পাড়া প্রতিবেশী লোকজন যথারীতি স্বান্ত¦না দিয়ে সমবেদনা জানান। স্বামীও তাকে স্বান্ত¦না দেন; আল্লাহ মাল তিনি নিয়েছেন; এতে ধৈর্য রাখ। সবার সমবেদনা পেয়ে ধীরে-ধীরে দুই ছেলে হারানোর বেদনা কিছুটা সেরে উঠেন। এবার আলেমা একটি পুত্র সন্তানের আশায় পর্যায়ক্রমে তিনটি সন্তান নেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা তাকে সব কয়টি কন্যা সন্তান দান করেন। ইতোমধ্যে বড় কন্যা রাবিয়াকে পাত্রস্থ করেন।

স্বামীও ছেলে সন্তান পেতে খুব আগ্রহী। তাই আলেমার সাথে সলাপরামর্শ করে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। এই সতীনের ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এখন স্বামীর স্বল্প আয় দ্বারা দু’সংসারের খরচ বহন করা খুব কষ্টসাধ্য। সংসারের অভাব মিটাতে আলেমা আবারও পুরনো কাজে ফিরে যান। নাবালিকা তিন-কন্যাকে নিয়ে টানা-পরানের মাঝে তার খুব কষ্টের সংসার।

ইতোমধ্যে স্বামীর শরীরে দেখা দেয় দূরারোগ্য ব্যাধি। সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তিটিও পুরোদমে অক্ষম হয়ে গেলো। এখন তার দুঃখের সীমা অন্ত রইল না। সংসারে নাবালিকা তিন কন্যা আর অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে মহা বিপাকে। এ অবস্থায় সতীন তার কোলের শিশুকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে চলে গেলো। এখন স্বামীর সুচিকিৎসার জন্য তাকে নানা জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হল। কিন্তু স্বামীকে পুরোপুরি সুস্থ করতে পারল না। বরং স্বামীর হাটা চলাও থমকে গেলো। পরে স্থানীয় হাসপাতালের দি ল্যাপরোসি মিশনের মাঠ কর্মীদের সহায়তায় ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারী মিশনে চিকিৎসার সুযোগ পেল। মিশন হাসপাতালে স্বামীর শরীরে কয়েকবার অস্ত্রপচার করা হল। সম্ভবত তার স্বামীর পা ও হাতের অঙ্গুলি থেরাপির মাধ্যমে কেটে ফেলে দেন। সেখান থেকে স্বামী বাড়িতে ফিরে আসেন। স্বামী কিছুদিন ক্যারেজ সাহায্যে হালকা চলাফেরা করতে শুরু করল। কিন্তু স্বামীর পক্ষে সংসারের উপার্জনের জন্য কোন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। অসুস্থ স্বামী কখনো সতীনের ঘরে; কখনো তার ঘরে সময় কাটেন। বছর চারেক পরে স্বামীরও মৃত্যু হল। এখন বিবাহ উপর্যুক্ত কন্যাদের নিয়ে বেশ চিন্তিত। তার মনের সাহস; চিন্তা করেই লাভ কী..? তাকে তো সংসারের ঘানি টানতেই হবে। সব কষ্ট সহ্য করে হাতের সহায় সম্বল নিয়ে মুড়ি ভাজার কাজ শুরু করেন। এই কাজের উপার্জিত টাকা-পয়সা ও স্বামীর দেয়া ভিটেমাটি বিক্রি করে কন্যাদের পাত্রস্থ করেন।

দ্বিতীয় কন্যার জামাই বাবু বাড়ির ভিটেমাটি নিয়ে শাশুড়িকে ঠাঁই দেন। কিন্তু আদরের দু’ছেলে আর স্বামীকে হারানোর অকাল বেদনা যেনো তার মন থেকে সরেনি। এখন বয়স্ক শরীরটা শুকায়ে মনে হয় কংকাল সাদৃশ্য। আলেমার জীবনের বাকি সময়টুকু হয়তো কন্যা জামাইয়ের সংসারেই কেটে যাবে। #

