মিতা এর সকল পোস্ট

মিতা সম্পর্কে

দিন ফেলে রাতে দৌড়াই; রাত ফেলে দিনে। শরীর ফেলে মনে দৌড়াই; মন ফেলে শরীরে।সব পাই,আবার কিছুমাত্রও পাই না। স্বপ্ন ঊড়ে বারে বারে,তবুও স্বপ্ন দেখি লেখাপড়া ক্লাস ফাইভ ।

এলেবেলে-৮

ইদানিং বাংলা ছায়াছবি বা সিরিয়ালের ইংরেজী টেলপ দেখি ভাবি অনুবাদ কি এত সহজ ! সেদিন একটা ছবি দেখছিলাম বাংলাতে একজনের নাম অনল আর ইংরেজীতে “Anal”। লজ্জা পেলাম।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “শেষের কবিতা” উপন্যাসে কবি গুরু কিছু ইংরেজী কবিতা বাংলাতে অনুবাদ করেছেন। যেটি কবি গুরুর ভাষাতে বাংলায় রুপ নিয়েছে…।

চুমিয়া যেয়ো তুমি
আমার বনভূমি,
দখিন-সাগরের সমীরণ,
যে শুভখনে মম
আসিবে প্রিয়তম–
ডাকিবে নাম ধরে অকারণ।

ইংরেজী মুল কবিতাটি
BLOW gently over my garden,
Wind of the Southern sea,
In the hour that my Love cometh
And calleth me!
My Love shall entreat me sweetly,
With voice like the wood-pigeon;

‘I am here at the gate of thy garden,
Here in the dawn.’
266. The Beloved
By Katherine Tynan Hinkson (b. 1861)

নাটক ডকুমেন্টারি বা ছায়াছবির টেলপে অনুবাদ ব্যবহার করার সময় আরো কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। সাধারনত চলমান মুভিতে ১০ সেকেন্ডে ১০/১২ র বেশী শব্দ পড়া সাধারনের পক্ষে অসম্ভব। এই কারনে অনেক সময় দেখা টেলপের অনুবাদ পড়ার আগেই নতুন দৃশ্যে চলে যায় টেলপ।

খুব জানতে ইচ্ছা করছে এসব অনুবাদ কারীর নাম ছায়াছবি, ডকুমেন্টারি বা নাটকের শেষে উল্লেখ করা হয় কি ?

ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা

মেঘবালিকা
তোমার চিঠি পেলাম। চিঠির তারিখ দেখেই চমকে উঠছি। তুমি যখন আমাকে লিখছিলে তার কয়েক ঘন্টা পর অনেকেই মেতে উঠবে ভ্যালেন্টাইন দিবসের উল্লাসে। একটা দিন ফুল দেয়া নেয়াতে মেতে উঠবে।

জানা হয়নি তোমার ফুল দেওয়ার বা নেওয়ার মতো কেউ আছে কিনা। ইচ্ছে করলে জানাতে পার। কি জান ফুল এমন একটা জিনিস তুমি মৃতকে হাজারো দাও কেউ প্রশ্ন তুলবে না কিন্তু জীবিতকে একটা দিলেই লক্ষ জিজ্ঞাসা। হয়তো এ কারনেই জাপানে ভ্যালেন্টাইন দিবসে চকোলেট দেওয়া হয়। সেটা মেয়েদের কাছ থেকে পুরুষকে এবং তা শুধু প্রেমিকই নয় অফিসের বস থেকে কলিগ সবাইকে দেয়। এমনকি প্রাইমারী স্কুলের মেয়েরাও দেয় …। এদিন পুরুষেরা শুধু নেবে। আর ১৪ই মার্চ পুরুষেরা তার জবাবে “কুকি” দেবে। ১৪ই এপ্রিল কে এদেশে হোয়াইট ডে বলা হয়।

জবাব দিতে দেরী হলো, বলতে পার ইচ্ছে করেই সময় নিয়েছি।
ইতিমধ্যে মেলা শেষ হয়েছে। এক বছর পর আবার জমবে মেলা। বসবে নতুন পসরা নিয়ে। সেদিন আমি আর তুমি কে কোথায় থাকবো জানিনা। জীবন এমনই। কখন কোথায় কার সাথে কি ভাবে দেখা হয়ে যাবে কেউ বলতে পারে না।

ভালোই বলেছ “তু‌মি আ‌মি অাধা কাল্প‌নিক”। সত্যিই তাই। একসাথে একই ছাদের নীচে থাকলেও আমরা একে অন্যকে কতটুকু জানতে পারি। মানুষের মন এমন একটা জায়গা যেখানে অন্য কারোরই প্রবেশাধিকার নেই। আমার মনে হয় কল্পনাই ভালো। মনের মাধুরী মিশিয়ে গড়ে নেওয়া যায় নিজের মতো,স্বপ্নের মতো। সমস্যা হচ্ছে আমরা স্বপ্নের মতো জীবন সাজাই, যাই বলো না কেন জীবন আর স্বপ্ন দুটো কখনো এক হয়না। স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। তবু আমরা স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন রেখেই আমরা চলে যাই।

