ফকির ইলিয়াস এর সকল পোস্ট

ফকির ইলিয়াস সম্পর্কে

কবিতা লিখি, থাকি নিউইয়র্কে।

লাগাতার সন্ধ্যার আয়তন

ক্রমশ আইসিইউ তে চলে যাচ্ছে গোটা বাংলাদেশ!
দীর্ঘতর সন্ধ্যায় গালে হাত দিয়ে বসে আছেন মা,
একটি গামছা দিয়ে জড়িয়ে ছোটবোন’টিকে নিয়ে-
হাসপাতালের দিকে ছুটছেন অগ্রজ!
এম্বুলেন্স ছুটছে,
সাইরেন বাজানো ভুলে গিয়ে শুধুই
আকাশের দিকে তাকাচ্ছেন চালক ;
ঠাঁই নাই – ঠাঁই নাই
ক্লিনিকের করিডোরে কাঁদছে বিষণ্ণ কাক!

মৃত্যু ছাড়া আর কোনো সংবাদ মাইকে
প্রচার করতে পারছেন না মসজিদের
মোয়াজ্জিন। মন্দিরের উপাসক-
দু’হাত তুলে প্রার্থনা করছেন প্রভুর কাছে,
পাখিরাও ওড়াওড়ি ভুলে গিয়ে-
যাপন করছে বিষাদ-বিলাপ!

সন্ধ্যার আয়তন বেড়ে গেলে দীর্ঘ হয়
রাতের পরিধি!
কিন্তু হায়! মানুষ কতোটা মেনে নিতে পারে
আঁধারের আয়ু! কতোটা বিপন্ন হয়ে
জানান দিতে পারে নিজের অসহায়ত্ব!

আমি নির্বাক চেয়ে আছি।
আমি নিজের সাথেই সারছি সংলাপ।
একটি প্রভাতের জন্য আমি আরাধনার
ডালি সাজিয়ে বলছি…
মহান শক্তিধর হে!
তুমিই তো বলেছ- তোমার ক্ষমা থেকে
কোনো প্রাণই বঞ্চিত হয় না!
#

মাস্তুল

এই বাঁকে কী এর আগে দাঁড়িয়েছিল কেউ। মাস্তুল কাঁধে ফেরারী মাঝির
মন নিয়ে দেখেছিল ভাঙনের সপ্তদৃশ্য ! এবং ওপারের মানুষের বিরহে
ঢেকেছিল দু’চোখ !

এমন প্রশ্ন নিয়ে জল খেলে ঘূর্ণি ঘূর্ণি খেলা
বেলা বয় ধীরে-
যমুনার দুই পাড়ে স্মৃতিমেদ বসিয়েছে মেলা !

এ্যাটাচম্যান্ট

মেঘের আলোয় লুকিয়ে রাখি মেঘালয়। অনাদি ঈশ্বর এসে ঢেকে দেবেন
আমাদের কামঘুম, সে প্রত্যয় নিয়ে গোণি প্রহর। বুঝে, না বুঝে আমরা
যারা খেলি প্লাস-মাইনাস খেলা, তাদের সমবেত তাঁবুতে ছিটাই কুয়াশামন।

সংগ্রহ শেষ হলে পাঠিয়ে দেবো তোমার ঠিকানায়। লগো দেখে তুমি তা
যুক্ত করে নিতে পারবে তোমার ডেস্কটপে। তারপর ম্যাচমেকিং করে দূর
আকাশের রঙের সাথে মিলিয়ে নিতে পারবে গৃহীত উত্তরের রঙ। চাইলে
ডিলিট ও করতে পারবে। তবে বলি, তার আগে শিখে নিও ‘সেভ ইয়র
সোল’। এ্যাটাচম্যান্ট করে পাঠিয়ে দিও অন্য কারো কাছে।যে জন যতনে
শিলং শহরে ……..
একজন অনিমিতা দেবরায়ের খোঁজে দিবানিশী ঘুরে।

