নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

অফুরান সুখ

এই ভাবে আর কত? মনে দুঃখ ব্যথা যত,
যদি বস্তা বন্দী করে, কোথাও ফেলে দেয়া যেতো!
হয়তো তবে ব্যথী প্রাণের, দুঃখটা শেষ হতো।

কোন কিছু দিয়ে, এ মন টাকে বেঁধে,
যদি রাখা যেত তবে, পড়ত না আর ফাঁদে!
হয়তো তবে যেত না কেউ, সারাজীবন কেঁদে!

আবেগ ভরা এ মন, শুধু করতে নিয়ন্ত্রন,
উপায় খুঁজে ফেরে, মানুষ সারাটা জীবন!
দিনটা শেষে সঙ্গী থাকে, ব্যথী প্রাণের দহন!

তেমনি হাঁসি খুশী, কেন খুব সামান্য হয়?
দুঃখ কষ্ট গুলো, কেন অনন্তকাল রয়?
সুখকে ধরে রাখার, কেন নেই কোন উপায়?

কষ্টে আছে যারা, যাদের দুঃখ বাঁধন হারা,
কবে হবে তাঁদের, সে সুখের ঘরে ফেরা?
যে ঘরে সে সুখে, হবে সুখী পাগল পারা?

সামান্য জীবনে, শুধু কষ্ট সইতে হয়!
কে যায় কখন চলে, কারো জানার কথা নয়!
রহস্যময় প্রাণ, সুখের পানে চেয়ে রয়!

কান্না নিয়ে আসা, কাঁদতে কাঁদতে যাওয়া!
কেন এমন অপূর্ণ রয়, ক্ষুদ্রতম চাওয়া?
অনন্তকাল অফুরান সুখ, কবে হবে পাওয়া?

ক্রীতদাস বাঙ্গালী

রোজ সকালে কাগজ জুড়ে, ধর্ষণের খবর,
টিভির পর্দা ভরে আছে, লাশে ভরা শহর!
শিক্ষক দ্বারা লাঞ্ছিতা, না বালিকা ছাত্রী,
সারাদিন জুড়ে রাহাজানি, ভয় ভরা রাত্রি!

রোগী নিয়ে ব্যবসা করছে, নির্লজ্জ ডাক্তার,
দিন দুপুরে খুন করে যে, শাস্তি হয়না তাঁর!
নিরপরাধ সরলেরা, দিব্যি খাটছে জেল,
মধ্যে পড়ে আইন দেখায়, ভানুমতির খেল!

মাদক বানে দেশটা ভাসে, চোখের সামনে রোজ,
কার আহার কে চুরি করে, কার ঘরে হয় ভোজ?
ভিখেরিদের খুচরো টাকাও, কোটিপতি খায়,
অবৈধকে বৈধ করার, আছে নানান উপায়!

বেপরোয়া গাড়ী চাপায়, রোজই তো লোক মরে,
নিয়ম তখন আঙুল চোষে, বসে নিজের ঘরে!
শিক্ষা নিয়ে এই বানিজ্য, নয়কি সর্বনাশ?
লজ্জা ঢাকতে আত্মহত্যা, তবু প্রশ্ন ফাঁস!

হাত বাড়ালেই মিলছে, মানুষ মারার ঠিকাদার,
রোগী মরছে ছটফটিয়ে, অভাব চিকিৎসার!
বুড়িগঙ্গায় আজো মিলছে, বস্তা ভরা লাশ,
স্বাধীন হয়েও বাঙ্গালী কি, জিম্মি ক্রীতদাস?

তুমি কষ্ট দেবার কে?

তুমি কোথায় আর আমি কোথায়?
দেহে কি চায় আর প্রাণে কি চায়?
কি রহস্যের সৃষ্টি করে,
দেহ প্রাণের সমন্বয়?

প্রাণ কি ভাবে? দেহ কি চাবে,
কাঙ্ক্ষিত সুখ, কখন পাবে?
উজাড় করে সব বিলিয়ে,
দিনের শেষে নিঃস্ব হবে?