চা খাবার আমন্ত্রন রেখেছ, যদি কোনদিন সুযোগ হয়। গুড়ের চা। আবার ভয়ও করে। ছোট বেলায় আমার দাদার প্রতিষ্ঠানে গুড় তৈরী হতো সেটি ছিল আমাদের বাড়ী থেকে অনেক দূরের একটা জেলাতে। এখন নেই, দাদাও গত হয়েছেন অনেক বছর হলো। আমার কখনো দেখার সুযোগ হয়নি। তবে মাঝে মাঝে দাদা কলসীতে করে গুড় নিয়ে আসতেন। গ্রামের লোকদেরকে দিতেও দেখেছি। আমার খুব মনে পড়ে সেই গুড়ের কলসীর উপরের দিকের গুড় গুলো অনেকটা চিনির মতো দানাদার ছিলো। তুমিই মনে করিয়ে দিলে।

মিষ্টি জিনিষটা কমই খাই, তাই বলে খাই না বললে ভুল হবে। দেশে যখন চা খাই মাঝে মাঝে চিনির সরবত মনে হয়। এমনকি দোকানেও চিনি ছাড়া চা পাওয়াও দুস্কর। চা বানানো একটা গুন, রান্নার মতোই। অনেকে খুব চমৎকার চা বানাতে পারেন। সেরকম একজন মানুষের দেখা পেয়েছিলাম। আমি তখন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় কর্মরত। আমার উপর তলায় থাকতেন ভদ্রমহিলা। এখন কোথায় আছেন জানি না। জানার চেষ্টাও করিনি, যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।

এই জীবনে আমি অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। ভালোবাস কত্ত রকমের হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় সেরকম সৌভাগ্য কজনেরই বা হয়।
ভালো থেকো।
মিতা
২ এপ্রিল ২০১৭

এলেবেলে-৭

দুই দিন আগে আমার এক বন্ধু আমার কাছে ৫ টি বইয়ের নাম জানতে চেয়েছিলেন “যে বই পড়ে আমার মনে হয়েছে অন্যেরও পড়া উচিত”।

আমি খুব ভাবনায় পড়ে গেলাম। আমি সব ধরনের বই পড়ি, পড়তে ভালোবাসি। পাঠ্য থেকে অপাঠ্য সব বই- ই। স্কুল জীবনে পাঠ্য বইয়ের ভিতরে লুকিয়ে অপাঠ্য বই পড়েছি। রোমেনা আফাজের “দস্যু বনহুর”। কাজী আনোয়ার হোসেন এর “মাসুদ রানা”। ইমদাদুল হক মিলন, মঈনুল আহসান সাবের, হাসনাত আব্দুল হাই, সমরেশ বসু, সমরেশ মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, আবুল বাসার, বুদ্বদেব গুহ …। পড়েই চলেছি …।

সমরেশ মজুমদারের “বাঙ্গালীর নষ্টামী” বই এ কয়েকটি বইয়ের নাম উল্লেখ আছে, উনার মতে এই বই গুলোই বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লিখা। বঙ্কিমের কমলা কান্তের দপ্তর, রবীন্দ্রনাথের চতুরঙ্গ, শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত, তারাশঙ্করের হাঁসুলি বাঁকের উপকথা, বিভূতিভূষণের আরণ্যক, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি, সমরেশ বসুর টানাপোড়েন, অদ্বৈত মল্লবর্মনের তিতাস একটি নদীর নাম, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের পারাপার, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে, প্রফুল্ল রায়ের কেয়াপাতার নৌকা, মুজতবা আলির দেশে বিদেশে, আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম প্রতিশ্রুতি, সুনীল গাঙ্গুলির সেই সময়।

কোনো শিক্ষিত বাঙালির সঙ্গে আলাপ হলেই এই লিষ্টের একটি কপি তাঁর হাতে তুলে দিয়ে বলতাম, -দয়া করে এই কয়েকটা বই পড়ে ফেলুন, তামাম বাংলা সাহিত্য পড়তে হবে না, শুধু ওই কটি; না পড়লে আপনার সঙ্গে কথা বলতে আমার খুব লজ্জা করবে। কতটা কাজ হয়েছিল জানি না, তবে কেউ কেউ আমার মস্তিস্কের সুস্থতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। যাঁদের তালিকা দিতাম তাঁরা কিন্তু আমাকে দেখলেই এড়িয়ে চলতেন।

– সমরেশ মজুমদারের “আকালচার” ( বাঙালির নষ্টামি)

সুতরাং আপনার সন্তানকে পড়তে বলুন। পাঠ্য থেকে অপাঠ্য সব। পাঠ্য – এর চেয়ে অপাঠ্যই কাজে লাগে বেশী, মনেও ধরে। পাঠ্য আর অপাঠ্য এটা কি ভাবে নির্ধারিত হয়। আমার পরিচিত কিছু মানুষ আছেন তাঁরা যখন অপাঠ্য বই পড়তে শুরু করেন তখন উনাদের কাছে সব লিখাই অসাধারন মনে হয়। উনাদের এই অনুভুতি খুব ভালো লাগে …

