নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

কে কার জন্য?

খাওয়ার জন্য জীবন, নাকি জীবনের জন্য খাওয়া?
পাওয়ার জন্য চাওয়া, নাকি চাওয়ার গুণে পাওয়া?
আলোর জন্য আঁধার, নাকি আঁধারের জন্য আলো?
ভালোর জন্য মন্দ, নাকি মন্দের জন্য ভালো?

জীবনের জন্য মরণ, নাকি মরনের জন্য জীবন?
আপনের জন্য পর, নাকি পরের জন্য আপন?
ভোগের জন্য ধন, নাকি ধনের জোরে ভোগ?
রোগের জন্য ওষুধ, নাকি ভুল ওষুধে রোগ?

ভয়ের জন্য সাহস, নাকি সাহসের জন্য ভয়?
জয়ের জন্য হার, নাকি হারার জন্য জয়?
জ্ঞানের জন্য পড়া, নাকি পড়ার জন্য জ্ঞান?
ধ্যানের জন্য ভক্তি, নাকি ভক্তির জন্য ধ্যান?

সৃষ্টির জন্য ধ্বংস, নাকি ধ্বংসের জন্য সৃষ্টি?
বৃষ্টির জন্য মেঘ, নাকি মেঘের জন্য বৃষ্টি?
সুখের জন্য দুঃখ, নাকি দুঃখের জন্য সুখ?
বুকের জন্য প্রাণ, নাকি প্রাণের জন্য বুক?

কথার জন্য যুক্তি, নাকি যুক্তির জন্য কথা?
ব্যথার জন্য উপশম, নাকি উপশমের জন্য ব্যথা?
দামের জন্য তুচ্ছ, নাকি তুচ্ছের জন্য দামী?
আমার জন্য তুমি, নাকি তোমার জন্য আমি?

প্রভাবিত বিবেক


কে কখন কোথা হতে এসে পড়ে যানা নেই,
কোন কিছু না ভেবে দলে পড়ে সায় দেই।
মানুষ তো এক বটে বহুরূপী স্বভাবে,
একে অপরের প্রতি বিমোহিত প্রভাবে।

নকলে নকলে ছেয়ে আসলের নেই দাম,
মিথ্যার সাথে করে সত্যেরা সংগ্রাম।
অদ্ভুদ আচরণে বাড়ে শুধু জড়তা,
আজীবন শুধু শুনি শান্তির বারতা।

নাম বেঁচে খেতে খেতে যে ভুলেছে নিজেকে,
সামান্য অভাবে বেঁচে দেয় দেহকে।
তাঁর হৃদ্যয়েও থাকে সপ্নেরা অবিচল,
রাতভর তারা গোনে মেঘে করে কোলাহল।

খ্যাতি আর জৌলস পাওয়া গেলে সস্তায়,
ন্যায় নীতি সত্য, ভরে ফেলে বস্তায়।
রক্তের বিনিময়ে পেতে চেয়ে অর্থ,
অর্থই ফিরে চায় রক্তিম স্বার্থ।

আবেগেরা কড়া নাড়ে যে বীরের দুয়ারে,
বন্দীদশায় সে নিঃশেষ প্রহারে।
কে কখন এসে বসে খুব বেশী ভয় হয়,
বিবেকে কি দলে পড়ে অবিচারে সায় দেয়?

এনে দে


যার জন্য আমি বন্য,
অতি নগন্য হই গণ্য।
আজ এনে দে তাকে এনে দে
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

দেহে নিঃশ্বাস প্রাণে বিশ্বাস
যত উল্লাস আর উচ্ছ্বাস,
আজ এনে দে হায় এনে দে
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

প্রাণ চঞ্চল ঢেউ উত্তাল
ভেঙে শৃঙ্খল সুখ প্রাঞ্জল
আজ এনে দে হায় এনে দে,
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

তাঁর যুক্তি তাঁর উক্তি
অভিব্যক্তির অবমুক্তি,
আজ এনে দে হায় এনে দে
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

সে ধন্য সেও বন্য
তাঁর জন্য ওই অরন্য
আজ এনে দে হায় এনে দে
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

তাঁর হুঙ্কার আর ঝংকার
সেই চীৎকার সেই সংসার
আজ এনে দে হায় এনে দে
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

