নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

অশান্ত পৃথিবী


ধরা বিধ্বস্ত ভীতসন্ত্রস্ত,
হয়ে অধীনস্থ হতাশাগ্রস্থ!
নেই অস্তিত্ব তবু এ দাসত্ব,
আহ্বান উদাত্ত কম্পিত বীরত্ব!

অমিল মহত্ত্ব চায় অমরত্ব,
ঘৃণ্য মনুষ্যত্ব স্বেচ্ছায় দূরত্ব!
না পেয়ে গুরুত্ব ব্যথী সব চিত্ত,
আবেগের ভৃত্য চিৎকারে নিত্য!

প্রলয়ের নৃত্য নেই আনুগত্য,
ঢেকে দেয় সত্য মিথ্যার দৈত্য!
সময়ের তত্ত্ব মহাপাপে মত্ত,
বেজায় দূরত্ব সৈন্যসামন্ত!

বেলা যে পড়ন্ত আকাঙ্ক্ষা অনন্ত,
নিশ্চিত শান্ত পৃথিবীর প্রান্ত!
দিতে পারো ক্ষান্ত যদি হও ক্লান্ত,
পাখীরা উড়ন্ত হয়েছে চুড়ান্ত!

আশা দুর্দান্ত স্বপ্ন বাড়ন্ত,
পথ অফুরন্ত কঠিন অত্যন্ত!
কষ্ট বাড়ন্ত প্রাণহীন জ্যান্ত,
সুদূর দিগন্ত পৃথিবী অশান্ত!

ছলনার জাল


সহ্য করো ধৈর্য ধরো, করোনা অবহেলা,
আজ আছে যা কাল রবেনা, এমনি যাবে বেলা।
তোমার মুখের একটু হাসি, ওদের যোগায় খুশী,
অভ্যাস করো মানিয়ে নিতে, থাকতে পাশাপাশি।

তাদের আদর স্নেহে গড়া, মায়ার এ সংসার,
কেমনে পারো করতে তাদের, নিঠুর অত্যাচার?
এই তোমাদের রাখতে খুশী, সইল কত জ্বালা,
দোহাই লাগে তাদের তুমি, করনা অবহেলা!

বাড়তি বোঝা মনে করে, রাখলে বৃদ্ধাশ্রমে,
তবুওতো যায়নি তাদের, স্নেহ মায়া কমে।
রুগ্ন দেহে আশ্রমেতে কষ্টে গভীর রাত,
খোদার তরে তোমার জন্য, তোলে সে দুই হাত।

প্রার্থনা করে তোমরা যেন, মহাসুখে থাকো,
বিনিময়ে তোমরা তাদের, কোন স্থানে রাখো?
বাবা মায়ের খুব আদরের, ছোট্ট খুকী খোকা,
বড় হয়ে আজকে তাদের, গেছিস ভুলে বোকা?

যাদের জন্য মানব জাতির, এই ভুবনে আসা,
সেই বাবা মা ভুলিয়ে দেয়, নয় সে ভালোবাসা।
জড়াসনে ছলনার জালে, দুই দিনের এই ভুবন,
বাবা মায়ের কষ্ট বুঝবি, বৃদ্ধ হবি যখন।

পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে

পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে, মুরগী নিলো শেয়ালে,
মাছ নিয়েছে বিড়ালে, চড় বসেছে চোয়ালে!
রক্ত মাখা দেয়ালে, রয়েছিস কোন খেয়ালে?
গলেতে ফাঁস তোয়ালে, মরল বেটা অকালে!

এইতো সেদিন সকালে, জড়ো হয়ে সকলে,
জমি নিলো দখলে, এইকি ছলো কপালে?
ভ্রমন কালের ধকলে, পরীক্ষার্থীর নকলে,
ছাতা নিয়ে বগলে, কিভাবে চাকরি পেলে?