আবার এমন কাউকে দেখেছি যিনি পড়তে ভালোবাসেন না কারন তিনি মনে করেন “অনেক পড়ার সমস্যা হচ্ছে আমার আগে একথা কেউ লিখে ফেলেছে”। খুব মজার তাই না। অপাঠ্য বলে কোন বই আছে কিনা জানি না।

এলেবেলে-৬

আশির দশকে আমরা যখন কলেজে পড়ি তখন গ্রুপ থিয়েটারের জয় জয়কার। আমাদের শহরে একটা নাটকের গ্রুপ ছিলো “জোড়াতালি”। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় পথ নাটক দেখতে আমরা ভিড় করতাম শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে শীতের কনকনে সন্ধ্যায় ঝালমুড়ি খেতে খেতে আমাদের নাটক দেখা হতো।

দলটি এখন আছে কিনা জানি না।
নাটক চলছে নাটক হচ্ছে …।
উৎসব করে যা হাতে তুলে দিয়েছেন তাতে “আঠা” দিয়ে ঢেকে দিবেন বলেছেন। যিনি ছবি দেখে অনুমোদন দিলেন তার কিছু হলো না যিনি এঁকেছেন তার নাকি চাকুরি চলে গেল। এই কারনেই ছাগল আম গাছে ঊঠে …

বাংলাদেশে কয়টা লোক অজ মানে ছাগল এই কথাটা জানে, এই আমিই তো জানতাম না (আমার লেখা পড়া ক্লাশ ফাইভ)। পরিবর্তন দরকার এখন থেকে ছাগলের মাংসের দোকানের সামনে লিখা থাকবে “এখানে অজের মাংস পাওয়া যায়”। অজ কে অজগর না ভাবলেই হয়। কি মজা তাই না।

পাগলে কিনা বলে,
অজ কিনা খায় …
সহজ সরল ভাষাতে বর্ণশিক্ষা হবে এটা হবে মুল লক্ষ্য। প্রচলিত শব্দ দিয়ে বর্ণপরিচয় হবে এটাই স্বাভাবিক। যারা এসব বই লিখেছেন, সম্পাদনা করেছেন উনাদের শিশু মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে ধারনা আছে কিনা জানতে ইচ্ছা করছে।

…”জোড়াতালি” দিয়েই চলছে। আর কতদিন …।

এলেবেলে-৫

আমাদের গ্রামে কারো বাড়িতে ছেলে বা মেয়ের বিয়ে ঠিক হলে বিয়ের অনুষ্ঠান কি ভাবে হবে, কতো জন লোক খাবে ? খাওয়ার কি কি আইটেম হবে ? সেসব নিয়ে গ্রামের মুরুব্বীদের মতামত নিতে হয় আঞ্চলিক ভাষায় যাকে বলে “পানচ্ছল্লা”। এটার অনেক রকম ব্যাখা আছে। যেমন পান খেয়ে খেয়ে চ্ছলা (পরামর্শ)।

সত্যি কথা বলতে এর কোন গুরুত্বই নেই। তারপরও মুরুব্বীদের ডাকতে হবে উনাদের পরামর্শ নিতে হবে। না হলে উনারা বিয়ে অনুষ্ঠান বয়কটও করতে পারেন। উনাদের পরামর্শ কোন কাজেই আসে না, আবার উনাদের পরামর্শ মতো অনুষ্ঠানও করে না কেউ।

এরকম অনেকে আমার কাছে মাঝে মাঝে পরামর্শ চান (আমি নিজেকে তখন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবি)। আমি পরামর্শও দেই! যদিও জানি তা কথার কথা। পরামর্শ দেওয়ার মতো কোন যোগ্যতাই আমার নেই কখনো ছিলোও না। বুঝতে পারি সিদ্ধান্তটা অনেক আগেই নেওয়া হয়ে গেছে।

বোকা সাজার মধ্যেও এক ধরনের আনন্দ আছে …

এলেবেলে-৪

ট্রাম্প এর বিজয়ে অনেক মুনির মতবাদ শুনলাম দেখলাম পড়লাম। ট্রাম্প যে জিতবে তা অনেকের কাছেই অকল্পনীয় ছিলো। আমার কাছে মনে হয়েছে ট্রাম্প এর পরিকল্পনা সবাইকে জানান দিতে পেড়েছে। হিলারীর প্রেসিডেন্ট হলে কি হবে তার কোন পরিকল্পনা কেউ জানেন কি ?