এই বিশ্ব আজ নিঃস্ব
সেই শিশ্য সেই শস্য,
আজ এনে দে হায় এনে দে
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

সেই অভিমান সেই প্রতিদান
সেই স্পন্দন সেই ক্রন্দন,
আজ এনে দে হায় এনে দে
যদি তা না হয় কোন কথা নয়
প্রাণ নিয়ে নে প্রাণ নিয়ে নে।

যখন সে আসে

নেচে ওঠে মন সে আসে যখন, সব কিছু ভালো লাগে,
উদাস মনে সে মধুর ক্ষণে, দারুন তৃষ্ণা জাগে।
দূর হয়ে যায় কষ্টগুলো, আলোকিত হয় আঁধার কালো,
তখন হাজার তুফান এলেও, যুদ্ধ করতে লাগে ভালো।

ফুলে ফুলে ভরে মধুর সময়, যখন মিষ্টি বুলি শোনায়,
বিবাগী প্রাণের সব যাতনা, তাঁর ছোঁয়াতে দূর হয়ে যায়।
আকাশ হতে মেঘ সরে যায়, পূর্ণিমা চাঁদ হেসে চেয়ে রয়,
বেদনারাও আনন্দ পায়, যখন মায়াবী পরশ বুলায়।

ঝরনা ঝরে যত্ন করে, নদী তারে বুকে ধরে,
সেই না নদীর স্বাধীন স্রোতে, ঢেউকে কিনার আপন করে।
তেমনি আমার হৃদয় হতে, স্বপ্ন ঝরে দিনে রাতে,
অধীর আশায় বসে থাকি, শিহরণের ছোঁয়া পেতে।

তপ্ত বালুর মরুর বুকে, বৃষ্টি ধারা ঝরে সুখে,
শুকনো পাতা যায় ঝরে যায়, মুকুল গজায় যে পুলকে।
তেমনি আমার মনের মাঝে, সারাটিক্ষণ তাঁর বিরাজে,
মোহের টানে ছুটে চলে, মন বসেনা কোন কাজে।

কলিগুলো যায় ফুঁটে যায়, বাতাস পাতায় বাদ্য বাঁজায়,
ফাগুন দিনে কোকিল ডাকে, সেইনা সূরে হৃদয় হারায়।
দুঃখও সুখের বানে ভাসে, প্রিয়া আমার যখন হাসে,
চিন্তিত দুর্বল শরীরে, হাজার বীরের শক্তি আসে।

আপনের পর


আপনকে পর করে পরকে আপন,
ঘর ছেড়ে চলে যায় যখন তখন।
অভিমানে চোখ দুটো করে ছলছল,
মন ভোলানোর আছে নানা কৌশল।

যার দিকে পড়ে তাঁর মায়া দৃষ্টি,
তাঁর মনে শুরু হয় ঝড় সৃষ্টি।
প্রেমের ফাঁদে ফেঁসে পড়ে তাঁর পায়,
নিঃস্ব হয়ে শেষে করে হায় হায়।

মিথ্যাকে পলকেই সত্য বানায়,
নিখুঁত এই অভিনয় বোঝা বেশ দায়।
ভুল করে যদি কেউ পড়ে তাঁর ফাঁদে,
সব কিছু হারিয়ে আজীবন কাঁদে।

কি যে জাদু জানে সে কি মধুর মায়া,
রাজ রানী বিমোহিত দেখে তাঁর ছায়া।
তাঁর কাছে কোন কিছু না পারার নয়,
মায়া জাদু দিয়ে সব করে ফেলে জয়।

পরকে আপন করা নয় অন্যায়,
তাঁর আগে আপনের আপন হতে হয়।
আপনকে অবহেলে করে পর পর,
পরে পরে করে করে খালী নিজ ঘর।

যন্ত্রণা


কি যন্ত্রণায় জ্বলি আমি জানে আমার মন,
অবুঝ হৃদয় তাকে ভেবে ব্যকুল সারাক্ষণ!
আসবে বলে পথের পানে চেয়ে থাকি রোজ,
অথচ সে একটি বারও নেয় না আমার খোঁজ!

