নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

মাদক আর ধর্ষণ

তর্জন গর্জন প্রতিদিন ধর্ষণ,
অর্পণ দর্পণ মাদকের বর্ষণ!
নিঃশ্বাস বিশ্বাস প্রহসন আশ্বাস,
উচ্ছাস উদ্ভাস প্রাপ্তি নাভিশ্বাস!

অন্যায় বন্যায় সর্বদা তন্ময়,
অক্ষয় অব্যয় দুর্নীতি জন্মায়!
সচেতন অচেতন আস্থা বিনোদন,
পরিজন প্রতিজন স্বার্থের বিচরন!

নিরাশায় দুরাশায় প্রাণপণ পিপাসায়,
নিরালায় দ্বিধা দায় নতুনের পরিচয়।
নিস্তেজ নিঃশেষ থমথমে পরিবেশ,
অনিমেষ নানা বেশ অন্যায় পরিশেষ!

প্রহসন প্রণোদন ক্ষমতার বিকিরণ,
আয়োজন সারাক্ষণ অর্থের সমীরণ!
উদ্যত সংযত দণ্ডিত বর্জিত,
অর্জিত শংকিত বিদ্বেষ কাঙ্ক্ষিত!

লজ্জায় শয্যায় যায় যায় প্রাণ যায়,
কর্তায় বর্তায় পার পায় সস্তায়!
বন্ধন ক্রন্দন তেলবাজি মর্দন,
নিরীক্ষণ নিপীড়ন অজানায় শতজন!

আবদার যার তার হয় না মানা আর,
সমাদর মনোহর প্রয়োজন আছে যার!
অভিশাপ পরিমাপ আর শুধু পরিতাপ,
মহাপাপ করে মাফ ধ্বনিত সে বিলাপ!

অনুনয় সবীনয় প্রাণহীন পরিচয়,
অস্থায় সত্ত্বায় অন্যায় অতিকায়!
কম্পন গুঞ্জন নিয়মের খঞ্জন,
তর্জন গর্জন মাদক আর ধর্ষণ!

সম্বোধন

খুব সস্তায় তবে কি জাতি বেঁচে দিলো যোগ্যতা?
আর কিনে নিলো বেশ চড়া দামে নির্লজ্জ নগ্নতা?
এক নদী লাল রক্ত দিয়ে দাসত্বই করল বরণ?
পাইনা খুঁজে ভাষা কি বলে করবো সম্মোধন!

লাঞ্ছিত আর বঞ্চিতদের অধিকার নিলো কেড়ে,
নিরপরাধকে কারাগারে রেখে অপরাধী দিলো ছেড়ে।
আকাশে বাতাসে চিৎকার শুধু রক্তে রাঙা শহর,
মুক্তি পাবার আকাঙ্ক্ষাতে জনতা গুনছে প্রহর।

নিষ্ঠুর তুমি কেড়ে নিয়েছো হাসি-খুশী শুভ দিন,
স্মৃতিগুলো শুধু হৃদয় গহীনে রয়ে গেছে অমলিন।
বীরের বেশে মনের আবেশে মেনে নিয়ে পরাজয়,
বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা শুধু মুখে মুখে শোভা পায়!

তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে শত কোটি জনতা,
স্বপ্নেও তারা আশাই করেনি এমন বর্বরতা!
লক্ষ শহীদ দিয়েছিল বলে প্রাণকে বিসর্জন,
আজ বাঙ্গালীর অন্তরে করে স্বাধীনতা বিচরণ।

বাস্তবতায় সেই স্বাধীনতা পেলাম আমরা কই?
স্বাধীন হয়েছি, স্বাধীন রয়েছি তবু তো স্বাধীন নই!
কৌশলে বেঁধে অবিচারে করো নাটকীয় প্রহসন,
পাইনা ভাষা কি বলে তোমায় করবো সন্মোধন!!