প্রকৃতি

প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব পৃথিবী জুড়ে
বর্ষা ঋতুর খরা মাঠে ফসল পুড়ে।
কৃষক চিন্তিত মাঠে বীজতলা নিয়ে
আমন চাষীর নীড়ে বৃষ্টি নাই জিয়ে।
আবাহওয়ার বদলে দূর্যোগ ঋতু ভরে
প্রকৃতির নীলা-খেলা সব প্রভুর ঘরে।
কোন খানে খরা কোথাও জলে ভাসে
ত্রাণের জন্য বান ভাসিরা ছুটে আসে।
আইলা-সিডর দূর্যোগ দু’দশকে মিলে
জলবায়ুর বিরুপ চাপ যুদ্ধ বিগ্রহ খিলে।
হিরোশিমার বিস্ফোরন বিশ্ব যুদ্ধের রেস
শক্তিধর দেশে পরমানবিক সমর বেশ।
নদীর উজানে বাঁধ প্রকৃতির মরন ফাঁদ
পাহাড়-পর্বত কাটা পড়ে ভারসাম্য কাঁধ।
বন জংগল বিলীন প্রকৃতির উপর চাপ
বন্য-প্রাণি পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বের হাক।
সাগর তলাদেশে পলিথিনে উচ্চতা বাড়ে
প্রকৃতি বিরুপ চাপ দেয় জলবায়ুর ঘারে।
জলবায়ু সম্মেলন দেশ নেতাদের ভিড়
যুদ্ধ-বিগ্রহ ছাড় ধরা হোক শান্তির নীড়।
রদ-বদলের প্রভাব জুড়ে ষড়ঋতুর দেশ
সতেজ সবুজ ভরে উঠুক বাংলার বেশ।
শপথ নিব রক্ষা করি ভূবনে ভার-সাম্য
প্রকৃতি ভাল হোক সৃষ্ট জীবের কাম্য।
-০-১৮-৭-২০১৭
(সকালে কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানে)

বন্দ ঘরে

দু’নয়ন জুড়ে ঘুম নাই চিন্তা ক্ষনে
চৌকিতে শুয়ে ভাবনা মুক্ত মনে।
বাদলের দিনে ঘন-ঘন মেঘ ডাকে
ঠাঁই নাই তিল ধারণ গগন ফাঁকে।
দিন-ক্ষন যায় প্রাণে থাকে ভার
সম্বলহীন হাত বুদ্ধি খায় মার।
স্বল্প হাতে সঞ্চয় যদি কাজ হয়
পথে চলার মনোবল প্রাণের খয়।
অস্থির প্রাণে স্বপ্ন ধরা গগণ জুড়ে
ইচ্ছে ডানা মেলে উড়ি ধরা ঘুরে।
ধাক্কায় স্বপ্ন সিঁড়ি চুড়মার প্রাণে শেষ
হাতে শুধু সম্বল পড়া-লেখাই ক্যাশ।
সৃষ্টির নীলা খেলা মানব জগৎ ভরে
গরীব ঘরের মেধা অকালেই ঝড়ে।
যত দিন জেগেছি নীরব নিশি ঘরে
শৈশব স্মৃতি রাশি শুধুই মনে পড়ে।
আরামে বিছানা রাতে শীতল প্রাণ
স্মৃতিগাঁথা প্রাণ কষ্টের মাঝে ম্লান।
বাস্তবে মিলেনি তা অর্থ কড়ির তরে
যত স্বপ্ন দেখি ভবে চোখ বন্ধ ঘরে।
-০-
১৫-৭-১৭
(সকালে কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানে)