কত বৃষ্টি মেঘ বয়েছে আকাশ গেছে ভুলে,
কতই না ঢেউ আছড়ে পড়ে ভরা নদীর কুলে।
বাতাস কত উড়িয়েছে মরুর বালু কণা,
তেমনি মনের কষ্টগুলো তাঁর কাছে অজানা!

আঁধার রাতে আকাশ পানে পূর্ণিমা চাঁদ দেখি,
অনিচ্ছাতেই তাকে ঘিরে হাজার স্বপ্ন আঁকি।
মিটিমিটি তাঁরার ভিড়ে রাত হারিয়ে যায়,
বিদ্যুতের ওই খুঁটিগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে রয়।

তেমনি আমি দাঁড়িয়ে রই সে যে পথে হাঁটে,
আশায় আশায় আমার সময় যন্ত্রণাতে কাটে!
অপেক্ষার এই জ্বালা হতে মুক্তি কি গো নাই,
একবার তাকে সামনে পেলে প্রশ্ন করতে চাই।

সোনার চামচ মুখে নিয়ে সে এসেছে ভবে,
আমার কথা ভাবার মতন সময় কি তাঁর হবে?
জ্বলি পুড়ি আর সয়ে যাই হাজার লাঞ্ছনা,
ধন্য হতাম বুঝত যদি আমার যন্ত্রণা।

কিশোর হতে চাই

আহারে আমার হারিয়ে যাওয়া, কিশোর বেলার দিন,
স্মৃতির দুয়ারে কড়া নাড়ে, ফিরে পাবো না তো কোনদিন।
কাগজ দিয়ে নৌকা বানিয়ে, ভাসিয়েছি খুশী মনে,
স্বাধীন মনে যা খুশী করেছি, কারো নিষেধ না মেনে।

মায়ের নিষেধ অমান্য করে, আষাঢ় বাদল দিনে,
চৈত্রের রোদে ক্রিকেট খেলেছি, বাবা গিয়েছেন জেনে।
বকুনির ভয়ে আঁচলে লুকিয়ে, পেয়ে গিয়েছি পার,
দুরন্ত সেই কিশোর হতে, প্রাণ চায় বারে বার।

পাড়ার ছেলেরা এক দলে মিলে, নদীতে দিয়েছি ঝাপ,
খেলনা দোকানে খড়কুটো দিয়ে, পণ্য করেছি মাপ।
বর সেজে কনে দেখতে গিয়েছি, দিয়েছি ছেলের বিয়ে,
ভেলা বানিয়ে ভেসে বেড়িয়েছি, কলা গাছ কেটে নিয়ে।

দিলিপ বাবুর আম বাগানে, চুপি চুপি গেছি ঢুকে,
ধাওয়া খেয়ে পায়ে কাঁটা বিঁধেছে, ভয়ে বলিনি মাকে।
দাদীর আচার চুরি করে খেয়ে, আপুকে দুষেছি কত,
ঝগড়া করে খামছে দিয়েছি, শুকিয়ে গেছে সে ক্ষত।

মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে, মামাতো ভাইয়ের সাথে,
উঠোনে বসে দাওয়াত খেয়েছি, সবুজ কলার পাতে।
ইট পাথরের নিষ্ঠুর শহরের, বার্ধক্যকে জানাই,
মুক্তি দাও গো কিশোর হয়ে, সেই গ্রামে ফিরে যাই।

তাঁর জন্য

যার ছবিটা ভেসে ওঠে আমার কল্পনায়,
তাঁর কারণে দিন রাত্রি জ্বলি যন্ত্রনায়।
আমার জন্য সে যখনি হয়রে বিরক্ত,
ব্যকুল হৃদয় আরো বেশী হয় যে আসক্ত।

তাঁর ভেতরে খুঁজে ফিরি আমার সার্থকতা,
বিবেক তখন শোনায় আমায় নানান যুক্তি কথা।
ব্যথী মনে দহন জ্বালা সঙ্গী সারাক্ষণ,
ইচ্ছা খুশীর কাছে স্বপ্ন দিলাম সমর্পণ।

তাকে ঘিরেই আবর্তিত সেই স্বপ্নগুলি,
নিজের বলে যা আছে সব দিচ্ছি জলাঞ্জলি।
চাই শুধু তাঁর অভাব হতে পেতে পরিত্রাণ,
নিজের মনের সাথে নিজে করছি আন্দোলন।

