দ্বীপ সরকার এর সকল পোস্ট

দ্বীপ সরকার সম্পর্কে

সম্পাদক মাসিক কুয়াশা ওয়েবজিন [email protected]

নদীর নাম যমুনা এক্সপ্রেস

নদীর নাম যমুনা এক্সপ্রেস

দ্বীপ সরকার

চেনা পথটা হারিয়ে গেছে
অচেনাপথটা মৃতঃ
এক পথে ঘোলাটে কাদা ঘাপটি মেরে থাকা-
আরেকটা সংক্রামকবাহী ধুলো,

যে পথটা হারিয়ে ফেলেছি তা ছিলো
তরমুজ চেরা নদীপথ –
নদীর নাম যমুনা এক্সপ্রেস,
রঙিন ও সারি সারি কদম্বের কোরাস,
এই পথেই আমার ডুবে যাওয়া টাইটানিকটি
আর খুঁজে পাইনি।

বাঁকিসব অচেনা পথে
ধূলোসাঁতারে হাবুডুবু খাচ্ছে বিব্রত নাবিক-

বেকুব তরমুজ এক মিথ্যা নদী –
এখানে ঘাপটি মেরে থাকা তরমুজের বিচিগুলো
সকাল থেকেই খেসারত দিচ্ছে-
‘ভুল পথ জন্মালে অপরুপ মিথ্যাদের সাহস বেড়ে যায়,

লেখাঃ ২২/৪/২০১৭ইং

এই সব কবিতা হতে পারতো

কবিতা মানেই প্রেম বিরহ,সুখ দুঃখ,প্রকৃতি ;

অথচ একটা কথা বলতেই হয়
লাশকাটা ঘরের কোন প্রাণ নেই,
কারন,ওখানে অস্ত্রের যুক্তি চলে।
লাশ কাটার চাকু, কুড়াল,দা, ছুরি,
দূর্গন্ধময় নিঃশ্বাস,ভয়,
এই সবও কবিতা হতে পারতো-
তাকে যদি কবিতা ভেবে
সবুজ চাকু দেই
সবুজ কুড়াল দেই
এবং আলো বাতাস ভর্তি একটা ঘর দেই।

লেখাঃ ২৯/১২/২০১৬ইং

মানচিত্র ঘুমালে

মানচিত্র ঘুমালে
.
দ্বীপ সরকার
.

ঠিক উন্মুক্ত শরীর, বাদাম চেরা স্তন বেয়ে
আসা ক্লীব লিঙের আত্না,
অসম্ভব ভয়ের বেড়াল ঝাঁপিয়ে পড়ে যেনো,
জড়বস্তুও আচনক খুলে ফেলে চোখ।
.
দয়িতার নাটকে ধর্মের জয় দেখে অধর্মের চোরাবালি কান্না,
আমরা গুটিকতক চিত্রানদীর জোসনা,
পালকহারা থৈ থৈ রাত্রীর সংসারে অতিথি পাখি,
জিব্রীলের ডানায় চরে মুখ লুকিয়ে আসা
শামুক বড্ড উপার্জনমুখি প্রাণী মনে হচ্ছিলো –
কি সুন্দর ধীরে ধীরে ভিড় চিরে
পথিক বেভুল যেমন চরাচরে।
.
এমনটাই ভাবি এখন। মানচিত্র ঘুমালে
এমন ভয়াল বেড়াল ঝাঁপিয়ে পড়ে কিনা।
একাত্তরে যেমন মানচিত্রকে ঘুমাতে দেয়নি কেউ কেউ….
.
লেখা ৪/৩/১৬ইং

মানচিত্র ঘুমালে

গ্ল্যামার

received_1857479214524611

চোখে চোখে রেখে নদী হয় অরণ্য
অরণ্যের সাপ হয় জলপ্রপাত
তিলক পড়া ঘুঙৃরের নিচে ফুলটা কি বন্য?
বুকের নিচে আমার কি যে অপঘাত।
~
কিঞ্চিত অবশিষ্ট থেকে ডুবে যায় সন্ধ্যা
তখন কে যেনো ডেকে যায় পূবালীতে
এক নারী ; গুনিয়াকুড়ি গ্রামের বন্ধ্যা
আনচান করে মন, পুড়ে খই হই বালিতে।
~
শরৎ গেলে সটান রৌদ্রের দুপুরে এসে
জলময় ঘাসগুলো চিৎ হওয়া বউ আমার
কার ঠোঁটে মিশে গেলো ভালোবেসে
ধূসর দুপুরের উঠোনে এসে দেখি- ‘গ্ল্যামার,।
~
লেখাঃ ৪/৩/১৭ইং

‌বিষণ্ণ ঠোঁট

তুমি যতোটা ক্ষত দেখ পিচ সাঁটা সড়কে
তৃষ্ণার্ত বুক পোড়ে কাঠ খড়ি নরকে
নিস্তবদ্ধ সুনসান হৃদয়, বিষণ্ন ঠোঁট
ও ঠোঁটে উষ্ণতা ভরা নক্ষত্রের নোট;
পিদিমহীন আঁধার,চিলেকোঠার রাত
বিরক্তিকর প্রশ্নে থেমে যায় করাত।

খরচহীন ধ্যান নিয়ে ভ্যালেন্টাইন খুঁজি
ছকে বাঁধা প্রেম! সহজেই যেনো বুঝি।
মিমাংসিত তীরচোখে ভুল তুমি
দাগটানা খাতার ভেতর শুণ্য ভূমি
ঠোঁটের দাগ;চুম্বন বলে খ্যাত যা
নিঃসৃত চাহনীর ফাঁকে ঝুলে থাকা।