প্রতিশ্রুতি

চলার পথে সামাজ রক্ষায় দেই যত প্রতিশ্রুতি
মোড়ল মুখে যতসব শুনি জনসেবার খাস বুলি
যাদের কথা ফাঁকি-বাজি তাতেই চলে কলকাঠি
লোক সমাজে চলতে সত্য-মিথ্যার প্রতিশ্রুতি।
প্রতিশ্রুতি ঠিকঠাক সুযোগ খুজেন আছে ফাঁক
জনতার কাছে ছলÑচাতুরি যতদিন টিকা যাক
ক্ষমতা থাকে যতক্ষন জনসেবা করে ঢেড় গুণ
কর্মের চেয়ে বেশি বকন প্রতিশ্রুতি তাতে খুন।
সম্প্রতি সমাজের রীতি মোড়লের কত প্রতিশ্রুতি
দিন-রাত খুঁজেন তিনি ক্ষমতার সাদাসিধে যুক্তি
ভোটটা দিবেন সাহস রাখেন করে গেলাম চুক্তি
যতটুকু জনসেবা দিলাম সমাজের দায় রাখি।
বিশ সতেরো সকালে স্বাধীনতা প্রভাত ফেরি
পাঁচ-ছয় গুণ পুস্তক দিয়ো মেটাব সব কার্তি
ফূর্তি করে ব্যাগে ভরি অপেক্ষা শুধু অনুমতি
সারাদিন ফুরাল কী কষ্টে হৃদয় হলো মূর্তি।
মোড়লের আজব কারবার মন যোগাবে জনতার
উল্টাপাল্টা বারং বার ব্যক্তিকে দেই প্রতিশ্রুতি
মোড়লের যত ধ্যান-ধর্ম জনসেবায় মহৎ কর্ম
প্রতিশ্রুতি রাখবে মোড়ল জনতার মান অনন্ত।
নিত্য দেই প্রতিশ্রুতি আমরা ক’জন পালন করি
আসুন আজ পণ করি ভাবনা চিন্তার প্রতিশ্রুতি।
২৬-০৩-২০১৭
রাত ১১.২৩

পাখি ডাকা ভোরে

বসন্তে কোকিলের কহুতান মধ্যরাত ধরে
পাখি ডাকে মন খুলে আযান শুনি কানে।
মধুর সুরে পাখির গান আম বনের থানে
শালিক-ঝেচু সব নাচে কোকিলের তালে।
পাখিদের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে প্রত্যেহ ভোরে
প্রত্যুষে প্রার্থনা করি পাখিদের ডাক শুনে।
সতেরো সালের শেষ ফাল্গুনে অফুরন্ত গান
কতদিন শোনা যায়নি কোকিলের কহুতান।
ফাল্গুন-চৈত্রে ঠান্ডার চাপ প্রকৃতির কোলে
ষড় ঋতুর বায়ু বদল সাথে রোগের ঢল।
বিলীন যত বন-জংগল প্রাণির পলায়ন
আম বাগানে নিত্য শুনি পাখির কোলাহল।
ফাল্গুনের শেষ বিকালে গায়ে শীতের আমেজ
হিমালয় কন্যা পঞ্চগড় নাতিশীতোষ্ণের দেশ।
কোকিলের কহুতানে ঘুঘু ডাকে টুনটুনি নাচে
অচেনা সব পাখির ডাক ভোরের প্রভা ফুটে।
পাখির মধু ডাক ফুরালে সবাই কর্মে ছুটে
প্রত্যুষে মোর ঘুম ভাংগে পাখির কোলাহলে।
ঘর থেকে বাহির হই পাখিদের গান শোনে
পাখি ডাকা ভোরে উঠি দিনে মজা মিলে।
-০-

ঋতু রাজ বসন্তে

ফাল্গনের তাপদাহ মাঠ ঘাট পুড়ে
পশ্চিমের হাওয়া ধুলোবালি জুড়ে।
বসন্তের শোভা মিলে শিমুল ফুলে
কোকিল ঘুম ভাঙ্গে মধ্যরাত মুলে।
রাস্তার ধুলো-বালি বাতাসে উড়ে
নীরবে মশামাছি ঘ্যানভ্যান সুরে।
প্রকৃতির বুকে শুষ্কতা খাঁখা করে
বৈশাখীর তান্ডবে মশামাছি মরে।
রবি শষ্যের তরে জমি করে চাষ
ফাল্গুন-চৈত্র মাসে তাপে মরে ঘাস।
ঋতু বদলে ঘরে-ঘরে অসুখের চাপ
ঋণ মহাজনে পড়ে কৃষাকের থাপ।
সরিষা ফুল ক্ষেতে মৌমাছি ঝাঁক
আম-লিচু মুকুলে ডালে-ডালে সাঁজ।
ঝড়-তুফান বাড়বে ঘর-বেড়া বাঁধ
কাল বৈশাখি রুখবে জনমনে সাধ।
তীব্র খর তাপদাহে মাঠ-ঘাস পুড়ে
স্বস্তির বৃষ্টিতে সবুজ প্রকৃতি জুড়ে।
হঠাৎ কালো মেঘ ঝড়ের বেশ
রাতভর বৃষ্টি ধুলো বালি শেষ।
অঝোরে বৃষ্টি নামে ঠান্ডার ভাব
ফাল্গুনের তাপদাহ নিশিতে কাধ।
দিবসে আলসে ভাব কর্মের চাপ
ঋতু রাজ বসন্তে শুষ্কতার তাপ।
-০-
১১.৩.২০১৭