সর্বগুণে গুণী গো সে দারুণ বিচক্ষণ,
তাহার সকল কর্মকাণ্ড করছি সমর্থন।
তাঁর নয়নে সদাই ভাসে সুখের প্রতিচ্ছবি,
দেখলে তাকে মূর্খ লোকেও যায় হয়ে যায় কবি।

স্বপ্নে এসে পরশ বুলায় কোমল সে সত্ত্বা,
বাস্তবতায় ফিরলে থাকে ব্যথী এই আত্মা।
দিবানিশি প্রাণের মাঝে ভাসে গো তাঁর ছবি,
কল্পনাতে ধরে তাকে কেউ বা শিল্পী কবি।

জনম জনমের বন্ধন

জনম জনমের বন্ধন কেমনে করলে ছিন্ন?
অনন্ত কালের সাথী গো কেন হলে ভিন্ন?
তোমায় ছাড়া কেমনে বল তৃপ্ত হয় এই আত্মা?
ব্যাকুল হৃদয় বোঝে না গো জুড়ে আছো সত্ত্বা!

কাঠ ফাটা রোদ্দুরের দিনে তুমি আমার বৃষ্টি,
তোমার আমার এমন বাঁধন সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টি।
তুমি আমি দুয়ের জন্য, স্রষ্টা দ্বারা প্রেরিত,
মগ্ন আমি তোমাতে তাই সর্বদা বিমোহিত।

গড়েছিলে আমার প্রাণে প্রেমে সুখের পল্লী,
বাঁধন ছিড়ে নিজের হাতেই জ্বালিয়ে গেলে চুল্লী।
শোকে কাতর আমার আয়ু হয়তো আছে অল্প,
তোমার মতন ভুলেও আমি খুঁজিনি বিকল্প।

তোমার জন্য মনের সাথে করতে হচ্ছে যুদ্ধ,
চঞ্চল ছুটন্ত আমি নির্বাক নিস্তব্ধ!
কেন করলে এমন তুমি জ্বলে হলাম অঙ্গার,
হঠাৎ কঠিন পাথর হল নরম কোমল অন্তর।

জনম জনম জুড়ে হবে তোমার আমার বসবাস,
সব বিফলে এখন শুধু সঙ্গী আমার দীর্ঘশ্বাস।
তুমি আমার জীবন ছিলে এই প্রাণের স্পন্দন,
বেঁচে থেকে কি লাভ বল ছিন্ন হলে বন্ধন?

কে?

কিসে তুমি আনন্দ পাও, কিসে তোমার সুখ?
কোন সে মধুর পরশ পেলে, ভরবে তোমার বুক?
তোমার প্রাণে কষ্ট জমা, সাগর পরিমাণ?
কোথা হতে কি এনে দিলে, পাবে পরিত্রাণ?

প্রাণে জমা চিন্তা গুলো, কিসে মুক্তি পাবে?
কোন সে নদীর স্রোত তোমার ওই, কষ্ট ধুয়ে দিবে?
কে বুলাবে কোমল দেহে, মিষ্টি মধুর পরশ?
নানান ভীতি ভয়ের মাঝে, কে যোগাবে সাহস?

কার নয়নের আলোয় তুমি, দেখবে পৃথিবী?
পূরণ করবে কে অসময়, অবান্তর সব দাবী?
আদর করে মুছে দিবে কে, কাঁদলে চোখের জল?
কার হাতে হাত রেখে তুমি, হয়ে যাবে চঞ্চল?

একলা রাতে বিছানাতে, হলে স্বপ্ন ভঙ্গ,
সেই সে নিঠুর একাকীত্বে, কে দিবে গো সঙ্গ?
প্রাণে যখন ব্যথার দহন, অসীম হয়ে জ্বলবে,
কে তোমার ওই দেহের উপর, শীতল হয়ে গলবে?

তোমার মনের কষ্টগুলো, জানো কি কে বুঝবে?
ভীড়ের মাঝে হারিয়ে গেলে, কে তোমাকে খুঁজবে?
স্বজনের ভিড় তুমি জুড়ে, যখন অনেক অর্জন,
দুঃখের দিনে আমি ছাড়া, করবে কে গো আলিঙ্গন?