অপূর্ণতা

লোকে যা চায় পায় না বন্ধু
চায়না যা তাই পায়,
আপন ছেড়ে চায়না যেতে
তবু যেতেই হয়।

হাসতে যতই চাওনা কেন
কাঁদতে তোমার হবেই,
যতই থাকুক টাকা কড়ি
অভাব লেগে রবেই।

থাকুক সারা জীবন জুড়ে
হাসির কোলাহল,
তৈরী থাকো কাল বা পরশু
ঝরবে চোখের জল।

আপন জনা বন্ধু স্বজন
ঘুরছে চারিদিকে,
সবাই একদিন চলে যাবে
তোমায় একলা রেখে।

জীবন যৌবন সবই সপে
করলে যাকে আপন,
সেও না তোমার আড়াল হয়ে
দেখো কিছু ক্ষণ।

ভয়ে ভয়ে বন্ধু তুমি
থাকো যতই দূরে,
মরণ তোমায় সময় হলেই
নিবে আপন করে।

আমার আমার করছ কেন
তোমার কিছুই নয়,
লোকে যা চায় পায় না বন্ধু
চায়না যা তাই পায়।

গুণীদের প্রেরণায়

গুণীদের প্রেরণায়, সামাজিক চেতনায়,
বহুরুপী ভিন্নতা, অদ্ভুদ অভিনয়।
ইচ্ছার প্রহসন, আস্থার নিরসন,
বিবস্ত্র সংঘাতে, আত্মার প্রণোদন।

প্রাণে দুর্ভিক্ষ, নিবেদন সূক্ষ,
নিজেরই অজান্তে, নিজে প্রতিপক্ষ।
পরিতাপ লজ্জায়, ব্যথাতুর শয্যায়,
যুক্তির জল্পনা, দুর্বল সত্ত্বায়।

সাধ নির্লজ্জ, মোহ পরিত্যায্য,
অন্তরে দাবানল, নিভৃতে সহ্য।
স্নেহের প্রতিদান, মনপ্রাণ বলিদান,
কুৎসিত তন্ত্রে, চেতনা মহীয়ান।

জীবন অনাড়ম্বর, অতলের গহ্বর,
লজ্জিত লগ্ন, ধারা অবিনশ্বর।
মাদকতার উচ্ছাস, নিষ্ঠুর নির্যাস,
বন্ধনে বিঘ্ন, কলুসিত উদ্ভাস।

স্তব্ধ আগন্তুক, আত্মারা উৎসুক,
দুর্লভ আনন্দ, উল্লাসী প্রিয়মুখ।
অযাচিত সংশয়, কম্পিত শংকায়,
চেতনাই জাগ্রত, গুণীদের প্রেরণায়।

চেতনা ২

তুমি ফিরে এসো
জঘন্যতার অবসান ঘটিয়ে
কোমলতার পরশ বুলাতে।
অন্ধকারাচ্ছন্ন আঁধার পৃথিবীতে
আলোর উজ্জ্বল প্রদীপ জ্বালাতে।
আজ শুধু তোমাকেই খোঁজে
অতৃপ্ত প্রতিটা হৃদয়।
প্রতারনার বেড়াজালে আবদ্ধ
মৃতপ্রায় বৃহৎ জনগোষ্ঠীর
স্বার্থ উদ্ধারের প্রয়োজনে
উদাত্ত আহবান শুধুমাত্র তোমাকেই।
তুমি ফিরে এসো সূর্যোদয়ের সাথে
অথবা অশান্ত ঢেউয়ের তালে
কিংবা পূর্ণিমার মৃদু জ্যোৎস্নায়।
জগতের সকল অকল্যানের অবসান ঘটাতে
তোমাকে জেগে উঠতেই হবে প্রতিটা অন্তরে।
কংক্রিটের আবর্জনার আড়ালে
লুকিয়ে থাকা যান্ত্রিক হায়েনার দলকে
নম্রতার পদক্ষেপ শেখাতে
তুমিই একমাত্র মোক্ষম হাতিয়ার।
ধ্বংসের পথে চলন্ত জগতকে রক্ষা করতে
এসো হে চেতনা, ফিরে এসো তুমি।
জেগে ওঠো তুমি প্রতিটা আত্মায়
মহাবীরের হুঙ্কার হয়ে।
অন্যথায় মানবতার ধংস অনিবার্য।
অথবা দেখবে একদিন,
একটি সত্ত্বাও জীবিত নেই
তোমার চেতনায় জাগতে।

চেতনা


দেয়ালে ঠেকেছে বেদনা লেগেছে চেতনা উঠেছে জেগে,
সত্য বলায় রশি গলায় প্রতিনিধি গিয়েছে রেগে!
জনতা ক্ষেপেছে স্লোগান তুলেছে কাঁদছে মাতৃভূমি,
ঝরছে রক্ত ধরা বিভক্ত এখনো ঘুমাও তুমি?