জীবন যুদ্ধ

অংকুর থেকে পুড়ছি তুষের অনলে
জীবন যুদ্ধের লড়াই সংসার মহলে
সুখ পাই কোন ক্ষনে বিধাতা জানে
জীবন যুদ্ধে ব্যস্ত প্রতি কর্মের টানে ।
ছাত্র জীবন শেষে ভালো কর্মের খোঁজ
চাকুরি করব না সমাজ সেবায় ঝোঁক
যুবকের কর্ম নাই বেকারত্বের ক্ষোভ
হতাশা ভরা প্রাণ জীবন যুদ্ধেই কোপ।
চারদিকে সন্ত্রাস বেকার যুবকের কাজ
দেশ-জাতি সর্বনাশ বাঁচার নাই ফাঁক
রাজ নেতার কমল সুর কর্মে হবে ঠাঁই
ক’দিন কষ্ট করো ফিবার ক্ষমতায় যায়।
জীবন যুদ্ধেই জয় ভবে যৌবনের ক্ষয়
যুদ্ধের মাঠে সংসার বেশ দিবসেই জয়
এমনি ভবে যৌবন শেষ কর্মে নাই ক্লেশ
জীবন যুদ্ধের বেশ মরণের পর শেষ।
৭-৪-২০১৭

উদাস দুপুরে

চৌদ্দশ তেইশ ছাব্বিশ চৈত্রে আরামে নদীর ধারে
মটরবাইক চড়ে গেলাম সাপটে বসি দক্ষিণ পাড়ে
বড়শি আর ফিকাজালে মাছ ধরেন কয়জন জেলে
ডুবে দু’জন পাথর তুলে ধার স্তুপে রাখেন ঢেলে
বাটা-চিলি মাছ ধরে হাত উচিয়ে ডাঙ্গায় ফেলে।
উজানে ভারত বাঁধ জলহীন করতোয়া মরন ফাঁদ
চোখ জুড়ায় সবুজ মাঠ ফাঁকে চিকচিক বালুর বাঁধ
নদী জলে স্নানের তরে কৃষাণ-কৃষানীর দৌড় ঝাপ
বক –সারস-মাছরাঙ্গার শিকার ধরতে বাড়ল চাপ
সবুজ ক্ষেতের আড়ালে পান কুয়াড়ি এক ঝাঁক।
দক্ষিণা হাওয়াই বালুর ফুলকি নদীর জলে পড়ে
ক্ষনিকে ধারের স্বচ্ছ জল ময়লা আর্বজনায় ভরে
পাদুকা খুলেই বসে পড়ি সবুজ ঘাসে নদীর পাড়ে
কুচুরিপানা ধীরে ভাসে মাছ ভুটকাই জল ধারে
উদাস দুপুর মন মাতালো করতোয়ার কোলে।
প্রকৃতিই মন ভুলাল করতোয়ার ধারে কাল ফুরাল
বাঁশ বন আড়ালে চিকচিক বালুচর দুচোখ জুড়াল
মনে হয় ছোট সৈকতে রুপালি সবুজের হাত ছানি
ক্লান্তি আর নাইকো কাজে তৃষ্ণান্ত মন চাই পানি
উদাস দুপুরে নদীর কিনারে প্রকৃতি ভরা আত্মস্মৃতি।
০৯.০৪.১৭