নিক লুটে নিক এই অবেলায়,
যাই ভেসে যাই সুখের ভেলায়।
প্রাণ পেয়েছে দুঃখ কষ্ট,
দেহ পায়নি ভোগের সময়।

যার মাঝেতে প্রাণকে সাজাই,
সুখের মোহে কষ্টে ভাসাই!
ছুটে চলা বেপরোয়া
অজানাতে বাঁধন ছাড়াই।

আদর স্নেহে ক্লান্ত দেহে,
আনন্দ দেয় অন্ধ মোহে!
দেহের মাঝে সুখ খুঁজে নেই,
কষ্ট দেবার তুমি কে হে?

স্বাধীনতার চেতনা

পরাধীনতার গ্লানি মুছে দিল বাঙ্গালীর স্বাধীনতা,
কি আশা ছিল শহীদের প্রাণে কেউ ভাবে সে কথা?
নির্মম ভাবে লুটে নিয়েছিল মা বোনের সম্ভ্রম,
রক্ত ঝরায়ে সফলতা পেয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রাম।

মুক্ত আকাশে উড়েছে পাখী স্বাধীন হয়েছে দেশ,
তবুও আজো বাঙ্গালীতে মিশে পরাধীনতার রেশ।
রেষারেষি আর হানাহানিতে মাতোয়ারা যেন সবাই,
ব্যক্তি স্বার্থে অন্ধ সকলে দেশেপ্রেম চেতনা নাই।

লাঠালাঠি আর কাটাকাটি হয় কত কথা বলাবলি,
ক্ষমতার নেশায় অন্ধ হয়ে স্বদেশ জলাঞ্জলি।
বাংলাকে বুকে আগলে রেখে দেশকে ভালোবাসা,
দশের সেবায় নিবেদিত প্রাণ ছিল শহীদের আশা।

লোভের পাপে দেশপ্রেম মরে বানিজ্যে নিয়েছে রূপ,
সবুজ শ্যামল সোনার বাংলা মনে হয় মৃত্যু কূপ।
ভাইয়ে ভাইয়ে আজ শত্রু হয়েছে মিথ্যা ক্ষমতা লোভে,
শহীদের সেই বিদ্রোহী চেতনা ফেঁটেছে দুঃখে ক্ষোভে।

বাংলা আছে বাঙ্গালী আছে দেশ প্রেম যেন নাই,
চিন্তা চেতনায় খাঁটি বাঙ্গালী আজো আমি খুঁজে যাই।
তাঁদের প্রাণের স্বপ্ন ছিলনা এমন বর্বরতা,
নির্ভয়ে নিজ প্রাণ সপে যারা দিয়ে গেছে স্বাধীনতা।

তোমার জন্য

তোমার জন্য জীবন দেবো
পয়সা দিতে পারবো না,
সুখের সময় আছি পাশে
দুঃসময়ে ডাকবে না।

অর্থ বিত্ত আছে বলে
তোমার বন্ধু হয়ে রই,
পকেট খালি লোকের সঙ্গী
হবার বোকা আমি নই।

মিথ্যা কথা বললে তাকে
সহ্য করতে পারি না,
যদিও আমি নিজে একটাও
সত্য কথা বলি না।

সারাজীবন সহযোগিতা
সবার কাছে পেতে চাই,
নেবার জন্য তৈরী সদা
দেবার বেলায় আমি নাই।

দাও আমাকে সব দিয়ে দাও
করো আমায় ধন্য,
আমার কাছে নাই কিছু নাই
তোমায় দেবার জন্য।

স্বাধীনতা

স্বাধীনতা তুমি প্রতিটা বাঙ্গালীর গর্ব অহংকার,
শক্ত হাতে দিয়েছো রুখে শত্রুর অত্যাচার।
তোমার ছোঁয়ায় মুক্ত আকাশে ডানা মেলে পাখি ওড়ে,
হাঁসি খুশী আর ফুলে ফলে ভরা সারাটি বাংলা জুড়ে।

মিশে আছো তুমি প্রতিটা বাঙ্গালীর রক্তে শিরায় শিরায়,
তোমার আকাশে প্রতিটা ভোরে নতুন সূর্যের উদয়।
পূর্ণিমা চাঁদ জ্যোৎস্না বিলায় বাগানে ফোটে ফুল,
স্বাধীন ভাবে বয়ে চলে নদী স্রোতে ভাসায় কূল।