ঘাসগল্প

কিছুটা গৌরবগরজ নিয়ে আছি। কিছুটা রক্তাক্ত রাতের শরীরে মিশিয়ে শরীর।
এভাবে থেকে যেতে হয়। বিনয়ের কবিতা পড়ে শিখেছি বিনয়।
আর শক্তির কাছ থেকে ধার নিয়ে শক্তি, খুঁজেছি নির্জনতার ছায়া।

শনাক্ত করতে পারলে বুঝা যায় জলভাষা। দৃষ্টির দিগন্ত ছুঁলে ধরা যায়
বৃষ্টিবর্ণ। প্রতিবেশী প্রেমিকাকে ঘাসগল্প শুনিয়ে ঘুরা যায় নক্ষত্রনগর।

কিছুটা মৌনতা নিয়ে আছি। গৌণ ভুলগুলোর চূড়ায় গোলাপ পাপড়ি
সাজিয়ে বার বার হয়েছি বশ্য। পারলে দিয়ে যেতাম এর অধিক কিছু।
এই শৌর্যের সন্ধ্যাতারার মেলায়, ভার্চুয়াল জোসানারা যেমন ভাসে দ্যোতনায়।

ছিটমহল

ছড়িয়ে আছে পাথরদানা। জানা- অজানার বনভূমি ছুঁয়ে শিশুরা খেলে
যাচ্ছে সাপ-লুডু খেলা। বেলা দাঁড়িয়ে দেখছে জীবনের গমনদৃশ্যরূপ।
চুপ করে থাকি। আঁকি আমিও সম্প্রসারিত ভুলের কোলাজ। আওয়াজ
দেবার কথা ছিল যাদের, তারাও ছিটমহলের বাসিন্দা এখন। দ্রবণ
শেষ হলে প্রেমও কি তবে ছিটকে পড়ে পরাকাশের, প্রান্তে অবশেষে!
ভালোবেসে মাটির মরম, দেখে যেয়ো … জমাট পাথর বাঁধা বুকের প্রদেশে।
।।।।।।।।

পাঠক সংখ্যা এক

যে কবিতাটি আমি একটি জাতীয় দৈনিকে
পাঠিয়েছিলাম, তা আর কেউ পড়েনি। শুধু
পড়েছিলেন ঐ দৈনিকের সাহিত্য সম্পাদক।
তারপরে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন ডাস্টবিনে। সেই
থেকে আমার ঐ কবিতাটির পাঠক সংখ্যা
একজনই।

তিনি ফেলে দিয়েছিলেন, কারণ তার ভালো
লাগেনি কবিতাখানি।

এই ভবের বাজারে, অনেকের অনেক কিছুই
ভালো লাগে না।
কারো ভালো লাগে না যোগাত্মক যন্ত্রনা।
আবার, কারো ভালো লেগে যায় বিয়োগাত্মক বন্দনা।

তা নিয়ে আমার কোনো অনুযোগ নেই
প্রকাশিত কথা হচ্ছে এই ……
যারা কবিতা বুঝতে জানে তারা প্রজাপতির পাশে দাঁড়াবেই।
।।।।।।।।

বদল বিষয়ক

বদলে যাওয়া মানেই বর্জ‌্যের শেষ তলানিটুকু নয়-
বদলে যাওয়া মানেই- পরে নেয়া নয় পশুত্বের খোলস
বদলাবার নামে যারা পান করতে চাইছে ধুমকেতুর সিগ্রেট
অথবা যারা গাইতে চাইছে দেহদক্ষিণার গান,
তাদের কাছে বদলে যাওয়া মানেই-
গায়ে জড়ানো একটি মৌসুমি হাওয়ার প্রলেপ।

বানর বদলে মানুষ হয়েছে
অথবা মানুষ বদলে হয়েছে পাথর-
এমন অনেক উপাখ্যান পড়তে পড়তে আমরা যখন
আকাশের দিকে তাকাবো তখন দেখবো,
মাটিজীবী রাত্রিই গ্রহণ করে নিয়েছে সকল প্রাণের সারৎসার।

আর বদলের ইতিহাসটি শাণিত হয়েছে নরসুন্দরের ধারালো ক্ষুরে !