সুন্দর নীড়

তন্দ্রাচ্ছন্ন ভোর কোন প্রাণি জেগে উঠেনি
তখনো সূর্য্যরে লাল টুকটুক আভা ফুটেনি
হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গলো দেখি বিজলী চমকানি
ঘরেই সতর্ক বৈশাখি ঝড়ের হাতছানি।
বিছানা থেকে উঠি বেলকুনিতে দাঁড়ায়
মেঘের ঘর্ষন যেনো সম্মুখ যুদ্ধে লড়াই
ঘরের ফাঁকে সুরু পথ আম বনের বেড়া
ক্লান্তির মন জুড়ায় সবুজ প্রকৃতিই সেরা।
মেঘলা আকাশে ঝড়োভাব বৈশাখি উত্তাপ
বজ্রপাত বিকট শব্দে প্রাণে বাড়ে হৃদচাপ
বিকট শব্দ শুনে শয়নের শিশু করে কাঁদ
মুষূলধারে বৃষ্টির পর মেঘে উজ্জ্বল চাঁদ।
ধুয়েমুছে ধূলোবালি প্রকৃতির চিকচাক ভাব
সবুজ সমারোহ চারপাশ ঘেরা সতেজ সাঁজ
পথঘাটে যত কাঁদা পথিকের চলতে বাঁধা
কৃষাণের মুখে হাসি ক্ষেতে ফসলের গাঁদা।
ছয় বৈশাখ বৃষ্টির পরে প্রকৃতির শান্ত ভাব
বাঁশবন হতে ভেসে আসে পাখির মিষ্টি ডাক
ষড়ঋতুর সেনার বাংলা নদীমাতৃক দেশ
চৌদ্দশ চব্বিশ বাংলা হোক সুন্দর নীড় বেশ।
১৯.০৪.২০১৭

তেঁতুলিয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে থাই জাতের পেয়ারা চাষাবাদ করে স্বাবলম্বি আতাউর

তেঁতুলিয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে থাই জাতের পেঁয়ারা চাষাবাদ শুরু করেছে আতাউর। সরেজমিন গিয়ে জানা যায় তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের কলোনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান, বয়স অনুমান ৪৮ বছর, পেশায় একজন ট্রাক্টর ট্রলি চালক। যুবক বয়সে তিনি ৮ থেকে ৯ বছর চৌরাস্তা বাজারে খুচরা ও পাইকারী চাউলের ব্যবসা করেন। এই ব্যবসায় ক্রমান্বয়ে লোকসানের মুখ দেখে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে স্থানীয় মালিকের অধীনে কিছুদিন ট্রাক্টর-টলি চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। কিন্তু সড়ক দূর্ঘটনা সহ অন্যান্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে এপেশায় তাঁর মনে স্বস্থি ফিরেনি। আর তখন থেকেই মনের পরিকল্পনা সবুজ নার্সারির পাশাপাশি অন্য কোন বাণিজ্যিক ফলের বাগান করার। যেই কথা সেই কাজ। পরবর্তীতে বাড়ির পাশে সম্পুর্ন নিজ উদ্যোগে একখণ্ড জমিতে দিনাজপুর থেকে আম সহ অন্যান্য চারার বীজ দিয়ে নার্সারী চাষ শুরু করেন। তাঁর নার্সারি থেকে উৎপাদিত চারা বিক্রি করে সংসার চালান। কিন্তু নার্সারী ব্যবসায় মন্দা দেখে লাভজনক হিসেবে শুধুমাত্র নার্সারিতে সুপারির চারা করেছেন। পরে দর্জিপাড়া নামক স্থানে ৫০ শতক জমি ৫ বছর মেয়াদের জন্য ৫০ হাজার বর্গা নিয়ে রাজশাহী শহর স্থান থেকে ৪শত থাই জাতের পেয়ারা চারা রোপন করে একটি বাগান সৃজন করেন।

আতাউরের পৈতৃক নিবাস তেঁতুলিয়া উপজেলার ২নং তিরনই হাট গ্রামের রওশনপুর গ্রামে। শৈশবে স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া শোনা করেন। পরবর্তীতে মাধ্যমিক সহ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা থাকলেও সংসারে অভাব অনটনের কারণে পড়া শোনা করতে পারেনি। কিশোর বয়সে পাবনায় সোলার/ডিপ টিউবয়েল কোম্পানীতে চাকুরি নিয়ে পিতার সংসারে সহায়তা করেন। সেখান থেকে ফিরে ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক পারিবারিক প্রস্তাবে দর্জিপাড়া গ্রামে তেঁতুলিয়া হাসপাতালের চতুর্থশ্রেনীর কর্মচারী মোছা. মালেকার সংগে বিবাহে আবদ্ধ হন। পারিবারিক জীবনে দুই ছেলে সন্তানের জন্য। বড় ছেলে ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। ছোট ছেলে তেঁতুলিয়া ডিগ্রী কলেজে পড়েন।