একটা সময় ছিলো যে সময় আমেরিকার জনগন ভাবতো “নেতার জীবন জাতির সম্পদ”। এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে আর সে কারনেই ট্রাম্প এর নারী কেলেঙ্কারির বিষয়কে সামনে তুলেও কোন লাভ হয় নি। আমি এই নারী কেলেঙ্কারির ব্যাপার টা অন্য ভাবে দেখেছি। তা হচ্ছে মিঃ ক্লিন্টনের নারী কেলেঙ্কারিকে ছাপিয়ে যাবার জন্যই তা করা হয়েছে। আমি নিজেও ধোঁয়া তুলসী পাতা নই এমনকি আপনিও এরকম কেলেঙ্কারির মুখোমুখি হতে পারেন। আমি নিজে মনে করি ট্রাম্প আমেরিকার জনগনের মনে দাগ কাটাতে পেরেছেন।

হিলারীর পরাজয়ের জন্য আমি ওবামাকেও দায়ী মনে করি। যে পরিবর্তনের স্লোগান নিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন তা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন তা একবার ভেবে দেখুন।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আসলে একজন জাতীয়তাবাদী। তিনি যে ইমিগ্রেন্ট, অর্থনীতি এমনকি সামরিক বিষয়ে যে সব কথা বলছেন যে যাই বলুক আমেরিকা যুক্তরাষ্টের ব্যাপক মানুষকে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছেন। মেক্সিকো সীমান্তে আমেরিকার সাধারণ মানুষের কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়মিত সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছে। Donald Trump কেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তার জবাব ৪৫ তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ গ্রহনের পর তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতেই আছে। দেখা যাক কি বলেছেন তিনি …

Politicians prospered – but the jobs left, and the factories closed.
……
We will no longer accept politicians who are all talk and no action – constantly complaining but never doing anything about it.

প্রচলিত রাজনীতিবিদদের প্রতি অনীহা-ই হচ্ছে ট্রাম্পের জয়ের মুল কারন। আমেরিকার মাত্র ৩৪%লোক মিডিয়াকে বিশ্বাস করেন ১৯৭৬ এ যা ছিলো ৭৩%।
নির্বাচনের আগে কোন জরিপেই ট্রাম্প হিলারীর তুলনায় এগিয়ে ছিলেন না। অর্থাৎ যে সব মিডিয়া এসব জরিপ চালিয়েছিলেন তাঁদের উদ্দেশ্য সৎ ছিল না।
আমেরিকার সংবিধান আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে “প্রেসিডেনসিয়াল আদেশ” প্রদান করার ক্ষমতা দিয়েছে। অবশ্য সে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে কিছু নিয়মও বেঁধে দিয়েছে।

১। জনগনকে বাধ্য বা পালন করার কোন নির্দেশ দিতে পারেন না। সরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ প্রদান করতে পারবেন।
২। সংবিধানের পরিপন্থী কোন আদেশ প্রদান করা যাবে না। (এই কারনেই ৭টি মুসলিম দেশের নাগরিকদের উপর প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞা বাতিল হয়ে গেছে)।

৩। অর্থ ব্যয় হইবে এমন কোন নির্দেশ প্রদান করা যাবে না। (মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তৈরীর ব্যয় ভার মেক্সিকোকে বহন করতে হবে, নির্বাচনী বক্তৃতায় ট্রাম্প বারবার এই কথা বলেছেন কারন এর সাথে অর্থ ব্যয়ের সম্পর্ক আছে)।
ডোনাল্ড ট্রাম্প কি তার পুর্বসুরীর তুলনায় বেশী আদেশ প্রদান করেছেন? সংবাদ দেখে এমন মনে হলেও আসলে পরিসংখ্যান ভিন্ন। প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহনের পর বারাক ওবামা ২০ দিনে ২৯ টি প্রেসিডেন্টশিয়াল আদেশ দিয়েছেন আর ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৪ টি। এই হলো পরিসংখ্যান। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে কি করবেন তার প্রতিশ্রুতি তিনি বারবার করেছেন নির্বাচনী বক্তৃতায়। সুতরাং নির্বাচিত হবার পর প্রতিশ্রুতি রক্ষার দায়িত্বও তাঁর উপর বর্তায়।

এলেবেলে-৩

গতরাতে তুষার পাত হলো তাই সকাল ছয়টার আগে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনের তুষার পরিষ্কার করার আগে ভাবলাম ফেসবুকটা একবার দেখে নিই। প্রথমেই চোখ পড়লো এক আমেরিকা প্রবাসী বাঙালী ভদ্রলোকের পোষ্ট। দুটো ধর্মের নাম নিয়ে বুদ্ধিজীবী টাইপের পোষ্ট দিলেন এগুলো নাকি ধর্ম নয়। সকালেই মেজাজ খারাপ হলো।

আমি নিজে যে ধার্মিক তা নয় …
বরং উলটো। ধর্ম বিশ্বাস করলেও তার কতটুকুই বা আমরা পালন করি। তাই বলে অন্যের ধর্মকে হেয় করার অধিকার আমার নেই, নিজের ধর্মের তো নয়ই (আমি বলি ওটা পৈতৃক সম্পত্তি )।