দুটি কবিতা

ঘুমতালিকার দ্বিতীয় বোতাম

প্রথমটি খসে পড়েছে অনেক আগেই। আমি যখন তৃতীয় বোতামটি
তালাশ করছিলাম, তখনই দুচোখ জুড়ে নেমেছিল বৃষ্টিঘুম। বেশ দীর্ঘ
হয়েছিল রাততালিকা। আর এই গ্রীষ্মাকাশে তারা উড়াবে বলে, ক’টি
পাখি আমার সাথে ধরেছিল বাজি। হারা-জেতার ভয় না করেই।
রাত মানেই ঘুম।ঘুম মানেই রাত। এই বিনম্র শর্তাবলি অস্বীকার করে
আমি পাখিদের সাথে জুয়া খেলতে বসেছিলাম। খুঁজেছিলাম, অস্তগামী
ভোরের বিবরণ।আবার দেখা হবে বলে যে গোলাপ বাগান থেকে
বিদায় নিয়েছিল- তার ছায়ামূর্তি। আমার একবারও মনে পড়েনি-;
দ্বিতীয় যে বোতামটি আমার বুক থেকে খসে পড়েছিল, মূলতঃ তা
ছিল একটি পাথরদানা। তুমি যাকে বিদ্রূপ করে বলতে- ‘প্রেম’॥
#

ছায়াপেশী

মহান পেশীর ভেতর ডুবে আছে চিতা
চিতার মাঝে হাসছে ফুল,
না- আমি ভুল বলছি না
ভুল করে ওই ছায়াপেশী ঢুকে পড়ছে আরেকটি
পেশীর ভেতর।
কামনার ঘোর চোখে যে আগুন জল’কে পোড়ায়,
আমি তার মাঝেই খুঁজে ফিরি তোমার ভগ্নস্বর।
#

আমার প্রিয় কবিতা … আপনারও ভালো লাগতে পারে

আমার প্রিয় কবিতা …
আপনারও ভালো লাগতে পারে

ফটোশপে বানানো ছায়া

আলো দিয়ে বানাবার কথা ছিল ঘর, তা দখল করে নিচ্ছে
ফিকে রেখা। মানুষের মনে জমে থাকার কথা ছিল যে
বিনীত ধর্মের বয়ন, তা চলে যাচ্ছে মিথ্যের দখলে।
কিছু প্রতারক ছবিদোকান খুলে, বিক্রি করছে, মেকি
হাড়-মাংস, অনুভুতি,অহংকার, প্রেম,এবং ভূমিমাটি।

যাদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা ছিল, তারা বেছে
নিয়েছে অন্ধপ্রায় জীবন। যে পাখিগুলো কবিদের পক্ষে
উড়বে বলে জানিয়েছিল প্রত্যয়- ওদের বন্দী করেছে
কিছু বেনিয়া শিকারী। অবশ হয়ে পড়েছে কিছু রাজনীতিকের হাত

ছবিদোকান থেকে মিথ্যে ছবি কিনে, তা বাজারে ছড়াচ্ছে
কতিপয় সুবিধাবাদী। আর আমরা যারা তালিয়া বাজাচ্ছি,
তারা নিজেরাও জানি না, একদিন এই ছবিদোকানে
নিলাম হয়ে যেতে পারে আমাদের ঘর-সংসার, আমাদের ছায়া।

চাঁদভাঙা রাতে

উনুনে উদার আকাশ। ছিল সবই, আঙিনার হলুদ বকুল
শিমুলের উজ্জ্বলতা, চিত্রা নদীর বাঁক ফেরা ভ্রমণ। তার
পরও অবসন্ন বিকেলকে সাথী করে ছুটেছি চাঁদভাঙা রাতে,
তোমাকে পাবো বলে অতিক্রম করেছি রক্ষণের সপ্তদশ
সীমান্ত। দেয়াল খুলে দিলে যে কেউ হতে পারে যে কোনো
দেশের বাসিন্দা। আমি কেবল সীমান্ত পেরিয়েছি। কেউ
আমাকে আশ্রয় দেয়’নি। না রাষ্ট্র, না রাত, না রাজাসন…..
#

প্রদীপ ও প্রার্থনার গল্প

সকল প্রার্থনা, প্রদীপ হয়েই জ্বলবে জানি তোমার
চোখে। আলোর ঝলক; ধারণ
করবে চোখ, ললাটে বৃষ্টির দাগ
স্পর্শ করবে বনেদি আগুন-
না ছুঁয়ে দেখা ঈশান কাছে এসে
বলবে,
নেবে! তুলে নেবে এই বৃষ্টিবিতান!