ছেলে হারা মা তোমার পরশে বেদনা গিয়েছে ভুলে,
কন্ঠে বাংলা সূর নিয়ে মাঝি ছুটে চলে পাল তুলে।
প্রতিটা ঢেউয়ের ভাজে মিশে আছে স্বাধীনতার চেতনা,
মুক্ত বাতাসে ভুলে থাকি যত ভাই হারা বেদনা।

তোমায় নিয়ে বাঙ্গালী কবিরা কাব্য রচনা করে,
অকাতরে যারা বিলিয়েছে প্রাণ তাদের স্মৃতিতে ধরে।
শস্য শ্যামলা এই বাংলা তোমায় পেয়েছে বলে,
স্বাধীন বাংলা বুলি শিখে যায় শিশুরা মায়ের কোলে।

তোমার জন্য প্রতিটি ঘরে বীরের জন্ম হয়,
আমার প্রাণের বাংলাকে তুমি ছড়ালে ভুবনময়।
তোমায় পাওয়াতে নির্ভয়ে বলি প্রাণে জমা যত কথা,
আজীবন রেখো বাংলাকে আগলে প্রাণের স্বাধীনতা।

স্বর্গাপ্সরী


হঠাৎ প্রথম থমকে গেছি
কাউকে দেখার পর,
পরাণ যেন চমকে গিয়ে
ছাড়ল দেহের ঘর।

মৃদু হাওয়ায় উড়লো ও চুল
ফিরল আচল তুলে,
হতভম্ব দাঁড়িয়ে রইলাম
নাম ঠিকানা ভুলে।

স্বর্গ হতে অপ্সরী কি
আসলো ভবে নেমে?
ভাবতে ভাবতে শীতের দিনেও
যাচ্ছি ভিজে ঘেমে।

এক পলকের বেশী তাঁর ওই
চোখে রেখে চোখ,
দাঁড়িয়ে থাকবে সম্মুখপানে
কোথায় এমন লোক?

সন্দেহ হয় ভীষণ সে কি
মানুষ নাকি পরী?
বর্ণনাতীত সুন্দরী সে
স্বর্গের অপ্সরী।

স্বপ্ন ভঙ্গ


যার গিয়েছে স্বপ্ন ভেঙে, তাঁর মনে কি কষ্ট,
কত রাত্রি নির্ঘুম কাটে, কারো কাছে তা স্পষ্ট?
এই পৃথিবীর কোনায় কোনায়, সে খুঁজে যায় বিশ্বাস,
মরার মতই বেঁচে থাকে, আছে বলে নিঃশ্বাস।

অন্ধের মতই দিন রাত্রি, সবই সমান মনে হয়,
ভাঙ্গা স্বপ্ন জোড়ার আশায়, পথের পানে চেয়ে রয়।
যার হয়েছে হৃদয় হনন, কেউ রাখেনা তাহার খোঁজ,
চোখের জলে দিন ভিজে যায়, আঁধার ঢাকা রাত্রি রোজ।

কেউ যেন তাঁর আঁধার ঘরের, ব্যথার কথা ভাবে না,
প্রাণ জুড়ে যে কি যন্ত্রণা, বুঝেও কেহ বোঝে না।
ভয়াল কষ্টে যায় ঢেকে যায়, আপন জনের শান্তনা,
স্বপ্ন ভঙ্গের স্মৃতি শুধু, বাড়ায় মনের যন্ত্রণা।

যে ভেঙেছে স্বপ্ন তাহার, আসে না আর সে ফিরে,
তবু তাকে দেবী করে, রেখে দেয় মন মন্দিরে।
যার কারণে সয় যাতনা, ভাবে না সে একটি বার,
স্বপ্ন ভঙ্গ হবার পরেও, স্বপ্ন নিয়ে বাঁচা তাঁর।

এই ভুবনের সবখানে সে, স্বপ্নকে খুঁজে বেড়ায়,
সৃষ্টি কর্তা না দিলে কি, খুঁজে কিছু পাওয়া যায়?
ধৈর্য হারা হয়ে আবার, কেউ হয়ে যায় নষ্ট,
সহ্য করা বড়ই কঠিন, স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট।