তিনি নার্সারি চাষাবাদ ও পেঁয়ারা বাগান করার বিষয়ে কোন প্রতিষ্ঠানে পড়া-শোনা কিংবা সরকারি-বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেনি। এছাড়া প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য তাকে কেউ কোন দিন উৎসাহ প্রদান করেনি। সম্পুর্ন নিজ উদ্যোগে ও অন্যান্য বাগান মালিকদের কাছে জেনে শুনেই নার্সারী ও বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়ারা বাগান সৃজন করেন। পেয়ারা বাগানে তার খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ মৌসুমে তার পেয়ারা বাগানে প্রতিটি গাছে ভাল ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে পোকা মাকড়ের হাত থেকে সুরক্ষার জন্য গাছের পেয়ারায় পলিব্যাগ পড়িয়েছেন। প্রাকৃতিক আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাগানের ফলন্ত পেয়ারা প্রায় দেড় থেকে দু’লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে জানান।

পেয়ারা চাষী আতাউরের মতে, চারা সংগ্রহ ও রোপনের উপর্যুক্ত সময় হলো ফাল্গুন ও চৈত্র মাস। ভাল ভাবে জমি তৈরির পর চারা রোপন করে পরিচর্যার পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমে তিন থেকে চারবার গাছের গোড়ায় সেচ দিতে হবে। পেয়ারা বাগানে রোগ বালাই তেমন রোগ বালাই নাই। তাঁর বাগানের চারপাশে বসতবাড়ি ও কিছু বাঁশ ঝাড় থাকার কারণে ব্যাপক হারে মশক পোকার আক্রমন করে। ফলে প্রতি সপ্তাহে কিছু কিছু পেয়ারা গাছে তাকে স্প্রে করতে হয়েছে বলে জানান।

চাষী আতাউরের অভিযোগ-তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্যিক ভাবে পেয়ারা বাগান সৃজন করেছি। কিন্তু উপজেলা কৃষি বিভাগের কোন কৃষি কর্মকর্তা বা ব্লক সুপারভাইজার বাগানে আসেনি। এছাড়া কৃষি বিভাগের কাছে কোন পরামর্শ কিংবা সহযোগিতা পায়নি। এই চাষী মনে করেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও পেয়ারা বাগান সৃজনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করে ও সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা দিলে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি বাণিজ্যিক ভাবে পেয়ারা চাষাবাদে বেশ সফলতা অর্জন করতে পারবে। এছাড়া এলাকায় বেকার যুবক ও নারীদের নার্সারি সহ নানা ধরনের ফলজ ও ফলদ বাগান সৃজনে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহন করলে দেশের বেকারত্ব ঘুচাবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন- তেঁতুলিয়া উপজেলার আবহাওয়া ও উর্বর জমি বিভিন্ন ফসল ও ফল উৎপাদনের উপযোগী। ইতোমধ্যে উপজেলায় বেশ কিছু এলাকায় থাই জাতের পেয়ারা বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। পেয়ারা চাষাবাদ অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় চাষীরা খন্ড খন্ড জমিতে পেয়ারা বাগান করছে। তবে আতাউরের বাগানের কথা আগে শুনি নাই; সময় করে দেখতে যাব। এই কৃষিবিদের মতে, সরকারিভাবে পেয়ারা চাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সুদ বিহীন ঋণ সুবিধা দিলে শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের পথ সুগম হবে।

শান্তির প্রতীক

মা শব্দটি সৃষ্টি জগতে শান্তির প্রতীক
গর্ভে ধারণ করে কষ্টে পথ চলে সঠিক
যখন ভুবনে এলে যতনে লালন করে
সব যাতনা সহে সন্তানের সুখ ধরে।
মা ডাকটি মিষ্টি মধুর সুখ-দুখে বরণ
জননী দুনিয়ায় থাকলে করবো স্মরণ
কখনো কষ্ট দিয়ে পাব না নাজাত
মায়ের সেবা করলে পাব জান্নাত।
মা শব্দটির মর্ম সব সৃষ্টি কুলের মাঝে
যার আচলে পরিবার নানাগুণে সাজে
প্রত্যেহ মা দিবস হোক বিশ্বের ঘরে
জননীর যত্ম নিব সবাই পণ করে।
দুখিনী মায়ের পাশে থেকে বাড়াব হাত
জননীর সুখের তরে এগিয়ে দিব কাঁধ
মা ছাড়া শূণ্য ভুবন সন্তানের সুখ নাই
জননীর মনে শান্তি সন্তানের নীড়ে ঠাঁই।