হয়েছে জানা করনা মানা শুনবেনা কেউ বারণ,
আইন কানুন বলছি শুনুন বদলে ফেলেছে ধরণ!
আজ এ দিনে মিথ্যা বীনে টিকে থাকা বেশ দায়,
ঈমান ছেঁচে আমল বেঁচে সুদ ঘুষ কিনে খায়!

করে অনিষ্ট হয়ে অতিষ্ঠ পিষ্ঠ জীবন চাকায়,
জীবনি শক্তি প্রানের ভক্তি লজ্জাতে আজ লুকায়।
আছে যতজন সুপ্রিয় স্বজন কাছেতে কিংবা দূরে,
একটা সময় সব পর হয় কেঁদে বেদনার সুরে!

মামু খালু আর নোটের জোরে চাকরি করছ বেশ,
মেধা যোগ্যতা নিষ্ঠাবানেরা তিলে তিলে আজ শেষ।
অলি গলি ঘুরে ভিক্ষা করে গড়েছে রঙের মহল,
নেতা নেত্রীর পেট ফুলেছে খাশ জমি করে দখল!

সততা পুঁজি বুকে ধরে ওরা খেয়ে না খেয়ে মরে,
দুধওয়ালা ঘোরে দ্বারে দ্বারে আর মদওয়ালা বেঁচে ঘরে!
দেয়ালে ঠেকেছে বেদনা লেগেছে অনুভবে যন্ত্রনা,
কার পায় পড়ে কে জাগাবে ভান ধরা চেতনা?

আত্মতুষ্টি

আত্মাটাকে তৃপ্তি দিতে সত্বা বেজায় ব্যস্ত,
জীবনের উৎকর্ষ সাধন আরাধনায় ন্যস্ত।
ক্ষুদ্রতম প্রশান্তিময় পরশ করে সন্ধান,
কাংখিত সে সুখের ক্ষণে বেদনারা অম্লান।

সব পেয়েও সত্ত্বা জুড়ে ব্যপ্তি অসন্তুষ্টি,
বৃহৎ কাঁদে সুখে হাসে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী!
ভ্রম্মান্ড-ময় অশ্রু ঝরে শান্তি কি বিলুপ্ত?
বন্দীশালা হতে মানুষ কবে হবে মুক্ত?

চতুর্দিকে ছুটন্ত লোক অনিচ্ছায় পথভ্রষ্ট,
আপন জীবন বিলায় কেহ সয়েও হাজার কষ্ট!
দেহে প্রানে সৃষ্ট বিবাদ বিবর্ণ বিরক্তি,
মিষ্টি বুলি মুখে থেকেও অন্দরে কটুক্তি!

সত্ত্বা থাকুক সুখে, পুড়ুক ত্রিভুবন অনলে,
পশুত্বকেই দেখছি শুধু মানুষের আদলে!
বিন্দুমাত্র সুখের আশায় মহাবিশ্ব উত্তাল,
হঠাৎ করেই হাসি ফুরায় কষ্ট থাকে সম্বল!

সব পেয়েছে যে জন সে ও নয় আজ সন্তুষ্ট,
অধিক পাবার উচ্চাকাংখায় পাপে উপবিষ্ট!
রুদ্ধশ্বাসে পরপারে যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ,
তবু সত্ত্বা সুখী হবেই প্রচেষ্টায় সচেষ্ট।

সেই হয়েছে পর

ঝরনার মতো অশ্রু ঝরেছে মিশেছে বুকের নদে,
সুখের বদলে দুঃখ পেয়েছি জীবনের প্রতি পদে!
সব কিছু যাকে দিয়ে গেছি সপে সে হয়ে গেছে পর,
যাকে পথ হতে টেনে তুলে এনে বানিয়ে দিয়েছি ঘর-

সেই স্বজনই আমার ঘরে জ্বালিয়ে গিয়েছে আগুন,
চোখের জলে গিয়েছে ভেসে আমার যতটা ফাগুন!
ততটা সময় কেউ যদি হায় থাকতো আমার পাশে,
বুঝানো যেত কতটা কষ্টে দু নয়ন জলে ভাসে!