ফিরে আয় অরিত্রি


অরিত্রি তুই যাসনে চলে
আয়রে ফিরে আয়,
বাবাটা তোর ভুলেও কারো
ধরবে না আর পায়।

যা খুশী তা করিসরে তুই
ইচ্ছে মত চলিস,
বকবে না আর কেউ কখনো
যতই আসুক নালিশ।

বন্ধুরা তোর ক্লাসে বসে
মুখটা করে ভার,
কোন দিনও আসবেনারে
অরিত্রিটা আর।

অরিত্রিরে অরিত্রি তুই
যাসনে চলে একা,
দেখনা সবার ভুল ভেঙেছে
রাগ করিসনে বোকা।

আর একটি বার ক্লাসে ফিরে
আয়না অরিত্রি,
কাতর ছাত্র কাতর শিক্ষক
কাতর ধরিত্রী।

অনন্ত কাল

মানুষ যদি কোন ভাবে, অনন্ত কাল বাঁচত,
এত লোকের বসত বাড়ি কোথায় তবে গড়ত?
চোখের পলক সমান জীবন, তাই কি অভাব খাদ্যের,
অমর হয়ে গেলে তবে, কি হত উপায় তাদের?

এক মুহূর্ত বেঁচে থাকার, নাইতো কোন ভরসা,
বিন্দু মাত্র স্বার্থ তবু, ছাড়ছে না কেউ সহসা।
সবাই জানে যেতে হবে, রঙিন ভুবন ছেড়ে,
তবু মানুষ এই মানুষের, মুখের খাবার কাড়ে।

সোনার মহল গড়ে, বানায় শ্বেত পাথরের ইমারত,
চাঁদে হচ্ছে বসত ভিটে, মঙ্গলেও গেছে রথ।
সামান্য এই মাটির দেহ, মিশবে মাটির সাথে,
কিছুক্ষণের জন্য কতই, সাজ সজ্জা তাতে।

মানুষ যেন হয়ে গেছে, পশুর চেয়ে অধম,
নিজের ভাইকে হত্যা করে, লোভ লালসা চরম।
বস্ত্র ফেলে উলঙ্গ হয়, নোংরামিতে মাতে,
থাকতো যদি অমর জীবন, এই মানুষের সাথে।

হয়তো সবল দুর্বলেরে, আস্ত গিলে খেতো,
চন্দ্র সূর্য কেউবা নিজের, নামে লিখে নিতো।
আজ মরবে জেনেও ভাবে, কি খাবে সে কাল,
মানুষ খেয়েই বাঁচত মানুষ, বাঁচলে চিরকাল।

বেদনার ক্ষণে


যন্ত্রণাগুলো সুখের মতন, ভাগাভাগি করা যায়?
বেদনার ক্ষণে কোন মানুষে, পাশে কি কাউকে পায়?
মানুষে মানুষে কত ভেদাভেদ, শুধুই দেবার বেলায়,
নেবার জন্য ওঁত পেতে থাকে, বিবেক হারায় হেলায়।

জাত বেজাতে কত লাঠালাঠি, ঘৃণ্য হানাহানি,
ধর্ম নামের বানিজ্যে শুধু, স্বার্থের টানাটানি।
এসেছে মানুষ যার কাছ হতে, চলে যাবে তাঁর কাছে,
এই জীবনে এক পলকের, ভরসা কি কারো আছে?

তবুও কেন দুঃখের ক্ষণে, কেউ নয় কারো পাশে?
মানুষে মানুষে এই ভেদাভেদে, পশু পাখিরাও হাঁসে।
পৃথিবীর যত প্রাণীকুল থাকে, শ্রেণী বদ্ধ ভাবে,
মানুষ কবে সেই কাতারে, নিয়ম অনুসারী হবে?

ক্ষুধার তাড়নায় কীটপতঙ্গ, একে অপরকে খায়,
তাঁর চেয়ে বেশী নিকৃষ্টতা, মানুষেতে দেখা যায়।
এই হানাহানি আর রেষারেষি, কবে যাবে লোকে ভুলে?
সব মানুষে কবে ব্যাথা পাবে, একজনে ব্যাথা পেলে?