মেঘেরা ফিরে যাবে ঘরে। সূর্যপিতার আদেশ পেয়ে
রাতও বিছিয়ে দেবে তার নমস্য সুন্দর। আমি কিছু
পবিত্র পাপের আরাধনা সেরে আবার ঝড় গোণতে বসবো।

আমার বসে থাকায় কারো কিছু যাবে আসবে না। কিংবা
দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ জানতে চাইবে না এর কারণ। এসব
রহস্যের চাঁদ থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বেশ আগেই।

মানুষ ফেরায় মুখ। অথবা মুখ ঘুরে দাঁড়ায় ছায়ার বিপরীতে।
শুধু অখণ্ড থেকে যায় মানুষের রক্তশিল্প। আর ঘামঘোরে
যারা ডুবে থাকে, শুধু তারাই দেখে ,এভাবেই মুগ্ধ প্রেমপতন!
#

বিপ্লবের বহুবিদ ভ্রমণ

eliu

চে,
অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালে
‘ছোটদের রাজনীতি’ পড়তে পড়তেই
আমি জেনেছি তোমার নাম!
আদৌ তোমার কোনো জন্মদিন
ছিল কী না –
তা,না ভেবেই আমি হিসেব করেছি
সূর্যের বয়স! এই পৃথিবীতে
অনেকগুলো সূর্য আছে;
অনেকগুলো বিপ্লব ভ্রমণ করে
বহুবিদ মেহনতী মানুষের পাঁজর-
তা জানতে জানতেই আমি লিখেছি-
চাঁদের গায়ে প্রিয় বিপ্লবীদের নাম।

চে,
৩৯ বছর সময় কোনো জীবনের
জন্যেই যথেষ্ট নয়!
কোনো বিপ্লবী বৃক্ষই এই সময়ে
মৃত্তিকায় গাড়তে পারে না শিকড়
কোনো নক্ষত্রই স্থির থাকতে
পারে না, পৃথিবী নামক গ্রহে !
তারপরও সমুদ্র লিখে রাখে
নিজের জন্মইতিহাস, যে আগুন
পোড়ানো ভুলে গিয়েছিল,
সেও যাপন করে অনন্ত জন্মঋতু।

চে,
বিপ্লব মানেই তোমার জন্মদিন!
যারা তত্ত্বকথা লিখে,
আর যারা প্রাণের বিনিময়ে আঁকে
বিপ্লব,তাদের মাঝ বড়দাগের পার্থক্য
থেকে যায়। কেউ মৃত্যু নিয়ে খেলা
করে, আর কেউ বরণ করে মৃত্যু!

চে,
তোমার জন্মদিন এলেই আমি
আরও কয়েকটি বৃক্ষ রোপণ করি,
আরও কয়েকটি পাখিকে মুক্ত করে দিই-
ওরা বেড়ে উঠুক।
ওরা উড়ে যাক।
যতদূর যাওয়া যায়-
যতদূর প্রাণে প্রাণে বেঁচে থাকে
দ্রোহ, ধ্বনি ও দৃষ্টি –
প্রজন্মের জন্যে আরেকটি
আকাশের বজ্রআঁকা সেতু।
🌹
#

চে গুয়েভারা-র জন্মদিনে
১৪ জুন ২০২৩, বুধবার
নিউইয়র্ক

কবিরা এরকমই যায়

[ খোন্দকার আশরাফ হোসেন- আপনাকে ]