যার গায়ে আমি লাগতে দেইনি একটি ফুলের টোকা,
সেই করেছে আঘাত আমায় দিয়েছে এমন ধোকা!
শুধু তাকে সুখে রাখতে গিয়ে দিয়েছি নিদ্রা ছেড়ে,
কেমনে নিলো সেই স্বজনই দু চোখের ঘুম কেড়ে?

তার কারণে ক্লান্ত হয়েছি সয়েছি দারুণ জ্বালা,
হাঁসি মুখে আমি মেনে নিয়েছি সকলের অবহেলা!
বিবেক আবেগ সব সপেছি আপন করেছি পর,
শুধুই তাকে আগলে রাখতে ছেড়েছি আপন ঘর!

তার পরও সে পর হয়েছে গিয়েছে দূরে সরে,
নিজ হাতে গেছে আগুন জ্বালিয়ে আমার সুখের ঘরে!
কি ভুল করেছি অনুভব করি জীবনের প্রতি পদে,
অশ্রু ধারা স্রোতের মতন বয়েছে বুকের নদে!

বাবার চোখে জল!

আচ্ছা বাবা পৃথিবীতে
থাকতে এত মেয়ে,
কেন বিয়ে করলে তুমি
মা-মণিকে যেয়ে?

মা-মনি যে সারাটাদিন
তোমায় ভীষণ বকে,
কোথায় যাচ্ছো কখন ফিরছো
রাখেন চোখে চোখে।

কেনা কাটা বাজার সদাই
হলেই একটু ভুল,
ভীষণ ক্ষেপে টেনে ছেড়েন
তোমার মাথার চুল।

ঈদের দিনেও মা-মণিকে
থামিয়ে রাখা দায়,
আমার ক্লাসের সিমির আম্মু
এমন কিন্তু নয়।

কেন তুমি মা-মণিকে
এতটা ভয় পাও?
চুপ কেন ও বাবা আমার
কথার জবাব দাও?

প্রতি রাতে বারান্দাতে
দাঁড়িয়ে কাঁদো তুমি,
চুপি চুপি লুকিয়ে সব
দেখি কিন্তু আমি!

এ কি বাবা কাঁদছ তোমার
চোখের কোনে জল?
বাবা হেসে বলেন মা রে!
তুই বড় চঞ্চল!

কি জবাব দিবি?

দু চারটে দিন হয়তো মায়ের মুছবি চোখের জল,
একাকী জননী সারাটা জীবন কি নিয়ে বাঁচবে বল?
কি গ্যারান্টি আন্দোলনে ন্যায় বিচার তুই পাবি?
চলে গেল যার নাড়ি ছেড়া ধন তাকে কি জবাব দিবি?

সঠিক ভাবে বিচার হলে হয়তো হবে ফাঁসি,
আরো কিছু মার কোল খালি হবে অশ্রুতে যাবে ভাসি!
এমনি ভাবে আর কত মার হাসি তোরা কেড়ে নিবি?
যে হারালো তার পরান পাখি তাকে কি জবাব দিবি?

আর যদি হয় প্রভাবিত তবে সকলে মুক্তি পাবে,
নির্দোষ যারা তাঁদের ধরে নির্মম সাজা দেবে!
আবারও ওরা হাজারো মায়ের কোল খালি করে দেবে!
দিনে দিনে ওরা প্রশ্রয় পেয়ে আরও অপরাধী হবে!

প্রতিবাদী প্রাণ কেড়ে নিয়ে তুই নিজেকে ভাবিস বীর?
তোর বুকে এসে বিধে যাবে ওরে তোর ছুড়ে দেওয়া তির!
তিলে তিলে সব শেষ করে দিয়ে নিজেও তো শেষ হবি,
কেড়ে নিলি যার হৃদ স্পন্দন তাকে কি শান্তনা দিবি?