আনন্দ আর উল্লাস যদি, ভাগাভাগি করা যায়,
দুঃখের বোঝা তবে মানুষে, কেন একাকী বয়?
একটি প্রাণের বেদনায় যেদিন, সব প্রাণ ব্যথী হবে,
হয়তো সেদিন পৃথিবী হতে, দুঃখ বিদায় নেবে।

কার মনে কি আছে

থাকতো যদি বোঝার উপায়, কার মনে কি আছে,
চোখের জলে কার কত রাত, নির্ঘুম কেটে গেছে।
কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা, মুখ দেখে বোঝা গেলে,
কে কতটা কষ্ট জীবনে, এসেছে পেছনে ফেলে।

প্রখর রোদে এই মাটি যদি, কখনো না ফেঁটে যেতো,
বৃষ্টি ফোঁটা কত যে মধুর, কখনো কি জানা হতো?
বেপরোয়া স্রোতে যদি না ভাঙত, জীবন নদীর কূল,
দুঃখের অবসান হত কি তবে, শুধরাতো কারো ভুল?

ডালে ডালে বসে ওই পাখিরা, কেন সূরে সূরে গায়,
সে সূর শুনে হৃদয় জুড়ায়, কষ্ট কি বোঝা যায়?
চোখ দুটো দেখে যদি বোঝা যেত, কতটা ক্লান্তি দেহে,
দীর্ঘশ্বাসের শব্দ বলত, ভেজা চোখ কার মোহে।

আকাশে তাকিয়ে নির্ণীত হলে, নক্ষত্রের পরিমান,
সমবেদনা জানালে দুঃখের, হয়ে গেলে অবসান।
অশ্রু সজল নয়নে তাকিয়ে, যদি প্রাণ গলে যেত,
দলবেঁধে ওড়া পাখীদের দেখে, মানুষে শিক্ষা নিত।

আয়না দেখে দোষ ত্রুটি গুলো, সামনে এসে গেলে,
কতবার শ্বাস নিয়েছি ভেতরে, কতবার দিয়েছি ফেলে।
হাতটা বুলিয়ে দুঃখের স্মৃতি, যদি দেওয়া যেত মুছে,
হয়তো তবে বোঝা যেত, কার মন জুড়ে কি আছে।

কবিতার জন্য


কবিতার জন্য অনাহারে কত, রাত্রি কাটিয়েছি,
কখনো কখনো ঝুকি নিয়ে গেছি, মৃত্যুর কাছাকাছি।
কবিতাকে বুকে আগলে রেখে, রয়েছি আজো বেঁচে,
কবিতা ছাড়া এই পৃথিবীর, কোথাও কি কিছু আছে?

আকাশে কবিতা বাতাসে কবিতা, কবিতা বৃষ্টি ধারায়,
কবিতার সূরে ঝরনা ঝরে, নদীর বুকে হারায়।
দাবানল জ্বলে, অগ্নিগিরির অগ্নুৎপাত ও হয়,
ভূমিকম্প সুনামি সবই, কবিতায় মিশে যায়।

গ্রহ হতে গ্রহে ছায়াপথ ধরে, নক্ষত্র্য ভেদ করে,
চিন্তা চেনতা পৌঁছে গিয়েছে, কবিতার হাত ধরে।
গহীন বনকে পেছনে ফেলে, সাত সমদ্রের পার,
পাতাল পুরের কল্পলোকেও, দেখা মেলে কবিতার।

চরিত্রে কবিতা রক্তে কবিতা, কবিতা চিত্ত জুড়ে,
কবিতার সূরে মুক্ত আকাশে, ডানা মেলে পাখি উড়ে।
সূর্যের আলোয় আলোকিত চাঁদ, জ্যোৎস্না বিলিয়ে যায়,
পায়চারী করে চারিদিকে তার, এটা কি কবিতা নয়?