আমদের মধ্যে কিছু মানুষ আছেন নিজে ধর্ম এর নিয়ম কানুন পালন করুন আর নাই করুন অন্যে পালন করছে কিনা তা নিয়ে চিন্তার অবকাশ নেই। আবার অন্যের ধর্ম হলে তো কথাই নেই তাকে কি ভাবে ছোট বা বিতর্কিত করা যায় তার নিরন্তর চেষ্টা। হাজার হাজার বছর ধরে যে বিশ্বাস মানুষ লালন এবং পালন করে আসছে তা সহজে ছোট করা যাবে না। আপন মহীমাতেই তা মহীয়ান হবে। একে বাঁচাতে কাউকে হত্যা করার দরকারও নেই। তা নিজেই নিজেকে বাঁচাতে পারবে । আর যদি না পারে কালের অতল গহব্বরে হারিয়ে যাবে ।

এলেবেলে-২

নিজের রান্নার উপর অরূচি আসাতে মাঝে মাঝে নয় প্রায়ই জাপানী খাবার খাই।
এই গল্প একজনের সাথে করার পর তিনি আমাকে বললেন
“তুমি খেতে পার জাপানী খাবার ? ওরা তো সিদ্ধ খাবার খায়।”

আমি বললাম “খেতে পারি মানে গত ২০ বছর ধরে খাচ্ছি। ওরা সিদ্ধ খাবার যেমন খায়। তেমন কাঁচা খাবারও খায়। যেমন কাঁচা মাছ। শুনে তিনি বললেন “ওমা কাঁচা মাছ খায় !!”
আমি বললাম ‘আমিও খাই। প্রথম খেতে পারতাম না এখন পারি। সব কিছুই অভ্যাস। আপনিও পারবেন। তবে আমার কথা শুনে আবার কাঁচা মাছ খাওয়া শুরু করবেন না যেন। মরে যাবার সম্ভাবনা আছে।

দেখা না দেখার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। চোখ আর কানের মধ্যে নাকি ছয় মাসের দূরুত্ব ! জাপানিরা সিদ্ধ খাবার খায়, বাঙ্গালীরা কাঁচা খায় …!

মেক্সিকোর একটা খাবার আছে যার নাম হচ্ছে …

paeria

এর উচ্চারন পাইয়েরিয়া। খুব সুস্বাদ।
এর নাম শুনে আপনার ডায়েরিয়ার কথা মনে হতে পারে।

এলেবেলে-১

নব্বইয়ের দশকে কিশোরগঞ্জে কর্মকালীন সময়ে আমার এক সহকারীর নাম ছিলো মাহতাব। বউকে খুব ভয় পেতো, বউয়ের নির্দেশ ছিলো সন্ধ্যা সাতটার পর ঘরের বাহিরে থাকা চলবে না। কিন্তু মাহতাব যদি আমার সাথে রাত দশটা পর্যন্তও থাকে বউ কিছু বলবে না। মাঝে মাঝে আমাকে এনিয়ে তাঁর বউয়ের কাছে সাক্ষী দিতে হতো (সব সময় যে আমার সাথে থাকতো তা নয় )।

যেখানে ছিলাম তার পাশের উপজেলায় শীতের রাত গুলোতে মাস ব্যাপী “আনন্দমেলা” হতো। বৃহস্পতি বার অফিস শেষ হলেই মাহতাব আমাকে নিয়ে মেলায় যেতো আসলে তার উদ্দেশ্য ছিলো হাউজি খেলা। আমি সহ গেলে তার বউয়ের কাছে সাত খুন মাফ। আমারও কিছু করার ছিলো না, যেতাম অন্তত সময় কাটানো তো যেতো।

হাউজি খেলাটা খুব মজার। লটারি করে এক একটা সংখ্যা বলা হতো তারপর নিজের কাছে থাকা শীটে তা মিলিয়ে নেওয়া হতো। এই নম্বর বলার স্টাইল টা খুবই মজার।

সব মনে নেই কিছু কিছু মনে পড়ছে … একুশ সংখ্যাটিকে বলা হতো
“দিবস টি মহান”
“টুয়েন্টি ওয়ান”
———
জীবনের কোন অভিজ্ঞতাই ফেলনা নয়।
জুয়া এবং গেম কোনটাই আমার কোন দিন ভালো লাগেনি।
কিশোর বয়সে ইমদাদুল হক মিলনের লেখা খুব পড়েছি। একটা শব্দ শিখেছিলাম উনার লেখা থেকে “মজুমা”। এটি আসলে তিনটি শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ।