হাজার পাখী এক ঢিলে, মাসতুতো ভাই যায় মিলে,
যায়গা মতন হাত দিলে, চেয়ার মেলে বান্ডিলে।
তেমনই ভাত ছড়ালে, হাজার হাজার কাক মেলে,
সম্মুখে পায়ের তলে, আড়াল হলেই কান মলে।

এমনি দিন যায় চলে, আকাশের মেঘ যায় গলে,
পাহাড় ভাসে সেই জলে, নদীতে স্রোত বয়ে চলে।
নবজাতক যায় ফেলে, কেঁদে সে পরান খুলে,
মা যদি না নেয় কোলে, তবে যাবে কোন কুলে?

ঘি উঠালে আঙুলে, হল কলা গাছ ফুলে,
ভাঙা তরীর পাল তুলে, আজ গিয়েছি পথ ভুলে।
বিনাশ হচ্ছে সমূলে, যাচ্ছি কোথায় সব মিলে?
কি দাম থাকে শুকালে, ভ্রমর বসে যে ফুলে?

খোকা গেলো ইস্কুলে, মিললো লাশ পাশের বিলে,
বিবেক বুদ্ধি সব ভুলে, শেষ সবি তিলে তিলে!
মানুষ গরুর গোয়ালে, বাপের চে বড় ছেলে,
শেষে বলি ঢোক গিলে, পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে!

করিনা আর বিশ্বাস


অস্রুসজল সে প্রতিজ্ঞা,
নিষ্ঠুর নির্মম অবজ্ঞা!
শুধু তোমাকেই দিয়ে সম্ভব,
লোভ দ্বারা শুরু পাপের উদ্ভব!

দূরত্ব মেনে নেয়া কষ্ট,
ছলনায় ভাবনা বিনষ্ট!
সম্মুখে দেখেছি চমৎকার,
ভেতরটা জুড়ে ছিল আন্ধার!

করেছিলে লোভনীয় কল্পনা,
অকল্পনীয় দিলে যন্ত্রণা!
সামান্য সময়ের আনন্দে,
নরকে গিয়েছো স্বাচ্ছন্দ্যে!

কেন গো করেছো তিরস্কার?
বিনিময়ে পেয়েছো পুরষ্কার?
নেই আজ মনে দ্বিধা দন্ধ,
আবেগে হবোনা আর অন্ধ!

আজ করো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ,
লাগেনা লাগেনা জোড়া ভাঙা মন!
অভিনয় সবি মিছে আশ্বাস,
করবোনা তোমায় আর বিশ্বাস!

কিছুই দিলেনা

বাতাস দিয়েছে গতি আমাকে
আকাশ দিয়েছে সীমানা,
দিগন্তের ওপার হারিয়ে যেতে
কেউ করেনি মানা।

সাগর দিয়েছে বিশালতা আমায়
স্রোত দিয়েছে নদী,
চন্দ্র দিয়েছে জ্যোৎস্না বিলায়ে
আঁধার রাত্রি যদি।

সূর্য দিয়েছে দিনের আলো
রাত দিল নীরবতা,
সবুজ পাতারা বলেছে আমাকে
হৃদয়ের যত কথা।

বৃষ্টি শিখিয়েছে কাঁদতে আমায়
ফুল শেখালো হাসতে,
অগ্নিগিরি জ্বলতে শেখালো
শেখায়নি কেউ ভালবাসতে।

সবাই সবই দিলো আমাকে
ছুটছি তাঁদের পিছু,
একমাত্র তুমিই আমাকে
দিলেনা কোন কিছু।

একটি কথা


আজ তোমাকে একটি কথা না জানালেই নয়,
তোমার জন্য বুকের ভেতর ভীষণ ব্যথা হয়!
গভীর রাতে যখন দেখি তুমি পাশে নেই,
দু চোখ ভেজে লোনা জলে আতকে উঠি সেই!

শেষ হয়ে যায় জীবন তবু রাত্রি হয়না শেষ,
অন্য কারো বুকে তুমি নিদ্রা যাচ্ছো বেশ!
অসাড় হয় এই সারা দেহ ব্যথাতে হই পাথর,
ভাবলে অন্য কেউ তোমাকে করছে ভীষণ আদর!