সামান্য সুখ খুঁজতে গিয়ে করে ফেলে বড় ক্ষতি,
রসাতলে গেছে শান্তি এভাবে পায়নি তো কোন জাতি!
লালসায় লোভে এমনি ভাবে আর কত প্রাণ নিবি?
সুখের আশায় রক্ত ঝরিয়ে সুখ তুই খুঁজে পাবি?

ছুড়ে ফেলে দেবে ময়লার মতো তোকে করে ব্যবহার,
নেতা নিয়ে নয় দেশ নিয়ে ভাব ফিরে আয় এই বার!
সন্ত্রাসবাদী হয়ে ওরে তুই কি আশা করিস বল?
ওরে নরাধম তোর মার ও তো ঝরবে চোখের জল!

হাতে হাত রেখে কাধে কাধ রেখে একত্রে পথে চলে,
কি ক্ষতি তোর নম্র হতে যদি তাতে সুখ মেলে?
অন্যকে মেরে ওরে নরপশু কদিন বাঁচবি বল?
আজ না হলে কাল বা পরশু ফুরাবে দেহের বল!

বন্ধুপরায়ন আচরণ তুই অতিদ্রুত বশ কর,
দেখবি অশেষ শান্তিতে তোর ভরে যাবে অন্তর!
বাহবা পেতে পশুর আদেশে সরলের প্রাণ নিবি?
এই কালে গেলি পার পেয়ে তুই পরপারে পার পাবি?

কাপুরুষ তুই কাপুরুষ!

কাপুরুষ! তুই কাপুরুষ!
চোখের সামনে ভাই খুন হয়!
পিতা ভাসেন অশ্রু ধারায়!
মায়ের আহাজারি দেখেও
নীরবে বসে যে পুরুষ,
কাপুরুষ সে কাপুরুষ!

চারিদিকে আজ শুধু অবিচার,
আতঙ্কে কাটে প্রতিটি প্রহর!
ধর্ষিতা হয় আদরের বোন,
বিচার নিয়ে চলে প্রহসন!

কলিজা লোটে বুকটা চিরে,
অনাচার কত সইবি ওরে?
প্রতিবাদ নেই প্রতিরোধ নেই
নিজেকে ভাবিস সুপুরুষ?
কাপুরুষ তুই কাপুরুষ!

নিরপরাধ নিষ্পাপ ছেলে
নির্যাতনের শিকার কি বলে?
অত্যাচারীর শোষণের অনলে
সমাজ জাতি রাষ্ট্র জ্বলে!

নিভৃতে আর সইবি কত?
ভয় ঝেড়ে ফ্যাল হ জাগ্রত!
বীরের মত হুংকার ছেড়ে,
প্রতিবাদে দে পৃথিবী নেড়ে!

মরতে তোকে হবে একদিন,
কি লাভ হবে মরে প্রতিদিন?
একবারই মর বীরের মতন
তবেই বলবো সুপুরুষ!
কাপুরুষ তুই কাপুরুষ!

অনন্তকাল

মানুষ যদি কোন ভাবে অনন্তকাল বাঁচতো,
এত লোকের বসত বাড়ি কোথায় তবে গড়তো?
চোখের পলক সমান জীবন তবু অভাব খাদ্যের,
অমর হয়ে গেলে তবে কি হত উপায় তাদের?

এক মুহূর্ত বেঁচে থাকার নাইতো কোন ভরসা,
বিন্দু মাত্র স্বার্থ তবু ছাড়ছে না কেউ সহসা।
সবাই জানে যেতে হবে রঙিন এই ভুবন ছেড়ে,
তবু মানুষ সেই মানুষের অকালে জীবন কাড়ে!

সোনার মহল গড়ে, বানায় শ্বেত পাথরের ইমারত,
চাঁদে হচ্ছে বসত ভিটে মঙ্গলেও তো যাচ্ছে রথ।
সামান্য এই মাটির দেহ মিশবে মাটির সাথে,
কিছুক্ষণের জন্য হাজার সাজ আর সজ্জা তাতে।

মানুষ যেন হয়ে যাচ্ছে পশুর চেয়েও অধম,
নিজের ভাইকে হত্যা করছে লোভ লালসা চরম!
বস্ত্র ফেলে উলঙ্গ হয় নোংরামিতে মাতে,
থাকতো যদি অমর জীবন এই মানুষের সাথে!