মা-বাবাকে সুখে রাখ দুনিয়ায় বেহেশ্ত
বিধাতার দলিলে বলে সন্তানের নাই ক্লেশ
জননীকে করলাম অর্পণ সব অর্জন ক্যাশ
বাবা-মা’র সেবার তরে জীবন করবো শেষ।
-০-
১৪-৫-১৭ (মা দিবস উপলক্ষ্যে লেখা)

তুমি দেশের আশা

যৌবন যার উদীয়মান তারুণ্য তার ঠনঠন
সমরে যাবার সঠিক পণ রক্তে দীপ্ত ঝনঝন
সেই প্রতিভা নিয়ে তারুণ্যকে করো বরণ
সফলতা পাবে তুমি ধরায় বীরের মরণ
ওহে তরুণ জীবন গড় সময়ে করো পণ।
তরুণেরা আসক্ত মাদক নেশার ফাঁদ
সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিবার কাত
পাঠশালাতে যন্ত্রণা রাজনীতির উত্তাপ
ছাত্র জীবন অন্ধ্যকার বড় নেতার চাপ
ধ্বংস দেশে যুবসমাজ ভবিষ্যৎ খারাপ।
তারুণ্যে থাকে সততা মনভরা উচ্ছ্বাস
পরিবার সমাজে ছড়াও দীপ্ত আভাস
মাদকাসক্ত সন্তান বাবা-মা খুন করে
প্রতিবেশীর অভিযোগ পুলিশে ধরে
ওহে তরুণ; মরবে কী নেশার ছবলে !
তারুণ্যে খুজো সৎ বন্ধুর সংঘ তাজ
সততা সংঘে রাখো জীবনের সাজ
সৎ কর্মে দীপ্ত শিখা ছড়াও বিস্তৃর্ণ ধরা
দুর্নীতি বাজের মাথায় ভাঙ্গ শক্ত কড়া
কখনো তুমি হবে না সমাজের ফোঁড়া!
গোটা সমাজ ব্যথিত তারুণ্যের ভারে
সন্তানের কর্মের তাগিদে পরিবার কাঁদে
তুমি দেশে অগ্রপথিক সমাজের দিশা
তারুণ্য পুঁজি করো ছাড় মরণ নেশা
আলোক বর্তিকা তুমি দেশের আশা।
০৬-০৫-১৭
সকালে-কম্পিউটার সেন্টারে বসে লিখা।

কলা পাতা

গ্রামের উৎসব ঘিরে কলাপাতার কদর
উঠানে মেহমানদারী বিছানী চটে চাদর
কলা পাতায় ডাল-ভাত খেতে খুব সাধ
গাছের খোল দ্বারা কৃষানের কত কাজ।
বৃষ্টিতে কলাপাতা শত পথিকের ছাতা
সুন্নৎ, সাদি, পাবনে লাগে কুকি পাতা
কলার খোলে খাবার মুখে ভারি মজা
গ্রাম্য সংস্কৃতি পাতার ব্যবহার সদা।
গ্রামের কলাগাছ ধ্বংস আধুনিক যুগে
দাবার গুণে সদাই বিচি কলা খোঁজে
গাছের মুথায় গ্রামে রাসা-বিশুয়া সাঁজ
ঝুঞ্জা কালি মেখে ঝেল্লা ঘুগড়ার হাট।
কলা গাছের শুকনা পাতা কৃষানীর খড়ি
দিন বদলের আগে ছিল কলাপাতা দড়ি
খোকাখুকু মালা গাঁথে কলাপাতা ছিড়ে
কলাপাতা পাটি বুনে খেলা করে নীড়ে।
-০-
২২-০৫-১৭
সহধর্মীনির ইচ্ছাতে কাব্যটি রাতে লিখা।