হয়তো কোন উষ্ণ ছোঁয়ায় নিরাপত্তার চাদরে,
মিষ্টি মধুর পরশ মেলে দেহে প্রতি প্রহরে।
আজ এতদিন পরে যখন সামনে এসে দাঁড়ালে,
কেমন আছো? জানতে চেয়ে মনে কি ঝড় ওঠালে!

তোমার মতন পারিনি গো থাকতে ভুলে সব কথা,
আমি ছাড়া কেউ জানেনা এ বুক জুড়ে কি ব্যথা!
জীবন বিসর্জন দেওয়া যায় স্মৃতি ভোলা যায় না,
মনি মুক্ত সোনা হীরায় মনের খোরাক হয় না!

খুব সামান্য ভুলের মাশুল সারা জীবন দিতে হয়,
অজস্র বার চাইলে ক্ষমা তাতে কি ভুল শুধরে যায়?
আজ তোমাকে একটি সত্য বলি শোন তাহলে,
ইহকালেও আমি তোমার থাকবো তোমার পরকালে!

হারানোর ভয়

তোমাতেই ছিল সব ভক্তি, দিতে চেয়ে ব্যথা হতে মুক্তি,
দিয়ে গেলে আজ এ বিভক্তি, দেখালে ছলনাময় এ যুক্তি!
করে গেলে কি নিখুঁত অভিনয়, ভেবে আজো সত্যি মনে হয়,
প্রাণে কত স্মৃতি আজ দোলা দেয়, সহজে কি এত কিছু ভোলা যায়?

অবশেষে দিলে কি যে যন্ত্রণা! তাঁরপর দিতে এলে শান্তনা,
এমনটা ছিলনা তো কল্পনা, প্রাণ জুড়ে বিবিধ বিড়ম্বনা!
বুকে জড়িয়ে দিলে আশ্বাস, সরল আমি করেছি তা বিশ্বাস,
তাই আজ করে যাই পরিহাস, নিঃশেষ হলো সব উল্লাস!

মায়া ছিল ও চোখের চাওয়াতে, সুখ ছিল কাছাকাছি পাওয়াতে,
ব্যথা নিয়ে জেগে ওঠা প্রভাতে, কে বলো হাত রাখে এ হাতে?
লোকে বলে প্রেম নাকি ছলনা,আসলে এমন নাকি বলনা?
আর কত সইব এ যাতনা? দিতে পারো তুমি কোন ধারনা?

আশাতীত মহাসুখে মাতিয়ে, অফুরান কামনায় রাঙিয়ে,
আকাশের সীমানা ছাড়িয়ে, দিয়েছিলে দুটি হাত বাড়িয়ে।
তবে কেন করে গেলে নিঃস্ব? কেড়ে নিলে আমার সর্বস্ব,
যে ছিল এ আমার উপাস্য, সে নেই লাগে অবিশ্বাস্য!

নির্বাক আমি যেন মূর্তি, করেছো কি প্রয়োজনে ফুর্তি?
বুলি ছিলো ছলনায় ভর্তি, তাই বুঝি আজ এই আরতি।
আমিতো করিনি কোন অন্যায়, তবু ভাসি কষ্টের বন্যায়,
দূর করে দিয়েছিলে সংশয়, দূরে গিয়ে দিয়ে গেলে আরো ভয়!

অমর প্রেমের ঢেউ

আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত কিংবা ভূমিকম্প,
যাক হয়ে যাক শেষ হবে না তোমার আমার গল্প।
প্রলয়ঙ্করী ধ্বংসলীলা আসে যদি আসুক না,
ওই চোখে চোখ রেখে করে যাবো প্রেমের জল্পনা।

পারমানবিক বিস্ফোরণের ভয় নেই এই অন্তরে,
ভালোবাসার অশেষ সাহস অফুরান প্রানের ঘরে।
দাবানলে জ্বলে জ্বলুক বন বাদাড় এই পৃথিবী,
গহীন আঁধার নামে নামুক নাইবা উদয় হোক রবি।