রসে ভরা কাব্য

রসে ভরা কাব্য সুধা পান করতে চাই,
কবি আছে কাব্য আছে রস তো তাতে নাই।
গদ্য টাকে পদ্য বলে চালিয়ে দেয়া যায়,
ছন্দে ছন্দে মিল না থাকলে কাব্য কেমনে হয়?

আকাশ হতেও অসীম কাব্য নেইতো সীমানা,
তাই বলে মন গড়া কথায় কাব্য তো হয় না।
কাব্য হল কবির প্রাণের ভাবনার নির্যাস,
সেই ভাবনায় উঠে আসে ব্যথীর দীর্ঘশ্বাস।

কবি কোন জাতি গোষ্ঠী কিংবা দলের নয়,
কাব্য দিয়েই কবি করেন সারা ভুবন জয়।
সব ব্যথীদের ব্যথা কবি করেন অনুভব,
সার্থকতা, অপূর্ণতা তুলে ধরেন সব।

জন্ম হতে মৃত্যু অবধি কবি কষ্ট পায়,
নিজে হাজার জ্বালা সয়েও দশের বোঝা বয়।
অনাহারে ক্লিষ্ট থেকেও কাব্যে ঢালে রস,
জগত জুড়ে সকল বীরকে কবি যোগায় সাহস।

সব সময়ই শান্তনা পাই থাকলে দ্বিধা দন্ধে,
খুশিতে মন নেচে ওঠে কাব্য রসের ছন্দে।
পদ্যাভাবে গদ্য দিয়ে বেসুরো গান গাই,
রসে ভরা কাব্য সুধা পান করিতে চাই।

প্রবাস থেকে পরকাল

কি বেদনার প্রবাস জীবন, জানে শুধু প্রবাসীর মন,
আপন জনার কথা ভেবে, ডুকরে কাঁদা যখন তখন!
যায় ভিজে যায় চোখের পাতা, জমা থাকে মনের কথা,
দিন চলে যায় ব্যস্ততাতে, রাত্রিগুলো সে শোক গাঁথা!

ঘামে ভেজা ক্লান্ত দেহ, মুছে দেবার নেইতো কেহ,
স্বপ্ন নিয়ে আছে বসে, সুদূর দেশে আদর স্নেহ!
বাবা মাকে বিদায় বলে, ছেলে মেয়ের কথা ভুলে,
প্রবাস কালে ব্যথায় কাঁদে, প্রিয়তমাও চোখের জলে!

হচ্ছে কথা টেলিফোনে, হাঁসি মুখে কান্না মনে,
শব্দ কানে ভেসে আসে, মায়া কি নাই তোমার প্রাণে?
এবার বাড়ি ফিরে এলে, বন্দী করব মনের জেলে,
দেবো না আর বিদেশ যেতে, বাসবো ভালো পরাণ খুলে।

এইতো মাত্র আর কটা দিন, সুখে জীবন হবে রঙিন,
ক্লান্ত মনের কান্না চেপে, শান্তনা দেয় সে প্রতিদিন!
ভুবন জুড়ে ঈদের খুশী, প্রবাসী যায় ঘামে ভাসি,
রুগ্ন দেহ ক্লান্ত শ্রমে, স্বপ্ন চোখে রাশি রাশি।

সেদিন হঠাৎ ফজর পড়ে, লোকে ভর্তি উঠোন জুড়ে,
চেতন হারায় প্রিয়তমা, ছেলে মেয়ে আছড়ে পড়ে!
হয়নি পূরণ মনের আশা, রইল জমা ভালোবাসা,
প্রবাস হতে পরপারে, প্রিয়তম বাঁধল বাসা!