শুভেচ্ছা জেনো

l2
অনেক অপেক্ষার পর আজ জবাব এলো। লেখিকার অনুমতি ক্রমে সবার জন্যে-

সুজনেষূ
ভাল আ‌ছো ? শু‌ভেচ্ছা জে‌নো অফুরান।
লিখ‌ছি তোমা‌কেই। তু‌মি বল‌লে “সব‌কিছু কি ব‌লেই কর‌তে হ‌বে।”
না ব‌লে কর‌লে অবাক করা যায় না। অ‌নেক‌দিন বা‌দে অবাক হ‌য়ে‌ছি তোমার চি‌ঠি প‌ড়ে।
অা‌মি যে অবাক হ‌তে ভু‌লে যাই‌নি তা ম‌নে ক‌রি‌য়ে দি‌য়ে‌ছো ।
অ‌নেক মেলাই হয় মনের প্রশান্তির জন্য, কিন্তু তার জন্য দরকার মি‌লি‌য়ে যাওয়ার মেলা।
তু‌মি আ‌মি অাধা কাল্প‌নিক। তা‌তে কি ? মি‌লি‌য়ে নি‌য়েই মি‌লে গেলাম।
তু‌মি কাউ‌কে বই দি‌লে বই দি‌তে হ‌বেনা ব‌লে শর্ত দাও। আর আ‌মি অপেক্ষায় থা‌কি ক‌বে ফেরৎ পা‌বো।
এখন গু‌ড়ের চা বানা‌লেই মনে হয় ‘আহা এক কাপ বা‌নি‌য়ে রে‌খে অ‌পেক্ষায় থে‌কে তারপর অপেক্ষা শেষ।
তারপর চা পান হ‌বে আর সেই সাথে থাক‌বে অনানুষ্ঠা‌নিক গল্প আর আড্ডা।
বই‌মেলায় যাব।’চান ঘ‌রে গান’, ’বাঙা‌লির নষ্টা‌মি’ চাই‌লে লিস্ট আ‌রো বাড়া‌তে পা‌রি দেখা যাক।
আর আ‌মি গু‌ছি‌য়ে লিখ‌তেও পা‌রিনা তেমন। পরবর্তী চি‌ঠিটা দীর্ঘ হ‌বে ব‌লে আশা করছি।
উত্ত‌রের অ‌পেক্ষায় রইলাম। তু‌মি তোমরা ভাল থে‌কো এবং থা‌কো।

ওহ‌হো ! শীত তেমনটা নেই।
বি‌শেষ ক‌রে পোড়ার ঢাকায় মৌসুম বোঝা ভার। তাড়াতাড়ি চি‌ঠির জবাব দিও।
মেঘবালিকা
১৪/০১/২০১৭ ইং সময় : ১:৩০ (রাত)

বই কিনবে শুধু নিজের জন্যে

l

মেঘ বালিকা

শুভেচ্ছা নিও। তোমাকে বলা হয়নি লিখবো। তোমাকে প্রথম লিখতে বসেছি। সব কিছু কি বলেই করতে হবে ? মাঝে মাঝে চমকে দিতেও তো ইচ্ছা হয়, তাই না। চমকে দেওয়ার মধ্যে এক রকমের আনন্দ আছে অন্তত আমার কাছে। যখন এ চিঠি তোমার হাতে পৌঁছাবে সেই সময় তোমার মুখখানি আমি কল্পনা করছি। তুমি চিঠি লিখা পছন্দ করো কিনা তাও জানা হয় নি। আমি খুব করি। চিঠি পাওয়ার মধ্যে কি আনন্দ সে শুধু যারা লিখে তারাই জানে। আমাদের মাষ্টার মশাইয়েরা আমাদের কতো যত্ন করে চিঠি লিখা শিখিয়েছেন কিন্তু তুমি চিঠি লিখার কজন বন্ধু পাবে।

চিঠি লিখাটাও একটা শিল্প। বলে কয়ে অনেক কিছুই প্রকাশ করা যায় না, চিঠিতে যায়।পরিচিত জনদের মধ্যে তুমি অনেককে পাবে যিনি মুখে “আমি তোমাকে ভালোবাসি বা পছন্দ করি” বলতে লজ্জা পান, ওনারাই কি অবলীলা ক্রমে চিঠিতে একই কথা লিখতে একটুও দ্বিধা করেন না।

বই মেলার আমন্ত্রন পেলাম তোমার কাছে, ধন্যবাদ। ঢাকায় এখন মেলার সময়, কতো রকমের মেলাই তো হচ্ছে বঊ মেলা, বিয়ে মেলা, বই মেলা,শিল্প মেলা … মেলা তো কতো কিছুই মিলে। শুধু মেলাতে জানতে হয়।

বই কেনার লিস্ট চেয়েছো শুনে কেন জানি “আমার বাজারের লিস্ট”এর কথা মনে হলো। লিষ্ট নিয়ে বই কিনতে যেয়ো না। বইয়ের দোকানে গিয়ে বইটা হাতে নিয়েই ক পাতা পড়লেই বুঝতে পারবে ভালো লাগবে কিনা। আমি অনেককে জানি যাঁদের লক্ষীর ভাণ্ডার পূর্ণ হবার পর স্বরস্বতীর প্রতি আগ্রহে বুক সেল্ফ ভর্তি করেছেন।

সাজিয়ে রাখার জন্য বই কিনো না। আমি নিজেও বই সংগ্রহে রাখি না পড়া শেষ হলে, ফেরত দিতে হবে না শর্তে পড়তে দেই। বই পড়ো নিজের জন্যে, মনের জন্য। আমি কোনদিন একসাথে দুটোর বেশী বই কিনিনি। তোমার যদি বই পড়ার ইচ্ছে হয় সপ্তাহ বা মাসে একটা বই কিনো। বস্তা ভর্তি বই কিনলে দেখবে কোনটাই শেষ করতে পারো নি।