গ্রহ তারা খসে পড়ুক ভ্রম্মান্ড হোক ধূলিসাৎ,
বিধ্বংসী সে মুহূর্তেও ছাড়বোনা ছাড়বোনা হাত।
পৃথিবীর সব দুঃখ কষ্ট আসতে চাইলে আসুক না,
মধুর প্রেমের ছোঁয়া দিয়ে ভুলিয়ে দেবো যন্ত্রণা।

চলার পথে আসে আসুক পাহাড় সমান বিপত্তি,
অভয় দিচ্ছি দেখিয়ে দেবো খাঁটি প্রেমের কি শক্তি।
সব ভীতি ভয় একত্রিত হয়ে করুক আস্ফালন,
অক্ষত রাখবে আমাদের প্রেমের তড়িৎ সঞ্চালন।

ভুবনের সব রাগ আর ক্রোধের একসাথে হোক আক্রমন,
সবই বিলীন হয়ে যাবে জাগলে প্রেমের শিহরণ।
এই পৃথিবীর সকল হাসির সকল খুশীর ভান্ডারে,
অমর হয়ে ভালোবাসার ঢেউ খেলে দুই অন্তরে।

করো আলিঙ্গন

তোমার বিষণ্ণতা-আর এই নিস্তব্ধতা,
আমায় ইন্দ্রজালে জড়ায় নয়গো কল্পকথা।
সেই মৌন উক্তি-এমনি আসক্তি,
আজকে আত্মভোলা প্রাণের সমগ্র যুক্তি!

তোমার বিকল্প-আর দূরত্ব স্বল্প,
সংকল্পের দোহাই দিয়ে নবান্নের গল্প।
অন্তরের জঞ্জাল-হৃদয়ের অন্তরাল,
বিসর্জনের অজুহাতে চেতনা উত্তাল।

প্রেম হল দুর্জয়-সহজলভ্য নয়,
সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে দুয়ের সমন্বয়।
একাগ্রচিত্ত-কল্পিত সত্য,
সঞ্জীবিত আকাঙ্ক্ষাকে নিষ্ক্রিয় তথ্য।

প্রচেষ্টা আপ্রাণ-কোমল দেহের ঘ্রাণ,
মাতাল পদক্ষেপে সত্ত্বা আজো সন্দিহান।
ক্লান্ত চিত্ত অলস-সে প্রশান্তির পরশ,
গচ্ছিত স্বপ্নগুলোকে যোগায় যোগ্য সাহস।

মাতাল কল্পনাতে-বিচক্ষণ তোমাতে,
নির্ঘুম জাগ্রত রাখে আমায় প্রতি রাতে।
নিষ্ঠুর প্রহসন-দাওগো বিসর্জন,
অপেক্ষায় তৃষিত আমি করো আলিঙ্গন।

স্বাধীনতা আছে বলে


হেসে যাই প্রাণ খুলে অলি বসে ফুলে ফুলে,
মাঝি দেয় পাল তুলে ঢেউ ভেঙে পড়ে কূলে।
ঝরা পাতা ঝরে পড়ে কূল ভাঙে কূল গড়ে,
কালবৈশাখী ঝড়ে বক বুক পেতে ওড়ে।

পাখী নীড়ে ফিরে আসে খড়কুটো বানে ভাসে,
কূল জুড়ে ঢল আসে ভাটা নদী ভরে শেষে।
গরু রেখে গোয়ালে গোয়ালা বেখেয়ালে,
পাখী ধরা ফাঁদ পাতে ঝাউ বনের আড়ালে।

দিন যায় ক্ষণ যায় পাখী ডিমে তা দেয়,
তা দিয়ে ছানা হয় মা পাখী চেয়ে রয়।
বক ঠোঁটে ধরে পুঁটি শোল হেসে কুটিকুটি,
কনকনে ঠান্ডায় খোকার ইস্কুল ছুটি।

কালো মেঘ ভেসে এসে বৃষ্টি অবশেষে,
ঝোপে ব্যাঙ যায় ডেকে আষাঢ়কে ভালোবেসে।
গাছে গাছে ফুল ফোটে ভ্রমরেরা মধু লোটে,
সূর্যের পানে চেয়ে রাতে চাঁদ হেসে ওঠে।