হয়তো সবল দুর্বলেরে আস্ত গিলে খেতো,
চন্দ্র সূর্য কেউবা নিজের নামে লিখে নিতো!
আজই মরবে জেনেও ভাবে কি খাবে সে কাল,
মানুষ খেয়েই বাঁচতো মানুষ বাঁচলে চিরকাল!

তবে কোথায় পেলে?

সে দিন গেছে চলে
বাড়ি দিলে ঢোলে,
মহানন্দে উঠতো নেচে
খোকা মায়ের কোলে।

এখন পুজো এলে
পুলিশ দলে দলে,
তার পরেও সারাদেশে
প্রতিমা ভাঙা চলে।

কোন ধর্ম কি বলে
জানবো বড় হলে,
আগে বলো এমন নিয়ম
কোন হাদীসে পেলে?

আমার ছোট্ট কালে
ঈদ বা পূজো এলে,
খুব আনন্দ করেছি ভাই
মিলে দলে দলে।

কি বিষ ঢেলে দিলে
স্রষ্টার আদেশ ভুলে,
ধর্ম ব্যবসা করে তুমি
মহাপাপী হলে।

ইহকালে পার পেলে
কিন্তু পরকালে,
এই পাপের ই শাস্তি বন্ধু
ঝুলবে তোমার গলে!

ভেবো সময় পেলে
নিভৃতে খাছ দিলে,
মানুষকে খুন করতে হবে
কুরআন কি তাই বলে?

সে দিন গুলো কই?

দাদী নানি আচল গুজে ঢেকিতে ধান বানতো,
দাদা গাছে উঠে রসের ঠিলে পেড়ে আনতো।
মেটো পথে সায়ের গেয়ে যেতো বিয়ের পালকি,
চার আনাতে দুধের মালাই পাওয়া যাবে আর কি?

সোনা মিয়ার গরুর গাড়ি আর এ পথে ছোটে না,
পঁচিশ পয়সা দিয়ে কেহ ননির খেয়ায় ওঠে না।
লাংগল চষে কৃষক এখন মাঠে তো আর দেয় না মই,
চাল দিয়ে আর যায়না পাওয়া হরেন বাবুর মিষ্টি দই।

ভাটিয়ালি ভুললো মাঝি জারি সারি গায়না কেউ,
পলি জমে মাঠ হয়েছে রোজ যেখানে ভাঙত ঢেউ।
শীতের রাতে হ্যাচাক জেলে যাত্রাপালা হয়না আর,
কাসা পিতল মাটির হাড়ি শোভা পাচ্ছে ঘরে কার?

পাটের ছালায় বসে খেত কলার পাতায় মেজবানি,
নারিকেলের তেল বানাতো ঘুরিয়ে ঘোড়ার ঘানি।
শিল পাটাতে মশলা বেটে মাটির চুলায় ফুটত ভাত,
প্রদীপ জেলে কপাট এটে চিঠি লিখে কাটত রাত।

বর্ষা কালে ঝিলের ধারে উজান ওঠা টেংরা কই,
যতিন বালা ছন্দে ছন্দে পড়ত পালা গানের বই।
তালের পাতার পাখার বাতাস কতখানি শীতল হয়,
ফরমালিন আর প্লাস্টিক যুগে সে কথা কি ভোলা যায়?

ফিরে পাওয়া যায় না

কে পেয়েছে ফিরে কবে
হারিয়ে যাওয়া বয়স?
যৌবন তো ভাই পেরিয়ে যায়
পেতে মধুর পরশ।

সারাজীবন পার হয়ে যায়
যোগাতে সম্মান,
এক মুহুর্তের ছোট্ট ভুলে
সেও নেয় প্রস্থান।

কে পেয়েছে ফিরে কবে
পেরিয়ে যাওয়া সময়?
তড়িৎ এসির এই মানুষই
বাস করেছে গুহায়।

জীবনযাপন ভীষণ সহজ
চাইলেই যায় পাওয়া,
চাইলে কি আর পাওয়া যাবে
দূষণ মুক্ত হাওয়া?

কে নিয়েছে টেনে কবে
ছেড়ে দেওয়া শ্বাস?
লাগেনি তো জোড়া কভু
ভাঙলে এই বিশ্বাস!