লেখাঃ ১৪/০২/১৪ইং
শাজাহানপুর,বগুড়া।
01719751792

অভিমানী রোদটা সরে সরে যাচ্ছিলো

এখনকার শীতের রোদ
পাকা টমেটোর মত কালারফুল জানেনতো,
সকালে জানালাটা খুলতেই হির হির করে
দাঁত কেলিয়ে ঢুকে পড়ছিলো বেড রুমে।
সেই রোদকেই ধরতে গিয়েছিলাম-
রোদটা ক্রমশঃ সরে সরে যাচ্ছিলো।
আমার পোষা পাখির মতই
ঘরে ঢুকে আয়নাবাজি করে,
প্রতিবিম্ব ছড়ায় ড্রেসিং টেবিলে,
ঘরের ডাইনিং এ ওঠে,
দেয়ালে ওঠে,
আমি তাকে শত্রু ভেবে ধরতে যাই
কিন্ত রোদটা ধাতেছটার ফাঁকে অভিমানী
রোদ চলে যেতে থাকলে সাবলিল ধাঁচেরচিত হয় গণদূপুর।

রোদকে যতই ধরতে যাই
রোদটা ক্রমশঃ সরে যেতেই থাকে।

অতঃপর যে যার মত পৃথক হয়ে গেলাম।
রোদ আর আমি।

লেখাঃ ২/১২/১৭ইং

সিজোফ্রেনিয়া শীত

বৈদ্যুতিক খুঁটি বেয়ে নেমে আসা দয়িতার শীত
দরিদ্রদের উঠোনে নামাচ্ছিলো কুয়াশার প্লেন,
আমি দারিদ্রতা ভুলে প্লেট ভর্তি শীতকে
সেঁক দিতে শুরু করি উনুনে।

সিমের মাচানে যে রৌদ্র সাংসারিক হচ্ছিলো
বলে আমি মনে করেছিলাম-
অক্ষরের সমীকরণে তাকে ভাবতেই পারি রোদ্দুরের ট্রেন,
ভাবতেই পারি রক্ষণশীল বুনো নক্ষত্র
গোধূলী নামাচ্ছে বলে
সে সন্ধ্যায় গেঁও প্রেমিক ইশারা বুঝেনি।

আমি প্রেমিক চাঁদকে ডেকেছিলাম আমার একান্তে….
অথচ শীতের ডোড়াকাটা বাঘ সিজোফ্রেনিয়া ছড়ালো
আমি আক্রান্ত শিকারীর মত বিশৃঙ্খল চিল।

লেখাঃ ২১/০১/১৭ইং

আমিও তো মানুষ

বস্তা বস্তা নীল, কষ্টদের মিমাংসিত
অধ্যায়ের চিঠি পড়ে থাকে হলুদ খামে,
কেউ ছুঁয়েও দেখেনি বলে
বিভৎস দেখে ছায়াহীন রোদ,
ওপাশে পুরনো কষ্টের চাকু উন্মুখ থাকে,
কেটেকুটে পার হওয়া চাকু কখনো
আত্নীয় হতে পারেনা।

তবু সহ্যের আলোয় নিজেকে বিকশিত করি।
আমি আকাশ। চারপাশ দুরন্ত নীল।
আর কত বিষ ঢাললে নীলগুলো সাদা
হবে কার জানা আছে বলো?
অথচ এই তুমি আমার দিকে তাকিয়ে
বিষের পিয়ালা এগিয়ে দাও
আর ঢোকে ঢোকে তা গিলে ফেলি আমি,
আমিও তো মানুষ!!
ঘোড়াটেপা বন্দুকের নালায় সাইড ইফেক্ট পড়েনা বলে
গুলিবিদ্ধ করো আমাকে,
বিতারিত আদম হাওয়ার শরীরে আজও
কষ্টের গন্ধ শুঁকে বেড়ায় অবাধ্য নীল।
আর আমি!
আমি তো নগন্য মানুষ,
তবুও তো মানুষ।
লেখাঃ১৩/৬/১৬ইং,

চাঁদবালিকা এবং একজন কবি

তখনো একদলা চাঁদ ঢালছিলো জোসনা,
চোয়ানি খেকো গোঁফওয়ালা লোকটি নামাচ্ছিলো রাত,
গ্রামের মেঠো রাস্তায় শরতগুলো
ঢেলে দিচ্ছিলো চাঁদের শরীর।
এবং ধানক্ষেতে সুবিধা বঞ্চিত শিশির।

চাঁদনি রাত বলে কথা -তাই
রাস্তার পাশেই বসা ছিলো চাঁদ বালিকা,
নিতম্ব ছুঁয়ে যাচ্ছিলো ছায়ার চরিত্র
আকাশগুলো সাঁই সাঁই শব্দে আঁচুলে নামছিল তার।

কবি আড়চোখে তাকিয়ে চোখে তুলে নিলো মেয়েটিকে-
কবির দৃষ্টির উঠোনে জড়তা মোড়ানো প্রেম
মেয়েটির চোখে খসে পড়ছিলো অনুভূতির রাত।

বালিকাটি হাত বাড়ালে তৈলচিত্রের
এক কপি জোসনা যেনো কবিতা হচ্ছিলো তখন,
উড়ছে উজানে নিঃশ্বাস,
দিঘীর জলে ঢালছে পদাবলীর চন্দন,
অতঃপর কবি বালিকাটিকে কবিতা ভেবে
চাঁদকলম ছুঁয়ে দিলো কপোলে,
কবি কবিতা লিখছে যেনো বালিকাটিকেই লিখছে।