কয়েক ফোঁটা অশ্রু


আমি কখনোই কাঁদিনি বন্ধু
কেঁদেছে আমার চোখ,
আসলে আমার চোখও কাঁদেনি
ভুল দেখেছে লোক।

আমায় পুড়িয়ে চোখ ভাসিয়ে
কেঁদে যায় এই মন,
এমনি ভাবে সকলেই কাঁদে
দূরে গেলে প্রিয়জন।

আমি কখনোই কষ্ট পাইনি
মুখ করিনি ভার,
যদিও তাঁর রেখে যাওয়া স্মৃতি
হাসতে দেয়না আর।

ইচ্ছা করে সারাটা জীবন
প্রাণটা খুলে হাঁসি,
অথচ দহনে জ্বলে পুড়ে যাই
চোখের জলেতে ভাসি।

আমার আকাশে দিন রাত জুড়ে
স্বপ্নের আনাগোনা,
কয়েক ফোঁটা অশ্রু ঝরা
নয় কোন কান্না!

সফলতার চাবি

তোমার নিজের হাতের মুঠোয় সফলতার চাবি,
ইচ্ছা থাকলে সম্ভব হবে তোমার দ্বারা সবি।
পরিশ্রমী হতে পারলে সফল হওয়া যায়,
অলসতা ব্যর্থ হবার প্রধান অন্তরায়।

স্বপ্ন দেখে সময় গেলে করবে কখন কাজ?
কাল করবে না ভেবে তা, করে ফেল আজ।
ন্যুনতম অবহেলায় বিশাল সর্বনাশ,
আড়ষ্টতা, অলসতা পাঠাও পরবাস।

সফল হতে করতে হবে কঠোর পরিশ্রম,
সু-জন দিবে সুবুদ্ধিটা হলে মতিভ্রম।
কু-জন সদাই পাশে থাকে মারে পিছুটান,
বিবেক খাটাও বুদ্ধি চালাও পাবে পরিত্রাণ।

তোমার জীবন যুদ্ধ তোমার নিজের করতে হবে,
চলার পথে ভুল ধরবার অনেক মানুষ পাবে।
সঠিক পথটা যে জন দেখায় মান্য করবে তাঁকে,
আয় ফিরে আয় পেছন থেকে ডাকবে অনেক লোকে।

কারো কথায় কান না দিয়ে নিজের মত চলো,
পরিশ্রমী হও আর সদা সত্য কথা বলো।
ন্যায়ের পথে থাকলে তুমি করতে পারবে সবি,
বুঝবে তখন নিজের হাতেই সফলতার চাবি।

পরম আনন্দ

ঘামে ভিজে ক্লান্ত দেহে, ঢলে পড়ি স্বপ্ন সুখে,
আঁকড়ে রাখে কেউ আমাকে, আলিঙ্গনে নিজের বুকে!
দেহ প্রাণের সঞ্জীবনী, দীর্ঘশ্বাসের শব্দ শুনি,
ফিসফিসিয়ে কানের কাছে, আবেদনের প্রতিধ্বনি।

অন্ধ আবেগ ব্যপক মোহ, অন্তরাত্মার কি বিদ্রোহ,
চোখের নেশায় মনের জোরে, পরশ পাবার সে আগ্রহ!
সুপ্ত প্রাণের হিংস্র থাবা, শরীরতত্ত্বে নীরব বোবা,
একত্রিত কিসের নেশায়, এই অবেলায় বোঝে কে বা?

রাতের গভীরতার সাথে, মাতাল নেশার সে ক্লান্তিতে,
মূল্যহীন হয় কাছে আসা, খুব সামান্য ভুল ভ্রান্তিতে!
স্বর্গসুখের মোহে ছুটে, ইচ্ছেমতন নিতে লুটে,
আবার বুকে ঢলে পড়ি, তখন হাঁসি দেখি ঠোঁটে!

যে হাঁসিটা দেখবো বলে, এই পৃথিবী যাই গো ভুলে,
শিহরণে কাঁপে দেহ, কল্পনাতে দোলা দিলে!
দাও দোলা দাও অনন্তকাল, খানিক পরেই আসবে সকাল,
তার আগে যাক তৃষ্ণা মিটে, ঘোর নেশাতে রাত্রি মাতাল!

এমনি আসুক রাত্রি আবার, পরম সুখে ঘাম ঝরাবার,
দিনের পরিশ্রমের শেষে, ক্লান্তি ভরা স্বপ্ন বহর!
সমন্বিত পরম সুখে, সার্থকতার সে আলোকে,
আলোকিত হই দু জনে, আঁধার রাতের এই পুলকে!