তোমার ওদিকে এখন শীত কেমন ?
ভালো থেকো, ইচ্ছে হলো লিখো। অপেক্ষায় থাকবো।

মিতা
৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৭।

স্বপ্নে দেখা নারী, স্বপন পুরে বাড়ি

অনেক দিন আগে থেকে একটা বাড়ির স্বপ্ন আমার মাথায় ঢুকে গেছে। সেই বাড়িটা কিভাবে মাথায় এলো খুঁজে পাই না। মাঝে মাঝে ভাবি ‘শেষের কবিতা’ থেকে আবার মনে হয় ‘মাধুকরী’ বা ‘একটু উষ্ণতার জন্য’। যেখান থেকেই হোক না বাড়িটার কথা কাউকে বলা হয়নি। মনের ভিতরে সযতনে রেখেছিলাম।

গভীর অরণ্যের মধ্যে সেই চারপাশে পাঁচিল দেওয়া সাদা রঙের একতলা পাকা বাড়ি,বাড়ির বাইরের দেয়ালে কোথাও কোথাও সবুজ শেওলা জমেছে। চারপাশে বিশাল এলাকা জুড়ে ঘাস আর কয়েকটা বড় শতবর্ষী আম বা শিরিষ গাছ। বাড়ির দক্ষিন দিকে একটা খোলা বারান্দা। পাঁচিলের পাশে কোথাও গোলাপ, টিউলিপ, কোথাও ডালিয়া ফুটেছে। সদর গেটের সাথে মর্নিং গ্লোরি লতানো ফুল গুলো দেয়ালের অনেকটা দখল করে আছে। আবার কোথাও কিছু সবজী যেমন শসা টমেটো। পাশের বাড়ি থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব হবে কমপক্ষে দুই কিলোমিটার। রাতে তো নয়ই দিনেও থাকবে শুনশান নিরবতা।

একটা বড় ড্রয়িং রুম আর ছোট দুটি বেডরুম। ড্রয়িং রুমে থাকবে রাজ্যের বই আর একটা রেকর্ড প্লেয়ার। একটা ফায়ার প্লেস। গভীর অরণ্যে সে বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকবে অবশ্যই সোলার পাওয়ারের। একাই থাকবো। একজন কেয়ার টেকার থাকলে মন্দ না। একটা ‘গোল্ডেন রেড লিভার’ বা জাপানী ‘শিবা’ প্রজাতির কুকুর। একটা ছোট জীপ থাকলেই ভালো; সপ্তাহে একদিন পাঁচ কিলোমিটার দূরের বাজারে যেতে হবে তাই।

সারাটা দিন কাটবে দক্ষিনের বারান্দায় বসে। রেকর্ড প্লেয়ার থেকে ভেসে আসবে সাগর সেন বা জয়তী চক্রবর্তীর কণ্ঠের রবীন্দ্র সঙ্গীত। জোসনা রাতেও সেই বারান্দায় একটা ইজি চেয়ারে বসে চোখ বুঝে গান শুনেই কাটবে।

ইচ্ছে হলে তুমি চলেও আসতে পারো দু’একদিনের জন্য অবশ্য তোমার স্বামী রত্নটি যদি অনুমতি দেন। উনাকেও নিয়ে আসতে পারো, আমার দিক থেকে কোন আপত্তি নেই। তবে আমার সাহচার্য উনার উপভোগ্য নাও হতে পারে। শর্ত একটাই দু রাতের বেশী থাকা চলবে না। দু’রাত থেকে তিন রাত হলে অতিথি আর অতিথি থাকে না। তুমি আসলেই শুধু রাতে ‘বার বি কিউ’ হবে। একা একা তো আর ‘বার বি কিউ ‘ চলে না। তোমার পছন্দের গান আর কিছু বই নিয়ে আসতে ভুলো না কিন্তু।

…। (অসমাপ্ত)

সুন্দরবন

পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এরকম হয় কিনা জানি না যেমন জাপানে দুজন বিদেশীর দেখা হলে নিজের অজান্তেই একে অন্যকে সম্ভাষণ জানান ,অপরিচিত হলেও কথাও বলেন।

আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে বিদেশির সংখ্যা খুবই কম। একটু আগে আমার বাড়ির কাছের এক ডিপার্টমেন্ট ষ্টোরের লবিতে “বনসাই” প্রদর্শনীতে এক বিদেশী ভদ্রলোক ইংরেজীতে জানতে চাইলেন আমি কোন দেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশ বলতেই চিনতে পারলেন। অনেক কথা হলো উনার সাথে। বয়স প্রায় ষাটের কাছাকাছি। উনার বাবা হচ্ছেন আমেরিকান, মা জাপানিজ। ত্রিশ বছর ধরে জাপানে বাস করছেন।

একবার বন্ধুর সাথে বাংলাদেশ যাবার ভিসাও নিয়ে ছিলেন। বন্ধুর কোন এক অসুবিধার কারনে বাংলাদেশ যাওয়া হয়নি তাঁর। কথা শুনে বুঝলাম বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক খবর রাখেন। আমার কাছে বাংলাদেশের সাইক্লোন প্রসঙ্গে জানতে চাইলেন।