ভোরে মাঠে যায় চাষি ফসলে ফোঁটায় হাসি,
শস্যের মৌ ঘ্রাণে সারা গাঁও যায় ভাসি।
রাজহাঁস ভাসে ঝিলে পেঁচা রাতে ডেকে চলে,
ময়ূরী পেখম মেলে স্বাধীনতা আছে বলে।

ক্ষমতার ব্যাধি


ক্ষমার ও অযোগ্য করি আমি অপরাধ,
প্রাণে মেরে দেই যারা করে তাঁর প্রতিবাদ।
একমুখী স্রোত আজো একই ভাবে বয়ে যায়,
নিরুপায় জনগণ প্রাণ ভয়ে চুপ রয়।

সত্যকে চাপা দিয়ে ততদিন রাখা যায়,
যতদিন বিবেকের জাগরণ না হয়।
আঁধার আছে বলেই তো আলোর এত মূল্য,
কোন কিছু নয় সত্যের সমতুল্য।

তুচ্ছ এ পৃথিবীতে কেউ চিরজীবী নয়,
আমার অবিচার শুনে গার লোম খাড়া হয়।
না বোঝার ভান করে মায়াজালে জড়িয়ে,
সাময়িক সুখ লোভে প্রাণ নেই ছিনিয়ে।

প্রতিহত করার আগে বিবেচনা প্রয়োজন,
কোনদিন বলে কি তা ভাড়া করা গুণীজন?
আবেগের রায় শুনে তা বুঝে নিতে হয়,
আমিও সয়েছি কত অবিচার অন্যায়।

লাশের মিছিলে আমি ভরে দেই রাজপথ,
দেয়ালে ঠেকেছে পীঠ তাই পাই সহমত।
চীৎকার করে বলি আমি অপরাধী,
তবুও ছাড়েনা পিছু ক্ষমতার ব্যাধি!

শান্তির প্রসঙ্গ

তুলে প্রসংগ জ্বলে সারা অঙ্গ,
সুশিলেরা সদা করে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ!
মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে রয় রাস্তায়,
নর্দমার কীটে খায় জীবনের সঞ্চয়!

শুধু যার জন্য এ জীবন ধন্য,
স্বার্থের প্রয়োজনে তারে করা পণ্য!
কষ্টের বন্যায় ভেসে যায় অন্যায়,
অট্টহাসি তবু অপরাধী হেসে যায়!

ধৈর্য তো অল্প প্রশস্ত গল্প,
সংক্ষেপে শেষ করা তবু সংকল্প!
হয়ে হতবুদ্ধি আত্মার শুদ্ধি,
অসতের সঙ্গে অপরাধ বৃদ্ধি!

এই অভিব্যক্তি দিয়ে সব শক্তি,
ভক্তির পায়ে ধরে পেতে চাওয়া মুক্তি!
স্বর্গের সন্ধান অন্তরে অম্লান,
শান্তির বিনিময়ে আঁখিজল প্রতিদান!

এই প্রসঙ্গে রেঙ্গে নানা রঙ্গে,
শান্তির উচ্ছ্বাসে ঝড় বয় অঙ্গে!
শান্তি তো স্বপ্ন হৃদয়ের যত্ন,
আজীবন খুঁজেও অমিল এক রত্ন!

আমায় কলঙ্কিত করো


আমি কলঙ্ক ভালোবাসি, আমি বেশরম হতে চাই,
আমার সব কিছু কেড়ে নাও, ওই বুকেতে দাও ঠাই।
আমি চাইনা হতে সুখী, আমায় শুধুই কষ্ট দিও,
তোমার কান্না আমায় দিয়ে, আমার হাঁসি নিয়ে নিও।

আমার এই দেহে এই প্রাণে, তুমি জাগাও শিহরণ,
শুধু মধুর পরশ বুলাও, কোমল দেহে আজীবন।
আমার তৃষ্ণা যত আছে, আজ দাও মিটিয়ে দাও,
আমার লজ্জা ভেঙে দিয়ে, আরো কাছে টেনে নাও।