দুহাতে তুলে রাখি কিছু বনঢেউ। আজ আমি কিছুই সাজাবো না।
না আকাশ, না পুষ্প, না আগুন। কারো গায়েই পরাবো না
নতুন কোনো পোশাক। কিছু অন্ধকার আমার প্রিয় হোক, কিছু
বিচ্ছেদ ছিন্ন-বিছিন্ন করুক আমার পাঁজর – এমন প্রত্যয় নিয়ে
আজ আমি নগরে বেরোবো যারা এর আগে দেখেছে মৃত্যু, যারা
এর আগে প্রেমকে পরিত্যক্ত ভেবে হারিয়েছে নিরুদ্দেশ, আমি
তাদের তালিকা বানাবো। তারপর এই জীবনকে বিদায় জানিয়ে
খুঁজে নেবো সমুদ্রজীবন। এই আয়ুকে মিশিয়ে দেবো কবিত্বের একক
অহংকারের সাথে। আর কবিতার বই খুলে সেরে নেবো কাটাকুটি।
জানি, কবিরা এরকমই যায়। কেউ জানে- কেউ জানে না। কেউ
ছায়া দেখে। কেউ খুঁজে পায়না রেখে যাওয়া মায়াচিহ্ন। কবিকে
শেষ পর্যন্ত যেতেই হয়। ঘুমে- ঘোরে আর ঘরের অদূরে। সে পংক্তি
আমিও লিখছি- ঠিক তার বিপরীতে, দেখা হবে অন্য কোনো ভোরে!

#
১৭ জুন/ ২০১৩
নিউইয়র্ক

তবে কথা হোক

কথা হোক বনের আলোতে
জোসনায়-ভেজা চুলের স্মৃতি শুকাতে শুকাতে
বেদনায়,
বৃষ্টির লালিমায় মেঘ যেমন মুখ লুকোয়-
পরিণত ভোরগুলো গেয়ে যায় জীবনের জয়।

কথার আড়ালে থাকুক, অনেক কথার পাহারা
নিতে নিতে বর্ণময় নিশ্বাস-
জলের সমান্তরালে জল
ফুলের সমান্তরালে ফুল
সাজিয়ে আসুক কাছে,
জ্যোৎস্নাগন্ধ পেতে চায় যারা।

কথা হোক, রাত্রির বাহুতে রেখে চোখ
প্রতিবেশী পরাগেরা –
প্রণয়ের চিরসাথী হোক।

দাঁড়িয়েছো বৃষ্টিতে, অথচ ভিজে যাচ্ছো না

যারা পেয়ে যায় আন্তর্জাতিক প্রবেশাধিকার শুধু তারাই বলতে পারে আমার
কোনো দেশ নেই। পৃথিবী স্বদেশ আমার- এমন উচ্চারণে কাব্যপংক্তিমালায়
কন্ঠ মিলায় কবিও। আর প্রকৃতই উদ্বাস্তু যারা, তারা একটুকরো ভিটের স্বপ্ন
দেখে কাটিয়ে দেয় ভিনগ্রহের জীবন। মার্কিনী নীল পাসপোর্ট পাবার পর যাদের
জন্য উঠে গেছে সিংহভাগ রাষ্ট্র সীমান্তের ব্যারিকেড, তারা বলতেই পারে তাদের
নাম বিশ্বনাগরিকের খাতায়। উড়ে যেতে পারছে এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে।
এক দেশ থেকে অন্য দেশে-ভিসাপত্রহীন।এসব দৃশ্যবিন্দু দেখতে দেখতে যে তুমি
বৃষ্টিতে দাঁড়িয়েছিলে- আমি দেখছি, ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে আছো। অথচ ভিজে
যাচ্ছো না। বর্ষণকন্যারা ছুঁতে পারছে না তোমার আঙুল। তোমার চিবুকে,
চুম্বনরেখা এঁকে দিতে পারছে না কোনো বজ্রপুত্র। আর সমান্তরাল বৃষ্টির ছায়াগুলো
ঝরে পড়ছে, পৃথিবীর সব মানুষের উপর।