এক পর্যায়ে তিনি জানতে চাইলেন বাংলাদেশে বাঘ হরিণ আছে সে স্থানটির নাম যেন কি? আমি বললাম সুন্দরবন।

সেখানে যাবার ইচ্ছে ছিল তাঁর (মনে মনে ভাবলাম উনি কি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা শুনেছেন ? না শুনাই ভাল)। আমি বললাম আমিও কখনো যাইনি। উনি জানতে চাইলেন বাংলাদেশের কোন এলাকায় আমার হোম টাউন।

আমি চট্টগ্রাম বলতেই, তিনি বললেন ও হ্যাঁ পোর্ট সিটি …।

(উল্লেখ্য প্রদর্শনীতে ভদ্রলোকের বনসাই ও প্রদর্শিত হচ্ছিল )।
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬।

বই-১

বেশ অনেক বছর আগে সত্যজিৎ রায়ের একটা সাক্ষাতকারের কথা মনে পড়ছে —

সত্যজিৎ রায় শান্তি নিকেতনে চারুকলা বিষয়ে পড়াশুনা করছিলেন। যখন কবি গুরু মারা গেলেন তখন সত্যজিৎ রায় চারুকলা পড়া ছেড়ে যাচ্ছেন শুনে শিক্ষক জানতে চাইলেন কেন চারুকলাতে গ্রাজুয়েশন না করে চলে যাচ্ছেন।

সত্যজিৎ রায় জবাব দিয়েছিলেন -আমি চারুকলাতে গ্রাজুয়েশন করলেও আমি তো ফাইন আর্টসে থাকবো না, কমার্শিয়াল আর্ট এ চলে যাবো। আর কমার্শিয়াল আর্টের জন্য যে টুকু ফাইন আর্ট দরকার তা ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে। … অনেকে ভাবতে পাড়েন আজ কেন এই কথাটি কেন মনে পড়লো।

স্কুলে বিনামূল্য বই বিতরণ আর বর্ণ শিক্ষা দেখে। যারা এসব বই লিখেন বা নীতিমালা তৈরী করেন উনাদের ছেলে মেয়েরা তো আর এসব পড়ে না। আমি একজন সচিব কে জানতাম যিনি ভাল করে বাংলাও বলতে পাড়তেন না।
আর এই কারনেই –“ব”তে বই না হয়ে বউ হয়ে যায়।
“ও” তে ওল না হয়ে ওড়না হয়ে যায়।
বুকের (Book) দিক থেকে নজর চলে গেছে …।

ফেসবুকে একটা হিন্দুধর্ম বই এর ছবি দেখলাম। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের বই এর প্রচ্ছদে এরকম ছবি থাকতেও পারে। যদি না থাকে ওরা আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারে। প্রাথমিক স্কুলের বইয়ের প্রচ্ছদে ট্রামের ছবি …………। ট্রাম্প ভাই আমেরিকাকে গ্রেট করার জন্য আমাদের প্রাথমিক স্কুল থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। আপনার ১৪ গুষ্টিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বানানোর এত চমৎকার পরিকল্পনা আর কোথাও পাবেন না।

বই-২

আশির দশকে আমরা যখন কলেজে পড়ি তখন গ্রুপ থিয়েটারের জয় জয়কার। আমাদের শহরে একটা নাটকের গ্রুপ ছিলো “জোড়াতালি”। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় পথ নাটক দেখতে আমরা ভিড় করতাম শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে। শীতের এই কনকনে সন্ধ্যায় ঝালমুড়ি খেতে খেতে আমাদের নাটক দেখা হতো। দলটি এখন আছে কিনা জানি না।

নাটক চলছে নাটক হচ্ছে …।
উৎসব করে যা হাতে তুলে দিয়েছেন তাতে “আঠা” দিয়ে ঢেকে দিবেন বলেছেন। যিনি ছবি দেখে অনুমোদন দিলেন তার কিছু হলো না যিনি এঁকেছেন তার নাকি চাকুরি চলে গেল। এই কারনেই ছাগল আম গাছে ঊঠে …

বাংলাদেশে কয়টা লোক অজ মানে ছাগল এই কথাটা জানে, এই আমিই তো জানতাম না (আমার লেখা পড়া ক্লাশ ফাইভ)। ছাগলের মাংসের দোকানের সামনে লিখা থাকবে ‘এখানে অজের মাংস পাওয়া যায়”। কি মজা তাই না।
পাগলে কিনা বলে,
অজ কিনা খায় …
সহজ সরল ভাষাতে বর্ণশিক্ষা হবে এটা হবে মুল লক্ষ্য। প্রচলিত শব্দ দিয়ে বর্ণপরিচয় হবে এটাই স্বাভাবিক। যারা এসব বই লিখেছেন, সম্পাদনা করেছেন উনাদের শিশু মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে ধারনা আছে কিনা জানতে ইচ্ছা করছে।
… “জোড়াতালি” দিয়েই চলছে।