তোমার বুকে আগলে রেখে, শুধু প্রেমের ছোঁয়া দিও,
তুমি নরকবাসী হলেও, আমায় সঙ্গে করে নিও।
আমার একলা শীতের রাতে, তুমি জ্বেলো প্রেমের আগুন,
আমার অঝর বাদল দিনে, তুমি হয়ো প্রেমের ফাগুন।

লোকে মন্দ বলে বলুক, তুমি যা খুশী তা করো,
ভালোবাসো উজাড় করে, আপন করো আমায় আরো।
তোমার কিসের এতো ভয়? এতো লজ্জা কিসের আর?
প্রেমের অমৃত পান করো, দেখবে থাকবেনা ভয় ডর।

আমি সব কিছু যাই ভুলে, তুমি সামনে যখন আসো,
আমি দারুণ তৃপ্ত হই, যখন আমায় ভালোবাসো।
আমি বেশরম হতে চাই, আমায় বেহায়া বানাও আরো,
আমি কলংক ভালোবাসি, আমায় কলঙ্কিত করো।

কোথায় যেন দেখেছি


কোথায় যেন দেখেছি তা পড়ছে না ঠিক মনে,
চোখের সামনে মায়া মুখটা ভাসে প্রতি ক্ষণে।
নিজের মনের মতন করে মনেই ছবি আঁকি,
আপন ভেবে মনের ঘরে স্মৃতি ধরে রাখি।

নাম ঠিকানা নাই জানা তাঁর কোথায় খুঁজে পাবো?
বুকটা চিরে যায় না দেখা কি করে বোঝাবো!
পাহাড় সমান আশা নিয়ে নিত্য খুঁজে চলি,
নিরুপায় এই প্রাণের কথা কাকে খুঁজে বলি!

কত সময় পার হয়েছে কে নিবে তাঁর খোঁজ?
শান্তনা আর স্বপ্ন নিয়ে জেগে উঠি রোজ!
ভাঙা বুকের ক্ষতগুলো বাড়ায় মনের জ্বালা,
হইনি নিরাশ তাঁর কারণে সইছি অবহেলা!

দিন যত যায় ততই আমি মায়াতে হই বিভোর,
আবার কবে পাবো দেখা যাই গুনে যাই প্রহর!
কোথায় দেখেছিলাম মনে পড়েও পড়ছে না,
ভাগ্য গুণে সামনে আবার কেন আসছে না?

কারো চোখে এত মায়া আগে দেখিনি,
উজাড় করে কাউকে এত ভালোবাসিনি!
সব থেকেও আজকে যেন নিঃস্ব হয়েছি,
পড়ছেনা ঠিক মনে তাকে কোথায় দেখেছি!

কিছুই বলিনি

সে রাতের লজ্জায় সেই ফুল শয্যায়
সব কেড়ে নিয়েছিল মনোহরিনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

আবেগীয় সে মোহে যে আদরে যে স্নেহে
কত কাছে এসেছিল আজো ভুলিনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

একাকী এ আমাকে টেনে নিয়ে ও বুকে
হেসেছিল কি সুখে কেউ দ্যাখেনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

কামনার প্রহরে আদরের জোয়ারে
ভেসে গিয়েছিল সে আর ফেরেনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

মায়াবী সে কম্পনে প্রতিটি স্পন্দনে
কত তৃষা জেগেছিল কেউ বোঝেনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

এ মনের জানালায় রোজ রোজ উকি দেয়
কত শত স্বপ্ন সে ভাবেনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

পিয়াসী এ অন্তরে হৃদয়ের প্রান্তরে
সে ছিল এ জীবনের সঞ্জীবনী,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

গোপনীয় কি লোভে নির্বাক সে ক্ষোভে
আঁখি ভিজে গিয়েছিল তবু কাঁদেনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

মায়ার এই সংসার ছেড়ে যায় পরপার
তবুও তো কেউ ভালোবাসা ভোলেনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।

এত ভালোবাসা নিয়ে এই বুক ভেঙে দিয়ে
পর করে চলে যাবে আগে বুঝিনি,
চোখ মেলে দেখেছি কান পেতে শুনেছি
মুখ বুজে সয়েছি কিছু বলিনি।