জন্মে কবিতা মরণে কবিতা, কবিতা কর্মময়,
কবিতা জন্ম দিতে গিয়ে কবি, অনাহারে মরে যায়।
ধ্যানে কবিতা ধর্মে কবিতা, কবিতা কুরআন জুড়ে,
উত্থান পতন সৃষ্টি ধ্বংস, কবিতায় রয়েছে মুড়ে।

কবিতার জন্য মরব বলে, আজো আমি বেঁচে আছি,
ছন্দগুলোকে বুকেতে আগলে, মৃত্যুর কাছাকাছি।
নিঃশ্বাস জুড়ে বিশ্বাস জুড়ে, কবিতা শিরায় শিরায়,
কবিতার জন্য কবির জীবন, অনাহারে কেটে যায়।

কবি যদি মরে যায়


কবি যদি মরে যায়, অকালে ঝরে যায়,
ব্যস্ত এ ভুবনে, কে তাঁর খোঁজ নেয়?
তবুও এই কবি, তুলে ধরে সব দাবী,
রাষ্ট্র বা সমাজের, বঞ্চিত সকলের।

যত সে জ্বালা সয়, তত হক কথা কয়,
মিথ্যা ঠিকই হারে, কলমেরই জয় হয়।
সত্যের সন্ধানে, ছুটে যায় সব খানে,
মানুষের কল্যানে, সব সাজা নেয় মেনে।

সয় কবি অবহেলা, কষ্টের পথ চলা,
স্বভাবটা থেকে যায়, ন্যায়ের কথা বলা।
সেই কবি একদিন, পড়ে রয় সাথী হীন,
কেউ তাঁর ব্যথা গুলো, বোঝেনি তো কোনদিন।

বলেছে যা কলমে, গেঁথে রয় মরমে,
অবহেলেছিল যারা, ঢাকে মুখ শরমে।
দু চোখের লোনা জলে, গিয়েছিল যা বলে,
আজ তা মেনে নিতে, উদ্যত সকলে।

অথচ এই কবি, এঁকেছিল যে ছবি,
ঠিক তাঁর আড়ালেই, ঢাকা ছিল এই রবি।
শত ব্যথা বেদনায়, সত্যই বলে যায়,
কার কি যায় আসে, কবি যদি মরে যায়?

তুমি ও পারবে


সবাই যদি পারে তবে, তুমি কেন পারবে না?
এমনি করে আর কখনো, গোমড়া মুখে থাকবে না।
তাকিয়ে দেখো সবাই কেমন, ছুটছে ভীষণ গতিতে,
অলস ঘরে বসে থেকে, পড়ছ কেন ক্ষতিতে?

এই জগতের কোন কিছু, মানুষের অসাধ্য নয়,
সফলতা পেতে হলে, সফল চেষ্টা থাকতে হয়।
অনেক দূরের রাস্তা ভেবে, কেউ যদি গো বসে রয়,
ভুলের অভিশাপে তবে, আসবে নেমে পরাজয়।

মানুষ যদি ভাবতে পারে, ভিন্ন গ্রহে বসতি,
একটু তুমি ভেবে দেখো, চেষ্টা করতে নেই ক্ষতি?
সফলতা নিয়ে কেহ, পৃথিবীতে আসে না,
একের পর এক চেষ্টা করলে, বিফল তুমি হবে না।

তোমার ভেতর সাহস আছে, আছে ভীষণ শক্তি,
লজ্জা ফেলে নিজের কাজকে, করতে হবে ভক্তি।
মনে রেখো ন্যায়ের পথে, কোন কাজই ছোট নয়,
ভুলের রাজ্যে থাকলে হয়তো, কাজকে ছোট মনে হয়।

কোন একদিন সে ভূল ভাঙে, কাজই সঠিক মনে হয়,
অবহেলা করতে করতে, শেষে সব হারিয়ে যায়।
উদ্যম আছে সাহস আছে, শুধু রাখো মনের জোর,
আছে তোমার বিদ্যাশিক্ষা, কষ্ট করলে কাটবে ঘোর।

অনুসরণ করো তাদের, যারা সফল হয়েছে,
চেষ্টায় থেকে কত জ্ঞানী, জীবন সপে দিয়েছে।
বিফলতার গ্লানি কিন্তু, আঁধার হতেও কালো,
বরং সফল হতে গিয়ে, জীবন দেওয়াই ভালো।